পরিচ্ছেদঃ ১. হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট
২৫৬৯. নু’মান ইবনু বাশীর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি: “হালালও স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দু’য়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়- যা অনেকেই জানে না। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয়সমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে তার মর্যাদা ও দীন রক্ষা করতে পারবে। আর যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হয়ে পড়ে, সে হারামে লিপ্ত হয়ে পড়বে; এর উপমা সে রাখালের ন্যায়, যে তার পশু (বাদশাহ্র) সংরক্ষিত চারণভুমির আশে পাশে (চরায়), অচিরেই সে সেখানে ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছে। জেনে রাখ, প্রত্যেক বাদশাহ্রই একটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আর আল্লাহ্র সংরক্ষিত এলাকা হলো তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রাখ, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরা আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ, সেটি হল কলব।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, ঈমান ৫২; মুসলিম, মাসাকাহ ১৫৯৯।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৭২১ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৯৪৩, ৯৪৭ তে।
ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ তাঁর শারহু সহীহ মুসলিম ৪/১১০ বলেন: “এ হাদীসের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপন্ন হওয়া, এর বহু (ফায়িদাহ) উপকারীতার ব্যাপারে আলিমগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন। আর ইসলাম যে সকল মুলবিষয়গুলির উপর কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়, সে সকল হাদীসের অন্যতম এটি।
আলিমগণের একটি দল বলেন: এটি ইসলামের এক তৃতীয়াংশ, এটি এবং অপর হাদীস: ‘প্রত্যেকটি কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল’ এবং অপর একটি হাদীস: ‘কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য হলো তার অপ্রয়োজনীয় কাজ বর্জন করা।’ (এক তিনটি হাদীস) কে কেন্দ্র করেই ইসলাম আবর্তিত হয়।
আবী দাউদ সিজিসতানী বলেন: (ইসলাম) চারটি হাদীসের উপর ভিত্তিশীল। উল্লিখিত তিনটি এবং চতুর্থ হাদীসটি: ‘তোমাদের কেউ মু’মিন হবে না, যতক্ষণ না তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে।’
আবার বলা হয়: (চতুর্থ) হাদীস: “দুনিয়ার বিষয়ে নিরাসক্ত হও, তবে আল্লাহ তোমাকে ভালবাসবেন। আর মানুষের হাতে যা রয়েছে তা থেকে নিরাসক্ত হও, তবে মানুষ তোমাকে ভালবাসবে।’
আলিমগণ বলেন: এর শ্রেষ্ঠ অবস্থানের কারণ এতে তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খবর দিয়েছেন খাবার গ্রহণকারী, পানকারী, পোশাক পরিধানকারী ও অন্যান্য ব্যক্তিদের সংশোধনীর সম্পর্কে। তার উচিত সন্দেহজনক বিষয় পরিহার করা। কেননা, এটিই তার দীন ও দুনিয়াবী বিষয়ের সুরক্ষার মাধ্যম।...” বাকী আলোচনা দেখুন, ফাতুহল বারী ১/১২৬ ও এর পরবর্তীতে এবং জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম পৃ: ৬৩-৭২।
بَاب فِي الْحَلَالُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ
أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا عَنْ الشَّعْبِيِّ قَالَ سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ الْحَلَالُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُتَشَابِهَاتٌ لَا يَعْلَمُهَا كَثِيرٌ مِنْ النَّاسِ فَمَنْ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِعِرْضِهِ وَدِينِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِي الْحَرَامِ كَالرَّاعِي يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى فَيُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَهُ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلَا وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ أَلَا وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ أَلَا وَهِيَ الْقَلْبُ
পরিচ্ছেদঃ ২. যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে না, তার প্রতি যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে দেয় তা ছেড়ে দাও
২৫৭০. আবীল হাওরা আস সা’দী (রহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী হাসানইবনুলআমি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-কে বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন বিষয়টি স্মরণ রেখেছেন? তিনি বললেন, একটি লোক তাঁকে একটি বিষয়ে প্রশ্ন করলো। বিষয়টি কী ছিলো, তা আমি জানি না। তখন তিনি বললেন: “যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে দেয় তা ছেড়ে দাও, যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে না, তার প্রতি (ধাবিত হও)।”[1]
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৬৭৬২; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৭২২ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ৫১২ তে। এটি গত হয়েছে ১৬৩২, ১৬৩৩, ১৬৩৪ নং এ।
باب دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لَا يَرِيبُكَ
أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ عَنْ أَبِي الْحَوْرَاءِ السَّعْدِيِّ قَالَ قُلْتُ لِلْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ مَا تَحْفَظُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ سَأَلَهُ رَجُلٌ عَنْ مَسْأَلَةٍ لَا أَدْرِي مَا هِيَ فَقَالَ دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لَا يَرِيبُكَ
পরিচ্ছেদঃ ২. যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে না, তার প্রতি যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে দেয় তা ছেড়ে দাও
২৫৭১. ওয়াবিসা ইবনু মা’বাদ আল আসাদী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াবিসাকে বলেন, “তুমি আমাকে পাপ ও পুণ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এসেছ?” তিনি বলেন, হাঁ। তিনি বলেন, তখন তিনি তাঁর আঙ্গুলগুলি মুষ্টিবদ্ধ করে তা দ্বারা তার বুকে আঘাত করে বললেন: “হে ওয়াবিসা! তুমি তোমার নাফসকে জিজ্ঞেস কর, তোমার অন্তরকে জিজ্ঞেস কর।”- একথা তিনি তিনবার বললেন। “তোমার নাফস বা মন যে বিষয়ে প্রশান্তি বা নিশ্চিন্ততা লাভ করে, তোমার অন্তর যে বিষয়ের প্রতি প্রশান্ত- নিশ্চিন্ত হয়-তা-ই হলো পূণ্য। আর তোমার মন যে বিষয়ে চিন্তিত হয়, তোমার অন্তরে যা ইতস্ততবোধ বা দ্বিধা সঞ্চার করে-তা-ই হলো পাপ। লোকেরা যদি তোমাকে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়, তবে তুমি তা গ্রহণ করবে।”[1]
আমি এটি তাখরীজ করেছি মাজমাউয যাওয়াইদ নং ৮২৪, ৮২৫ তে, এবং এখানে সেই ভূল সংশোধন করেছি যা মুসনাদুল মাউসিলী নং ১৫৮৬ তে আমাদের উপর আপতিত হয়েছিল। সেই মহান সত্তারই সকল প্রশংসা যিনি বিভ্রান্ত হন না, ভূলেও যান না।
এর শাহিদের মধ্যে রয়েছে নাওয়াস বিন সাম’আন হতে মুসলিম, বিরর ওয়াস সুলহ ২৫৫৩।
باب دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لَا يَرِيبُكَ
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ الزُّبَيْرِ أَبِي عَبْدِ السَّلَامِ عَنْ أَيُّوبَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مِكْرَزٍ الْفِهْرِيِّ عَنْ وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ الْأَسَدِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِوَابِصَةَ جِئْتَ تَسْأَلُ عَنْ الْبِرِّ وَالْإِثْمِ قَالَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَجَمَعَ أَصَابِعَهُ فَضَرَبَ بِهَا صَدْرَهُ وَقَالَ اسْتَفْتِ نَفْسَكَ اسْتَفْتِ قَلْبَكَ يَا وَابِصَةُ ثَلَاثًا الْبِرُّ مَا اطْمَأَنَّتْ إِلَيْهِ النَّفْسُ وَاطْمَأَنَّ إِلَيْهِ الْقَلْبُ وَالْإِثْمُ مَا حَاكَ فِي النَّفْسِ وَتَرَدَّدَ فِي الصَّدْرِ وَإِنْ أَفْتَاكَ النَّاسُ وَأَفْتَوْكَ
পরিচ্ছেদঃ ৩. জাহিলিয়্যাতের সময় যে সুদ (পাওনা) ছিল সে সম্পর্কে
২৫৭২. আবী হুররা আর রাক্কাশী তার চাচার সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, (বিদায় হাজ্জে) ‘আইয়্যামুত তাশরীক্ব’ এর মাঝামাঝি সময়ে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উটের লাগাম ধরে তাঁর নিকট হতে লোকদেরকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলাম। তখন তিনি বলেন: “জেনে রাখ, জাহিলিয়া যুগের সকল সুদ বাতিল ঘোষিত হ‘ল। জেনে রাখ, আল্লাহ তা’আলা ফায়সালা করেছেন যে, সর্বপ্রথম যে সূদ বাতিল করা হবে, তা হবে আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিবের সূদ। আর তোমাদের মুলধন তোমাদেরই থাকবে, তোমরাও যুলুম করবে না, আর তোমাদের প্রতিও যুলুম করা হবে না।”[1]
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মাজমাউয যাওয়াইদ নং ৫৬৯২, ৬৬৬০ এবং মুসনাদুল মাউসিলী নং ১৫৬৯ তে।
এর শাহিদ রয়েছে আমর ইবনুল আহওয়াস হতে ১৫/২৬ নং ১৯০০৯; ইবনু মাজাহ, মানাসিক ৩০৫৫; আবী দাউদ, বুয়ূ ৩২৩৪; তিরমিযী, তাফসীর ৩০৮৭ তে জাইয়্যেদ সনদে।
باب فِي الرِّبَا الَّذِي كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَبِي حُرَّةَ الرَّقَاشِيِّ عَنْ عَمِّهِ قَالَ كُنْتُ آخِذًا بِزِمَامِ نَاقَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَوْسَطِ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ أَذُودُ النَّاسَ عَنْهُ فَقَالَ أَلَا إِنَّ كُلَّ رِبًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ أَلَا وَإِنَّ اللَّهَ قَدْ قَضَى أَنَّ أَوَّلَ رِبًا يُوضَعُ رِبَا عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَالِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ
পরিচ্ছেদঃ ৪. সুদ দাতা ও গ্রহীতা সম্পর্কে
২৫৭৩. আব্দুল্লাহ (ইবন মাসঊদ) রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুদখোর ও সুদ দাতা উভয়কে লা’নত করেছেন।[1]
তাখরীজ: মুসলিম, মাসাকাহ ১৫৯৭।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৪৯৮১, ৫১৪৬ তে।
باب فِي آكِلِ الرِّبَا وَمُؤْكِلِهِ
أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي قَيْسٍ عَنْ هُزَيْلٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا وَمُؤْكِلَهُ
পরিচ্ছেদঃ ৫. সুদ খাওয়ার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারী
২৫৭৪. আবূ হুরাইরাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “নিশ্চয়ই এমন এক যুগ আসবে, যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে, সে কোথা হতে সম্পদ উপার্জন করল, হালাল উপায়ে, না হারাম উপায়ে।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, বুয়ূ ২০৫৯।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৬৭২৬ তে।
সংযোজনী: এছাড়াও, বাইহাকী, বুয়ূ ৫/২৬৪, দালাইলুন নুবুওয়াত ৬/৫৩৫; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ ৮/১৭ নং ২০৩২; খতীব, তারীখ বাগদাদ ১২/৩২৭।
باب فِي التَّشْدِيدِ فِي أَكْلِ الرِّبَا
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يُونُسَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيَأْتِيَنَّ زَمَانٌ لَا يُبَالِي الْمَرْءُ بِمَا أَخَذَ الْمَالَ بِحَلَالٍ أَمْ بِحَرَامٍ
পরিচ্ছেদঃ ৬. কোনো ব্যক্তির নিজের হাতে উপার্জন ও কর্ম করা (এর ফযীলত) সম্পর্কে
২৫৭৫. আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “মানুষের জন্য উত্তম খাবার হলো তার নিজের হাতের উপার্জন এবং তার সন্তান তার উত্তম উপার্জনের অন্যতম।” [1]
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪২৫৯, ৪২৬০, ৪২৬০ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১০৯১, ১০৯২, ১০৯৩ তে। ((আবূ দাউদ, বুয়ূ ৩৫২৮; নাসাঈ, বুয়ূ বাব (১); ইবনু মাজাহ, তিজারাত ২১৩৭, ২২৯০; আহমাদ ৬/৩১-৪২-১২৭-১৯৩-২২০।– ফাওয়ায আহমেদের তাহক্বীক্ব দারেমী হা/২৫৩৭ এর টীকা হতে।–অনুবাদক))
باب فِي الْكَسْبِ وَعَمَلِ الرَّجُلِ بِيَدِهِ
أَخْبَرَنَا قَبِيصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ عَنْ عَمَّتِهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ أَحَقَّ مَا يَأْكُلُ الرَّجُلُ مِنْ أَطْيَبِ كَسْبِهِ وَإِنَّ وَلَدَهُ مِنْ أَطْيَبِ كَسْبِهِ
পরিচ্ছেদঃ ৭. ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে
২৫৭৬. রিফাআ রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত যে, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘বাক্বী’-এর দিকে গেলেন। অত:পর তিনি বললেন, “হে ব্যবসায়ীগণ!” তারা সকলেই রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি তাদের ঘাড় ও চোখ তুলে তাকাল। তিনি বললেন, “ব্যবসায়ীদের কিয়ামতের দিন ফাজির-পাপীরূপে উত্থিত করা হবে। তবে সে ব্যতীত, যে আল্লাহকে ভয় করেছে, নেক আমল করেছে এবং সত্য অবলম্বন করেছে।”[1] আবূ মুহাম্মদ বলেন, আবী নুয়াইম (তার বর্ণনায়) উবাইদুল্লাহ ইবনু রিফা’আহ’র নাম বলতেন, কিন্তু আসলে তিনি হলেন ইসমাঈল ইবনু উবাইদ ইবনু রিফাআহ।
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৯১০ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১০৯৫ তে। ((তিরমিযী, বুয়ূ ১২১০; ইবনু মাজাহ, তিজারাত ২১৪৬; আহমাদ ৩/৪২৮-৪৪৪; হাকিম ২/৬।- ফাওয়ায আহমেদের তাহক্বীক্ব দারেমী হা/২৫৩৮ এর টীকা হতে।–অনুবাদক))
সংযোজনী: এছাড়াও, তাবারাণী, কাবীর ৫/৪৪ নং ৪৫৩৯, ৪৫৪০, ৪৫৪১, ৪৫৪৩, ৫৪৪২; তাবারী, তাহযীবুল আসার, মুসনাদে আলী নং ৯২, ৯৩, ৯৪, ৯৫; আব্দুর রাযযাক নং ২০৯৯৯; বাইহাকী, শুয়াবুল ঈমান নং ৪৮৪৯।
ইবনু আব্বাস হতে তাবারাণী, কাবীর ১২/৬৮ নং ১২৪৯৯; তাবারী, তাহযীবুল আসার, মুসনাদে আলী নং ৯৬; ইবনু হিব্বান, আল মাজরুহীন ২/২২৪-২২৫ যয়ীফ সনদে।
এর শাহিদ রয়েছে মাজমাউয যাওয়াইদ নং ৬৩৮৩ ও এর পরেরগুলিতে; শুয়াবুল ঈমান নং ৪৮৪৮ তে।
باب فِي التُّجَّارِ
أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ هُوَ ابْنُ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ عَنْ إِسْمَعِيلَ بْنِ رِفَاعَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْبَقِيعِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ التُّجَّارِ حَتَّى إِذَا اشْرَأَبُّوا قَالَ التُّجَّارُ يُحْشَرُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فُجَّارًا إِلَّا مَنْ اتَّقَى وَبَرَّ وَصَدَقَ قَالَ أَبُو مُحَمَّد كَانَ أَبُو نُعَيْمٍ يَقُولُ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ رِفَاعَةَ وَإِنَّمَا هُوَ إِسْمَعِيلُ بْنُ عُبَيْدِ بْنِ رِفَاعَةَ
পরিচ্ছেদঃ ৮. ন্যায়পরায়ণ ব্যবসায়ী সম্পর্কে
২৫৭৭. আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেবর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী নবী, সিদ্দীক ও শহীদগণের সঙ্গে থাকবে।”[1]আমার জানা নাই যে, হাসান আবী সাঈদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে শুনেছেন কি-না। তিনি আরও বলেন, এ আবী হামযাহ হলেন ইবরাহীমের সঙ্গী, আর তিনি ছিলেন সৌভাগ্যবান ও অন্ধ ব্যক্তি।
তাখরীজ: তিরমিযী, বুয়ূ ১২০৯; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ ২০২৫।
এর শাহিদ রয়েছে ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে ইবনু মাজাহ, তিজারাত ২১৩৯; তাবারাণী, আওসাত ৭৩৯০; দারুকুতনী ৩/৭; হাকিম ২/৬। ইবনু আবী হাতিম তার ইলালুল হাদীস নং ১১৫৬ তে বলেন: আমি আমার পিতাকে কাছীর বিন হিশাম, কুলছুম বিন জাওশান... সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। আামার পিতা বলেন: এ হাদীস ভিত্তিহীন, কুলছুম হাদীস বর্ণনায় দুর্বল।
আমরা বলছি: বরং এর ভিত্তি রয়েছে। আগের হাদীসটি দেখুন। আর কুলছুম বিন জাওশান সম্পর্কে: আবু হাতিম বলেন: ‘হাদীস বর্ণনায় দুর্বল’। আবূ দাউদ বলেন: ‘মুনকারুল হাদীস’ (হাদীস বর্ণনায় অস্বীকৃত)।
ইবনু হিব্বান তার মাজরুহীন ২/২৩০ বলেন: এ হলো সেই ব্যক্তিদের অন্তর্ভূক্ত যিনি বিশ্বস্ত রাবী সূত্রে ত্রুটিপূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেন এবং বিশ্বস্ত রাবী সূত্রে মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করেন।
আর বুখারী তাকে ছিকাহ’ বা বিশ্বস্ত বলেছেন। ইবনু মাঈন বলেন, তার ব্যাপারে কোনো দোষ নেই’, ইবনু হিব্বান তাকে ‘আস সিকাত’ ৭/৩৫৬ তে উল্লেখ করেছেন। ইবনু শাহীন, তারীখ আসমাউস সিকাত নং ১১৮৩ তে বলেন, তাতে কোনো দোষ নেই’। ফলে তিনি হাদীস বর্ণনায় ‘হাসান’ বলে গণ্য হবে, আল্লাহই ভাল জানেন। দেখুন, হাশিয়া ইহইয়াউ উলুমুদ্দীন ২/৬১; মিসবাহুয যুজাজাহ ২/১৫৭-১৫৮।
باب فِي التَّاجِرِ الصَّدُوقِ
أَخْبَرَنَا قَبِيصَةُ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ عَنْ الْحَسَنِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ التَّاجِرُ الصَّدُوقُ الْأَمِينُ مَعَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ قَالَ عَبْد اللَّهِ لَا عِلْمَ لِي بِهِ إِنَّ الْحَسَنَ سَمِعَ مِنْ أَبِي سَعِيدٍ وَقَالَ أَبُو حَمْزَةَ هَذَا هُوَ صَاحِبُ إِبْرَاهِيمَ وَهُوَ مَيْمُونٌ الْأَعْوَرُ
পরিচ্ছেদঃ ৯. নাসীহত বা কল্যাণ কামনা সম্পর্কে
২৫৭৮. জারীর ইবনু আবদুল্লাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে বায়’আতগ্রহণ করেছি সালাত কায়েম করার, যাকাত দেওয়ার এবং সকল মুসলিমের কল্যাণ কামনা করার।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, ঈমান ৫৭; মুসলিম, ঈমান ৫৬।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৭৫০৩, ৭৫০৯ ও সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৫৪৫, ৪৫৪৬ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ৮১৩ তে।
باب فِي النَّصِيحَةِ
حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ عُبَيْدٍ حَدَّثَنَا إِسْمَعِيلُ عَنْ قَيْسٍ عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى إِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ
পরিচ্ছেদঃ ১০. ধোঁকা দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা
২৫৭৯. ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনার বাজারের স্তূপীকৃত খাদ্যশস্যের পাশ দিয়া যাচ্ছিলেন। ফলে খাদ্য শস্যের চাকচিক্য তাঁর চিত্তাকর্ষণ করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্তূপের মধ্যে তার হাত ঢুকালেন । এরপর তিনি (তাঁর হাত) দিয়ে এমন কিছু খাদ্যশস্য বের করে আনলেন, যেগুলি (স্তুপের) উপরের অংশে ছিল না। তখন তিনি খাদ্যশস্যের মালিকের প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন, অত:পর বললেনঃ “মুসলিমদের মাঝে কোনো ধোকা দেওয়া বা প্রতারণা করা যাবে না। যে ব্যক্তি আমাদেরকে ধোকা দেয় সে আমাদের দলভূক্ত নয়।”[1]
তাখরীজ: কুদায়ী, মুসনাদুশ শিহাব, নং ৩৫১; মুসলিম, ঈমান ৫৬।
আমরা এটি তাখরীজ করেছি মাজমাউয যাওয়াইদ নং ৬৪২৩ তে।
এর শাহিদ হাদীস রয়েছে আবী হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে সহীহ মুসলিম, ঈমান ১০২ তে, আমরা যার পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৬৫২০ ও সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৯০৫ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ১০৬৩ তে।
باب فِي النَّهْيِ عَنْ الْغِشِّ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ حَدَّثَنَا أَبُو عَقِيلٍ يَحْيَى بْنُ الْمُتَوَكِّلِ قَالَ أَخْبَرَنِي الْقَاسِمُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِطَعَامٍ بِسُوقِ الْمَدِينَةِ فَأَعْجَبَهُ حُسْنُهُ فَأَدْخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ فِي جَوْفِهِ فَأَخْرَجَ شَيْئًا لَيْسَ كَالظَّاهِرِ فَأَفَّفَ بِصَاحِبِ الطَّعَامِ ثُمَّ قَالَ لَا غِشَّ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا
পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রতারণা বা বিশ্বাসঘাতকতা সম্পর্কে
২৫৮০. আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “প্রত্যেক ওয়াদা ভঙ্গকারীর (বিশ্বাসঘাতকের) জন্য কিয়ামতের দিন একটি করে পতাকা হবে এবং বলা হবে: এ হলো অমুকের বিশ্বাসঘাতকতা (-এর পতাকা)।[1]
তাখরীজ: বুখারী, জিযইয়া ৩১৮৬; মুসলিম, জিহাদ ওয়াস সিয়ার ১৭৩৬; আহমাদ১/৪১১, ৪১৭, ৪৪১; বাইহাকী, সিয়ার ৯/১৪২।
এর শাহিদ হাদীস রয়েছে আবী সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে, আমরা যার পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ১১০১,১২১৩, ১২৪৫ তে। আবার, এর অপর শাহিদ হাদীস রয়েছে আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে (বুখারী, ৩১৮৬, ৩১৮৭), আমরা যার পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৩৩৮২, ৩৫২০ তে।
باب فِي الْغَدْرِ
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ الرَّبِيعِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سُلَيْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُقَالُ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلَانٍ
পরিচ্ছেদঃ ১২. গুদামজাত বা মজুতদারী করার নিষেধাজ্ঞা
২৫৮১. মামার ইবন আবদুল্লাহ ইবনু নাফিঈ’ আল আদাবী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি: “অপরাধী লোক ব্যতীত কেউ গুদামজাত (মজুতদারী) করে না”- দু’বার (তিনি একথা বলেন)।[1]
তাখরীজ: মুসলিম, মাসাকাত ১৬০৫।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৯৩৬ তে।
সংযোজনী: এছাড়াও, ইবনু সা’দ, তাবাকাত ৪/১/১০৩; ইবনুল কানি’, মু’জামুস সাহাবাহ নং ১০৬৫; খতীব, তারীখ বাগদাদ ১৪৪৭; আব্দুর রাযযাক নং ১৪৮৮৯।
باب فِي النَّهْيِ عَنْ الِاحْتِكَارِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَقَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ مَعْمَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نَافِعِ بْنِ نَضْلَةَ الْعَدَوِيِّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَا يَحْتَكِرُ إِلَّا خَاطِئٌ مَرَّتَيْنِ
পরিচ্ছেদঃ ১২. গুদামজাত বা মজুতদারী করার নিষেধাজ্ঞা
২৫৮২. উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “পণ্য আমদানীকারক ব্যবসায়ী রিযিক প্রাপ্ত এবং মজুতদার অভিশপ্ত।”[1]
তাখরীজ: ইবনু মাজাহ, তিজারাহ ২১৫৩; বাইহাকী, বুয়ূ ৬/৩০; আব্দ ইবনু হুমাইদ নং ৩৩; উকাইলী, আয যু’আফা ৩/৩৩২; ইবনু আদী, আল কামিল ৫/১৮৪৭; হাকিম ২/১১।
সাখাবী মাকসিদুল হাসানাহ নং ৩৬১ তে এটিকে ইবনু মাজাহ, হাকিম, ইসহাক, দারেমী, আব্দ ইবনু হুমাইদ, আবী ইয়া’লা ও উকাইলীর প্রতি সম্বোন্ধিত করেছেন এবং বলেছেন: ‘এর সনদ যয়ীফ’। আরও দেখুন, কাশফুল খফা’ নং ১০৫৮; আশ শাজারাহ নং ৩২০; আসনাল মাতালিব নং ৫৩৭; তালখীসুল হাবীর ৩/১৩; নাসবুর রায়াহ ৪/২৬১।
باب فِي النَّهْيِ عَنْ الِاحْتِكَارِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ إِسْرَائِيلَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ سَالِمٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الْجَالِبُ مَرْزُوقٌ وَالْمُحْتَكِرُ مَلْعُونٌ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. মুসলিমদের মধ্যে দ্রব্যমূল্য বেঁধে দেওয়া নিষেধ
২৫৮৩. আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে একবার জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেলো। লোকজন বললো, হে আল্লাহর রাসূল! জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। অতএব আপনি আমাদের জন্য মূল্য বেঁধে দিন। তিনি বলেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহই হলেন স্রষ্টা (অপর বর্ণনায়: মূল্য নিয়ন্ত্রণকারী), সংকোচনকারী, সম্প্রসারণকারী এবং রিযিক দানকারী। আমি আমার রবের সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাত করতে চাই যে, যেন আমার বিরুদ্ধে রক্তের ও সম্পদের কোনরূপ অভিযোগ তোমাদের কারো না থাকে।”[1]
তাখরীজ: আমরা যার পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ২৭৭৪, ২৮৬১ ও সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৯৩৫ তে। ((তিরমিযী, বুয়ূ ১৩১৪, আবূ দাউদ, তিজারাহ ৩৪৫১, আহমাদ ১২১৮১, ১৩৬৪৩, ইবনু মাজাহ্, তিজারাহ ২২০০। -ফাওয়ায আহমেদের দারিমী’র হা/২৫৩৫ এর টীকা হতে।–অনুবাদক))
باب فِي النَّهْيِ عَنْ أَنْ يُسَعَّرَ فِي الْمُسْلِمِينَ
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ حُمَيْدٍ وَثَابِتٍ وَقَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ غَلَا السِّعْرُ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ النَّاسُ يَا رَسُولَ اللَّهِ غَلَا السِّعْرُ فَسَعِّرْ لَنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْخَالِقُ الْقَابِضُ الْبَاسِطُ الرَّازِقُ الْمُسَعِّرُ وَإِنِّي أَرْجُو أَنْ أَلْقَى رَبِّي وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْكُمْ يَطْلُبُنِي بِمَظْلَمَةٍ ظَلَمْتُهَا إِيَّاهُ بِدَمٍ وَلَا مَالٍ
পরিচ্ছেদঃ ১৪. মহানুভবতা বা উদারতা প্রদর্শন করা প্রসঙ্গে
২৬৮৪. হুযাইফাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে এক ব্যক্তির রূহের সাথে ফেরেশতা সাক্ষাৎ করে (রূহ কবয করার সময়) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি কোন নেক কাজ করেছ? লোকটি উত্তর দিল, না। তারা বললো, তুমি ভালভাবে মনে করে দেখ। তখন সে বললো, আমি লোকদেরকে (অর্থকড়ি) ধার দিতাম, আর আমি আমার কর্মচারীদের আদেশ করতাম যে, তারা যেন দরিদ্র-অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিকে অবকাশ দেয় এবং এবং সচ্ছল ব্যক্তিদেরকে ক্ষমা করে দেয়।” তিনি বলেন, “আল্লাহ বললেন, তোমরাও তাঁকে ক্ষমা করে দাও।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, বুয়ূ ২০৭৭, ইসতিক্বরায ২৩৯১, আহাদীসুল আম্বিয়া ৩৪৫১; মুসলিম, মাসাকাত ১৫৬০,; বাইহাকী, বুয়ূ ৫/৩৫৬; আহমাদ ৫/৩৯৫; ইবনু মাজাহ, সাদাকাত ২৪২০; তাবারাণী, কাবীর ১৭/২৩১, ২৩২, নং ৬৪২, ৬৪৩, ৬৪৪।
এর শাহিদ হাদীস রয়েছে আবী হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে যেটি বুখারী ও মুসলিম সম্মিলিত ভাবে বর্ণনা করেছেন। আর আমরা এর তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫০৪২, ৫০৪৩, ৫০৪৬।
باب فِي السَّمَاحَةِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا مَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ أَنَّ حُذَيْفَةَ حَدَّثَهُمْ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَلَقَّتْ الْمَلَائِكَةُ رُوحَ رَجُلٍ مِمَّنْ قَبْلَكُمْ فَقَالُوا عَمِلْتَ مِنْ الْخَيْرِ شَيْئًا فَقَالَ لَا قَالُوا تَذَكَّرْ قَالَ كُنْتُ أُدَايِنُ النَّاسَ فَآمُرُ فِتْيَانِي أَنْ يُنْظِرُوا الْمُعْسِرَ وَيَتَجَاوَزُوا عَنْ الْمُوسِرِ قَالَ قَالَ اللَّهُ تَجَاوَزُوا عَنْهُ
পরিচ্ছেদঃ ১৫. ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হয়, ততক্ষণ তাদের (ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করা বা বাতিল করার) ইখতিয়ার থাকবে
২৫৮৫. হাকীম ইবনু হিযাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হয়, ততক্ষণ তাদের ইখতিয়ার থাকবে (ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করা বা বাতিল করা)। যদি তারা সত্য বলে এবং অবস্থা ব্যক্ত করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে আর যদি মিথ্যা বলে এবং দোষ গোপন করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত দূর করে দেয়া হয়।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, বুয়ূ ২০৯৭; মুসলিম, বুয়ূ ১৫৩২।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৯০৪ তে। সংযোজনী: এছাড়াও, বাইহাকী, মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার নং ১০৯৬৫।
باب فِي الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا
أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ صَالِحٍ أَبِي الْخَلِيلِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُورِكَ لَهُمَا فِي بَيْعِهِمَا وَإِنْ كَذَبَا وَكَتَمَا مُحِقَ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا
পরিচ্ছেদঃ ১৫. ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হয়, ততক্ষণ তাদের (ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করা বা বাতিল করার) ইখতিয়ার থাকবে
২৫৮৬. কাতাদাহ হতে তার সনদে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।[1]
তাখরীজ: এটি পূর্বের হাদীসটির পুনরাবৃত্তি।
باب فِي الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا
أَخْبَرَنَا أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ
পরিচ্ছেদঃ ১৬. ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে মতবিরোধ দেখা দিলে
২৫৮৭. ইবনু মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন ক্রেতা এবং বিক্রেতার মাঝে মতবিরোধ হয় এবং বিক্রয়ের মাল তাদের সামনে বিদ্যমান থাকে, আর তাদের মাঝে কোনো সাক্ষী না থাকে, তবে বিক্রেতার কথাই গ্রহণীয় হবে, নতুবা তারা উভয়ে এ লেন-দেন প্রত্যাহার করবে।”[1]
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৪৯৮৪, ৫৪০৫ তে। ((আবূ দাউদ, বুয়ূ ৩৫১১; তিরমিযী, বুয়ূ ১২৭০; নাসাঈ, বুয়ূ ৭/৩০২-৩০৩। ফাওয়ায আহমেদের দারিমী’র হা/২৫৪৯ এর টীকা হতে।–অনুবাদক))
باب إِذَا اخْتَلَفَ الْمُتَبَايِعَانِ
أَخْبَرَنَا عُثْمَانُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي لَيْلَى عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ الْبَيِّعَانِ إِذَا اخْتَلَفَا وَالْبَيْعُ قَائِمٌ بِعَيْنِهِ وَلَيْسَ بَيْنَهُمَا بَيِّنَةٌ فَالْقَوْلُ مَا قَالَ الْبَائِعُ أَوْ يَتَرَادَّانِ الْبَيْعَ
পরিচ্ছেদঃ ১৭. কোনো মুসলিম ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করা
২৫৮৮. উকবাহ ইবনু আমির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি: “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, তার জন্য তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় করা হালাল নয়, যতক্ষণ না সে তা পরিত্যাগ করে।[1]
তাখরীজ: মুসলিম, নিকাহ ১৪১৪। আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ১৭৬২ তে।
باب لَا يَبِيعُ عَلَى بَيْعِ أَخِيهِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقَاشِيُّ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ هُوَ ابْنُ إِسْحَقَ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ شِمَاسَةَ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَا يَحِلُّ لِامْرِئٍ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يَبِيعَ عَلَى بَيْعِ أَخِيهِ حَتَّى يَتْرُكَهُ