পরিচ্ছেদঃ ৩৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দু‘আ কুনূত

১২৯০-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে এক মাস পর্যন্ত প্রতিদিন যুহর, ’আসর, মাগরিব, ’ইশা ও ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের শেষ রাক্’আতে ’সামি’আল্ল-হু লিমান হামিদাহ’ বলার পর দু’আ কুনূত পড়তেন। এতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বানী সুলায়ম-এর কয়েকটি গোত্র, রি’ল, যাকওয়ান, ’উসাইয়্যাহ্ এর জীবিতদের জন্যে বদ্দু’আ করতেন। পেছনের লোকেরা ’আমীন’ ’আমীন’ বলতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرًا مُتَتَابِعًا فِي الظّهْر وَالْعصر وَالْمغْرب وَالْعشَاء وَصَلَاة الصُّبْح إِذا قَالَ: «سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ» مِنَ الرَّكْعَةِ الْآخِرَة يَدْعُو عَلَى أَحْيَاءٍ مَنْ بَنِي سُلَيْمٍ: عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ وَعُصَيَّةَ وَيُؤَمِّنُ مَنْ خَلْفَهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن ابن عباس قال: قنت رسول الله صلى الله عليه وسلم شهرا متتابعا في الظهر والعصر والمغرب والعشاء وصلاة الصبح إذا قال: «سمع الله لمن حمده» من الركعة الآخرة يدعو على أحياء من بني سليم: على رعل وذكوان وعصية ويؤمن من خلفه. رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: ধারাবাহিকভাবে এক মাসের প্রতিটি দিনেই কুনূত পড়তেন কোন সময়ই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বর্জন করতেন না। যুহর, ‘আসর, মাগরিব, ‘ইশা ও ফাজ্‌র (ফজর) সব ওয়াক্তেই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কুনূত পড়তেন। এখান থেকে প্রমাণিত হয় যে, কুনূতে নাযিলাটা কতিপয় সালাতের সাথে নির্দিষ্ট নয় এবং হাদীসে যারা কুনূতে নাযিলাহ্ পড়া উচ্চ আওয়াজে পঠিত ক্বিরাআত (কিরআত) বিশিষ্ট সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কিংবা ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের সাথে নির্দিষ্ট করেন, তাদের কথাকে প্রত্যাখ্যান করছে।

বিঃ দ্রঃ আলোচ্য হাদীসে উল্লেখিত বানী সুলায়ম একটি গোত্র আর এ গোত্রের তিনটি শাখা রয়েছে।

(১) রি‘ল ইবনু খালিদ ইবনু ‘আওফ ইবনু ‘ইমরুল ক্বায়স ইবনু বাহসাহ্ ইবনু সুলায়ম (রি‘ল)

(২) যাক্ওয়ান ইবনু সা‘লাবাহ্ ইবনু বাহসাহ্ ইবনু সুলায়ম (যাক্ওয়ান)

(৩) ‘আসিয়্যাহ্ ইবনু খাফফাফ ইবনু ‘ইমরুল ক্বায়স ইবনু বাহসাহ্ ইবনু সুলায়ম (‘আসিয়্যাহ্)।

এ তিনটি গোত্র সুলায়ম গোত্রেরই শাখা।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দু‘আ কুনূত

১২৯১-[৪] আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে এক মাস পর্যন্ত (রুকূ’র পরে) ’দু’আ কুনূত’ পাঠ করেছেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা ত্যাগ করেছেন। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَنَتَ شَهْرًا ثُمَّ تَرَكَهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن أنس: أن النبي صلى الله عليه وسلم قنت شهرا ثم تركه. رواه أبو داود والنسائي

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরয সালাতে রুকূ‘র পরে কুনূতে নাযিলাহ্ পড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। যে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে। এ বিষয়ে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চার ওয়াক্ত সালাতে (যুহর ‘আসর, মাগরিব ও ‘ইশার সালাত) কুনূতে নাযিলাহ্ বর্জন করেছেন কিন্তু ফজরে বর্জন করেননি। অথবা তিনি গোত্রগুলোর উপরে অভিসম্পাত করা বর্জন করেছিলেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দু‘আ কুনূত

১২৯২-[৫] আবূ মালিক আল আশজা’ঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতার কাছে প্রশ্ন করেছিলাম, হে পিতা! আপনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবূ বকর, ’উমার, ’উসমান, আর ’আলী (রাঃ)-এর পেছনে কুফায় প্রায় পাঁচ বছর পর্যন্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন। এসব মর্যাদাবান ব্যক্তিগণ কি ’’দু’আ কুনূত’’ পড়তেন? তিনি জবাব দিলেন, হে আমার পুত্র! (দু’আ কুনূত পড়া) বিদ’আত। (তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَن أبي مَالك الْأَشْجَعِيّ قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي: يَا أَبَتِ إِنَّكَ قَدْ صليت خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِي بكر وَعمر وَعُثْمَان وَعلي هَهُنَا بِالْكُوفَةِ نَحْوًا مِنْ خَمْسِ سِنِينَ أَكَانُوا يَقْنُتُونَ؟ قَالَ: أَيْ بُنَيَّ مُحْدَثٌ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْن مَاجَه

وعن أبي مالك الأشجعي قال: قلت لأبي: يا أبت إنك قد صليت خلف رسول الله صلى الله عليه وسلم وأبي بكر وعمر وعثمان وعلي ههنا بالكوفة نحوا من خمس سنين أكانوا يقنتون؟ قال: أي بني محدث . رواه الترمذي والنسائي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: ফরয অথবা ফাজ্‌র (ফজর) সালাতে, কুনূতে নাযিলাহ্-এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সর্বদাই কুনূতে নাযিলার উপর অবিচল থাকা, সাধারণ বিতরের কুনূত উদ্দেশ্য নয়। সুতরাং এটা প্রমাণিত হয় যে, কুনূতে নাযিলাহ্ ছিল নির্দিষ্ট কিছু দিনের জন্য, এটি সর্বদা ‘আমল নয়। বায়হাক্বী (রহঃ) বলেন যে, ত্বারিক্ব ইবনু আশ্ইয়াম (মালিক আল আশ্জা‘ঈ (রাঃ)-এর বাবা) কুনূত মুখস্থ করেননি বিধায় এটি তার নিকট নতুন মনে হয়েছে। কাজেই কুনূত পড়ার হুকুম হলো যার মুখস্থ রয়েছে সে পড়বে যার মুখস্থ নেই সে পড়বে না। (বায়হাক্বী- ২য় খন্ড, ২১৩ পৃঃ)

তিনি ছাড়া অন্য মুহাক্কিক্বগণ বলেছেন যে, এটা এ বিষয়ে দলীল নয় যে, সাহাবীগণ কুনূত পড়েননি। বরং ত্বারিক্ব ইবনু আশ্ইয়াম (রাঃ) সহাবায়ে কিরামগণের সাথে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন যতটুকু তিনি দেখেছেন, ততটুকুই গ্রহণ করেছেন। (হয়ত তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কুনূত পড়তে দেখেননি)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে