পরিচ্ছেদঃ ২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’বার সালাত আদায় করা

১১৫৩-[৪] বুসর ইবনু মিহজান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি (তার পিতা মিহজান) এক সভায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলেন। এমন সময় আযান হয়ে গেল। তাই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের জন্যে দাঁড়িয়ে গেলেন ও সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষ করে ফিরে আসলেন। দেখলেন মিহজান তার স্থানে বসে আছে। তিনি তাকে প্রশ্ন করলেন। মানুষের সঙ্গে (জামা’আতে) সালাত আদায় করতে তোমাকে কোন জিনিস নিষেধ করেছিল? তুমি কি মুসলিম না। মিহজান বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! আমি মুসলিম। কিন্তু আমি আমার পরিবারের সঙ্গে সালাত আদায় করে এসেছি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তোমার বাড়িতে সালাত আদায় করে আসার পরে মসজিদে এসে সালাত হচ্ছে দেখলে লোকদের সঙ্গে (জামা’আতে) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে তুমি (এর পূর্বে) সালাত আদায় করে থাকলেও। (মালিক, নাসায়ী)[1]

وَعَن بسر بن محجن عَن أَبِيه أَنَّهُ كَانَ فِي مَجْلِسٍ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأُذِّنَ بِالصَّلَاةِ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى وَرَجَعَ وَمِحْجَنٌ فِي مَجْلِسِهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَ النَّاسِ؟ أَلَسْتَ بِرَجُلٍ مُسْلِمٍ؟» فَقَالَ: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ وَلَكِنِّي كُنْتُ قَدْ صَلَّيْتُ فِي أَهْلِي فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا جِئْتَ الْمَسْجِدَ وَكُنْتَ قَدْ صَلَّيْتَ فَأُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَصَلِّ مَعَ النَّاسِ وَإِنْ كُنْتَ قَدْ صَلَّيْتَ» . رَوَاهُ مَالك وَالنَّسَائِيّ

وعن بسر بن محجن عن ابيه انه كان في مجلس مع رسول الله صلى الله عليه وسلم فاذن بالصلاة فقام رسول الله صلى الله عليه وسلم فصلى ورجع ومحجن في مجلسه فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم ما منعك ان تصلي مع الناس الست برجل مسلم فقال بلى يا رسول الله ولكني كنت قد صليت في اهلي فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا جىت المسجد وكنت قد صليت فاقيمت الصلاة فصل مع الناس وان كنت قد صليت رواه مالك والنساىي

ব্যাখ্যা: (مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَ النَّاسِ؟) ‘‘লোকদের সাথে সালাত আদায় করতে তোমাকে কিসে বাধা দিলো।’’ অর্থাৎ আমার সাথে যে মুসলিম জামা‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলো তুমি তাদের সাথে সালাত আদায় করলে না কেন? এর কারণ কি?

(أَلَسْتَ بِرَجُلٍ مُسْلِمٍ؟) ‘‘তুমি কি মুসলিম নও?’’ বাজীরা বলেনঃ এখানে হামযাহ্ অব্যয়টি প্রশ্নবোধক হতে পারে। আবার তাওবীখ তথা ভৎর্সনা ও ধমকের জন্যও হতে পারে। আর সর্বশেষটিই প্রকাশমান। এতে এটা বুঝা যায় না যে, কোন মুসলিম জামা‘আতের সাথে সালাত আদায় না করলেই সে অমুসলিম।

(فَقَالَ: بَلى يَا رَسُولَ اللّهِ) ‘‘সে বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল!’’ আমি প্রকৃতপক্ষেই একজন মুসলিম। (وَلَكِنِّي كُنْتُ قَدْ صَلَّيْتُ فِي أَهْلِي) ‘‘তবে আমি তো আমার আহলে তথা বাড়ীতে সালাত আদায় করেছি। বাড়ীতে আদায় করা সালাতকে যথেষ্ট মনে করে পুনরায় সালাত আদায় করিনি।

(فَصَلِّ مَعَ النَّاسِ وَإِنْ كُنْتَ قَدْ صَلَّيْتَ) ‘‘সালাত আদায় করে থাকলেও তুমিই লোকদের সাথে পুনরায় সালাত আদায় করবে’’। অর্থাৎ বাড়ীতে সালাত আদায় করার পর মসজিদে এসে লোকজনদেরকে সালাতরত পেলে তাদের সাথে পুনরায় সালাত আদায় করবে।

হাদীসের শিক্ষাঃ কোন ব্যক্তি বাড়ীতে একাকী অথবা জামা‘আতে সালাত আদায় করার পর মসজিদে এসে ইমামকে সালাতরত পেলে অথবা তার আগমনের পর ইমাম সালাতরত হলে সে ব্যক্তি ইমামের সাথে পুনরায় সালাত আদায় করবে। তা পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের যে কোন সালাতই হোক না কেন। তার প্রথম আদায়কৃত সালাত ফরয সালাত হিসেবে গণ্য হবে। আর পরের সালাতটি নফল সালাত হিসেবে হিসেবে গণ্য হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’বার সালাত আদায় করা

১১৫৪-[৫] আসাদ ইবনু খুযায়মাহ্ গোত্রের এক লোক থেকে বর্ণিত। তিনি আবূ আইয়ূব আল আনসারী (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলেন। আমাদের কেউ বাড়িতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে মসজিদে আসলে (জামা’আতে) সালাত হচ্ছে দেখলে তাদের সাথে সালাত পড়ি। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে আমার মনে খটকা অনুভব করি। আবূ আইয়ূব আল আনসারী জবাবে বললেন, আমিও এ সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করেছি। তিনি বলেছেন, এটা (দ্বিতীয়বার সালাত আদায় করা) তার জন্যে জামা’আতের অংশ সমতুল্য। (এতে খটকার কিছু নেই)। (মালিক, আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ رَجُلٍ مِنْ أَسَدِ بْنِ خُزَيْمَةَ أَنَّهُ سَأَلَ أَبَا أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيَّ قَالَ: يُصَلِّي أَحَدُنَا فِي مَنْزِلِهِ الصَّلَاةَ ثُمَّ يَأْتِي الْمَسْجِدَ وَتُقَامُ الصَّلَاةُ فَأُصَلِّي مَعَهُمْ فَأَجِدُ فِي نَفْسِي شَيْئًا من ذَلِك فَقَالَ أَبُو أَيُّوبَ: سَأَلَنَا عَنْ ذَلِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «فَذَلِكَ لَهُ سَهْمُ جَمْعٍ» . رَوَاهُ مَالِكٌ وَأَبُو دَاوُد

وعن رجل من اسد بن خزيمة انه سال ابا ايوب الانصاري قال يصلي احدنا في منزله الصلاة ثم ياتي المسجد وتقام الصلاة فاصلي معهم فاجد في نفسي شيىا من ذلك فقال ابو ايوب سالنا عن ذلك النبي صلى الله عليه وسلم قال فذلك له سهم جمع رواه مالك وابو داود

ব্যাখ্যা: فَذلِكَ لَه سَهْمُ جَمْعٍ এর ব্যাখ্যাঃ দলের সাওয়াবের একটি অংশ।

ইমাম খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, কল্যাণের এক অংশ। এখানে আরো একটি ব্যাখ্যাও হতে পারে যেমনঃ আখফাশ বলেন, (سَهْمُ جَمْعٍ) দ্বারা সৈন্যদলের সাওয়াবের এক অংশ উদ্দেশ্য। আর সৈন্যদলের অংশ অর্থ হল গনীমাত বা যুদ্ধলব্ধ সম্পদ এবং তিনি আরো বলেন, এখানে جَمْعٍ শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সৈন্যদল দলীল হিসেবে يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ : ১৫৫, ১৬৬) ও سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ (সূরাহ্ আল ক্বামার ৫৪ : ৪৫) ও فَلَمَّا تَرَاءَى الْجَمْعَانِ (সূরাহ্ আশ্ শু‘আরা ২৬ : ৬১) আয়াতগুলো পেশ করেছেন।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’বার সালাত আদায় করা

১১৫৫-[৬] ইয়াযীদ ইবনু ’আমির (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন) আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলাম। সে সময় তিনি লোকজন নিয়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করছিলেন। আমি (এক পাশে) বসে থাকলাম। তাঁদের সঙ্গে জামা’আতে অংশগ্রহণ করলাম না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করে এদিকে ফিরে আমাকে বসা অবস্থায় দেখে বললেন। তুমি কি মুসলিম না, হে ইয়াযীদ! সালাত আদায় করনি। আমি বললাম। হ্যাঁ! আমি মুসলিম হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, তাহলে লোকদের সঙ্গে সালাতে অংশগ্রহণ করতে তোমাকে নিষেধ করেছে কে? আমি বললাম, আমি আমার ঘরে সালাত আদায় করে এসেছি। আমার ধারণা ছিল আপনিও সালাত আদায় করে ফেলেছেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যখন মসজিদে আসবে আর লোকজনকে জামা’আতে সালাত আদায় করতে দেখবে। তখন তুমিও সালাতে অংশগ্রহণ করবে। যদি তুমি এর পূর্বে (একবার) সালাত আদায় করেও থাকো। আর এ (দ্বিতীয়বারের) সালাত তোমার জন্যে নফল হিসেবে গণ্য হবে। আর পূর্বের পড়া সালাত ফরয হিসেবে আদায় হবে। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن يَزِيدَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: جِئْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي الصَّلَاةِ فَجَلَسْتُ وَلَمْ أَدْخُلْ مَعَهُمْ فِي الصَّلَاةِ فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَآنِي جَالِسا فَقَالَ: «ألم تسلم يَا زيد؟» قُلْتُ: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ أَسْلَمْتُ. قَالَ: «وَمَا مَنَعَكَ أَنْ تَدْخُلَ مَعَ النَّاسِ فِي صَلَاتِهِمْ؟» قَالَ: إِنِّي كُنْتُ قَدْ صَلَّيْتُ فِي مَنْزِلِي أَحْسَبُ أَنْ قَدْ صَلَّيْتُمْ. فَقَالَ: «إِذَا جِئْتَ الصَّلَاةَ فَوَجَدْتَ النَّاسَ فَصَلِّ مَعَهُمْ وَإِنْ كُنْتَ قَدْ صَلَّيْتَ تَكُنْ لَكَ نَافِلَةً وَهَذِه مَكْتُوبَة» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن يزيد بن عامر قال جىت رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو في الصلاة فجلست ولم ادخل معهم في الصلاة فلما انصرف رسول الله صلى الله عليه وسلم راني جالسا فقال الم تسلم يا زيد قلت بلى يا رسول الله قد اسلمت قال وما منعك ان تدخل مع الناس في صلاتهم قال اني كنت قد صليت في منزلي احسب ان قد صليتم فقال اذا جىت الصلاة فوجدت الناس فصل معهم وان كنت قد صليت تكن لك نافلة وهذه مكتوبة رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: সকলের জেনে রাখা উচিত যে, একই সালাত দু’বার পড়া হলে তার হুকুমের ব্যাখ্যায় ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া যায়, অর্থাৎ কোন বারেরটা ফরয আর কোন বারেরটা নফল হবে প্রথমবারেরটা ফরয হবে না দ্বিতীয় বারেরটা?

ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) তার প্রথম মতে বলেছেন, যদি প্রথমবারেরটা একাকী পড়ে থাকে আর দ্বিতীয়টি জামা‘আতের সাথে পড়ে থাকে তাহলে দ্বিতীয়টাই ফরয ধরা হবে এবং তিনি তার দ্বিতীয় মতে বলেছেন, প্রথমবারের সালাতই ফরয হবে। হানাফী মাযহাবের মতও এটা। আর এটাই সহীহ মত ইয়াযীদ বিন আসওয়াদ ও মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত মিহজান কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের মাধ্যমে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’বার সালাত আদায় করা

১১৫৬-[৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক তাঁকে প্রশ্ন করলঃ আমি আমার বাড়িতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে নেই। এরপর মসজিদে আসলে (মানুষদেরকে) ইমামের সঙ্গে সালাত আদায় করা অবস্থায় পাই। আমি কি (এ অবস্থায়) এ ইমামের পেছনে সালাত আদায় করতে পারি? ইবনু ’উমার (রাঃ) বললেন হ্যাঁ, পারো। তারপর ঐ লোক আবার প্রশ্ন করল। তাহলে আমার (ফরয) সালাত কোনটি মনে করব? ইবনু ’উমার (রাঃ) বললেন, এটা কি তোমার কাজ? এটা আল্লাহ তা’আলার কাজ। তিনি যে সালাতকে চাইবেন ফরয হিসেবে গ্রহণ করে নেবেন। (মালিক)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَجُلًا سَأَلَهُ فَقَالَ: إِنِّي أُصَلِّي فِي بَيْتِي ثُمَّ أُدْرِكُ الصَّلَاةَ فِي الْمَسْجِدِ مَعَ الْإِمَامِ أَفَأُصَلِّي مَعَهُ؟ قَالَ لَهُ: نَعَمْ قَالَ الرجل: أَيَّتهمَا أجعَل صَلَاتي؟ قَالَ عُمَرَ: وَذَلِكَ إِلَيْكَ؟ إِنَّمَا ذَلِكَ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ يَجْعَلُ أَيَّتَهُمَا شَاءَ. رَوَاهُ مَالِكٌ

وعن ابن عمر رضي الله عنهما ان رجلا ساله فقال اني اصلي في بيتي ثم ادرك الصلاة في المسجد مع الامام افاصلي معه قال له نعم قال الرجل ايتهما اجعل صلاتي قال عمر وذلك اليك انما ذلك الى الله عز وجل يجعل ايتهما شاء رواه مالك

ব্যাখ্যা: (أَيَّتَهُمَا أجعَل صَلَاتي؟) ‘‘এ দুই সালাতের মাঝে কোন সালাতকে আমার সালাত বলে গণ্য করব?’’ অর্থাৎ সালাত দু’বার আদায় করলে কোন্ সালাতটিকে আমার পক্ষ থেকে ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) গণ্য করব?

(وَذلِكَ إِلَيْكَ؟) ‘‘এটা কি তোমার হাতে?’’ অর্থাৎ ফরয গণ্য করা তথা সালাত কবূল করা বা না করা তোমার হাতে নয়।

(إِنَّمَا ذلِكَ إِلَى اللّهِ) ‘‘এটিতো একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার হাতে, তিনি যেটি ইচ্ছা সেটিই ফরয বলে গণ্য করেন।’’ অর্থাৎ তুমি যদি উভয় সালাত ফারযের (ফরযের/ফরজের) নিয়্যাতে আদায় করে থাকো তাহলে আল্লাহ তার ইচ্ছানুযায়ী দু’টির একটি ফরয হিসেবে গণ্য করবেন।

ইমাম মালিক-এর অভিমত অনুযায়ী দ্বিতীয়বারও ফারযের (ফরযের/ফরজের) নিয়্যাতেই আদায় করবে। আর গ্রহণ করার বিষয়টি আল্লাহর ওপর ন্যস্ত করবে। তিনি দু’টির যে কোন একটিকে ফরয বলে গণ্য করবেন।

জমহূর ‘আলিমদের মতে দ্বিতীয়বার নফলের নিয়্যাতে আদায় করবে এবং প্রথম সালাতটি যা সে বাড়ীতে আদায় করেছিল তা ফরয হিসেবে ধরে নিবে।

আমি (মুবারকপূরী) বলছিঃ সহীহ মারফূ' হাদীসে স্পষ্ট বর্ণিত আছে যে, প্রথম আদায় করা সালাতই তার আসল সালাত। অতএব দ্বিতীয়বার আদায় করা সালাতকে নফল গণ্য করবে এবং প্রথমবারের সালাতকে ফরয সালাত ধরে নিবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’বার সালাত আদায় করা

১১৫৭-[৮] উম্মুল মু’মিনীন মায়মূনাহ্ (রাঃ)-এর মুক্ত গোলাম সুলায়মান (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ)-এর নিকট বালাতে (মসজিদের আঙিনায়) আসলাম। সে সময় মানুষেরা মসজিদে (জামা’আতে) সালাত আদায় করছিল। আমরা ইবনু ’উমার (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস কাছে আবেদন করলাম, আপনি লোকদের সঙ্গে (জামা’আতে) সালাত আদায় করছেন না কেন? জবাবে ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) বললেন, আমি সালাত আদায় করে ফেলেছি। আর আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তোমরা একই দিনে এক সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) দু’বার আদায় করবে না। (আহমাদ, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَنْ سُلَيْمَانَ مَوْلَى مَيْمُونَةَ قَالَ: أَتَيْنَا ابْنَ عُمَرَ عَلَى الْبَلَاطِ وَهُمْ يُصَلُّونَ. فَقُلْتُ: أَلَا تُصَلِّي مَعَهُمْ؟ فَقَالَ: قَدْ صَلَّيْتُ وَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُول الله يَقُولُ: «لَا تُصَلُّوا صَلَاةً فِي يَوْمٍ مَرَّتَيْنِ» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن سليمان مولى ميمونة قال اتينا ابن عمر على البلاط وهم يصلون فقلت الا تصلي معهم فقال قد صليت واني سمعت رسول الله يقول لا تصلوا صلاة في يوم مرتين رواه احمد وابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: لَا تُصَلُّوا صَلَاةً فِي يَوْمٍ مَرَّتَيْنِ ‘‘একই দিনে একই সালাত দু’বার আদায় করবে না।’’

ইমাম শাওকানী বলেন, এ হাদীসটি তাদের দলীল যারা বলেন যে, কোন ব্যক্তি একবার জামা‘আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার পর পুনরায় জামা‘আত পেলে তিনি আর পুনর্বার জামা‘আতে শরীক হবেন না। সে জামা‘আত যেমনই হোক না কেন। কেননা জামা‘আতের ফাযীলাত তিনি প্রথম জামা‘আতের মাধ্যমেই অর্জন করেছেন। এ হাদীসটি পূর্বে বর্ণিত ঐ হাদীস বিরোধী যাতে ইবনু ‘উমার (রাঃ) ফাতাওয়া দিয়েছেন যে, জামা‘আত পেলে তিনি পুনরায় জামা‘আতে শরীক হবেন। এ দুই বিপরীতমুখী হাদীসের সমন্বয়ের ব্যাপারে ‘আলিমগণ ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

(১) এ হাদীসটি তাদের বেলায় প্রযোজ্য যারা জামা‘আতে সালাত আদায় করেছেন। তারা পুনরায় ঐ সালাত আদায় করবে না। আর অন্য হাদীসটি তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা একাকী সালাত আদায় করেছে। তারা পুনরায় জামা‘আত পেলে জামা‘আতে শরীক হবে।

(২) ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত এ হাদীসের উদ্দেশ্য হল দ্বিতীয়বার ফারযের (ফরযের/ফরজের) নিয়্যাতে সালাত আদায় করবে না বরং প্রথম সালাতকে ফরয সালাত গণ্য করবে। আর পরের সালাত নফলের নিয়্যাতে আদায় করবে।

(৩) বিনা কারণে একই দিনে এক সালাত  দু’বার আদায় করবে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’বার সালাত আদায় করা

১১৫৮-[৯] নাফি’ (রহঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) বলতেন, যে লোক মাগরিবের সালাত কি ফজরের (ফজরের) সালাত একা একা আদায় করে নিয়েছে। এরপর এ সালাতগুলোকে (অন্যত্র) ইমামকে জামা’আতে আদায় করা অবস্থায় পায় তাহলে সে এ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কে পুনরায় আদায় করবে না। (মালিক)[1]

وَعَنْ نَافِعٍ قَالَ: إِنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَقُولُ: مَنْ صَلَّى الْمَغْرِبَ أَوِ الصُّبْحَ ثُمَّ أَدْرَكَهُمَا مَعَ الْإِمَامِ فَلَا يَعُدْ لَهما. رَوَاهُ مَالك

وعن نافع قال ان عبد الله بن عمر كان يقول من صلى المغرب او الصبح ثم ادركهما مع الامام فلا يعد لهما رواه مالك

ব্যাখ্যা: (فَلَا يَعُدْ لَهما) ‘‘সে পুনরায় এ দু’ সালাত আদায় করবে না।’’ অর্থাৎ মাগরিব ও ফাজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার পর জামা‘আত পেলে সে আবার ঐ সালাতে শরীক হবে না। কেননা দ্বিতীয় সালাত নফল হিসেবে গণ্য। আর ফাজরের (ফজরের) সালাতের পর নফল সালাত আদায় করা যায় না। আর মাগরিবের সালাত এজন্য তা পুনর্বার আদায় করবে না যে, নফল সালাত বিজোড় হয় না। ইবরাহীম নাখ্‘ঈ এবং আওযা‘ঈ ইমামদ্বয়ের অভিমতও তাই। ‘আসরের পর নফল সালাত আদায় করা নিষেধ হওয়া সত্ত্বেও ইবনু ‘উমার (রাঃ) ‘আসরের কথা এজন্য উল্লেখ করেননি যে, তিনি মনে করেন ‘আসরের পর সূর্য হলুদ বর্ণ ধারণ করার পর নফল সালাত আদায় করা নিষিদ্ধ তার আগে নয়।

আর যারা উপরোক্ত দু’ সময়ে পুনরায় সালাত আদায় করা বৈধ মনে করেন তারা বলেন যে, নিষেধের হাদীস ‘আম। আর পুনরায় সালাত আদায় করার হাদীস খাস। আর নিয়মানুযায়ী খাস হাদীস ‘আম হাদীসের উপর প্রাধান্য পায়। অতএব উপরোক্ত দু’ সময়ে একাকী সালাত আদায় করার পর জামা‘আত পেলে তাতে শরীক হতে কোন বাধা নেই।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে