পরিচ্ছেদঃ ৪৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - জুমু‘আর সালাত ফরয

بَابُ وُجُوْبِهَا একাধিক হাদীস জুমু’আর সালাতের আবশ্যকতার উপর ও তার ফারযিয়্যাতের উপর প্রমাণ করে। শারহে আস্ সুন্নাহয় রয়েছে যে, অধিকাংশ বিদ্বানদের নিকট জুমু’আর সালাত ফারযে আইনের একটি। কেউ বলেছেন, সেটা ফারযে কিফায়ার অন্তর্ভুক্ত। ইবনুল হাম্মাম (রহঃ) বলেন, জুমু’আর সালাত ফরয যা কুরআন-সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা নির্দেশিত এবং আমার সাথীবর্গ মনে করেন যে, নিশ্চয় সেটা ফরয যা যুহরের চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটা অস্বীকারকারী কাফির।

জুমু’আর সালাত ফারযে আইন এ ব্যাপারে ’উলামাগণের ঐকমত্য রয়েছে এবং যে একে ফারযে কিফায়াহ্ বলেছে তাকে তারা ভ্রান্ত বলেছেন। আল্লামা ইরাকী (রহঃ) বলেন যে, ইমাম চতুষ্টয়ের মাযহাবে ঐকমত্য রয়েছে যে, জুমু’আহ্ ফারযে আইন, তবে তারা নিজ নিজ মাযহাব অনুযায়ী শর্তারোপ করেছেন। ইবনুল মুনযির (রহঃ) বলেছেন, সেটা ফারযে আইন এ ব্যাপারে ’উলামাগণের ইজমা রয়েছে। ইমাম বুখারী (রহঃ) তার সহীহ গ্রন্থে বলেছেনঃ

بَابُ فَرْضِ الْجُمُعَةِ لِقَوْلِه تَعَالى: إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يََّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلى ذِكْرِ اللّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ

’’জুমু’আহ্ ফরয’’ অধ্যায় আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ ’’যখন জুমু’আর দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন আল্লাহর স্মরণে দ্রুত সাড়া দাও এবং কেনা-বেচা পরিত্যাগ করো এবং সেটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে’’। (সূরাহ্ আজ্ জুমু’আহ্ ৬২: ৯)। অতঃপর জুমু’আহ্ অধ্যায়ের প্রথম অনুচ্ছেদে বর্ণিত আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস উল্লেখ করেছেন হাফিয আসক্বালানী (রহঃ) বলেনঃ ইমাম বুখারী (রহঃ) এ আয়াত দ্বারা জুমু’আর ফারযিয়্যাতের দলীল গ্রহণ করেছেন।

জুমু’আহ্ ফরয হওয়ার সময়ের ব্যাপারে ইখতিলাফ রয়েছে। তবে অধিকাংশ ’উলামাগণের মতে তা মদীনায় ফরয করা হয়েছে এবং এটাই জুমু’আও ফারযের (ফরযের/ফরজের) উক্ত আয়াতের চাহিদা। উক্ত আয়াতে কারীমাটি মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে।


১৩৭০-[১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মিম্বারের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ লোকেরা যেন জুমু’আর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ছেড়ে না দেয়। (যদি ছেড়ে দেয়) আল্লাহ তা’আলা তাদের অন্তরসমূহে মুহর মেরে দেবেন। অতঃপর সে ব্যক্তি অমনোযোগীদের মধ্যে গণ্য হবে। (মুসলিম)[1]

بَابُ وُجُوْبِهَا

عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّهُمَا قَالَا: سَمِعْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ عَلَى أَعْوَادِ مِنْبَرِهِ: «لِيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ وَدْعِهِمُ الْجُمُعَاتِ أَوْ لَيَخْتِمَنَّ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ ثُمَّ لَيَكُونُنَّ مِنَ الْغَافِلِينَ» . رَوَاهُ مُسلم

عن ابن عمر وابي هريرة انهما قالا سمعنا رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول على اعواد منبره لينتهين اقوام عن ودعهم الجمعات او ليختمن الله على قلوبهم ثم ليكونن من الغافلين رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আমীরুল ইয়ামানী (রহঃ) বলেন, মিম্বার বলতে কাঠ দ্বারা নির্মিত মিম্বার, ইট সিমেন্ট দ্বারা নির্মিত মিম্বার ছিল না। আল্লামা কুরতুবী (রহঃ) বলেন, তাদের অন্তরের অজ্ঞতা, বক্রতা ও অহমিকাবশতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাদের অন্তরে মুহর মেরে দেবেন। আল্লামা ‘ইরাক্বী (রহঃ) বলেনঃ অন্তরে মুহর মারা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তার অন্তরটা মুনাফিক্বী অন্তরে পরিণত হবে। যেমন ত্ববারানী ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবী আওফা (রাঃ) থেকে মারফূ‘ভাবে বর্ণনা করেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি জুমু‘আর আযান শুনেও তাতে গমন করে না। এমনকি তিন দিন জুমু‘আয় আসলো না, ফলে তার অন্তরে মরিচিকা পড়ে। অতঃপর মুনাফিক্বী অন্তরে পরিণত হয়।’’


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer