পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (স্বামী-স্ত্রীর) সহবাস

৩১৯১-[৯] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর ওয়াহী নাযিল হয়- ’’তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত। অতএব, তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেতে যেভাবে ইচ্ছা যেতে পার’’- (সূরা আল বাকারা ২ : ২২৩)। তাই সামনের দিক হতে বা পিছন দিক হতে সহবাস কর; কিন্তু গুহ্যদ্বার (মলদ্বার) ও ঋতুবতী (মাসিক থাকাকালীন) হতে বিরত থাক। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)[1]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: أُوحِيَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (نساوكم حرث لكم فَأتوا حَرْثكُمْ)
الْآيَةَ: «أَقْبِلْ وَأَدْبِرْ وَاتَّقِ الدُّبُرَ وَالْحَيْضَةَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه

عن ابن عباس قال اوحي الى رسول الله صلى الله عليه وسلم نساوكم حرث لكم فاتوا حرثكمالاية اقبل وادبر واتق الدبر والحيضة رواه الترمذي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: ইতিপূর্বে এ হাদীসের অংশ বিশেষের ব্যাখ্যা অতিবাহিত হয়ে গেছে তাই সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন নেই। স্ত্রীর নিকট সঙ্গত হতে হলে অবশ্যই সম্মুখ পথ (যোনীপথ) অবলম্বন করতে হবে। পিছন পথ (পায়ুপথ) অবলম্বন করা যাবে না, অনুরূপভাবে মাসিক ঋতুস্রা্বকালেও উদ্গত হওয়া যাবে না। এ থেকে আত্মরক্ষার জন্য জোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইমাম সারাখসী (রহঃ) উল্লেখ করেছেন, কেউ যদি স্ত্রীর মাসিক ঋতুস্রা্বকালে সহবাস বৈধ মনে করে তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলার এই বাণী তা হারাম হওয়ার স্পষ্ট দলীলঃ ‘‘তোমরা তাদের নিকটেও যেও না যতক্ষণ তারা পূর্ণরূপে পবিত্রতা অর্জন না করে’’- (সূরা আল বাকারা ২ : ২২২)।

সুতরাং আল্লাহর নিষেধ বা হারাম-কে হারাম মনে না করা কুফরীর শামিল। ইমাম মুহাম্মাদ (রহঃ) অবশ্য কাফির না হওয়ার কথা বলেছেন। মোট কথা স্ত্রী সহবাসে অবশ্যই সম্মুখ পথ অবলম্বন করবে এবং মাসিক ঋতুকালে সহবাস থেকে বিরত থাকবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ২৯৮০; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (স্বামী-স্ত্রীর) সহবাস

৩১৯২-[১০] খুযায়মাহ্ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা সত্য প্রকাশে লজ্জাবোধ করেন না, তোমরা তোমাদের স্ত্রীগণের গুহ্যদ্বারে সহবাস করো না। (আহমাদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, দারিমী)[1]

وَعَنْ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ لَا يستحيي مِنَ الْحَقِّ لَا تَأْتُوا النِّسَاءَ فِي أَدْبَارِهِنَّ» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه. والدارمي

وعن خزيمة بن ثابت ان النبي صلى الله عليه وسلم قال ان الله لا يستحيي من الحق لا تاتوا النساء في ادبارهن رواه احمد والترمذي وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: আল্লাহ হক প্রকাশে লজ্জাবোধ করেন না, অর্থাৎ তিনি হক বা সত্য কথা বলতে কোনই পরোয়া করেন না। এমনকি লজ্জাষ্কর কথা হলেও তা থেকে বিরত থাকেন না।

প্রশ্ন হলো হায়া বা লজ্জা হলো অন্তরের পরিবর্তন যা একজন মানুষের ওপর কোনো নিন্দনীয় কর্মের কারণে অপতিত হয়, আল্লাহর ব্যাপারে এটা সম্পৃক্ত হওয়া সম্পূর্ণ অসম্ভব? এর উত্তর হলো, এটা রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে অর্থাৎ ‘আল্লাহ লজ্জাবোধ করেন না’ এ কথার সমার্থ হলো তিনি চরম লজ্জাষ্কর কথা হলেও ব্যক্ত বা প্রকাশ করতে ছাড়েন না। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলার দিকে লজ্জার সম্পর্ক মুবালাগাহ্ বা চূড়ান্ত কথা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (স্বামী-স্ত্রীর) সহবাস

৩১৯৩-[১১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ লোক অভিশপ্ত, যে তার স্ত্রীর গুহ্যদ্বারে সহবাস করে। (আহমাদ, আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَلْعُونٌ مَنْ أَتَى امْرَأَتَهُ فِي دُبُرِهَا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ملعون من اتى امراته في دبرها رواه احمد وابو داود

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (স্বামী-স্ত্রীর) সহবাস

৩১৯৪-[১২] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক তার স্ত্রীর গুহ্যদ্বারে সহবাস করে আল্লাহ তার প্রতি (রহমত, করুণা নিয়ে) দৃষ্টিপাত করেন না। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الَّذِي يَأْتِي امْرَأَتَهُ فِي دُبُرِهَا لَا يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَيْهِ» . رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان الذي ياتي امراته في دبرها لا ينظر الله اليه رواه في شرح السنة

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (স্বামী-স্ত্রীর) সহবাস

৩১৯৫-[১৩] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তির প্রতি (রহমত ও করুণার) দৃষ্টিপাত করেন না, যে কোনো পুরুষের সাথে সহবাস করে অথবা নারীর গুহ্যদ্বারে সহবাস করে। (তিরমিযী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَى رَجُلٍ أَتَى رَجُلًا أَوِ امْرَأَةً فِي الدبر» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابن عباس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا ينظر الله الى رجل اتى رجلا او امراة في الدبر رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: উপরোক্ত তিনটি হাদীসে একই বিষয় আলোচিত হয়েছে যার ব্যাখ্যাও ইতিপূর্বে হয়ে গেছে। সুতরাং পুনঃআলোচনা নিষ্প্রয়োজন। পুরুষের সাথে সঙ্গম এবং নারীর পায়ুপথে সঙ্গমকারীর প্রতি আল্লাহর লা‘নাত, সে অভিশপ্ত। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে রহমাতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না (এবং তাকে গুনাহ থেকে মুক্তও করবেন না)। উভয়টি মূলতঃ লাওয়াতাত বা পুং মৈথুন যা হারাম হওয়ার বিস্তারিত বিবরণ ও ব্যাখ্যা অন্যত্র রয়েছে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২১৬২; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১১৬৬; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (স্বামী-স্ত্রীর) সহবাস

৩১৯৬-[১৪] আসমা বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তোমরা তোমাদের সন্তানকে সংগোপনে হত্যা করো না, কেননা ’গীলাহ্’র প্রভাবে আরোহীকে ঘোড়া হতে নিচে ফেলে দেয়। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ سِرًّا فَإِنَّ الْغَيْلَ يُدْرِكُ الْفَارِسَ فيدعثره عَن فرسه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن اسماء بنت يزيد قالت سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لا تقتلوا اولادكم سرا فان الغيل يدرك الفارس فيدعثره عن فرسه رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: غِيلَةِ ‘গীলাহ’ শব্দের বিস্তারিত ব্যাখ্যা ৩১৯৬ নং হাদীসে অতিবাহিত হয়েছে।

অত্র হাদীসে এ শব্দের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো দুগ্ধদায়িনী স্ত্রীর সাথে সহবাস করার দরুন স্ত্রী পুনরায় গর্ভবতী হওয়া এবং এই গর্ভাবস্থায় দুগ্ধ দান করা। গর্ভাবস্থায় সন্তানকে দুগ্ধদান করলে তা হয় সন্তানের ক্ষতির কারণ।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ বলেছেন, গর্ভবতী নারীর স্তনের দুধ হলো রোগ বিশেষ। তাই এ দুধ শিশু পান করলে সে রোগাক্রান্ত এবং অপ্রকৃতি স্বভাবের হতে পারে।

ইসলামী ‘আকীদা হলো সবকিছুর প্রকৃত প্রভাবক হলো আল্লাহ তা‘আলা, তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরীক্ষেত বিধান মেনে চলা উচিত। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ২১৬২; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে