পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিরুপায়ের খাওয়া সম্পর্কে (ব্যক্তির পক্ষ কখন মৃত প্রাণী খাওয়া বৈধ হয়)

৪২৬১-[১] ফুজায়’উল ’আমিরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন : আমাদের পক্ষে মৃত (প্রাণী) খাওয়া কখন হালাল হবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন : তোমাদের খাদ্য কী পরিমাণ আছে? আমরা বললাম, গাবুক ও সাবূহ। বর্ণনাকারী আবূ নু’আয়ম বলেন, ’উকবাহ্ আমাকে এর ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ (গাবুক) সকালে এক পেয়ালা এবং (সাবূহ) বিকালে এক পেয়ালা দুধ। এ কথা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আমার পিতার কসম! এ খাদ্য তো ক্ষুধারই নামান্তর। ফলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমতাবস্থায় তাদের জন্য মৃত খাওয়ার অনুমতি দিলেন। (আবূ দাঊদ)[1]

بَابٌ أكْلِ الْمُضْطَرِّ [فِىْ مَتٰى يَكُونُ الْمَرْءُ مُضْطَرًّا لِتَحِلَّ لَهُ الْمَيْتَةُ]

عَن الفجيع العامري أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: مَا يَحِلُّ لَنَا مِنَ الْمِيتَةِ؟ قَالَ: «مَا طعامُكم؟» قُلنا: نَغْتَبِقُ وَنَصْطَبِحُ قَالَ أَبُو نُعَيْمٍ: فَسَّرَهُ لِي عُقْبَةُ: قَدَحٌ غُدْوَةً وَقَدَحٌ عَشِيَّةً قَالَ: «ذَاكَ وَأَبِي الْجُوعُ» فَأَحَلَّ لَهُمُ الْمَيْتَةَ عَلَى هَذِهِ الحالِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن الفجيع العامري انه اتى النبي صلى الله عليه وسلم فقال ما يحل لنا من الميتة قال ما طعامكم قلنا نغتبق ونصطبح قال ابو نعيم فسره لي عقبة قدح غدوة وقدح عشية قال ذاك وابي الجوع فاحل لهم الميتة على هذه الحال رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ (فَأَحَلَّ لَهُمُ الْمَيْتَةَ عَلٰى هَذِهِ الحالِ) ‘‘ফলে তিনি এমতাবস্থায় তাদের জন্য মৃত খাওয়ার অনুমতি দিলেন।’’

ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সকাল বেলা এক পেয়ালা দুধ এবং সন্ধ্যা বেলায় এক পেয়ালা দুধ, শ্বাস-প্রশ্বাস বাকী রাখে এবং জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে। তবে শরীর খাদ্য পায়নি এবং পূর্ণভাবে তৃপ্ত হয়নি সেই ক্ষেত্রে তাদের জন্য তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মৃত্যু প্রাণী খাওয়া বৈধ্য ঘোষণা করেছেন। তাই বুঝা গেল যে, মৃত জন্তু খাওয়া বৈধ হওয়ার মাপকাঠি হচ্ছে পরিতৃপ্ত না হওয়া, খাদ্য দ্বারা আত্মা পরিতৃপ্ত না হওয়া। এ মত ব্যক্ত করেছেন ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ), আর ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ)-এর একটি উক্তিও হচ্ছে তাই।

‘আল্লামা শাওকানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ)-এর চূড়ান্ত মত হলো যদি শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধের আশঙ্কা করে অর্থাৎ কোন ধরনের খাবার না পায় সেই ক্ষেত্রে জীবন রক্ষার জন্য মৃত প্রাণী খেতে পারবে। ইমাম মুযানী (রহিমাহুল্লাহ) এ রকম বর্ণনা করেছেন। রাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) এটিকে সহীহ বলেছেন। এটি ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহিমাহুল্লাহ)-এরও কথা এবং ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ)-এর একটি উক্তিও হচ্ছে তাই। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৮১৩)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিরুপায়ের খাওয়া সম্পর্কে (ব্যক্তির পক্ষ কখন মৃত প্রাণী খাওয়া বৈধ হয়)

৪২৬২-[২] আবূ ওয়াক্বিদ আল লায়সী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন জনৈক ব্যক্তি বলল : হে আল্লাহর রসূল! আমরা কখনো কখনো এমন এলাকায় পৌঁছি, যেখানে আমরা ভীষণ ক্ষুধায় ব্যাকুল হয়ে পড়ি। এমতাবস্থায় আমাদের পক্ষে কখন মৃত (জানোয়ার) খাওয়া হালাল হবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ যখন তোমরা সকালে এক পেয়ালা এবং সন্ধ্যায় এক পেয়ালা দুধ না পাও অথবা সে ভূমিতে কোন তরিতরকারীও না পাও, এ অবস্থায় মৃত খেতে পারো। (দারিমী)[1]

بَابٌ أكْلِ الْمُضْطَرِّ [فِىْ مَتٰى يَكُونُ الْمَرْءُ مُضْطَرًّا لِتَحِلَّ لَهُ الْمَيْتَةُ]

وَعَنْ أَبِي وَاقِدٍ اللَّيْثِيِّ أَنْ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نَكُونُ بِأَرْضٍ فَتُصِيبُنَا بهَا المخصمة فَمَتَى يحلُّ لنا الميتةُ؟ قَالَ: «مَا لم تصطبحوا وتغتبقوا أَوْ تَحْتَفِئُوا بِهَا بَقْلًا فَشَأْنَكُمْ بِهَا» . مَعْنَاهُ: إِذَا لَمْ تَجِدُوا صَبُوحًا أَوْ غَبُوقًا وَلَمْ تَجِدُوا بَقْلَةً تَأْكُلُونَهَا حَلَّتْ لَكُمُ الْمَيْتَةُ. رَوَاهُ الدَّارمِيّ

وعن ابي واقد الليثي ان رجلا قال يا رسول الله انا نكون بارض فتصيبنا بها المخصمة فمتى يحل لنا الميتة قال ما لم تصطبحوا وتغتبقوا او تحتفىوا بها بقلا فشانكم بها معناه اذا لم تجدوا صبوحا او غبوقا ولم تجدوا بقلة تاكلونها حلت لكم الميتة رواه الدارمي

ব্যাখ্যাঃ কারো পক্ষ যদি আত্মার খাদ্য এবং পরিতৃপ্তি লাভের পরিমাণ হালাল খাদ্য না জুটে তাহলে এমন ব্যক্তির জন্য মৃত জন্ত খাওয়া হালাল।

পূর্বের হাদীসে গোটা পরিবারের সকলের জন্য ছিল এক পেয়ালা দুধ, সুতরাং তা দ্বারা সকলের ক্ষুধা নিবারণ হত না। আর অত্র হাদীসের উদ্দেশ্য হলো প্রত্যেকের জন্য এক এক পেয়ালা করে দুধ সংগ্রহ হওয়া, সুতরাং এ অবস্থায় তো ক্ষুধা থাকে না। কজেই যখন খাওয়ার মতো কোন খাবারই না পাওয়া যাবে, সে অবস্থায় জীবন বাঁচানোর জন্য মৃত প্রাণী ভক্ষণ করা হালাল বা বৈধ। [সম্পাদক]

‘আল্লামা তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ যখন কোন লোক সকাল বেলা এক পেয়ালা দুধ পান করে অথবা অন্য কোন খাবার খায় তাহলে তার জন্য ঐ দিনে মৃত প্রাণী খাওয়া বৈধ নয়। অনুরূপ রাতের বেলা যদি এক পেয়ালা দুধ পান করে অথবা অন্য কোন খাবার খায় তাহলে তার জন্য ঐ রাতে মৃত প্রাণী খাওয়া হালাল নয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে