পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪৬২২-[১৭] আবূ রযীন আল ’উকায়লী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নুবুওয়াতের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন অন্যকে বলার পূর্ব পর্যন্ত উড়ন্ত পাখির পায়ের মধ্যে ঝুলতে থাকে। আর যখনই তা কারো নিকট বর্ণনা করা হয়, তখন তা বাস্তবায়িত হয়ে যায়। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাও বলেছেন যে, কোন বন্ধু অথবা জ্ঞানী ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো কাছে স্বপ্নের কথাটি প্রকাশ করো না। (তিরমিযী)[1]

আর আবূ দাঊদ-এর রিওয়ায়াতের মধ্যে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বপ্নের তা’বীর না দেয়া পর্যন্ত পাখির পায়ে ঝুলতে থাকে। আর যখনই তার তা’বীর করা হয়, তখন তা বাস্তবায়িত হয়ে যায়। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাও বলেছেন যে, কোন বন্ধু অথবা কোন জ্ঞানী ব্যতীত অন্য কারো কাছে স্বপ্নের কথা বর্ণনা করো না।

الْفَصْلُ الثَّانِي

عَن أبي رزين العقيليِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَهِيَ عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ يُحَدِّثْ بِهَا فَإِذَا حَدَّثَ بِهَا وَقَعَتْ» . وَأَحْسِبُهُ قَالَ: «لَا تُحَدِّثْ إِلَّا حَبِيبًا أَوْ لَبِيبًا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ قَالَ: «الرُّؤْيَا عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ تُعْبَرْ فَإِذَا عُبِرَتْ وَقَعَتْ» . وَأَحْسِبُهُ قَالَ: «وَلَا تَقُصَّهَا إِلَّا عَلَى وَادٍّ أَوْ ذِي رأيٍ»

عن ابي رزين العقيلي قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم رويا المومن جزء من ستة واربعين جزءا من النبوة وهي على رجل طاىر ما لم يحدث بها فاذا حدث بها وقعت واحسبه قال لا تحدث الا حبيبا او لبيبا رواه الترمذي وفي رواية ابي داود قال الرويا على رجل طاىر ما لم تعبر فاذا عبرت وقعت واحسبه قال ولا تقصها الا على واد او ذي راي

ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য হাদীসে সাধারণভাবে বলা হয়েছে যে, মু’মিনের স্বপ্ন নুবুওয়াতে ছেচল্লিশভাগের একভাগ। এ সম্পর্কে কিছু আসার হাদীস বর্ণিত রয়েছে। তবে ইসলামের প্রথমদিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ছয় মাস স্বপ্ন দেখেছিলেন তা নুবুওয়াতের ছেচল্লিশভাগের এক-ভাগের মাঝে অন্তর্ভুক্ত।

‘‘স্বপ্নে পাখির পায়ের মধ্যে ঝুলতে থাকা’’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য ভালো ও মন্দ উভয়টি হতে পারে। সুতরাং স্বপ্নের ব্যাখ্যা যাই দেয়া হবে তাই ঘটবে। ফলে যে কোন মানুষের নিকট স্বপ্নের কথা বলা উচিত না। স্বপ্নের কথা বলবে ‘আলিম, সৎলোকেদের নিকট। (মিরক্বাতুল মাফাহীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪৬২৩-[১৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ওয়ারাকাহ্ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলো। খাদিজা (রাঃ) তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে বলেছিলেন, ওয়ারাকাহ্ তো আপনাকে সত্যবাদী বলে স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু আপনার নুবুওয়াত প্রকাশের পূর্বেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওয়ারাকাকে স্বপ্নে আমাকে দেখানো হয়েছে, তার গায়ে সাদা কাপড় রয়েছে। যদি সে জাহান্নামী হত তাহলে তার গায়ে অন্য ধরনের কাপড় হত। (আহমাদ ও তিরমিযী)[1]

الْفَصْلُ الثَّانِي

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَن وَرَقَةَ. فَقَالَتْ لَهُ خَدِيجَةُ: إِنَّهُ كَانَ قَدْ صَدَّقَكَ وَلَكِنْ مَاتَ قَبْلَ أَنْ تَظْهَرَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أُرِيتُهُ فِي الْمَنَامِ وَعَلَيْهِ ثِيَابٌ بِيضٌ وَلَوْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَكَانَ عَلَيْهِ لِبَاسٌ غَيْرُ ذَلِك» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت سىل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن ورقة فقالت له خديجة انه كان قد صدقك ولكن مات قبل ان تظهر فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم اريته في المنام وعليه ثياب بيض ولو كان من اهل النار لكان عليه لباس غير ذلك رواه احمد والترمذي

ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত হাদীসের মাঝে ওয়ারাকাহ্ ইবনু নাওফাল ইবনু আসাদ আল কুরায়শী ছিলেন খাদিজা (রাঃ)-এর চাচাতো ভাই। তিনি জাহিলী ঈসায়ী ধর্মের অনুসারী ছিলেন। তিনি পূর্বের আসমানী গ্রন্থসমূহ অধ্যয়ন করেছেন। তিনি একজন বৃদ্ধ লোক ও অন্ধ ছিলেন। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রসূল হিসেবে বিশ্বাস করেছিলেন। এজন্য খাদিজা (রাঃ) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রশ্ন করেছিল, সে জান্নাতে যাবে কি? রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যার দ্বারা বুঝা যায় যে, সে জান্নাতী। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২২৮৮; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪৬২৪-[১৯] ইবনু খুযায়মাহ্ ইবনু সাবিত (রহঃ) তাঁর চাচা আবূ খুযায়মাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, ঘুমন্ত ব্যক্তি যেভাবে স্বপ্ন দেখে, তিনি অনুরূপ স্বপ্ন দেখলেন যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কপালে সিজদা্ করছেন। তাঁকে স্বপ্নের কথাটি বর্ণনা করা হলে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি তোমার স্বপ্নটিকে বাস্তবায়ন করো, এ বলে তিনি চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লেন। অতঃপর তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কপালে সিজদা্ করলেন। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

এ প্রসঙ্গে আবূ বকরাহ্ বর্ণিত হাদীস, ’’যেন আসমান হতে একটি পাল্লা অবতীর্ণ হয়েছে’’ আবূ বকর ও ’উমার (রাঃ)-এর মানাকিবে বর্ণিত হবে।

الْفَصْلُ الثَّانِي

وَعَنِ ابْنِ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ عَمِّهِ أَبِي خُزَيْمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ أَنَّهُ رَأَى فِيمَا يَرَى النَّائِمُ أَنَّهُ سَجَدَ عَلَى جَبْهَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ فَاضْطَجَعَ لَهُ وَقَالَ: «صَدِّقْ رُؤْيَاكَ» فَسَجَدَ عَلَى جَبْهَتِهِ. رَوَاهُ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ
وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ أَبِي بَكْرَةَ: كَأَنَّ مِيزَانًا نَزَلَ مِنَ السَّمَاءِ فِي بَابِ «مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا»

وعن ابن خزيمة بن ثابت عن عمه ابي خزيمة رضي الله عنهم انه راى فيما يرى الناىم انه سجد على جبهة النبي صلى الله عليه وسلم فاخبره فاضطجع له وقال صدق روياك فسجد على جبهته رواه في شرح السنةوسنذكر حديث ابي بكرة كان ميزانا نزل من السماء في باب مناقب ابي بكر وعمر رضي الله عنهما

ব্যাখ্যাঃ মিরক্বাতুল মাফাতীহ গ্রন্থকার বলেছেন, খুযায়মাহ্ ইবনু সাবিত (রাঃ) উপাধি ছিল আবূ আম্মারা আল আনসারী আল আওযী তিনি বদর যুদ্ধ এবং পরবর্তী সকল যুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সিফফীন যুদ্ধে ‘আলী (রাঃ)-এর সাথে ছিলেন। যখন ‘আম্মার ইবনু ইয়াসির-কে হত্যা করা হয়। তিনি তার তরবারি কোষমুক্ত করে লড়াই করতে থাকেন এমনকি তিনি নিহত (শাহীদ) হন।

মুযহির (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ যখন স্বপ্নে কেউ ভালো কিছু দেখে তার উপর ‘আমল করা মুস্তাহাব। যদি ঐ সপ্নটি ভালো বা আনুগত্য করার মতো হয়। যেমন কোন ব্যক্তি স্বপ্ন দেখেছে যে, সে সালাত আদায় করে, সওম পালন করে, তার সম্পদ হতে সাদাকা করে বা এ ধরনের ভালো কোন কিছু স্বপ্নে দেখে। অত্র হাদীসে আবূ খুযায়মাহ্ ভালো একটি স্বপ্ন দেখেছিল আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পালন করার সুযোগ করে দিলেন। সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের উচিত এ ধরনের ভালো স্বপ্ন পালন করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে