পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৭২-[২১] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নিজেদের দেখেছি জামা’আতে সালাত আদায় করা থেকে শুধু মুনাফিক্বরাই বিরত থাকত যাদের মুনাফিক্বী অত্যন্ত স্পষ্ট ছিল অথবা রুগ্ন লোক। তবে যে রুগ্ন লোক দু’ব্যক্তির ওপর ভর করে চলতে পারতো সেও জামা’আতে আসত। এরপর ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হিদায়াতের পথসমূহ শিখিয়ে দিয়েছেন। তাঁর শিখানো হিদায়াতের পথসমূহ থেকে একটি এই যে, যে মসজিদে আযান দেয়া হয় সেটাতে জামা’আতের সাথে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা।

অপর একটি বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আগামীকাল আল্লাহর সাথে পূর্ণ মুসলিম হিসেবে সাক্ষাৎ করে আনন্দিত হতে চায়, সে যেন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত উপযুক্ত সময়ে আদায় করার প্রতি যত্নবান হয়ে যেখানে সালাতের জন্যে আযান দেয়া হয় সেখানে সালাত আদায় করে। কারণ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের রসূলের জন্যে ’সুনানুল হুদা’ (হিদায়াতের পথ) নির্দিষ্ট করেছেন। জামা’আতের সাথে এ পাঁচ বেলা সালাত আদায় করাও এ ’সুনানুল হুদার’ মধ্যে একটি অন্যতম। তোমরা যদি তোমাদের ঘরে সালাত আদায় কর, যেভাবে এ পিছে পড়ে থাকা লোকগুলো (মুনাফিক্ব) তাদের বাড়িতে সালাত আদায় করে, তবে তোমরা অবশ্যই তোমাদের নবীর সুন্নাতকে ছেড়ে দিলে। যদি তোমরা তোমাদের নবীর হিদায়াতসমূহ ছেড়ে দাও তাহলে অবশ্যই পথভ্রষ্ট হবে।

তোমাদের মধ্যে যারা ভাল করে পাক-পবিত্রতা অর্জন করে, তারপর এসব মসজিদের কোন মসজিদে সালাত আদায় করতে যায়, তবে আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি কদমে একটি করে নেকী দান করবেন, তার মর্যাদা এক ধাপ উন্নত করবেন এবং তার একটি পাপ মাফ করে দেন। আমি আমাদেরকে দেখেছি যে, প্রকাশ্য মুনাফিক্বরা ছাড়া অন্য কেউ সালাতের জামা’আত থেকে পিছে থাকতো না বরং তাদেরকে দু’জনের কাঁধে হাত দিয়ে এনে সালাতের সারিতে দাঁড় করিয়ে দেয়া হত। (মুসলিম)[1]

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ أَوْ مَرِيضٌ إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ الصَّلَاةَ وَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَنَا سُنَنَ الْهُدَى وَإِنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى الصَّلَاةُ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ
وَفِي رِوَايَة: مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَلْقَى اللَّهَ غَدًا مُسْلِمًا فليحافظ على هَؤُلَاءِ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ حَيْثُ يُنَادَى بِهِنَّ فَإِنَّ اللَّهَ شرع لنبيكم صلى الله عَلَيْهِ وَسلم سُنَنَ الْهُدَى وَإِنَّهُنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى وَلَوْ أَنَّكُمْ صَلَّيْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ كَمَا يُصَلِّي هَذَا الْمُتَخَلِّفُ فِي بَيْتِهِ لَتَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ وَلَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ لَضَلَلْتُمْ وَمَا مِنْ رَجُلٍ يَتَطَهَّرُ فَيُحْسِنُ الطُّهُورَ ثُمَّ يَعْمِدُ إِلَى مَسْجِدٍ مِنْ هَذِهِ الْمَسَاجِدِ إِلَّا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ بِكُلِّ خُطْوَةٍ يَخْطُوهَا حَسَنَةً وَرَفَعَهُ بِهَا دَرَجَةً ويحط عَنْهُ بِهَا سَيِّئَةً وَلَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنْهَا إِلَّا مُنَافِقٌ مَعْلُومُ النِّفَاقِ وَلَقَدْ كَانَ الرَّجُلُ يُؤْتَى بِهِ يُهَادَى بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ حَتَّى يُقَام فِي الصَّفّ. رَوَاهُ مُسلم

عن عبد الله بن مسعود قال لقد رايتنا وما يتخلف عن الصلاة الا منافق قد علم نفاقه او مريض ان كان المريض ليمشي بين رجلين حتى ياتي الصلاة وقال ان رسول الله صلى الله عليه وسلم علمنا سنن الهدى وان من سنن الهدى الصلاة في المسجد الذي يوذن فيهوفي رواية من سره ان يلقى الله غدا مسلما فليحافظ على هولاء الصلوات الخمس حيث ينادى بهن فان الله شرع لنبيكم صلى الله عليه وسلم سنن الهدى وانهن من سنن الهدى ولو انكم صليتم في بيوتكم كما يصلي هذا المتخلف في بيته لتركتم سنة نبيكم ولو تركتم سنة نبيكم لضللتم وما من رجل يتطهر فيحسن الطهور ثم يعمد الى مسجد من هذه المساجد الا كتب الله له بكل خطوة يخطوها حسنة ورفعه بها درجة ويحط عنه بها سيىة ولقد رايتنا وما يتخلف عنها الا منافق معلوم النفاق ولقد كان الرجل يوتى به يهادى بين الرجلين حتى يقام في الصف رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (مَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ) ‘‘মুনাফিক্ব ব্যতীত কেউ সালাত আদায় করা থেকে বিরত থাকত না’’। এতে বুঝা গেল যে, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় থেকে বিরত থাকার কারণ হলো নিফাক্ব।

(سُنَنُِ الْهُدَى) হিদায়াতের তরীকা বা পদ্ধতি। এখানে সুন্নাত দ্বারা পরিভাষাগত সুন্নাত উদ্দেশ্য নয় বরং শাব্দিক অর্থ উদ্দেশ্য।

(لَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ لَضَلَلْتُمْ) ‘‘তোমরা যদি তোমাদের নাবীর সুন্নাত (পদ্ধতি) ছেড়ে দাও তাহলে তোমরা গোমরাহ (পথভ্রষ্ট) হয়ে যাবে’’। অর্থাৎ তোমাদের নাবীর বর্ণিত পদ্ধতি পরিত্যাগ করার কারণে তা তোমাদেরকে কুফরীর দিকে নিয়ে যাবে। এভাবে যে, তোমরা ধীরে ধীরে ইসলামের মৌলিক বিষয় ছেড়ে দিতে থাকবে ফলে তোমরা ধীরে ধীরে ইসলামের সীমানা পেরিয়ে তার গন্ডির বহির্ভূত হয়ে পড়বে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৭৩-[২২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যদি ঘরে নারী ও শিশুরা না থাকত তবে আমি ’ইশার সালাতের জামা’আত আদায় করতাম এবং আমার যুবকদেরকে (জামা’আত ত্যাগকারী) মানুষদের ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দিতাম। (আহমাদ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْلَا مَا فِي الْبُيُوتِ مِنَ النِّسَاءِ وَالذُّرِّيَّةِ أَقَمْتُ صَلَاةَ الْعِشَاءِ وَأَمَرْتُ فِتْيَانِي يُحْرِقُونَ مَا فِي الْبُيُوتِ بِالنَّارِ» . رَوَاهُ أَحْمد

وعن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لولا ما في البيوت من النساء والذرية اقمت صلاة العشاء وامرت فتياني يحرقون ما في البيوت بالنار رواه احمد

ব্যাখ্যা: (لَوْلَا مَا فِي الْبُيُوْتِ مِنَ النِّسَاءِ وَالذُّرِّيَّةِ) ‘‘ঘরে যদি মহিলা ও শিশু না থাকত’’ অত্র হাদীসে সালাতের জামা‘আতের উপস্থিত না হয়ে যারা নিজ বাড়ীতে অবস্থান করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বাড়ী জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করা সত্ত্বেও তা থেকে বিরত থাকার কারণ বর্ণিত হয়েছে। আর তা হলো নারী ও শিশু। যেহেতু নারীদের সালাতের জামা‘আতে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক নয় এবং শিশুদের ওপর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ফরয নয়। ফলে তারা বাড়ীতেই অবস্থান করে। তাই তাদের কারণে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় ইচ্ছা থেকে বিরত থাকলেন।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৭৪-[২৩] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেনঃ তোমরা যখন মসজিদে থাকবে আর সে মুহূর্তে আযান দিলে তোমরা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় না করে মাসজিদ ত্যাগ করবে না। (আহমাদ)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا كُنْتُمْ فِي الْمَسْجِدِ فَنُودِيَ بِالصَّلَاةِ فَلَا يَخْرُجْ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُصَلِّيَ. رَوَاهُ أَحْمد

وعنه قال امرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا كنتم في المسجد فنودي بالصلاة فلا يخرج احدكم حتى يصلي رواه احمد

ব্যাখ্যা: ‘‘যখন তোমরা মসজিদে থাক আর এমতাবস্থায় আযান দেয়া হয় তখন তোমাদের মধ্যকার কেউ যেন সালাত আদায় না করে মাসজিদ থেকে বেরিয়ে না যায়।’’

এ হাদীস প্রমাণ করে যে, আযান হওয়ার পরে মাসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বৈধ নয়। তবে সাধারণ হুকুমকে অন্য হাদীস দ্বারা বিশেষায়িত করা হয়েছে। বুখারীতে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে ‘‘ইক্বামাত হওয়ার পর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় কক্ষ থেকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের উদ্দেশে বেরিয়ে এলেন। কাতার সোজা করার পর যখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্বীয় মুসল্লাতে দাঁড়ালেন আর আমরা তার তাকবীরের অপেক্ষায়, তখন তিনি চলে গেলেন আর বললেনঃ তোমরা স্বীয় স্থানে অপেক্ষা করো। আমরা এ অবস্থায় অবস্থান করলাম। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরে এলেন, গোসল করার কারণে তাঁর মাথা থেকে পানি টপকাচ্ছিল।

এ হাদীস থেকে জানা যায়, আযান হওয়ার পরে মাসজিদ থেকে বের হওয়ার নিষেধাজ্ঞা তার জন্য প্রযোজ্য যার কোন প্রয়োজন নেই। তবে যার প্রয়োজন আছে, গোসল, উযূ (ওযু/ওজু/অজু), পায়খানা-পেশাবের চাপ ইত্যাদি যা দূর না করলে সালাত আদায় করা যায় না অথবা অন্য মসজিদের ইমাম এদের জন্য বের হওয়া বৈধ।

আর ওযর ব্যতীত সকল ‘আলিমদের মতে বের হয়ে যাওয়া মাকরূহ।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৭৫-[২৪] আবূ শা’সা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক আযান শেষে মাসজিদ থেকে চলে গেলে, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বললেন, এ লোক আবুল ক্বাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাফরমানী করল।[1]

وَعَنْ أَبِي الشَّعْثَاءِ قَالَ: خَرَجَ رَجُلٌ مِنَ الْمَسْجِدِ بَعْدَمَا أُذِّنَ فِيهِ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: أَمَّا هَذَا فَقَدَ عَصَى أَبَا الْقَاسِمِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم. رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي الشعثاء قال خرج رجل من المسجد بعدما اذن فيه فقال ابو هريرة اما هذا فقد عصى ابا القاسم صلى الله عليه وسلم رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (أَمَّا هذَا فَقَدَ عَصى أَبَا الْقَاسِمِ ﷺ) ‘‘এ ব্যক্তি আবুল ক্বাসিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমা)-এর অবাধ্য হলো’’। এ থেকে বুঝা যায় আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) জানতেন যে, ঐ ব্যক্তির বেরিয়ে যাওয়ার কোন প্রয়োজন ছিল না।

হাদীস থেকে এও জানা গেল, যে ব্যক্তি আযানের পরে মসজিদে অবস্থান করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করল সে ব্যক্তি আবুল ক্বাসিম (রাঃ)-এর আনুগত্য করল।

হাদীসের শিক্ষা: আযান হয়ে যাওয়ার পর বিনা প্রয়োজনে মাসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া হারাম।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৭৬-[২৫] ’উসমান ইবনু ’আফফান (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন লোক মসজিদে থাকা অবস্থায় আযান দেয়ার পর বিনা ওযরে বের হলে ও আবার ফিরে আসার ইচ্ছা না থাকলে সে লোক মুনাফিক্ব। (ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَدْرَكَهُ الْأَذَانُ فِي الْمَسْجِدِ ثُمَّ خَرَجَ لَمْ يَخْرُجْ لِحَاجَةٍ وَهُوَ لَا يُرِيدُ الرّجْعَة فَهُوَ مُنَافِق» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

وعن عثمان بن عفان رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من ادركه الاذان في المسجد ثم خرج لم يخرج لحاجة وهو لا يريد الرجعة فهو منافق رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যা: (فَهُوَ مُنَافِق) ‘‘সে ব্যক্তি মুনাফিক্ব’’। অর্থাৎ সে অবাধ্য, অপরাধী। অথবা এর অর্থ হলো জামা‘আত ত্যাগ করার ক্ষেত্রে মুনাফিক্বের ন্যায়। অথবা সে মুনাফিক্বের ন্যায় কাজ করল। কেননা প্রকৃত মু’মিনের কাজ এরূপ নয়। এ হাদীসের সানাদে দু’জন রাবী ‘‘আবদুল জাব্বার ইবনু আল্ আয়লী এবং ইসহাক্ব ইবনু ‘আবদুল্লাহ’’ দুর্বল। তবে এর শক্তিশালী শাহিদ রয়েছে, যেমন বায়হাক্বীতে সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ওযর ছাড়া মুনাফিক্ব ব্যতীত কোন ব্যক্তি আযান হওয়ার পর মাসজিদ থেকে বেরিয়ে যায় না। বায়হাক্বী ২য় খন্ড, ৫৬ পৃঃ, ত্ববারানীর আওসাতে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকেও এর শাহিদ রয়েছে। অতএব হাদীসটি ‘আমলযোগ্য।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৭৭-[২৬] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক আযানের শব্দ শুনল অথচ এর জবাব দিলো না তাহলে তার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হলো না। তবে কোন ওযর থাকলে ভিন্ন কথা। (দারাকুত্বনী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ فَلَمْ يُجِبْهُ فَلَا صَلَاةَ لَهُ إِلَّا مِنْ عُذْرٍ» . رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيّ

وعن ابن عباس رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال من سمع النداء فلم يجبه فلا صلاة له الا من عذر رواه الدارقطني

ব্যাখ্যা: (فَلَمْ يُجِبْهُ) ‘‘সে ডাকে সাড়া দিলো না’’। অর্থাৎ মসজিদে উপস্থিত হলো না। (فَلَا صَلَاةَ لَه) ‘‘তার সালাত নেই’’। অর্থাৎ তার ঐ সালাত আদায় হলো না যদিও সে অন্যত্র ঐ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে থাকে। এ হাদীসের প্রকাশমান অর্থ হলো, যে মসজিদে আযান হয়েছে সেখানে জামা‘আতে সালাত আদায় করা সালাত বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত। যদি আযান শ্রবণকারী ঐ জামা‘আত ত্যাগ করে তাহলে তার সালাত বাতিল। কিন্তু জমহূর ‘আলিমগণ ভিন্ন মত পোষণ করেন। তাই তারা এর ব্যাখ্যায় বলেনঃ তার সালাত পূর্ণ হলো না। অর্থাৎ পূর্ণ সাওয়াব পেলো না অথবা এ সালাতে তার সাওয়াব অর্জিত হলো না যদিও সালাত পরিত্যাগ করার অপরাধ থেকে রেহাই পেল।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৭৮-[২৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু উম্মু মাকতূম (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল! মদীনায় ক্ষতিসাধনকারী অনেক জানোয়ার ও হিংস্র জন্তু আছে। আর আমি একজন জন্মান্ধ লোক। এ সময় আপনি কি আমাকে (জামা’আতে যাওয়া থেকে) অবকাশ দিতে পারেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি কি ’’হাইয়্যা ’আলাস সলা-হ্, হাইয়্যা ’আলাল ফালা-হ’’ শব্দ শুনতে পাও? তিনি বললেন, হ্যাঁ (আমি শুনতে পাই)। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তাহলে তোমাকে জামা’আতে আসতে হবে। তাকে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জামা’আত ত্যাগের অনুমতি দিলেন না। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَن عبد الله بن أم مَكْتُوم قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الْمَدِينَةَ كَثِيرَةُ الْهَوَامِّ وَالسِّبَاعِ وَأَنَا ضَرِيرُ الْبَصَرِ فَهَلْ تَجِدُ لِي مِنْ رُخْصَةٍ؟ قَالَ: «هَلْ تَسْمَعُ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ؟» قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: «فَحَيَّهَلَا» . وَلَمْ يُرَخِّصْ لَهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن عبد الله بن ام مكتوم قال يا رسول الله ان المدينة كثيرة الهوام والسباع وانا ضرير البصر فهل تجد لي من رخصة قال هل تسمع حي على الصلاة حي على الفلاح قال نعم قال فحيهلا ولم يرخص له رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: (وَلَمْ يُرَخِّصْ) ‘‘রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জামা‘আতে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি দিলেন না।’’

এ হাদীস প্রমাণ করে যে, প্রত্যেকের জন্যই জামা‘আতে শামিল হওয়া ওয়াজিব যারা আযান শুনতে পায়। যদি তা না হত তাহলে অবশ্যই দুর্বল ও অন্ধ ব্যক্তি জামা‘আত পরিত্যাগ করার অনুমতি পেত। তবে যারা বলেন জামা‘আতে শামিল হওয়া ওয়াজিব নয় তারা এ হাদীসের বিভিন্ন প্রকার জওয়াব দিয়ে থাকেন যা প্রথম পরিচ্ছেদে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের ব্যাখ্যায় গত হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৭৯-[২৮] উম্মুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবুদ্ দারদা (রাঃ) আমার নিকট রাগান্বিত অবস্থায় আসলেন। আমি প্রশ্ন করলাম, কোন্ জিনিস তোমাকে এত রাগান্বিত করল? জবাবে আবুদ্ দারদা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি জামা’আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা ব্যতীত আর কোন কিছুই দেখতে পাই না মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মাতের মাঝে। (বুখারী)[1]

وَعَن أم الدَّرْدَاء قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيَّ أَبُو الدَّرْدَاءِ وَهُوَ مُغْضَبٌ فَقُلْتُ: مَا أَغْضَبَكَ؟ قَالَ: وَاللَّهِ مَا أَعْرِفُ مِنْ أَمْرِ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا إِلَّا أَنَّهُمْ يُصَلُّونَ جَمِيعًا. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن ام الدرداء قالت دخل علي ابو الدرداء وهو مغضب فقلت ما اغضبك قال والله ما اعرف من امر امة محمد صلى الله عليه وسلم شيىا الا انهم يصلون جميعا رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (إِلَّا أَنَّهُمْ يُصَلُّوْنَ جَمِيْعًا) ‘‘তবে তারা ‘জামা‘আতে সালাত আদায় করে।’’ এখানে আবুদ্ দারদার উদ্দেশ্য হলো যারা জামা‘আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে তারা তো এ কাজটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণেই করে এতে কোন ত্রুটি নেই। তবে তাদের অন্যান্য সকল ‘আমলেই ত্রুটি দেখা যায়। আবুদ্ দারদা (রাঃ)-এর এ উক্তি ছিল ‘উসমান (রাঃ)-এর খিলাফাতের শেষ যামানায়। যদি সে যামানায় সালাত আদায়কারীদের অন্যান্য ‘আমল ত্রুটি পরিলক্ষিত হয় তাহলে তাদের পরে যারা এসেছে তাদের ‘আমলের অবস্থা কিরূপ তা সহজেই অনুমেয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৮০-[২৯] আবূ বকর ইবনু সুলায়মান ইবনু আবূ হাসমাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) ফজরের (ফজরের) সালাতে (আমার পিতা) সুলায়মানকে হাযির পাননি। সকালে ’উমার (রাঃ) হাটে গেলেন। সুলায়মানের বাড়ীটি মাসজিদ ও হাটের মাঝামাঝি স্থানে। তিনি সুলায়মান-এর মা শিফা-এর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জিজ্ঞেস করলেন, কি ঘটনা আজ সুলায়মানকে ফাজ্‌রের (ফজরের) জামা’আতে দেখলাম না! সুলায়মানের মা উত্তর দিলেন, আজ সারা রাতই সুলায়মান সালাতে অতিবাহিত করেছে। তাই ঘুম তার ওপর বিজয়লাভ করেছে। ’উমার (রাঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি সারা রাত সালাতে দাঁড়িয়ে থাকার চেয়ে আমার নিকট ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের জামা’আতে অংশগ্রহণ করাটা বেশী প্রিয়। (মালিক)[1]

وَعَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ سُلَيْمَانَ بْنِ أَبِي حَثْمَةَ قَالَ: إِنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ فَقَدَ سُلَيْمَانَ بْنَ أَبِي حَثْمَةَ فِي صَلَاةِ الصُّبْحِ وَإِنَّ عُمَرَ غَدَا إِلَى السُّوقِ وَمَسْكَنُ سُلَيْمَانَ بَيْنَ الْمَسْجِدِ وَالسُّوقِ فَمَرَّ عَلَى الشِّفَاءِ أُمِّ سُلَيْمَانَ فَقَالَ لَهَا لَمْ أَرَ سُلَيْمَانَ فِي الصُّبْحِ فَقَالَتْ إِنَّهُ بَاتَ يُصَلِّي فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ فَقَالَ عُمَرُ لَأَنْ أَشْهَدَ صَلَاةَ الصُّبْحِ فِي الْجَمَاعَة أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَقُومَ لَيْلَةً. رَوَاهُ مَالك

وعن ابي بكر بن سليمان بن ابي حثمة قال ان عمر بن الخطاب فقد سليمان بن ابي حثمة في صلاة الصبح وان عمر غدا الى السوق ومسكن سليمان بين المسجد والسوق فمر على الشفاء ام سليمان فقال لها لم ار سليمان في الصبح فقالت انه بات يصلي فغلبته عيناه فقال عمر لان اشهد صلاة الصبح في الجماعة احب الي من ان اقوم ليلة رواه مالك

ব্যাখ্যা: (لَأَنْ أَشْهَدَ صَلَاةَ الصُّبْحِ فِي الْجَمَاعَة أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَقُومَ لَيْلَةً) ‘‘জামা‘আতে ফাজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা আমার নিকট সারারাত নফল সালাত আদায় করার চেয়ে অধিক প্রিয়।’’ এতে বুঝা যায় নফল সালাতের কারণে ফরয সালাতের জামা‘আত পরিত্যাগ করা উচিত নয়। কেননা তা নফলের চাইতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৮১-[৩০] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ দু’ব্যক্তি ও এর বেশী হলে সালাতের জামা’আত হতে পারে। (ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اثْنَانِ فَمَا فَوْقهمَا جمَاعَة» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

وعن ابي موسى الاشعري قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اثنان فما فوقهما جماعة رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যা: ‘‘দুই ও ততোধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে জামা‘আত হয়।’’ অর্থাৎ দু’জন ব্যক্তি একত্রে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলে জামা‘আতের সাওয়াব পাবে। অতএব কোন স্থানে দু’জন ব্যক্তি থাকলে তাদের জামা‘আত সহকারে সালাত আদায় করা উচিত, একাকী নয়।

এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, জামা‘আতের সর্বনিম্ন সংখ্যা দু’জন। একজন ইমাম, একজন মুক্তাদী। মুক্তাদী চাই পুরুষ, শিশু অথবা মহিলা যেই হোক না কেন। হাদীসটি যদিও য‘ঈফ কিন্তু বুখারীতে বর্ণিত মালিক ইবনু হুরায়রিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস এটিকে সমর্থন করে। তাতে আছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ যখন সালাতের সময় হবে তখন আযান দিবে ইক্বামাত দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যিনি বয়সে বড় তিনি ইমামাত করবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’জনের মধ্যে বড় জনকে ইমামাতের আদেশ এজন্য দিয়েছেন যাতে জামা‘আতের ফাযীলাত অর্জিত হয়। অতএব এটা প্রমাণিত হলো যে, দু’জনেই জামা‘আত হয়।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৮২-[৩১] বিলাল ইবনু ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ মহিলারা মসজিদে যাওয়ার জন্যে তোমাদের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করলে, তোমরা মসজিদে গমন থেকে বাধা দিয়ে তাদের অংশ থেকে বঞ্চিত করো না। বিলাল (রহঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! অবশ্যই আমি তাদেরকে নিষেধ করব। ’আবদুল্লাহ (রাঃ) বিলালকে বললেন, আমি বলছি, ’’রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন’’, আর তুমি বলছ, তুমি অবশ্যই তাদের বাধা দিবে।[1]

وَعَنْ بِلَالِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَمْنَعُوا النِّسَاءَ حُظُوظَهُنَّ مِنَ الْمَسَاجِدِ إِذَا اسْتَأْذَنَّكُمْ» . فَقَالَ بِلَالٌ: وَاللَّهِ لَنَمْنَعُهُنَّ. فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللَّهِ: أَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتقول أَنْت لنمنعهن

وعن بلال بن عبد الله بن عمر عن ابيه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تمنعوا النساء حظوظهن من المساجد اذا استاذنكم فقال بلال والله لنمنعهن فقال له عبد الله اقول قال رسول الله صلى الله عليه وسلم وتقول انت لنمنعهن

ব্যাখ্যা: (لَا تَمْنَعُوا النِّسَاءَ حُظُوظَهُنَّ مِنَ الْمَسَاجِدِ إِذَا اسْتَأْذَنَّكُمْ) ‘‘মহিলারা যদি তোমাদের নিকট মসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায় তাহলে তাদেরকে মসজিদের যাওয়ার সাওয়াব অর্জনে তাদেরকে বারণ করবে না।’’

(وَتَقُوْلُ أَنْتَ لَنَمْنَعُهُنَّ) ‘‘তুমি বলছ অবশ্যই আমি তাদেরকে বারণ করব’’। অর্থাৎ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তার বক্তব্য উপস্থাপন করছি। অথচ তুমি তার মুকাবিলায় তোমার অভিমত প্রকাশ করছ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৮৩-[৩২] এক বর্ণনায় আছে, সালিম (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এরপর ’আবদুল্লাহ (রাঃ) বিলাল-এর সামনাসামনি হয়ে অনেক গালাগাল করলেন। আমি কখনো তার মুখে এরূপ গালাগালি শুনিনি। তিনি বলেন, আমি তোমাকে অবহিত করছি, এ কথা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। আর তুমি বলছ, আল্লাহর কসম! অবশ্যই আমরা তাদেরকে ফিরাব। (মুসলিম)[1]

وَفِي رِوَايَةِ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: فَأَقْبَلَ عَلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ فَسَبَّهُ سَبًّا مَا سَمِعْتُ سَبَّهُ مِثْلَهُ قَطُّ وَقَالَ: أُخْبِرُكَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَقُولُ: وَاللَّهِ لنمنعهن. رَوَاهُ مُسلم

وفي رواية سالم عن ابيه قال فاقبل عليه عبد الله فسبه سبا ما سمعت سبه مثله قط وقال اخبرك عن رسول الله صلى الله عليه وسلم وتقول والله لنمنعهن رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (فَسَبَّه سَبًّا) ‘‘ফলে তিনি তাকে গালি দিলেন।’’ ত্ববারানীর বর্ণনাতে এসেছে, তিনি তাকে লা‘নাত করলেন তথা অভিশাপ দিলেন তিনবার।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৮৪-[৩৩] মুজাহিদ (রহঃ) ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ কেউ যেন তার স্ত্রীকে মসজিদে আসতে বাধা না দেয়। (এ কথা শুনে) ’আবদুল্লাহ (রাঃ) এর এক ছেলে (বিলাল) বললেন, আমরা তো অবশ্যই তাদেরকে বাধা দিব। (এ সময়) ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) তাকে বললেন, আমি তোমাকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস বর্ণনা করছি। আর তুমি বলছ এ কথা? বর্ণনাকারী বলেন, এরপর ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) মৃত পর্যন্ত আর তার সাথে কথা বলেননি। (আহমাদ)[1]

وَعَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَمْنَعَنَّ رَجُلٌ أَهْلَهُ أَنْ يَأْتُوا الْمَسَاجِدَ» . فَقَالَ ابْنٌ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: فَإِنَّا نَمْنَعُهُنَّ. فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ: أُحَدِّثُكَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَقُولُ هَذَا؟ قَالَ: فَمَا كَلَّمَهُ عَبْدُ اللَّهِ حَتَّى مَاتَ. رَوَاهُ أَحْمد

وعن مجاهد عن عبد الله بن عمر ان النبي صلى الله عليه وسلم قال لا يمنعن رجل اهله ان ياتوا المساجد فقال ابن لعبد الله بن عمر فانا نمنعهن فقال عبد الله احدثك عن رسول الله صلى الله عليه وسلم وتقول هذا قال فما كلمه عبد الله حتى مات رواه احمد

ব্যাখ্যা: (فَمَا كَلَّمَه عَبْدُ اللّهِ حَتّى مَاتَ) ‘‘মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত তিনি তার (বিলালের) সাথে আর কথা বলেননি।’’

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর এ আচরণ থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে, কোন ব্যক্তি যদি হাদীসের মুকাবিলায় নিজের অভিমত ব্যক্ত করে তাহলে তাকে আদব শিক্ষা দেয়ার জন্য শাস্তি প্রয়োগ করা যায়।

অনুরূপভাবে সন্তান যখন এমন কাজ করে বা কথা বলে যা তার জন্য উচিত নয় তাহলে বাবা তাকে আদব দেয়ার পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারে যদিও ছেলে বয়সে বড় হয়। কথা বলা বন্ধ করাও এ আদবের অন্তর্ভুক্ত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে