পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - ওয়া‘দা বা প্রতিশ্রুতি

৪৮৭৮-[১] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করলেন এবং আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর কাছে বাহরাইনের গভর্নর ’আলা ইবনু আল-হাযরামীর তরফ থেকে মালামাল এলো, তখন আবূ বকর সিদ্দীক(রাঃ) বললেনঃ ’’নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর কার দেনা আছে, অথবা কারো সাথে তিনি ওয়া’দা করেছিলেন, তারা যেন আমার কাছে আসে।’’ জাবির(রাঃ) বলেন, আমি বললামঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে ওয়া’দা করেছিলেন যে, আমাকে এত এত এত দেবেন। তিনি (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজের দু’হাত প্রসারিত করে তিনবার ইশারা করেছিলেন। জাবির(রাঃ) বলেন, আবূ বকর সিদ্দীক(রাঃ) আমাকে আঁজলা ভরে এক আঁজলা মাল দিলেন। আমি গণনা করে দেখলাম, এতে পাঁচশ’ দিরহাম আছে এবং তিনি (আবূ বকর সিদ্দীক) বললেনঃ পাঁচশ’ পাঁচশ’ করে আরো দু’বার গুণে নাও। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْوَعْدِ

عَن جابرٍ قَالَ: لَمَّا مَاتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَاء أَبُو بَكْرٍ مَالٌ مِنْ قِبَلِ الْعَلَاءِ بْنِ الْحَضْرَمِيِّ. فَقَالَ أَبُو بكر: من كَانَ لَهُ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَيْنٌ أَوْ كَانَتْ لَهُ قِبَلَهُ عِدَةٌ فَلْيَأْتِنَا. قَالَ جَابِرٌ: فَقُلْتُ: وَعَدَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُعْطِيَنِي هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا. فَبَسَطَ يَدَيْهِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ. قَالَ جَابِرٌ: فَحَثَا لِي حَثْيَةً فَعَدَدْتُهَا فَإِذَا هِيَ خَمْسُمِائَةٍ وَقَالَ: خُذْ مثلَيها. مُتَّفق عَلَيْهِ

عن جابر قال لما مات رسول الله صلى الله عليه وسلم وجاء ابو بكر مال من قبل العلاء بن الحضرمي فقال ابو بكر من كان له عند النبي صلى الله عليه وسلم دين او كانت له قبله عدة فلياتنا قال جابر فقلت وعدني رسول الله صلى الله عليه وسلم ان يعطيني هكذا وهكذا وهكذا فبسط يديه ثلاث مرات قال جابر فحثا لي حثية فعددتها فاذا هي خمسماىة وقال خذ مثليها متفق عليه

ব্যাখ্যাঃ (لَمَّا مَاتَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَاء أَبُو بَكْرٍ مَالٌ) যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা গেলেন এবং আবূ বকর (রাঃ) খলীফা হলেন। তার খিলাফাতকালে ‘আলা ইবনুল হাযরামী-এর পক্ষ থেকে মাল এলে তিনি বলেন, (من كَانَ لَهٗ عِنْدَ النَّبِىِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَيْنٌ أَوْ كَانَتْ لَهٗ قِبَلَهٗ عِدَةٌ) যার ঋণ আদায়ের ভার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর ছিল অথবা যার জন্য তার পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি ছিল সে যেন আমাদের কাছে আসে।

উক্ত হাদীসের শিক্ষা হলো- মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধ করে দেয়া মুস্তাহাব এবং সে মারা গেলে যে তার প্রতিনিধিত্ব করবে সে তা বাস্তাবায়িত করবে। এক্ষেত্রে উত্তরাধিকারী ও অপরিচিত ব্যক্তি সবাই সমান।

হাদীস থেকে আরো জানা যায় যে, ওয়া‘দা বা প্রতিশ্রুতি হলো ঋণের অন্তর্ভুক্ত। যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে الْعِدَةُ دَيْنٌ ওয়া‘দা ঋণের অন্তর্ভুক্ত।

(قَالَ جَابِرٌ: فَقُلْتُ: وَعَدَنِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ...) জাবির (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে ওয়া‘দা করেছিলেন তিনি আমাকে এত এত পরিমাণ সম্পদ দান করবেন। অতঃপর তিনি তার দুই হাতকে তিনবার প্রশস্ত করলেন এত এত এর পরিমাণ বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। জাবির (রাঃ) বলেন, এরপর আবূ বকর (রাঃ) তার দুই চৌলে দিরহাম ভর্তি করে আমার চাদরে ঢেলে দিলেন। অতঃপর আমি গণনা করে দেখি সেখানে কি পরিমাণ আছে। (فَإِذَا هِيَ خَمْسُمِائَةٍ وَقَالَ: خُذْ مثلَيها) আমি দেখলাম সেখানে ৫০০ দিরহাম আছে এবং তিনি বললেন, তুমি আরো এর দ্বিগুণ গ্রহণ কর। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

এ হাদীসের আরো শিক্ষা হলো- ওয়া‘দা বাস্তবায়নকরণ। ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ) ও জামহূর ‘আলিমের মতে তা বাস্তবায়ন করা ও তা পালন করা মুস্তাহাব ওয়াজিব নয়। তবে হাসান বাসরী ও কতিপয় মালিকী মাযহাবের ‘আলিমের নিকট তা ওয়াজিব। (শারহুন নাবাবী ১৫/২৩১৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)