পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৫৪-[১৬] খব্বাব ইবনুল আরাত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে নিয়ে খুব লম্বা (তিলাওয়াতে) করে সালাত আদায় করলেন। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তো আজ এমন করে সালাত আদায় করেছেন যে, এরূপ সালাত আপনি আর কক্ষনো পড়েননি। তিনি (সা.) বললেন, হ্যা ঠিকই বলেছ। কেননা এটা ছিল রহমতের আশায় আশান্বিত এবং শাস্তির ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় সালাত। আমি এ সালাতের মধ্যেই আল্লাহর কাছে তিনটি জিনিস চেয়েছি। তিনি দুটি আমাকে দিয়েছেন এবং একটি নিষেধ করেছেন। ১. আমি চেয়েছিলাম যেন আমার উম্মাতকে (ব্যাপক) দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস না করা হয়, তিনি আমাকে এটা দান করেছেন। ২. আমি চেয়েছিলাম যেন সকল মুসলিমদের ওপর অমুসলিমদের চাপিয়ে দেয়া না হয়। ৩. এটাও চেয়েছিলাম, যেন আমার উম্মতের কেউ অপরের ওপর অন্যায় না করে, কিন্তু এটা তিনি আমাকে দান করেনি। (তিরমিযী ও নাসায়ী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

عَن خبَّابِ بنِ الأرتِّ قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ فَأَطَالَهَا. قَالُوا: يَا رَسُولَ الله صلَّيتَ صَلَاةً لَمْ تَكُنْ تُصَلِّيهَا قَالَ: «أَجَلْ إِنَّهَا صَلَاةُ رَغْبَةٍ وَرَهْبَةٍ وَإِنِّي سَأَلْتُ اللَّهَ فِيهَا ثَلَاثًا فَأَعْطَانِي اثْنَتَيْنِ وَمَنَعَنِي وَاحِدَةً سَأَلْتُهُ أَنْ لَا يُهْلِكَ أُمَّتِي بِسَنَةٍ فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لَا يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لَا يُذِيقَ بَعْضَهُمْ بَأْسَ بَعْضٍ فمنعَنيها» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ

اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (2175 وقال : حسن صحیح) و النسائی (3 / 216 ۔ 217 ح 1639) ۔
(صَحِيح)

عن خباب بن الارت قال صلى بنا رسول الله صلى الله عليه وسلم صلاة فاطالها قالوا يا رسول الله صليت صلاة لم تكن تصليها قال اجل انها صلاة رغبة ورهبة واني سالت الله فيها ثلاثا فاعطاني اثنتين ومنعني واحدة سالته ان لا يهلك امتي بسنة فاعطانيها وسالته ان لا يسلط عليهم عدوا من غيرهم فاعطانيها وسالته ان لا يذيق بعضهم باس بعض فمنعنيها رواه الترمذي والنساىياسنادہ صحیح رواہ الترمذی 2175 وقال حسن صحیح و النساىی 3 216 ۔ 217 ح 1639 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (خبَّابِ بنِ الأرتِّ)الأرتِّ শব্দটির (ت) অক্ষরে তাশদীদসহ পঠিত। তিনি আবু আবদুল্লাহ খব্বাব ইবনুল আরাত। প্রথমদিকে ইসলাম গ্রহণকারীদের একজন। ইসলাম গ্রহণের কারণে তাকে অনেক নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। তিনি বদর যুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তীতে কুফায় আগমন করেন এবং সেখানে মারা যান। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৬/৩৩১)
(صَلَاةُ رَغْبَةٍ وَرَهْبَةٍ) “আশা ও ভয়ের সালাত” অর্থাৎ যে সালাতের মাঝে সাওয়াবের আশা ও আল্লাহ তা'আলার প্রতি আগ্রহ রয়েছে এবং আল্লাহ তা'আলার শাস্তির ভয়ও রয়েছে। সালাতের পর রাসূল (সা.)-এর আবেদন ও তা গৃহীত হওয়া না হওয়ার ইতোপূর্বে কয়েকটি হাদীসে অতিক্রান্ত হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৫৫-[১৭] আবূ মালিক আল আশ’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: (হে মুসলিমগণ!) মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তোমাদেরকে তিনটি জিনিস হতে রক্ষা করেছেন। ১. তোমাদের নবী তোমাদের বিরুদ্ধে এমন কোন বদদু’আ করবেন না যাতে তোমরা সবাই ধ্বংস হয়ে যাও। ২. বাতিল ও গোমরাহ গোত্র কখনো সত্যপন্থীদের ওপর প্রাধান্য লাভ করতে পারবে না এবং ৩. সমষ্টিগতভাবে আমার উম্মাত গোমরাহীর (তথা অন্যায়ের উপরে একত্রিত হবে না। (আবু দাউদ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ أَجَارَكُمْ مِنْ ثَلَاثِ خِلَالٍ: أَنْ لَا يَدْعُوَ عَلَيْكُمْ نَبِيُّكُمْ فَتَهْلَكُوا جَمِيعًا وَأَنْ لَا يُظْهِرَ أَهْلَ الْبَاطِلِ على أهلِ الحقِّ وَأَن لَا تجتمِعوا على ضَلَالَة . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4253) * فیہ شریح عن ابی مالک رضی اللہ عنہ ، وقال ابو حاتم الرازی :’’ شریح بن عبید عن ابی مالک الاشعری : مرسل ‘‘ (المراسیل ص 90 ت 327 ب) ۔
(ضَعِيف)

وعن ابي مالك الاشعري قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان الله عز وجل اجاركم من ثلاث خلال ان لا يدعو عليكم نبيكم فتهلكوا جميعا وان لا يظهر اهل الباطل على اهل الحق وان لا تجتمعوا على ضلالة رواه ابو داوداسنادہ ضعیف رواہ ابوداود 4253 فیہ شریح عن ابی مالک رضی اللہ عنہ وقال ابو حاتم الرازی شریح بن عبید عن ابی مالک الاشعری مرسل المراسیل ص 90 ت 327 ب ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (أَجَارَكُمْ مِنْ ثَلَاثِ خِلَالٍ) অর্থাৎ তিনটি বৈশিষ্ট্য থেকে তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। এই তিনটি মূলত মুসীবাত। এই তিন মুসীবাতে আল্লাহ তা'আলা এই উম্মাতকে নিক্ষেপ করবেন না। তিন বৈশিষ্ট্যের অন্যতম হলো নবী (সা.) উম্মতের ওপর বদদু'আ দিবেন না। অর্থাৎ সমূলে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার বদূদু'আ দিবেন না। যেমন নূহ আলায়হিস সালাম তার উম্মতের ওপর বদদু'আ দিয়েছেন। মূসা আলায়হিস সালাম কিবতী জাতি ধ্বংসের জন্য বদ্‌দু'আ দিয়েছেন। আরেকটি বৈশিষ্ট্য: বাতিলপন্থীরা সত্যপন্থীদের ওপর বিজয় লাভ করবে না। বাতিলপন্থীদের সংখ্যা বেশি এবং সত্যপন্থীদের সংখ্যা কম থাকলেও সত্যপন্থীদের জয় থাকবে। কিয়ামত পর্যন্ত এমন একটি দল সর্বদা থাকবে। যেমন রাসূল (সা.) বলেন –
لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ يَخْذُلُهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ ‏ “আমার উম্মাতের একটি দল সর্বদা সত্যের উপর বিজয়ী থাকবে, যারা তাদেরকে অপদস্থ করবে তারা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, এমনকি আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ তথা কিয়ামত আসা পর্যন্ত।” (সুনানুত্ তিরমিযী হা, ২২২৯)

কুরআনেরও একটি আয়াতে এই মর্ম পাওয়া যায়। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন –
یُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ یُّطۡفِـُٔوۡا نُوۡرَ اللّٰهِ بِاَفۡوَاهِهِمۡ وَ یَاۡبَی اللّٰهُ اِلَّاۤ اَنۡ یُّتِمَّ نُوۡرَهٗ وَ لَوۡ کَرِهَ الۡکٰفِرُوۡنَ “তারা তাদের মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায়। কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তার নূরের পূর্ণতা বিধান করবেন, যদিও কাফিররা তা অপ্রতিকর মনে করে।” (সূরাহ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৩২)

তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীস ও আয়াতের মর্ম হলো, বাতিলপন্থীদের সংখ্যা বেশি হলেও তারা সত্যপন্থীদের ওপর এমনভাবে জয়ী হতে পারবে না যে, তাদেরকে দুনিয়া থেকে একেবারে মিটিয়ে দিবে এবং তাদের আলো নিভিয়ে দিবে। আল্লাহ তা'আলার প্রশংসায় এমনটি হয়নি। বাতিলপন্থীদের পক্ষ থেকে মুসলিমদের ওপর বিভিন্ন নির্যাতনের পরীক্ষা, শত্রুর প্রভাব, বাতিলদের প্রভাব চিরস্থায়ী হওয়া সত্ত্বেও সত্য প্রকাশিত রয়েছে এবং শারী'আত প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। সত্যের আলো নিভে যায়নি এবং আলোর মিনার মিটে যায়নি। এই উম্মাতের তৃতীয় বৈশিষ্ট্য; তারা সবাই কোন একটি ভ্রান্তির উপর ঐক্য হবে না। এর দ্বারা প্রমাণিত হয়, উম্মতের ঐক্য শারী'আতের একটি দলীল। মানুষের কাছে যেটা সুন্দর সেটা আল্লাহ তা'আলার কাছে সুন্দর। কুরআনের একটি আয়াতও এই দলীলকে শক্তিশালী করে। আল্লাহ তা'আলা বলেন-

وَ مَنۡ یُّشَاقِقِ الرَّسُوۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُ الۡهُدٰی وَ یَتَّبِعۡ غَیۡرَ سَبِیۡلِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ نُوَلِّهٖ مَا تَوَلّٰی وَ نُصۡلِهٖ جَهَنَّمَ ؕ وَ سَآءَتۡ مَصِیۡرًا “যে কেউ রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলিমের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যেদিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান।” (সূরা আন্ নিসা ৪ : ১১৫)।
এ আয়াত দিয়েই ইমাম শাফিঈ (রহিমাহুল্লাহ) ইজমা’কে শারী'আতের দলীল বলে আখ্যায়িত করেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৫৬-[১৮] ’আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা এ মুসলিম উম্মাতের ওপর দুই তলোয়ার একত্রিত করবেন না। এক তলোয়ার মুসলিমদের পক্ষ হতে এবং অপর তলোয়ার শত্রুদের পক্ষ হতে। (আবু দাউদ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَنْ يَجْمَعَ اللَّهُ عَلَى هَذِهِ الْأُمَّةِ سَيْفَيْنِ: سَيْفًا مِنْهَا وسَيفاً منْ عدُوِّها رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4301) * یحیی بن جابر : لم بلق عوف بن مالک رضی اللہ عنہ فالسند منقطع

وعن عوف بن مالك قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لن يجمع الله على هذه الامة سيفين سيفا منها وسيفا من عدوها رواه ابو داوداسنادہ ضعیف رواہ ابوداود 4301 یحیی بن جابر لم بلق عوف بن مالک رضی اللہ عنہ فالسند منقطع

ব্যাখ্যা: হাদীসের মর্ম হলো, এই উম্মতের ওপর একসাথে শত্রু ও নিজেদের তরবারি একত্র হবে না, যা তাদের মূলোৎপাটনের কারণ হয়। নিজেদের বিরুদ্ধে নিজেদের তরবারি, এর সাথে শত্রুদের তরবারির আক্রমণ একটি জাতির সমূলে ধংসের কারণ। উম্মতে মুহাম্মাদীর ওপর এমন পরিস্থিতি আসবে না। তারা যদি পরস্পর লড়াইয়ে লিপ্ত হয়, তখন দেখা যাবে শত্রু তাদের ওপর চড়াও হয়ে উঠবে। শত্রু চড়াও হতেই তারা পরস্পর লড়াই বাদ দিবে। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অর্থাৎ একসাথে তাদেরকে দু'টি লড়াই করতে হবে না। নিজেদের মাঝে লড়াই হলে কাফিরদের সাথে লড়াই হবে না। আর কাফিরদের সাথে যখন লড়াই হবে তখন নিজেদের মাঝে লড়াই হবে না। এভাবে এই উম্মাত শত বাধার মাঝে কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে। তারা সমূলে ধ্বংস হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আউফ ইবনু মালিক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৫৭-[১৯] ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। একবার তিনি কাফিরদের মুখে নবী (সা.) -এর বিরুদ্ধে তিরস্কারমূলক কিছু কথা শুনতে পেলেন। তাতে তিনি ক্রোধান্বিত হয়ে নবী (সা.) -এর কাছে ছুটে এসে কথাটি তাকে জানালেন। এতদশ্রবণে তিনি (সা.) মিম্বারে দাঁড়িয়ে বললেন, তোমরা বল দেখি আমি কে? উত্তরে সাহাবীগণ বললেন, আপনি আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, আমি হলাম, ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আবদুল মুত্ত্বালিব এর পুত্র মুহাম্মাদ। আল্লাহ তা’আলা যে সকল সষ্টিজীব সৃষ্টি করেছেন তন্মধ্যে আমাকে উত্তম শ্রেণিতে সৃষ্টি করেছেন। আবার সেই মানব শ্রেণিকে দু’ভাগে (আরব ও আ’যম) নামে বিভক্ত করেছেন। আর আমাকে তার উত্তম দলে (আরবের মধ্যে) সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেই দলকে আবার উত্তম গোত্রে (কুরায়শ গোত্রে) সৃষ্টি করেছেন। আবার সেই গোত্রকেও বিভিন্ন পরিবারে বিভক্ত করেছেন। তার নামে উত্তম পরিবার (হাশিমী পরিবারে) আমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতএব লোক ও পরিবার হিসেবে আমি সর্বোত্তম। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَن الْعَبَّاس أَنَّهُ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَأَنَّهُ سَمِعَ شَيْئًا فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ: «مَنْ أَنَا؟» فَقَالُوا: أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ. فَقَالَ: «أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ الْخَلْقَ فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ ثمَّ جعلهم فرقتَيْن فجعلني فِي خير فِرْقَةً ثُمَّ جَعَلَهُمْ قَبَائِلَ فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ قَبيلَة ثمَّ جعله بُيُوتًا فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ بَيْتًا فَأَنَا خَيْرُهُمْ نفسا وَخَيرهمْ بَيْتا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3607 ۔ 3608 وقال : حسن) * فیہ یزید بن ابی زیاد : ضعیف مشھور ۔
(ضَعِيف)

وعن العباس انه جاء الى النبي صلى الله عليه وسلم فكانه سمع شيىا فقام النبي صلى الله عليه وسلم على المنبر فقال من انا فقالوا انت رسول الله فقال انا محمد بن عبد الله بن عبد المطلب ان الله خلق الخلق فجعلني في خيرهم ثم جعلهم فرقتين فجعلني في خير فرقة ثم جعلهم قباىل فجعلني في خيرهم قبيلة ثم جعله بيوتا فجعلني في خيرهم بيتا فانا خيرهم نفسا وخيرهم بيتا رواه الترمذياسنادہ ضعیف رواہ الترمذی 3607 ۔ 3608 وقال حسن فیہ یزید بن ابی زیاد ضعیف مشھور ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (فَكَأَنَّهُ سَمِعَ شَيْئًا) অর্থাৎ ‘আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে রাগত ভাব নিয়ে এসেছেন, যেন তিনি কাফিরদের কাছে কিছু শুনেছেন।
কাফিররা নবী (সা.) -এর বংশ ও মর্যাদা নিয়ে কটাক্ষ করেছে। যেমন তারা বলেছে- (وَ قَالُوۡا لَوۡ لَا نُزِّلَ هٰذَا الۡقُرۡاٰنُ عَلٰی رَجُلٍ مِّنَ الۡقَرۡیَتَیۡنِ عَظِیۡمٍ) “তারা বলে, কুরআন কেন দুই জনপদের কোন প্রধান ব্যক্তির ওপর অবতীর্ণ হলো না?” (সূরা আয যুখরুফ ৪৩ : ৩১)।
এটা বলে তারা যেন নবীর মর্যাদা নিয়েই কটাক্ষ করেছে। কারণ তাদের ধারণা মতে, এত বড় বিষয় সাধারণ মুহাম্মাদের ওপর অবতীর্ণ না হয়ে বড় কোন ব্যক্তির ওপর অবতীর্ণ হওয়ার কথা। তাদের এমন অবজ্ঞা ‘আব্বাস (রাঃ)-কে কষ্ট দেয়। তাই তিনি পীড়িত মন নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে আসেন। রাসূল (সা.) তা বুঝতে পেরে মিম্বারে উঠে নিজের মর্যাদা তুলে ধরেন। বংশ ও মর্যাদার দিক দিয়ে তার ওপর কেউ নেই সেটাই রাসূল (সা.) তার এই হাদীসে প্রকাশ করেন।
(«مَنْ أَنَا؟» فَقَالُوا: أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ.) “তিনি বললেন, আমি কে? তারা বলল, আপনি আল্লাহর রাসূল।” রাসূল তাদের কাছে প্রশ্ন করে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে চেয়েছেন। কারণ প্রশ্নের পর কোন কিছু প্রকাশ করা সম্বোধিত ব্যক্তির হৃদয়ে অধিক রেখাপাত করে। তাছাড়া প্রশ্নের মাধ্যম সম্বোধিত ব্যক্তির পূর্ব ধারণা সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের কাছে “আমি কে?” প্রশ্ন করে তার মর্যাদা সম্পর্কে তারা কতটুকু অবগত সেটাই প্রথমে নির্ণয় করতে চেয়েছেন। এই প্রশ্ন করলে তারা স্বভাবতই উত্তর দিলো, “আপনি আল্লাহর রাসূল।” রাসূল তাদের উত্তরের সাথে যোগ করলেন, “আমি মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল মুত্ত্বালিব...” অর্থাৎ আমার মর্যাদা কেবল রাসূল হওয়ার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বংশের দিক দিয়েও আমার মর্যাদা শিখরে। বংশ মর্যাদার দিক থেকে কিভাবে তিনি শিখরে সেটাই হাদীসে তুলে ধরেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৫৮-[২০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার জন্য নুবুওয়্যাত কখন হতে নির্ধারণ করা হয়েছে? তিনি (সা.) বললেন, সে সময় হতে, যখন আদম আলায়হিস সালাম আত্মা ও দেহের মধ্যবর্তী অবস্থায় ছিলেন। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَن أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى وَجَبَتْ لَكَ النُّبُوَّةُ؟ قَالَ: «وَآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالْجَسَدِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

صحیح ، رواہ الترمذی (3609 وقال : حسن صحیح غریب) [و الفریابی فی کتاب القدر (14)] * یعنی انہ صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم کان نبیًا فی التقدیر قبل خلق آدم علیہ السلام فالحدیث متعلق بالتقدیر ، لا بخلق رسول اللہ صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم فافھمہ فانہ مھم و الحدیث الآتی یؤید ھذا التفسیر ۔
(صَحِيح)

وعن ابي هريرة قال قالوا يا رسول الله متى وجبت لك النبوة قال وادم بين الروح والجسد رواه الترمذيصحیح رواہ الترمذی 3609 وقال حسن صحیح غریب و الفریابی فی کتاب القدر 14 یعنی انہ صلی اللہ علیہ و الہ وسلم کان نبیا فی التقدیر قبل خلق ادم علیہ السلام فالحدیث متعلق بالتقدیر لا بخلق رسول اللہ صلی اللہ علیہ و الہ وسلم فافھمہ فانہ مھم و الحدیث الاتی یوید ھذا التفسیر ۔صحيح

ব্যাখ্যা: وَآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالْجَسَدِ  “যখন আদম আত্মা ও শরীরের মাঝে।” অর্থাৎ আদমের শরীরে আত্মা ফুৎকারের আগেই আমার নুবুওয়্যাত নির্ধারিত হয়ে গেছে। যখন মাটি দিয়ে আদমের আকৃতি সৃষ্টি করে রাখা হয়েছিল, আকৃতি বানানোর পর আত্মা দেয়ার আগেই আমার নুবুওয়্যাত নির্ধারিত হয়ে গেছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত ত্ববারানী’র বর্ণনার শব্দ- (كُنْتُ نَبِيًّا وَآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالْجَسَدِ) অর্থাৎ “আদম শরীর ও আত্মার মাঝে থাকতেই আমি নবী ছিলাম।” আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে হাকীমে বর্ণিত আরেকটি বর্ণনায় রয়েছে- (كنت أول النبيين في الخلق وأخر هم في البعث) “আমি সৃষ্টি হিসেবে প্রথম নবী, কিন্তু প্রেরণ হিসেবে শেষ নবী” কিন্তু মানুষের মুখে প্রচলিত বাক্য (كنت نبيا وآدم بين الماء والطين) “আদম পানি মাটির মধ্যে থাকতেই আমি নবী ছিলাম।” এ হাদীস সম্পর্কে সাখাবী বলেন, এই বাক্য সম্পর্কে আমি অবগত নই। যারকাশী বলেন, এই শব্দে হাদীসটির কোন ভিত্তি নেই। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ১০/৫৬, মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৫৯-[২১] “ইরবায ইবনু সারিয়াহ্ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলার কাছে আমি তখনো ’খাতামুন্‌ নাবিয়্যিন’ হিসেবে লিপিবদ্ধ ছিলাম যখন আদম আলায়হিস সালাম ছিলেন মাটির খামিরায়। আমি তোমাদেরকে আরো বলছি যে, আমার নুবুওয়াতের প্রথম প্রকাশ হলো ইবরাহীম আলায়হিস সালাম -এর দু’আ এবং ঈসা আলায়হিস সালাম -এর ভবিষ্যদ্বাণী আর আমার মায়ের সরাসরি স্বপ্ন, যা তিনি আমাকে প্রসবকালে দেখেছিলেন যে, তাঁর সামনে একটি আলো উদ্ভাসিত হয়েছে, যার আলোতে তিনি সিরিয়ার রাজ প্রাসাদ পর্যন্ত দেখতে পান। (শারহুস্ সুন্নাহ্) ।

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَن العِرْباض بن ساريةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: إِنِّي عِنْدَ اللَّهِ مَكْتُوبٌ: خَاتَمُ النَّبِيِّينَ وَإِنَّ آدَمَ لِمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ وَسَأُخْبِرُكُمْ بِأَوَّلِ أَمْرِي دَعْوَةُ إِبْرَاهِيمَ وَبِشَارَةُ عِيسَى وَرُؤْيَا أُمِّي الَّتِي رَأَتْ حِينَ وَضَعَتْنِي وَقَدْ خَرَجَ لَهَا نُورٌ أَضَاءَ لَهَا مِنْهُ قُصُورُ الشَّامِ «. وَرَاه فِي» شرح السّنة

اسنادہ حسن ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 207 ح 3626) [و احمد (4 / 127 ح 17280 ، 4 / 128 ح 17281) و صححہ ابن حبان (الموارد : 2093) و الحاکم (2 / 600) فتعقبہ الذھبی ، قال :’’ ابوبکر (ابن ابی مریم) ضعیف ‘‘ قلت ؒ لم ینفرد بہ ، بل تابعہ الثقۃ معاویۃ بن صالح عن سعید بن سوید عن ابن ھلال السلمی عن العرباض بن ساریۃ رضی اللہ عنہ بہ و سندہ حسن ۔
(صَحِيح)

وعن العرباض بن سارية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم انه قال اني عند الله مكتوب خاتم النبيين وان ادم لمنجدل في طينته وساخبركم باول امري دعوة ابراهيم وبشارة عيسى ورويا امي التي رات حين وضعتني وقد خرج لها نور اضاء لها منه قصور الشام وراه في شرح السنةاسنادہ حسن رواہ البغوی فی شرح السنۃ 13 207 ح 3626 و احمد 4 127 ح 17280 4 128 ح 17281 و صححہ ابن حبان الموارد 2093 و الحاکم 2 600 فتعقبہ الذھبی قال ابوبکر ابن ابی مریم ضعیف قلت ؒ لم ینفرد بہ بل تابعہ الثقۃ معاویۃ بن صالح عن سعید بن سوید عن ابن ھلال السلمی عن العرباض بن ساریۃ رضی اللہ عنہ بہ و سندہ حسن ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (لِمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ) অর্থাৎ মাটির খামিরার মধ্যে ছিলেন। পূর্বে উল্লেখিত একাধিক হাদীস এবং এই হাদীসের একই মর্ম। অর্থাৎ আদমের মাঝে আত্মা ফুকার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাত নির্ধারিত হয়ে গেছে। হাদীসের পরের অংশ রাসূল (সা.) তার নুবুওয়্যাত প্রকাশের সংবাদ দেন।

(بِأَوَّلِ أَمْرِي دَعْوَةُ إِبْرَاهِيمَ) অর্থাৎ আমার নুবুওয়্যাতের বিষয় প্রথম প্রকাশ পেয়েছে ইবরাহীম আলায়হিস সালাম এর দাওয়াতের মাধ্যমে। অর্থাৎ তিনি সর্বপ্রথম আমার নুবুওয়্যাতের বিষয় প্রকাশ করেন। যেমন কাবাহ নির্মাণের সময় তিনি বলেন- (رَبَّنَا وَ ابۡعَثۡ فِیۡهِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡهُمۡ) “হে পরওয়ারদিগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুন”- (সূরা আল বাকারাহ ২ : ১২৯)। আল্লাহ তা'আলা এই দু'আ কবুল করেন। রাসূল (সা.) -এর নুবুওয়াতের প্রথম প্রকাশ বলতে এটাই বুঝিয়েছেন। তারপর ‘ঈসা আলায়হিস সালাম-এর দেয়া সুসংবাদ। এই সুসংবাদের মাঝেও তাঁর নুবুওয়্যাত প্রকাশ পেয়েছে। “ঈসা আলায়হিস সালাম-এর সুসংবাদ যেমন কুরআনে এসেছে
(وَ مُبَشِّرًۢا بِرَسُوۡلٍ یَّاۡتِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِی اسۡمُهٗۤ اَحۡمَدُ ؕ) “আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমাদ।” (সূরাহ্ আস্ সফ ৬১ : ৬)।
এখানেও নবী (সা.) -এর নুবুওয়াতের প্রকাশ ঘটেছে। নবী (সা.) - পৃথিবীতে আগমনের পূর্বে তাঁর নুবুওয়্যাত প্রকাশের তৃতীয় ধাপ তাঁর মায়ের স্বপ্ন। গর্ভাবস্থায় রাসূল (সা.) -এর মাতা স্বপ্নে দেখেছেন, একটি আলো তার থেকে বের হয়ে শামের প্রাসাদে ছড়িয়ে গেছে। মোটকথা, রাসূল (সা.) পৃথিবীতে আগমনের অনেক পূর্বে অর্থাৎ আদম আলায়হিস সালাম জীবন লাভের পূর্বেই তার নুবুওয়্যাত নির্ধারিত হয়েছে এবং আগমনের অনেক পূর্বে তার নুবুওয়্যাত প্রকাশ করা হয়েছে। [এক] ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর দুয়ায়। [দুই] ‘ঈসা আলায়হিস সালাম-এর সুসংবাদে। [তিন] মায়ের স্বপ্নের মাধ্যমে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬০-[২২] আর ইমাম আহমাদ (রহিমাহুল্লাহ) (سأخبركم) হতে শেষ পর্যন্ত আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَرَوَاهُ أَحْمَدُ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ مِنْ قَوْلِهِ: «سأخبركم» إِلَى آخِره

حسن ، رواہ احمد (5 / 262 ح 21616) و سندہ ضعیف من اجل الفرج بن فضالۃ و الحدیث السابق شاھد لہ وھو بہ حسن ۔
(صَحِيح)

ورواه احمد عن ابي امامة من قوله ساخبركم الى اخرهحسن رواہ احمد 5 262 ح 21616 و سندہ ضعیف من اجل الفرج بن فضالۃ و الحدیث السابق شاھد لہ وھو بہ حسن ۔صحيح

ব্যাখ্যা: পূর্বের হাদীসটি ছিল ‘ইরবায ইবনু সারিয়াহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এই একই বিষয়ের হাদীস আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকেও বর্ণিত। দ্বিতীয়বার হাদীসটি উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হলো একাধিক বর্ণনাসূত্র দেখানো।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬১-[২৩] আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন আমিই হব আদম আলায়হিস সালাম-এর সন্তানদের নেতা, এটা গর্ব নয়। আর সেদিন আমার হাতেই থাকবে ’মাকামে হামদের পতাকা’, এতেও গর্ব নয়। সেদিন আদম আলায়হিস সালাম-সহ সকল নবীগণই আমার পতাকার নিচে এসে একত্রিত হবেন। আর সকলের আগে আমি কবর ফেটে উত্থিত হব, এতেও গর্ব নয়। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرَ وَبِيَدِي لِوَاءُ الْحَمْدِ وَلَا فَخْرَ. وَمَا مِنْ نَبِيٍّ يَوْمَئِذٍ آدَمُ فَمَنْ سِوَاهُ إِلَّا تَحْتَ لِوَائِي وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الْأَرْضُ وَلَا فَخْرَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3148 وقال : حسن) * علی بن زید بن جدعان ضعیف و لاکثر الفاظ الحدیث شواھد صحیحۃ وھی تغنی عن ھذا الحدیث

وعن ابي سعيد قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم انا سيد ولد ادم يوم القيامة ولا فخر وبيدي لواء الحمد ولا فخر وما من نبي يومىذ ادم فمن سواه الا تحت لواىي وانا اول من تنشق عنه الارض ولا فخر رواه الترمذيسندہ ضعیف رواہ الترمذی 3148 وقال حسن علی بن زید بن جدعان ضعیف و لاکثر الفاظ الحدیث شواھد صحیحۃ وھی تغنی عن ھذا الحدیث

ব্যাখ্যা: (وَلَا فَخْرَ) “কোন গর্বের বিষয় নয়” অর্থাৎ আমি এ কথা গর্ব করার জন্য বলছি না। বরং আল্লাহ তা'আলার নি'আমাত ও আমার ওপর তার অনুগ্রহ এবং আমাকে যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা প্রকাশের জন্য বলছি। কেউ কেউ বলেন, বাক্যের মর্ম হলো, আমি এ নিয়ে গর্ব করছি না। বরং যিনি আমাকে এই সম্মান দিয়েছেন তাকে নিয়ে গর্ব করছি। বাক্যের অর্থ এটাও হতে পারে যে, এই সরদারীতে আমার কোন গর্ব নেই। আমার গর্ব তাঁর দাসত্বের মাঝে। কেননা দাসত্বই সৌন্দর্যতা লাভ ও অতিরিক্ত নি'আমাত লাভের কারণ।

(وَبِيَدِي لِوَاءُ الْحَمْدِ) “আমারই হাতে থাকবে প্রশংসার পতাকা।” মিরকাতুল মাফাতীহ গ্রন্থকার বলেন, কিয়ামতের ময়দানে বিভিন্ন স্থান থাকবে। ভালো লোক, মন্দ লোক সবাইকে একেকটি স্থানে দাঁড় করানো হবে। সেই স্থানের অনুসৃত ব্যক্তির হাতে একটি ঝাণ্ডা থাকবে যা দেখে বুঝা যাবে তিনি সত্যের আদর্শ ছিলেন, নাকি মন্দের আদর্শ ছিলেন। এ স্থানগুলোর সর্বোচ্চ স্থান হবে প্রশংসার স্থান। আর এই স্থানের ঝাণ্ডা রাসূল (সা.) -এর হাতে থাকবে। নিহায়াহ গ্রন্থে রয়েছে, ঝাণ্ডা কেবল সেনাপতির হাতে থাকে। তাই এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, কিয়ামত দিবসে সকল সৃষ্টির সামনে তার প্রসিদ্ধি লাভ ঝাণ্ডা দ্বারা তার প্রসিদ্ধি বুঝানো হয়েছে। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, প্রশংসার ঝাণ্ডা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, সকল সৃষ্টির সামনে প্রসিদ্ধি ও প্রশংসায় তাঁর একক মর্যাদা দেখানো। তবে কিয়ামতের দিন তার প্রশংসার প্রকৃত ঝাণ্ডা থাকতে পারে, যার নাম প্রশংসার ঝাণ্ডা। তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ)-এর একই মত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তা'আলার সৎ বান্দাদের যে স্থানগুলো রয়েছে তন্মধ্যে সর্বোচ্চ স্থান প্রশংসার স্থান। অন্যান্য স্থান এর নিচে। আমাদের রাসূল (সা.) যখন রাসূলদের সরদার, দুনিয়া ও আখিরাতে সর্বাধিক প্রশংসাকারী; তাই তাঁরই হাতে প্রশংসার ঝাণ্ডা দেয়া হবে এবং সবাই তার সেই ঝাণ্ডা তলে আশ্রয় নিবে। এদিকে ইঙ্গিত করে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন -
(وَمَا مِنْ نَبِيٍّ يَوْمَئِذٍ آدَمُ فَمَنْ سِوَاهُ إِلَّا تَحْتَ لِوَائِي) “সেদিন সকল নবী এমনকি আদম ও আদম ছাড়া সবাই আমার ঝাণ্ডার নিচে থাকবে। এ কারণে তাঁর নাম (الحمد) শব্দ থেকে উদ্গত। তিনি মুহাম্মাদ এবং আহমদ। কিয়ামত দিবসে তাকে মাকামে মাহমূদে অধিষ্ঠিত করা হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬২-[২৪] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কতিপয় সাহাবী এক স্থানে বসে কথাবার্তা বলছিলেন। এ সময় রাসূল (সা.) সে দিকে বের হলেন এবং তাদের কাছে পৌছে তাদের কথাবার্তা ও আলোচনাগুলো শ্রবণ করলেন। তাদের একজন বললেন, আল্লাহ তা’আলা ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-কে খলীল বানিয়েছেন। আরেকজন বললেন, মূসা ’আলায়হিস সালাম (কালিমুল্লাহ) ছিলেন এমন, আল্লাহ তা’আলা যার সাথে বিনা মধ্যস্থতায় কথা বলেছেন। অপর একজন বললেন, “ঈসা আলায়হিস সালাম ছিলেন কালিমাতুল্লাহ ও রূহুল্লাহ এবং আরেকজন বললেন, আদম ’আলায়হিস সালাম-কে আল্লাহ তা’আলা সফীউল্লাহ বানিয়েছেন।
এ সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের সামনে উপস্থিত হয়ে বললেন, আমি তোমাদের কথাবার্তা এবং তোমরা যে বিস্ময় প্রকাশ করেছ তা শুনেছি। ইবরাহীম আলায়হিস সালাম যে খলীলুল্লাহ ছিলেন তা সত্যই। মূসা আলায়হিস সালাম যে বিনা মধ্যস্থতায় আল্লাহর সাথে কথাবার্তা বলেছেন এটাও সত্য কথা। ঈসা আলায়হিস সালাম যে রূহুল্লাহ ও কালিমাতুল্লাহ ছিলেন এটাও প্রকৃত কথা এবং আদম ’ আলায়হিস সালাম যে আল্লাহর নির্বাচিত, মর্যাদাসম্পন্ন ছিলেন, এটাও সম্পূর্ণ বাস্তব। তবে জেনে রাখ, আমি হলাম আল্লাহর হাবীব’, এতে গর্ব নয় এবং কিয়ামতের দিন আমিই হামদের পতাকা উত্তোলন ও বহনকারী হব আদম ও অন্যান্য নবীগণ উক্ত পতাকার নীচেই থাকবেন, এতে গর্ব নয়। কিয়ামতের দিন আমিই হব সর্বপ্রথম শাফা’আতকারী এবং সর্বপ্রথম আমার সুপারিশই গ্রহণ করা হবে এতে গর্ব নয়। আমিই সর্বপ্রথম জান্নাতের দরজার কড়া নাড়া দেব। তখন আল্লাহ তা’আলা আমার জন্য তা খুলে দেবেন এবং আমাকে তাতে প্রবেশ করাবেন। আর আমার সাথে থাকবে দরিদ্র ঈমানদারগণ, এতে গর্ব নয়। পরিশেষে কথা হলো, আর আমিই পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের চেয়ে মর্যাদাবান, এটাও গর্ব নয়। (তিরমিযী ও দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَن ابْن عَبَّاس قَالَ: جَلَسَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَرَجَ حَتَّى إِذَا دَنَا مِنْهُمْ سَمِعَهُمْ يَتَذَاكَرُونَ قَالَ بَعْضُهُمْ: إِنَّ اللَّهَ اتَّخَذَ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلًا وَقَالَ آخَرُ: مُوسَى كَلَّمَهُ اللَّهُ تَكْلِيمًا وَقَالَ آخَرُ: فَعِيسَى كَلِمَةُ الله وروحه. وَقَالَ آخَرُ: آدَمُ اصْطَفَاهُ اللَّهُ فَخَرَجَ عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «قَدْ سَمِعْتُ كَلَامَكُمْ وَعَجَبَكُمْ أَنَّ إِبْرَاهِيمَ خَلِيل الله وَهُوَ كَذَلِكَ وَآدَمُ اصْطَفَاهُ اللَّهُ وَهُوَ كَذَلِكَ أَلَا وَأَنَا حَبِيبُ اللَّهِ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا حَامِلُ لِوَاءِ الْحَمْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تَحْتَهُ آدَمُ فَمَنْ دُونَهُ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا أَوَّلُ شَافِعٍ وَأَوَّلُ مُشَفَّعٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ يُحَرِّكُ حَلَقَ الْجَنَّةِ فَيَفْتَحُ اللَّهُ لِي فَيُدْخِلُنِيهَا وَمَعِي فُقَرَاءُ الْمُؤْمِنِينَ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا أَكْرَمُ الْأَوَّلِينَ وَالْآخَرِينَ عَلَى اللَّهِ وَلَا فَخر» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ والدارمي

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3616 وقال : غریب) و الدارمی (1 / 26 ح 48) * فیہ زمعۃ بن صالح : ضعیف ، و حدیثہ عند مسلم مقرون ۔
(ضَعِيف)

وعن ابن عباس قال جلس ناس من اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم فخرج حتى اذا دنا منهم سمعهم يتذاكرون قال بعضهم ان الله اتخذ ابراهيم خليلا وقال اخر موسى كلمه الله تكليما وقال اخر فعيسى كلمة الله وروحه وقال اخر ادم اصطفاه الله فخرج عليهم رسول الله صلى الله عليه وسلم وقال قد سمعت كلامكم وعجبكم ان ابراهيم خليل الله وهو كذلك وادم اصطفاه الله وهو كذلك الا وانا حبيب الله ولا فخر وانا حامل لواء الحمد يوم القيامة تحته ادم فمن دونه ولا فخر وانا اول شافع واول مشفع يوم القيامة ولا فخر وانا اول من يحرك حلق الجنة فيفتح الله لي فيدخلنيها ومعي فقراء المومنين ولا فخر وانا اكرم الاولين والاخرين على الله ولا فخر رواه الترمذي والدارمياسنادہ ضعیف رواہ الترمذی 3616 وقال غریب و الدارمی 1 26 ح 48 فیہ زمعۃ بن صالح ضعیف و حدیثہ عند مسلم مقرون ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (يَتَذَاكَرُونَ) ব্যাকরণে বাক্যটি (سمعهم) এর সর্বনাম (هم) থেকে হাল। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে আলোচনার অবস্থায় পেলেন। তারা পরস্পর নবীদের একেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এগুলো শুনে রাসূল (সা.)-এর ভালো লেগেছে। কেননা রাসূল (সা.) -এর মাধ্যমেই তারা নবীদের এসব বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হওয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাই রাসূল (সা.) প্রথমে তাদেরকে আলোচনার স্বীকৃতি দেন। পরবর্তীতে নিজের কয়েকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন যা ইতোপূর্বে কয়েকটি হাদীসে অতিবাহিত হয়েছে। তাদের আলোচনার সময় নিজের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরার উদ্দেশ্য এই হতে পারে যে, কারো দু একটি বিশেষ গুণ দেখে তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করার সুযোগ নেই এ কথা বুঝানো। কেননা যার কাছে অন্যের গুণাবলি আড়াল রয়েছে সে কারো একটি গুণ দেখেই তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করে নিতে পারে। তাই রাসূল (সা.) তাদের এই সন্দেহ দূর করেন। সাথে সাথে (ولا فخر) বলে এ কথার ইঙ্গিত করেন যে, আমি অহংকারবশত তোমাদের সামনে আমার বৈশিষ্ট্য তুলে ধরছি না। বরং তোমাদেরকে জানানোর জন্য তা তুলে ধরছি; যাতে সবার প্রকৃত মর্যাদা তোমাদের সামনে থাকে।
(وَمَعِي فُقَرَاءُ الْمُؤْمِنِينَ) “আর আমার সাথে দরিদ্র মু'মিনেরা থাকবে।" অর্থাৎ আনসার ও মুহাজিরদের যারা দরিদ্র ছিল তারা আমার সাথে থাকবে। যেমন পূর্বে বর্ণিত হয়েছে -
(يد خل الفقر اء الجنة قبل الأ غنياء بخمسمائة عام نصف يوم) “দরিদ্ররা ধনীদের পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এতে প্রমাণিত হয় যে, কৃতজ্ঞ ধনীর চেয়ে ধৈর্যশীল দরিদ্র অধিক মর্যাদাবান। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬৩-[২৫] ’আমর ইবনু কায়স (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমরা সকলের শেষে এসেছি, কিন্তু কিয়ামতের দিন আমরা সকলের আগে থাকব। আমি আজ তোমাদেরকে বিশেষ একটি কথা বলব, তবে এতে আমার কোন গর্ব করার নেই। ইবরাহীম আলায়হিস সালাম আল্লাহর বন্ধু, মূসা আলায়হিস সালাম আল্লাহর নির্বাচিত এবং আমি হলাম আল্লাহর হাবীব। কিয়ামতের দিন হাম্‌দের পতাকা আমার সাথেই থাকবে। আল্লাহ আমার উম্মাতের ব্যাপারে আমার সাথে অঙ্গীকার করেছেন এবং তিনি তাদেরকে তিনটি বিষয় হতে নিরাপত্তা দিয়েছেন। ১. ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দ্বারা তাদেরকে ধ্বংস করবেন না। ২. শত্রুরা তাদেরকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারবে না এবং ৩. বিশ্বের সকল মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্টতার উপরে একত্রিত করবেন না। (দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَن عَمْرو بن قَيْسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: نَحْنُ الْآخِرُونَ وَنَحْنُ السَّابِقُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَإِنِّي قَائِلٌ قَوْلًا غَيْرَ فَخْرٍ: إِبْرَاهِيمُ خَلِيلُ الله ومُوسَى صفي الله وَأَنا حبييب اللَّهِ وَمَعِي لِوَاءُ الْحَمْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَإِنَّ اللَّهَ وَعَدَنِي فِي أُمَّتِي وَأَجَارَهُمْ مِنْ ثَلَاثٍ: لَا يَعُمُّهُمْ بِسَنَةٍ وَلَا يَسْتَأْصِلُهُمْ عَدُوٌّ وَلَا يجمعهُمْ على ضَلَالَة . رَوَاهُ الدَّارمِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الدارمی (1 / 29 ح 55) * السند منقطع ، و عمرو بن قیس : لم اعرفہ و لعلہ ابو ثور الشامی ۔
(ضَعِيف)

وعن عمرو بن قيس ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال نحن الاخرون ونحن السابقون يوم القيامة واني قاىل قولا غير فخر ابراهيم خليل الله وموسى صفي الله وانا حبييب الله ومعي لواء الحمد يوم القيامة وان الله وعدني في امتي واجارهم من ثلاث لا يعمهم بسنة ولا يستاصلهم عدو ولا يجمعهم على ضلالة رواه الدارمياسنادہ ضعیف رواہ الدارمی 1 29 ح 55 السند منقطع و عمرو بن قیس لم اعرفہ و لعلہ ابو ثور الشامی ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: হাদীসে উল্লেখিত প্রতিটি বিষয় পূর্বে বিভিন্ন হাদীসে এসেছে।
(وَإِنِّي قَائِلٌ قَوْلًا غَيْرَ فَخْرٍ) এই বাক্যে স্পষ্ট করে দিলেন যে, রাসূল (সা.) তাঁর অগ্রগামিতা অন্যান্য বিশেষ মর্যাদার যে কথাগুলো বলছেন সেগুলো গর্ব হিসেবে নয়। বরং আল্লাহ তা'আলার নি'আমাতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও উম্মতকে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে অবগত করার জন্য বলেছেন। (সম্পাদকীয়)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আমর ইবনু কায়স (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬৪-[২৬] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: (কিয়ামতের মাঠে অথবা জান্নাতে) আমি হব সকল নবীদের পরিচালক বা অগ্রগামী। এটা আমি অহংকারী হিসেবে বলছি না। আমি হলাম নবীদের আগমনের ধারাকে সমাপ্তকারী, এতে আমার কোন গর্ব নেই। আর আমিই হব সর্বপ্রথম সুপারিশময়ী এবং সর্বপ্রথম আমার সুপারিশ কবুল করা হবে। এতে আমার কোন অহংকার নেই। (দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ جَابِرٌ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَنَا قَائِدُ الْمُرْسَلِينَ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا خَاتَمُ النَّبِيِّينَ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا أَوَّلُ شافعٍ وَمُشَفَّع وَلَا فَخر» . رَوَاهُ الدَّارمِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الدارمی (1 / 27 ح 50) * فیہ صالح بن عطاء بن خباب مجھول الحال وثقہ ابن حبان وحدہ و للحدیث شواھد صحیحۃ دون قولہ :’’ انا قائد المرسلین ‘‘ و اللہ اعلم ۔
(ضَعِيف)

وعن جابر ان النبي صلى الله عليه وسلم قال انا قاىد المرسلين ولا فخر وانا خاتم النبيين ولا فخر وانا اول شافع ومشفع ولا فخر رواه الدارميسندہ ضعیف رواہ الدارمی 1 27 ح 50 فیہ صالح بن عطاء بن خباب مجھول الحال وثقہ ابن حبان وحدہ و للحدیث شواھد صحیحۃ دون قولہ انا قاىد المرسلین و اللہ اعلم ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (قَائِدُ الْمُرْسَلِينَ) “রাসূলদের কায়িদ” “কায়িদ' শব্দের অর্থ দলের পরিচালক বা নেতা। যিনি সর্বাগ্রে থেকে দলকে পরিচালনা করেন তাকে ‘কায়িদ' বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) কিয়ামত দিবসে সকল নবীর আগে থাকবেন এবং সবাই তাঁকে অনুসরণ করে চলবেন।
(أَنَا خَاتَمُ النَّبِيِّينَ) “আমি শেষ নবী।” তিনি যেমন শেষ নবী তেমন শেষ রাসূল। তার পরে না কোন নবী আসবেন, না রাসূল। কিন্তু শেষ রাসূল না বলে শেষ নবী বলার কারণ হলো, রসূলের চেয়ে নবী ব্যাপক। তাই শেষ নবী বলার মধ্যে নুবুওয়্যাত ও রিসালাতের সমাপ্তি পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬৫-[২৭] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন যখন মানুষদেরকে কবর হতে উঠানো হবে, তখন আমিই সর্বপ্রথম কবর হতে বের হয়ে আসব। আর যখন লোকেরা দলবদ্ধ হয়ে আল্লাহ তা’আলার কাছে উপস্থিত হওয়ার জন্য রওয়ানা হবে, তখন আমিই হব তাদের অগ্রগামী ও প্রতিনিধি, আর আমিই হব তাদের মুখপাত্র, যখন তারা নীরব থাকবে। আর যখন তারা আটক হবে, তখন আমিই হব তাদের সুপারিশকারী। আর যখন তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বে, তখন আমিই তাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করব। মর্যাদা এবং কল্যাণের চাবিসমূহ সেদিন আমার হাতে থাকবে। আল্লাহর প্রশংসার পতাকা সেদিন আমার হাতে থাকবে। আমার পতাকার কাছে আদমের সন্তানদের মধ্যে আমিই সর্বাপেক্ষা অধিক মর্যাদাবান ও সম্মানী লোক হব। সেদিন হাজারখানেক সেবক আমার চতুষ্পর্শ্বে ঘোরাফেরা করবে, যেন তারা সুরক্ষিত ডিম কিংবা বিক্ষিপ্ত মুক্তা। [তিরমিযী ও দারিমী, ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنَا أَوَّلُ النَّاسِ خُرُوجًا إِذَا بُعِثُوا وَأَنَا قَائِدُهُمْ إِذَا وَفَدُوا وَأَنَا خَطِيبُهُمْ إِذَا أَنْصَتُوا وَأَنَا مُسْتَشْفِعُهُمْ إِذَا حُبِسُوا وَأَنَا مُبَشِّرُهُمْ إِذَا أَيِسُوا الْكَرَامَةُ وَالْمَفَاتِيحُ يَوْمَئِذٍ بِيَدِي وَلِوَاءُ الْحَمْدِ يَوْمَئِذٍ بِيَدِي وَأَنَا أَكْرَمُ وَلَدِ آدَمَ عَلَى رَبِّي يَطُوفُ عَلَيَّ أَلْفُ خادمٍ كأنَّهنَّ بَيْضٌ مُكْنُونٌ أَوْ لُؤْلُؤٌ مَنْثُورٌ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيب

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3610) و الدارمی (1 / 26 ۔ 27 ح 49) * فیہ لیث بن ابی سلیم : ضعیف ۔
(ضَعِيفٌ)

وعن انس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم انا اول الناس خروجا اذا بعثوا وانا قاىدهم اذا وفدوا وانا خطيبهم اذا انصتوا وانا مستشفعهم اذا حبسوا وانا مبشرهم اذا ايسوا الكرامة والمفاتيح يومىذ بيدي ولواء الحمد يومىذ بيدي وانا اكرم ولد ادم على ربي يطوف علي الف خادم كانهن بيض مكنون او لولو منثور رواه الترمذي والدارمي وقال الترمذي هذا حديث غريباسنادہ ضعیف رواہ الترمذی 3610 و الدارمی 1 26 ۔ 27 ح 49 فیہ لیث بن ابی سلیم ضعیف ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: হাদীসে উল্লেখিত মর্মগুলো পূর্বে বিক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ হয়েছে। এ হাদীসে অতিরিক্ত দু' একটি সহ পুনঃবার তা আলোচনা করা হয়েছে। এখানে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর যে বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা হয়েছে:
এক: (أَنَا أَوَّلُ النَّاسِ خُرُوجًا إِذَا بُعِثُوا) অর্থাৎ কবর থেকে যখন পুনরুত্থানের জন্য উঠানো হবে সর্বপ্রথম বের হয়ে আমি হাশরের ময়দানের দিকে যাবো।

দুই: (وَأَنَا قَائِدُهُمْ إِذَا وَفَدُوا) অর্থাৎ যখন সবাই আল্লাহ তা'আলার কাছে আগমন করবে তখন আমি তাদের নেতা ও পরিচালক হব।

তিন: (وَأَنَا خَطِيبُهُمْ إِذَا أَنْصَتُوا) সবাই যখন চুপ থাকবে, কেউ ওযর প্রকাশ করার সাহস পাবে না, সবাই পেরেশান থাকবে, তখন আমি সবার পক্ষ থেকে কথা বলব। সেদিন আমাকে ছাড়া কাউকে কথা বলার সুযোগ দেয়া হবে না।

চার: (وَأَنَا مُسْتَشْفِعُهُمْ إِذَا حُبِسُوا) সবাইকে যখন আটকে দেয়া হবে তখন আমি সবার সুপারিশকারী হব। রাসূল (সা.)-এর বিশেষিত এই সুপারিশ বিচারকার্য শুরু করার সুপারিশ। কিয়ামতের ভয়াবহ ময়দানে সবার আকাঙ্ক্ষা থাকবে বিচারকার্য দ্রুত শুরু হয়ে যাওয়া। কিন্তু কেউ এর জন্য সুপারিশের সাহস করবে না। হাদীসের সকল গ্রন্থে বিষয়টি বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।

পাঁচ: (وَأَنَا مُبَشِّرُهُمْ إِذَا أَيِسُوا) যেদিন সবাই নিরাশ হয়ে যাবে সেদিন আমি সবার সুসংবাদদাতা। নিরাশার সময় সুসংবাদ দিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করা আমার বৈশিষ্ট্য। বাহ্যত এই তিন বৈশিষ্ট্যের মর্ম এক। সবগুলোর সার হলো, কিয়ামত দিবসে কেউ যখন বিচারকার্য শুরু করার আবেদনের সাহস করবে না, তখন আমি কথা বলে সুপারিশ করে সবার জন্য সুসংবাদ এনে দিব।

ছয়: (وَالْمَفَاتِيحُ يَوْمَئِذٍ بِيَدِي) অর্থাৎ সেদিন আমার হাতে চাবি থাকবে। চাবি দ্বারা জান্নাতে প্রথম প্রবেশ উদ্দেশ্য হবে। জান্নাতে সবার আগে প্রবেশের বৈশিষ্ট্য রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর, যা পূর্বে অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

সাত: (وَلِوَاءُ الْحَمْدِ يَوْمَئِذٍ بِيَدِي) প্রশংসার ঝাণ্ডা সেদিন আমার হাতে থাকবে। প্রশংসার ঝাণ্ডা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে থাকবে এবং এর দ্বারা তার মর্যাদা বুঝানো হয়েছে। আর তা রাসূল (সা.)-এর হাতে থাকার আলোচনা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।

আট: (وَأَنَا أَكْرَمُ وَلَدِ آدَمَ عَلَى رَبِّي) আমি আমার প্রতিপালকের কাছে আদম সন্তানদের মাঝে সবচেয়ে সম্মানী। রাসূল আদম সন্তানদের সরদার ও সবচেয়ে সম্মানী মর্মে পূর্বে আমরা কয়েকটি হাদীস দেখেছি।
(أَنَا مُبَشِّرُهُمْ إِذَا أَيِسُوا) যখন মু'মিন বান্দাগণ আল্লাহর রহমত, দয়া, অনুগ্রহ হতে নিরাশ হবে। তারা ভয় করবে হয়তো তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে তখন আমি তাদের সুসংবাদ দিব।
হাশরের ময়দান বিভিন্ন ধরনের অবস্থা হবে। কোন স্থান হবে যেখানে মানুষেরা ওযর পেশ করবে। আবার কোন স্থান হবে যেখানে কথা বলা ও ওযর পেশ করা নিষিদ্ধ থাকবে। এক আয়াতে কাফিরদের কথা বলা ও ওযর পেশ করার কথা রয়েছে। কিয়ামতের দিন যখন মানুষদেরকে কবর থেকে উত্থিত করা হবে। তখন আমি সর্বপ্রথম কবর থেকে বের হয়ে আসব। যখন সকলে তাদের রবের নিকট যাবে ওযর পেশ করার জন্য ঐ সময় সকল মানুষের সামনে আমি আল্লাহ তা'আলার সাথে কথা বলব। মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা করবেন। তিনি ব্যতীত অন্য কাউকে কথা বলার জন্য সুযোগ দেয়া হবে না।
এ মর্মে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, “এটা এমন একদিন যেদিন না তারা কথা বলবে, আর তাদেরকে অজুহাত পেশ করার অনুমতিও দেয়া হবে না”- (সূরাহ আল মুরসালাত ৭৭: ৩৫-৩৬)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬৬-[২৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আমাকে জান্নাতের তৈরি পোশাকের একটি পোশাক পরিধান করানো হবে। অতঃপর আমি আরশের ডান পার্শ্বে গিয়ে দাঁড়াব। অথচ আমি ছাড়া আল্লাহর সৃষ্টজীবের মধ্যে অন্য কেউই উক্ত স্থানে দাঁড়াতে পারবে না। (তিরমিযী)

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে ’জামিউল উসূল’ গ্রন্থে অপর একটি বর্ণনায় আছে, আমিই সর্বপ্রথম লোক, যার কবর খুলে যাবে এবং আমাকেই সর্বপ্রথম কাপড় পরিধান করানো হবে।

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «فَأُكْسَى حُلَّةً مِنْ حُلَلِ الْجَنَّةِ ثُمَّ أَقُومُ عَنْ يَمِينِ الْعَرْشِ لَيْسَ أَحَدٌ مِنَ الْخَلَائِقِ يقومُ ذلكَ المقامَ غَيْرِي» . رَوَاهُ الترمذيُّ. وَفِي رِوَايَة «جَامع الْأُصُول» عَنهُ: «أَنَا أَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الْأَرْضُ فَأُكْسَى»

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3611 وقال : حسن غریب صحیح) * ابو خالد الدالانی مدلس و عنعن و احادیث مسلم (196 ، 2278)، (5940) وغیرہ تغنی عنہ ۔
(ضَعِيفٌ)

وعن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال فاكسى حلة من حلل الجنة ثم اقوم عن يمين العرش ليس احد من الخلاىق يقوم ذلك المقام غيري رواه الترمذي وفي رواية جامع الاصول عنه انا اول من تنشق عنه الارض فاكسىسندہ ضعیف رواہ الترمذی 3611 وقال حسن غریب صحیح ابو خالد الدالانی مدلس و عنعن و احادیث مسلم 196 2278 5940 وغیرہ تغنی عنہ ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসের মাধ্যমে জানা যায় যে, হাশরের ময়দানে সকল মানুষ, জিন, মালায়িকার (ফেরেশতাদের) মাঝে মুহাম্মাদ (সা.) -কে তার কবর হতে প্রথমে উঠানো হবে এবং তাকে জান্নাতে তৈরি এক জোড়া পোশাক পরিধান করানো হবে। এটার মাধ্যমে সকল সৃষ্টিজীবের ওপর মুহাম্মাদ (সা.) -এর মর্যাদা বুঝানো হয়েছে। এই মর্যাদা শুধু মুহাম্মাদ (সা.) -এর ওপরে বর্ণিত “জামিউল উসূল” গ্রন্থের বর্ণিত হাদীসের সাথে সম্পৃক্ত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬৭-[২৯] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর কাছে ওয়াসীলাহ্ কামনা কর। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ওয়াসীলাহ্ কী? তিনি (সা.) বললেন, তা জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদার একটি বিশেষ স্থান। যা কেবলমাত্র এক লোকই লাভ করবে। অতএব আশা করি আমিই হব সে লোক। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «سلوا الله الْوَسِيلَةَ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْوَسِيلَةُ؟ قَالَ: «أَعْلَى دَرَجَةٍ فِي الْجَنَّةِ لَا يَنَالُهَا إِلَّا رجلٌ واحدٌ وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

حسن ، رواہ الترمذی (3612 وقال : غریب ، اسنادہ لیس بالقوی) و للحدیث شواھد قویۃ وھوبھا حسن ۔
(صَحِيح)

وعنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال سلوا الله الوسيلة قالوا يا رسول الله وما الوسيلة قال اعلى درجة في الجنة لا ينالها الا رجل واحد وارجو ان اكون انا هو رواه الترمذيحسن رواہ الترمذی 3612 وقال غریب اسنادہ لیس بالقوی و للحدیث شواھد قویۃ وھوبھا حسن ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (سلوا الله الْوَسِيلَةَ) সালাতের প্রত্যেক আযানের দু'আতেই (ات محمد وسيلة والفضيله) দ্বারা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য আমরা সেই উচ্চ মাকামের দু'আ করে থাকি।
আল বিদায়াহ্ ওয়াল নিহায়াহ্ গ্রন্থকার বলেছেন, (الْوَسِيلَةَ) শব্দটি হলো একবচন, এর বহুবচন হলো (وسائل) ওয়াসীলাহ্ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো এমন জিনিস বুঝানো হয়েছে যা দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা হয়। বলা হয়: কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে শাফা'আত করা। বলা হয়: জান্নাতের স্থানসমূহের মাঝে একটি স্থান। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, এটা দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) - উম্মতের জন্য আল্লাহর নিকট দু'আ করবে নিজের জন্য অথবা উম্মাতের সকলের কল্যাণের জন্য। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬৮-[৩০] উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন আমিই হব নবীদের নেতা ও মুখপাত্র এবং তাদের জন্য শাফা’আতের অধিকারী। তাতে আমার কোন অহংকার নেই। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ كُنْتُ إِمَامَ النَّبِيِّينَ وَخَطِيبَهُمْ وَصَاحِبَ شَفَاعَتِهِمْ غيرَ فَخر» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3613 وقال : حسن صحیح غریب) و ابن ماجہ (4314) * عبداللہ بن محمد بن عقیل ضعیف و احادیث البخاری (3340 ، 3361 ، 4712) و مسلم (194)، (480) وغیرھما تغنی عنہ

وعن ابي بن كعب عن النبي صلى الله عليه وسلم قال اذا كان يوم القيامة كنت امام النبيين وخطيبهم وصاحب شفاعتهم غير فخر رواه الترمذيسندہ ضعیف رواہ الترمذی 3613 وقال حسن صحیح غریب و ابن ماجہ 4314 عبداللہ بن محمد بن عقیل ضعیف و احادیث البخاری 3340 3361 4712 و مسلم 194 480 وغیرھما تغنی عنہ

ব্যাখ্যা: কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে মুহাম্মাদ (সা.) হবেন সকল নবী ও রাসূলগণের ইমাম। মানুষেরা অন্যান্য নবী রসূলের কাছে গেলে তারা তাদেরকে ফিরে দিবেন এবং বলবেন তোমরা মুহাম্মাদ (সা.) -এর নিকট যাও। সর্বশেষে মুহাম্মাদ (সা.) শাফা'আত করবেন আল্লাহ তা'আলার নিকটে। রাসূলুল্লাহ (সা.) এত বড় একটা কাজ করবেন সকল মানুষের মাঝে তাতে তিনি বিন্দু পরিমাণ অহংকার করবেন না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬৯-[৩১] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, প্রত্যেক নবীরই নবীদের মাঝ হতে একজন বন্ধু আছেন। আর আমার বন্ধু হলেন আমার পিতা এবং আমার প্রভুর খলীল (ইবরাহীম খলীলুল্লাহ)। অতঃপর তিনি (সা) এ আয়াতটি পাঠ করলেন, অর্থাৎ “নিশ্চয় ইবরাহীম-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায় সেই লোকেরাই অধিক হাকদার যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এই নবী, আর যারা ঈমান এনেছে, বস্তুত আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক”- (সূরাহ আ-লি ইমরান ৩ : ৬৮)। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: إِن لِكُلِّ نَبِيٍّ وُلَاةً مِنَ النَّبِيِّينَ وَإِنَّ وَلِيِّيَ أَبِي وَخَلِيلُ رَبِّي ثُمَّ قَرَأَ: [إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِإِبْرَاهِيمَ لَلَّذِينَ اتَّبَعُوهُ وَهَذَا النَّبِيُّ وَالَّذِينَ آمنُوا وَالله ولي الْمُؤمنِينَ] . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2995) * سفیان الثوری مدلس مشھور و عنعن فی جمیع الطرق فیما اعلم

وعن عبد الله بن مسعود قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان لكل نبي ولاة من النبيين وان وليي ابي وخليل ربي ثم قرا ان اولى الناس بابراهيم للذين اتبعوه وهذا النبي والذين امنوا والله ولي المومنين رواه الترمذياسنادہ ضعیف رواہ الترمذی 2995 سفیان الثوری مدلس مشھور و عنعن فی جمیع الطرق فیما اعلم

ব্যাখ্যা: ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-কে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে তারাই অগ্রগামী হবেন যারা তার আনীত দীনের উপর আছেন। আর মুহাম্মাদ (সা.) -এর উম্মতের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে। অর্থাৎ মুহাজির, আনসার ও অন্যান্য পরবর্তী উম্মত।
আল্লাহ তা'আলা সমস্ত লোকের অভিভাবক- এ মর্মে আল্লাহ তা'আলা বলেন, “নিশ্চয় আমার অভিভাবক আল্লাহ যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং তিনি সৎকর্মপরায়ণদের অভিভাবকত্ব করে থাকেন।” (সূরাহ্ আল আরাফ ৭ : ১৯৬)

মুহাম্মাদ (সা.)-এর অভিভাবক হলেন স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা। (সম্পাদকীয়)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৭০-[৩২] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: যাবতীয় উত্তম চরিত্র ও উত্তম কার্যাবলি পরিপূর্ণ করার জন্যই আল্লাহ তা’আলা আমাকে পাঠিয়েছেন। (শারহুস্ সুন্নাহ্)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ جَابِرٌ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قا ل: «إِنَّ اللَّهَ بَعَثَنِي لِتَمَامِ مَكَارِمِ الْأَخْلَاقِ وَكَمَالِ محَاسِن الْأَفْعَال» . رَوَاهُ فِي شرح السّنة

اسنادہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 202 ح 3622) * یوسف بن محمد بن المنکدر : ضعیف ولہ شاھد عند احمد (2 / 381) :’’ انما بعثت لاتمم صالح الاخلاق ‘‘ و صححہ الحاکم (2 / 613) و وافقہ الذھبی و سندہ ضعیف (تقدم فی تخریج : 5096 ۔ 5097) ۔
(ضَعِيف)

وعن جابر ان النبي صلى الله عليه وسلم قا ل ان الله بعثني لتمام مكارم الاخلاق وكمال محاسن الافعال رواه في شرح السنةاسنادہ ضعیف رواہ البغوی فی شرح السنۃ 13 202 ح 3622 یوسف بن محمد بن المنکدر ضعیف ولہ شاھد عند احمد 2 381 انما بعثت لاتمم صالح الاخلاق و صححہ الحاکم 2 613 و وافقہ الذھبی و سندہ ضعیف تقدم فی تخریج 5096 ۔ 5097 ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (لِتَمَامِ مَكَارِمِ الْأَخْلَاقِ) আল্লাহ তা'আলা মুহাম্মাদ (সা.) -কে রাসূল বানিয়ে এ উদ্দেশে প্রেরণ করেছেন, যেন তিনি আল্লাহর বান্দাদেরকে বাহ্যিক চরিত্র ও অভ্যন্তরীণ চরিত্রকে পরিবর্তন করে তাদেরকে সুন্দর জীবনযাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তাদেরকে সঠিক পথের দিকে দিক-নির্দেশনা দিলে তারা তা সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে তা গ্রহণ করবে।
(كَمَالِ محَاسِن الْأَفْعَال) রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে প্রেরণ করার আরেকটি উদ্দেশ্য হলো তিনি মানুষদেরকে শিক্ষা দিবেন যে, কিভাবে তারা উত্তমরূপে ‘ইবাদত, লেন-দেন করবে।
ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে বান্দাদেরকে উত্তম চরিত্র সম্পর্কে অবগত করার জন্য এবং তাদের কার্যাবলী সুচারুরূপে পরিপূর্ণ করার জন্য।
রাসূলুল্লাহ (সা.) উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। এই মর্মে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, (وَ اِنَّکَ لَعَلٰی خُلُقٍ عَظِیۡمٍ) “এবং তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী।” (সূরা আল কলাম ৬৮ : ৪)
উত্তম চরিত্রের কিছু উদাহরণ উপস্থাপনা করা হলো সততা, ভদ্রতা, নম্রতা, দয়া-দাক্ষিণ্য, বিশ্বস্ততা, দানশীলতা, ক্ষমা করা ইত্যাদি। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৭১-[৩৩] কা’ব [আহবার (রাঃ)] তাওরাতের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছেন, আমরা তাতে লিখিত পেয়েছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহ রাসূল, তিনি আমার সর্বোৎকৃষ্ট বান্দা, তিনি দুশ্চরিত্র বা খারাপ এবং কঠোর ভাষী নন, বাজারে হৈ-হল্লাকারীও নন। মন্দের প্রতিশোধ মন্দের দ্বারা গ্রহণ করেন না, বরং ক্ষমা করে দেন। তাঁর জন্মস্থান মক্কায় এবং হিজরত করবেন মদীনাহ তাইয়িবায়। সিরিয়াও তাঁর আধিপত্যে আসবে। তার উম্মত হবে খুব বেশি প্রশংসাকারী তথা সুখে-দুঃখে ও আরামে-ব্যারামে সদা আল্লাহর গুণগান করবে এবং প্রত্যেক অবস্থান স্থলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। সুউচ্চ স্থানে আরোহণকালে তারা আল্লাহর তাকবীর উচ্চারণ করবে। সূর্যের দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখবে, যখনই সালাতের সময় হবে তখনই সালাত আদায় করবে। তারা শরীরের মধ্যস্থলে (কোমরে) ইজার বাঁধবে। শরীরের পার্শ্ব (হাত-পা ইত্যাদি) ধুয়ে উযূ করবে। তাদের ঘোষণাকারী উচ্চস্থানে দাঁড়িয়ে ঘোষণা (আযান) দেবে। জিহাদে তাদের সারি এবং সালাতেও তাদের সারি হবে একইরূপ। রাত্রির বেলায় তাদের গুনগুন শব্দ উদ্ভাসিত হবে মৌমাছির গুনগুনের মতো। (মাসাবীহ, দারিমীও এটা কিঞ্চিৎ শাব্দিক পরিবর্তনসহ বর্ণনা করেছেন)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ كَعْبٍ يَحْكِي عَنِ التَّوْرَاةِ قَالَ: نَجِدُ مَكْتُوبًا محمدٌ رسولُ الله عَبدِي الْمُخْتَار لَا فظٌّ وَلَا غَلِيظٍ وَلَا سَخَّابٍ فِي الْأَسْوَاقِ وَلَا يَجْزِي بِالسَّيِّئَةِ السَّيِّئَةَ وَلَكِنْ يَعْفُو وَيَغْفِرُ مَوْلِدُهُ بِمَكَّةَ وَهِجْرَتُهُ بِطِيبَةَ وَمُلْكُهُ بِالشَّامِ وَأُمَّتُهُ الْحَمَّادُونَ يَحْمَدُونَ اللَّهَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ يَحْمَدُونَ اللَّهَ فِي كُلِّ مَنْزِلَةٍ وَيُكَبِّرُونَهُ عَلَى كُلِّ شَرَفٍ رُعَاةٌ لِلشَّمْسِ يُصَلُّونَ الصَّلَاةَ إِذَا جَاءَ وَقْتُهَا يتأزَّرون على أَنْصَافهمْ ويتوضؤون عَلَى أَطْرَافِهِمْ مُنَادِيهِمْ يُنَادِي فِي جَوِّ السَّمَاءِ صَفُّهُمْ فِي الْقِتَالِ وَصَفُّهُمْ فِي الصَّلَاةِ سَوَاءٌ لَهُمْ بِاللَّيْلِ دَوِيٌّ كَدَوِيِّ النَّحْلِ «. هَذَا لَفْظُ» الْمَصَابِيحِ وَرَوَى الدَّارِمِيُّ مَعَ تَغْيِير يسير

اسنادہ ضعیف ، رواہ الدارمی (1 / 4 ۔ 5 ح 5) * الاعمش مدلس و عنعن

وعن كعب يحكي عن التوراة قال نجد مكتوبا محمد رسول الله عبدي المختار لا فظ ولا غليظ ولا سخاب في الاسواق ولا يجزي بالسيىة السيىة ولكن يعفو ويغفر مولده بمكة وهجرته بطيبة وملكه بالشام وامته الحمادون يحمدون الله في السراء والضراء يحمدون الله في كل منزلة ويكبرونه على كل شرف رعاة للشمس يصلون الصلاة اذا جاء وقتها يتازرون على انصافهم ويتوضوون على اطرافهم مناديهم ينادي في جو السماء صفهم في القتال وصفهم في الصلاة سواء لهم بالليل دوي كدوي النحل هذا لفظ المصابيح وروى الدارمي مع تغيير يسيراسنادہ ضعیف رواہ الدارمی 1 4 ۔ 5 ح 5 الاعمش مدلس و عنعن

ব্যাখ্যা: তাওরাত ও ইঞ্জীল এগুলো ছিল মুহাম্মাদ (সা.) -এর জন্মের অনেক পূর্বের ধর্মীয় গ্রন্থ। তারপরও এগুলোতে লেখা ছিল মুহাম্মাদ নবী হয়ে প্রেরিত হবেন। তাওরাতে মুহাম্মাদ (সা.) -এর চারিত্রিক গুণাবলী সম্পর্কে লেখা ছিল।
(مُلْكُهُ بِالشَّامِ) রাসূলুল্লাহ (সা.) ও চার খলীফার খিলাফাতের শেষে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যাবে, শাম বা সিরিয়াতে মু'আবিয়াহ্ ও বানু উমাইয়্যাহ্-এর নিকট। তারা মুসলিমদের মাঝে নেতৃত্ব প্রদান করবেন।
মুজাহিদ (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, এখানে রাজত্ব দ্বারা উদ্দেশ্য হলো নুবুওয়্যাত, দীন ইসলাম।
(رُعَاةٌ لِلشَّمْسِ يُصَلُّونَ الصَّلَاةَ إِذَا جَاءَ وَقْتُهَا) সূর্যের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখবে যখনই সালাতের সময় হবে তখন সালাত আদায় করবে। অর্থাৎ সূর্য উদিত হওয়ার সময়, সূর্য যখন আকাশের মাঝামাঝি থাকবে ঐ সময় সূর্য ডুবে যাওয়ার সময়সহ সালাতের সকল ওয়াক্ত যথাসময়ে আদায় করা এবং ‘ইবাদতের অন্যান্য বিষয়গুলো আদায় করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ কা'ব আল-আহবার (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৭২-[৩৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাওরাত কিতাবে মুহাম্মাদ (সা.) -এর গুণাবলি লিপিবদ্ধ রয়েছে এবং তাতে এটাও রয়েছে যে, ঈসা ইবনু মারইয়াম আলায়হিস সালাম-কে তাঁর সাথে [’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হুজরায়] দাফন করা হবে। আবূ মাওদূদ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, “আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর হুজরায় আজ পর্যন্ত (তাঁর দাফনের জন্য) একটি কবরের জায়গা বাকি রয়েছে। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلَامٍ قَالَ: مَكْتُوبٌ فِي التَّوْرَاةِ صِفَةُ مُحَمَّدٍ وَعِيسَى بن مَرْيَمَ يُدْفَنُ مَعَهُ قَالَ أَبُو مَوْدُودٍ: وَقَدْ بَقِي فِي الْبَيْت مَوضِع قَبره رَوَاهُ الترمذيُّ

حسن ، رواہ الترمذی (3617 وقال : حسن غریب) ۔
(ضَعِيف)

وعن عبد الله بن سلام قال مكتوب في التوراة صفة محمد وعيسى بن مريم يدفن معه قال ابو مودود وقد بقي في البيت موضع قبره رواه الترمذيحسن رواہ الترمذی 3617 وقال حسن غریب ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: তাওরাত আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত গ্রন্থ যা মূসা আলায়হিস সালাম-এর ওপর নাযিল হয়েছিল। তাওরাতের ভিতরে মুহাম্মদ (সা.) -এর গুণাবলী লিপিবদ্ধ রয়েছে। আর তাতে এটাও লেখা ছিল যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর ঘরে দাফন করা হয়েছে। তার কবরের পাশে শায়িত আছেন আবূ বাকর বাকর ও ‘উমার (রাঃ)। এখানে আরো একটি কবরের জায়গা খালি আছে। কিয়ামতের সময় নিকটবর্তী হলে ‘ঈসা আলায়হিস সালাম আকাশ হতে অবতরণ করবেন দাজ্জালকে হত্যা করার জন্য। ঈসা আলায়হিস সালাম মৃত্যুবরণ করবেন মক্কাহ্ ও মদীনার মধ্যবর্তী জায়গায়। তাঁর কবর দেয়া হবে। আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর ঘরে যেখানে একটি কবরের জায়গা খালি আছে সেখানে।
অত্র হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আবূ মাওদূদ (রহিমাহুল্লাহ)। তাঁর পরিচয় হলো ‘আবদুল আযীয ইবনু সুলায়মান আল মাদানী। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।

এ সম্পর্কে একটি হাদীস বর্ণিত রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ঈসা আলায়হিস সালাম পৃথিবীতে আগমন করবেন। তিনি বিবাহ করবেন, তার সন্তান হবে। তিনি পৃথিবীতে ৪৫ বছর অবস্থান করবেন। অতঃপর তিনি মৃত্যুবরণ করবেন তাকে দাফন করা হবে আমার সাথে একই কবরে। আমি এবং ‘ঈসা আলায়হিস সালাম একই কবর থেকে বের হব আবূ বাকর ও ‘উমার (রাঃ) -এর পাশে থাকবেন। [ইবনুল জাওযী (রহিমাহুল্লাহ) কিতাবুল ওয়াফা]


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৯ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৯ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে