পরিচ্ছেদঃ ১/১. আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি কীভাবে ওয়াহী শুরু হয়েছিল।
وَقَوْلُ اللهِ جَلَّ ذِكْرُهُ (إِنَّا أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ كَمَا أَوْحَيْنَا إِلَى نُوحٍ وَالنَّبِيِّينَ مِنْ بَعْدِهِ)
এ মর্মে আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ ’’নিশ্চয় আমি আপনার প্রতি সেরূপ ওয়াহী প্রেরণ করেছি যেরূপ নূহ ও তাঁর পরবর্তী নবীদের (নবীদের) প্রতি ওয়াহী প্রেরণ করেছিলাম।’’ (সূরাহ্ আন-নিসা ৪/১৬৩)
১. ’আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহ.) হতে বর্ণিত। আমি ’উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়্যাত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশে- তবে তার হিজরত সে উদ্দেশেই হবে, যে জন্যে, সে হিজরত করেছে।] (৫৪, ২৫২৯, ৩৮৯৮, ৫০৭০, ৬৬৮৯, ৬৯৫৩; মুসলিম ২৩/৪৫ হাঃ ১৯০৭, আহমাদ ১৬৮) ( আধুনিক প্রকাশনী- ১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১)
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلاً) (النساء:৫৯)
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَلا تُبْطِلُوا أَعْمَالَكُمْ) (محمد:৩৩)
কিন্তু বাতিল ফির্কার লোকেরা ইজমা‘ ও কিয়াসকে ওয়াহীর আসনে বসিয়েছে এবং বলে থাকেঃ শারী‘আহ্র ভিত্তি চারটি বিষয়ের উপর। কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা‘ ও কিয়াস। বড় আশ্চর্যের বিষয় এই যে, সহাবায়ে কেরাম যাদের উপর আল্লাহ তা‘আলা তার সন্তুষ্টির ঘোষণা দিয়েছেন, তাদেরকে সত্যবাদী বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে এবং মুসলিম উম্মাহ এ ব্যাপারে সকলেই একমত। অথচ তারা সহাবায়ে কেরামকে দু’ ভাগে ভাগ করেছেন। (১) ফকীহ (২) গাইরে ফকীহ। আর বলেছেন যে সকল সাহাবী ফকীহ ছিলেন তারা যদি কিয়াসের বিপরীতে হাদীস বর্ণনা করেন তবে তা গ্রহণযোগ্য কিন্তু যে সকল সাহাবী গাইরে ফকীহ অর্থাৎ ফকীহ নন তাঁরা যদি কিয়াসের খেলাফ হাদীস বর্ণনা করেন তাহলে তা গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।
প্রকৃতপক্ষে এটা উম্মাতে মুহাম্মাদিয়াহকে সিরাতে মুস্তাকীমের পথ হতে সরিয়ে দেয়ার একটা বড় অস্ত্র এবং পরিকল্পনা। কেননা তাঁরা কিয়াসকে মূল এবং হাদীসকে দ্বিতীয় স্থানে রেখেছেন। সকল সাহাবীর উপর আল্লাহ তা‘আলা সন্তুষ্ট কিন্তু তারা খুশী নন। সকল সাহাবীর ব্যাপারে উম্মাতের ঐকমত্য রয়েছে। কিন্তু তাদের নিকট গাইরে ফকীহ সাহাবীগণ ‘আদিল নন।
ধোঁকাবাজীর কিছু নমুনাঃ তারা বলেন, ফকীহ সাহাবীগণ কিয়াসের খেলাফ হাদীস বর্ণনা করলে তা গ্রহণীয় হবে। কিন্তু গাইরে ফকীহ সাহাবীগণ কিয়াসের খেলাফ হাদীস বর্ণনা করলে তা বাতিল হয়ে যাবে এবং কিয়াসের উপর ‘আমল করতে হবে।
বাই‘য়ি মুসারাহ এর হাদীস আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত এবং তা কিয়াসের খেলাফ। এই জন্য তা বাতিল। এবং কিয়াসের উপর ‘আমলযোগ্য। অথচ এই হাদীস ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাযি.) হতেও বর্ণিত হয়েছে।
(দেখুন সহীহ বুখারী ২৮৮ পৃষ্ঠা রশিদিয়া ছাপা)
باب كَيْفَ كَانَ بَدْءُ الْوَحْىِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ عَلْقَمَةَ بْنَ وَقَّاصٍ اللَّيْثِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ـ رضى الله عنه ـ عَلَى الْمِنْبَرِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ إِلَى امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ ".
(1) Chapter: How the Divine Revelation started being revealed to Allah's Messenger
Narrated 'Umar bin Al-Khattab:
I heard Allah's Messenger (ﷺ) saying, "The reward of deeds depends upon the intentions and every person will get the reward according to what he has intended. So whoever emigrated for worldly benefits or for a woman to marry, his emigration was for what he emigrated for."
ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ নিয়ত বলতে অন্তরের সংকল্প বুঝায়। অন্তরের দৃঢ় সংকল্পই নিয়ত; কিন্তু কিরমানী বলেন, "দৃঢ়তা" নিয়তের শর্ত নয়। এটি একটি অতিরিক্ত বিশেষণ যা নিয়ত শব্দটির পূর্বে যোগ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেনঃ ফকীহগনের মধ্যে নিয়ত সম্পর্কে মতবিরোধ আছে। এটা কি রুকন, না শর্ত? মোটকথা এই যে, কাজের প্রারম্ভে নিয়ত করা রুকন আর কাজের মধ্যে নিয়ত করা জরুরী। নিয়তের মধ্যে শরিয়ত বিরধী কোন সংকল্প থাকতে পারবে না। এটা নিয়তের প্রধান শর্ত।
কোন কাজ করতে যাওয়ার পূর্বে নিয়ত করা অপরিহার্য। শরীয়তের পরিভাশায় আল্লাহর সন্তোষটি এবং তাঁর নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্য কাজ করার সংকল্পকে নিয়ত বলা হয়। সৎকাজ করে পুণ্য লাভ করতে হলে তাঁর উদ্দেশ্যও সৎ হতে হবে। কাজের শুভ পরিনতি লাভের জন্য ভালো নিয়ত বা সৎ উদ্দেশ্য একান্ত অপরিহার্য। যথাযথ নিয়ত বা সংকল্প ব্যাতিরেকে আমল সঠিক, পরিপূর্ণ ও পুন্যবহ হতে পারে না।
হিজরত অর্থ পরিত্যাগ করা। এক বস্ত হতে অন্য বস্তুর দিকে প্রস্থান করাকে হিজরত বলা হয়। শরীয়তের পরিভাষায় আল্লাহ্ এবং তদীয় রাসুল (সাঃ) যা নিষেধ করেছে তা পরিহার করাকে হিজরত বলে। ইসলামী শরীয়তে দু'ভাবে হিজরত হতে পারে।
১) ভয়-ভীতিপূর্ণ ভূখণ্ড হতে হিজরত করে শান্তিপূর্ণ ভূখণ্ডে চলে যাওয়া। যেমনঃ ইসলামের প্রথম দিকে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর অনুমতিক্রমে কিছু সংখ্যক সাহাবী মক্কাবাসীদের অত্যাচারের আশঙ্কায় শান্তি ও নিরাপত্তাপূর্ণ ভূখণ্ড হাবশায় হিজরত করেছিলেন। এমনিভাবে স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও আল্লাহর নির্দেশক্রমে মক্কা হতে সঙ্গী-সাথীসহ মদীনায় হিজরত করেছিলেন।
২) যে ভূখণ্ডে কাফেরদের প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে সেই ভূখণ্ডে অবস্থান করে ঈমান রক্ষা করা অসম্ভব হলে মু'মিনদের প্রভাবিত নিরাপদ ভূখণ্ডে হিজরত করে চলে যাওয়ায় একান্ত যুক্তিযুক্ত। এই জাতীয় হিজরতের অবকাশ সর্বদাই রয়েছে।
এই হাদিসটি মুহাজিরে উম্মে কায়েসের নামে মুহাদ্দিস মহলে পরিচিত। ঘটনার সারমর্ম এই যে, উম্মে কায়েস নাম্নী এক মহিলার নিকট এক ব্যাক্তি বিবাহের প্রস্তাব দিলে সে ঐ ব্যাক্তির হিজরত না করা পর্যন্ত তাঁর সাথে বিবাহে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। ফলে সেই ব্যাক্তি উম্মে কায়েসকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হিজরত করে মদীনায় আগমনপূর্বক তাঁর সাথে দাম্পত্য প্রণয় স্থাপন করে। এই লোকটিকে মুহাজিরে উম্মে কায়েস নামে অভিহিত করা হয়। ওহীর প্রারম্ভ পরবের সাথে হাদিসটির সামঞ্জস্য বিধানের ব্যাপারে হাদিসের ভাষ্যকরগন বিভিন্ন মতামত ব্যাক্ত করেছেন। তাঁর সার সংক্ষেপ নিম্নরূপঃ
প্রথমতঃ মহান আল্লাহ্ নবী রাসুলগনকে সাধারনভাবে এবং বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (সাঃ) কে বিশেষভাবে এ মর্মে অহী করেছেন যে, আমলসমূহের পারিতোষিক সহিহ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। কাজেই আমল সম্বলিত অহীর বর্ণনা প্রসঙ্গে সর্বপ্রথমে এই হাদিসটির সংকলন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বলে সঙ্গতভাবেই বিবেচনা করা যেতে পারে।
দ্বিতীয়তঃ ইমাম বুখারী (রাহেমাহুল্লাহ) তার সহিহ হাদিস গ্রন্থের সূচনায় এই হাদিসটি সংকলন করে নিয়তের গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মক্কা হতে হিজরত করে মদীনায় গমনপূর্বক খুতবা দান প্রসঙ্গে এই হাদিস বলেছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর ওহী প্রাপ্তির সূচনাই ছিল হিজরত। তিনি তদীয় বাসস্থান হতে হিজরত করে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় সর্বপ্রথম ওহীর সন্ধান লাভ করেছিলেন। সুতরাং ওহীর প্রারম্ভ পর্বের সাথে হিজরত সম্বলিত এই হাদিসটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
তৃতীয়তঃ কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করতে হলে নিয়তকে খালেস করা একান্ত অপরিহার্য। ইমাম বুখারী (রাহেমাহুল্লাহ) তাঁর সহীহ গন্থ সংকলনের ন্যায় একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করতে গিয়ে প্রথমে নিয়ত এবং হিজরতের গুরুত্ব সম্বলিত এই হাদিসটি সংকলন করার মাধ্যমে বরকত হাসিল করার ইচ্ছা করেছেন। অধ্যায়ের সাথে হাদিসটির সামঞ্জস্য বিধানের অনুকুলে আরও অনেক যুক্তি প্রমান পেশ করা যেতে পারে।
আলোচ্য হাদিসে মুহাদ্দিস ইমামগণের ব্যাখ্যা হতে সুস্পষ্টতঃই জানা যায় যে, নিয়ত অন্তরের ব্যাপার, মুখে উচ্চারণ করার ব্যাপার নয়। কুরআন-হাদিসের কোথাও নামায, রোজা বা যে কোন আমলের আরম্ভ করার পূর্বে কোন ভাষায় মুখে উচ্চারণপূর্বক নিয়ত করতে হবে এমন কোনই প্রমান নেই। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবায়ে কিরাম, তাবেয়ী ও তাবা-তাবেয়ীদের আমলেও মুখে নিয়ত উচ্চারনের প্রমান বিদ্যমান নেই। শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী বলেন, “মুখে উচ্চারণ না করার মধ্যে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নতের অনুসরণ রয়েছে-“ আশে’আতুল লোম’আত। বহু গ্রন্থ প্রণেতা আশরাফ আলী থানভী (রাহেমাহুল্লাহ) লিখেছেনঃ “মুসল্লি মনে মনে নামাযের নিয়ত বা সংকল্প করবে যে, আমি যোহরের নামায পড়তেছি। তারপর আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধলেই হয়ে যাবে। সমাজে প্রচলিত লম্বা-চওড়া নিয়ত পাঠের প্রয়োজনীয়তা নাই।“ (বেহেশতী জেওর ২য় খণ্ড ১৭,১৮ পৃষ্ঠা) মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (রাহেমাহুল্লাহ) লিখেছেন, “অন্তরেই নামাজের মনস্থ করে নিতে হবে। অর্থাৎ মনে মনে ধারনা করবে যে, আমি ফজরের নামায পড়তেছি। মুখে নিয়ত করার কোনই প্রয়োজন নেই”। (রাহে নাজাতঃ ৯ পৃষ্ঠা)
টীকাঃ চার মাযহাবের ইমামগন একমত হয়েছেন যে, নিয়ত ব্যাতিত নামায শুদ্ধ হবে না। (কিতাবুল ফিকহে “আলাল মাযাহিবিল আরবাআহঃ ১ম খণ্ড ২১০ পৃষ্ঠা) - সুত্রঃ সহিহ বুখারী (দার-উস-সালাম)
পরিচ্ছেদঃ ১/২. পরিচ্ছেদ নাই।
২. উম্মুল মু’মিনীন ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। হারিস ইবনু হিশাম (রাঃ) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! আপনার নিকট ওয়াহী কিরূপে আসে?’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ [কোন কোন সময় তা ঘণ্টা বাজার মত আমার নিকট আসে। আর এটি-ই আমার উপর সবচেয়ে বেদনাদায়ক হয় এবং তা শেষ হতেই মালাক (ফেরেশতা) যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে নেই, আবার কখনো মালাক মানুষের রূপ ধারণ করে আমার সাথে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে নেই।] ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি তীব্র শীতের সময় ওয়াহী নাযিলরত অবস্থায় তাঁকে দেখেছি। ওয়াহী শেষ হলেই তাঁর ললাট হতে ঘাম ঝরে পড়ত। (৩২১৫; মুসলিম ৪৩/২৩, হাঃ ২৩৩৩, আহমাদ ২৫৩০৭, ২৬২৫৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২)
باب
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ الْحَارِثَ بْنَ هِشَامٍ سَأَلَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَيْفَ يَأْتِيكَ الْوَحْيُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحْيَانًا يَأْتِينِي مِثْلَ صَلْصَلَةِ الْجَرَسِ وَهُوَ أَشَدُّهُ عَلَيَّ فَيُفْصَمُ عَنِّي وَقَدْ وَعَيْتُ عَنْهُ مَا قَالَ وَأَحْيَانًا يَتَمَثَّلُ لِي الْمَلَكُ رَجُلاً فَيُكَلِّمُنِي فَأَعِي مَا يَقُولُ قَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا وَلَقَدْ رَأَيْتُهُ يَنْزِلُ عَلَيْهِ الْوَحْيُ فِي الْيَوْمِ الشَّدِيدِ الْبَرْدِ فَيَفْصِمُ عَنْهُ وَإِنَّ جَبِينَهُ لَيَتَفَصَّدُ عَرَقًا.
(2) Chapter
Narrated 'Aisha: (the mother of the faithful believers) Al-Harith bin Hisham asked Allah's Messenger (ﷺ) "O Allah's Messenger (ﷺ)! How is the Divine Inspiration revealed to you?" Allah's Messenger (ﷺ) replied, "Sometimes it is (revealed) like the ringing of a bell, this form of Inspiration is the hardest of all and then this state passes off after I have grasped what is inspired. Sometimes the Angel comes in the form of a man and talks to me and I grasp whatever he says." 'Aisha added: Verily I saw the Prophet (ﷺ) being inspired divinely on a very cold day and noticed the sweat dropping from his forehead (as the Inspiration was over).
পরিচ্ছেদঃ ১/৩. পরিচ্ছেদ নাই।
৩. উম্মুল মু’মিনীন ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট সর্বপ্রথম যে ওয়াহী আসে, তা ছিল নিদ্রাবস্থায় বাস্তব স্বপ্নরূপে। যে স্বপ্নই তিনি দেখতেন তা একেবারে প্রভাতের আলোর ন্যায় প্রকাশিত হতো। অতঃপর তাঁর নিকট নির্জনতা পছন্দনীয় হয়ে দাঁড়ায় এবং তিনি ’হেরা’র গুহায় নির্জনে অবস্থান করতেন। আপন পরিবারের নিকট ফিরে এসে কিছু খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে- এভাবে সেখানে তিনি এক নাগাড়ে বেশ কয়েক দিন ’ইবাদাতে মগ্ন থাকতেন। অতঃপর খাদীজাহ (রাঃ)-এর নিকট ফিরে এসে আবার একই সময়ের জন্য কিছু খাদ্যদ্রব্য নিয়ে যেতেন। এভাবে ’হেরা’ গুহায় অবস্থানকালে তাঁর নিকট ওয়াহী আসলো। তাঁর নিকট ফেরেশতা এসে বললো, ’পাঠ করুন’। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ [’’আমি বললাম, ’আমি পড়তে জানি না।]
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ [অতঃপর সে আমাকে জড়িয়ে ধরে এমনভাবে চাপ দিলো যে, আমার খুব কষ্ট হলো। অতঃপর সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো, ’পাঠ করুন’। আমি বললামঃ আমি তো পড়তে জানি না।’ সে দ্বিতীয়বার আমাকে জড়িয়ে ধরে এমনভাবে চাপ দিলো যে, আমার খুব কষ্ট হলো। অতঃপর সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললোঃ ’পাঠ করুন’। আমি উত্তর দিলাম, ’আমি তো পড়তে জানি না।’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর তৃতীয়বারে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে চাপ দিলেন। তারপর ছেড়ে দিয়ে বললেন, ’’পাঠ করুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত পিন্ড থেকে, পাঠ করুন, আর আপনার রব অতিশয় দয়ালু’’- (সূরাহ্ ’আলাক্ব ৯৬/১-৩)।
অতঃপর এ আয়াত নিয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -প্রত্যাবর্তন করলেন। তাঁর হৃদয় তখন কাঁপছিল। তিনি খাদীজাহ বিন্তু খুওয়ায়লিদের নিকট এসে বললেন, ’আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর’, ’আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর।’ তাঁরা তাঁকে চাদর দ্বারা আবৃত করলেন। এমনকি তাঁর শংকা দূর হলো। তখন তিনি খাদীজাহ (রাঃ)-এর নিকট ঘটনাবৃত্তান্ত জানিয়ে তাঁকে বললেন, আমি আমার নিজেকে নিয়ে শংকা বোধ করছি। খাদীজাহ (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, কখনই নয়। আল্লাহ্ আপনাকে কখনও লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায় দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন। অতঃপর তাঁকে নিয়ে খাদীজাহ (রাঃ) তাঁর চাচাতো ভাই ওয়ারাকাহ ইবনু নাওফাল ইবনু ’আবদুল আসাদ ইবনু ’আবদুল ’উযযাহ’র নিকট গেলেন, যিনি অন্ধকার যুগে ’ঈসায়ী ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইবরানী ভাষায় লিখতে পারতেন এবং আল্লাহর তাওফীক অনুযায়ী ইবরানী ভাষায় ইঞ্জিল হতে ভাষান্তর করতেন।
তিনি ছিলেন অতিবৃদ্ধ এবং অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। খাদীজাহ (রাঃ) তাঁকে বললেন, ’হে চাচাতো ভাই! আপনার ভাতিজার কথা শুনুন।’ ওয়ারাকাহ তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ’ভাতিজা! তুমি কী দেখ?’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা দেখেছিলেন, সবই বর্ণনা করলেন। তখন ওয়ারাকাহ তাঁকে বললেন, এটা সেই বার্তাবাহক যাঁকে আল্লাহ মূসা (আঃ)-এর নিকট পাঠিয়েছিলেন। আফসোস! আমি যদি সেদিন থাকতাম। আফসোস! আমি যদি সেদিন জীবিত থাকতাম, যেদিন তোমার কওম তোমাকে বহিষ্কার করবে।’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, [’তারা কি আমাকে বের করে দেবে?’] তিনি বললেন, ’হ্যাঁ, তুমি যা নিয়ে এসেছো অনুরূপ (ওয়াহী) কিছু যিনিই নিয়ে এসেছেন তাঁর সঙ্গেই বৈরিতাপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে। সেদিন যদি আমি থাকি, তবে তোমাকে জোরালোভাবে সাহায্য করব।’ এর কিছুদিন পর ওয়ারাকাহ (রাঃ) ইন্তিকাল করেন। আর ওয়াহীর বিরতি ঘটে।
(৩৩৯২, ৪৯৫৩, ৪৯৫৫, ৪৯৫৬, ৪৯৫৭, ৬৯৮২; মুসলিম ১/৭৩ হাঃ ১৬০, আহমাদ ২৬০১৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩)
باب
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، أَنَّهَا قَالَتْ أَوَّلُ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْوَحْىِ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ فِي النَّوْمِ، فَكَانَ لاَ يَرَى رُؤْيَا إِلاَّ جَاءَتْ مِثْلَ فَلَقِ الصُّبْحِ، ثُمَّ حُبِّبَ إِلَيْهِ الْخَلاَءُ، وَكَانَ يَخْلُو بِغَارِ حِرَاءٍ فَيَتَحَنَّثُ فِيهِ ـ وَهُوَ التَّعَبُّدُ ـ اللَّيَالِيَ ذَوَاتِ الْعَدَدِ قَبْلَ أَنْ يَنْزِعَ إِلَى أَهْلِهِ، وَيَتَزَوَّدُ لِذَلِكَ، ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى خَدِيجَةَ، فَيَتَزَوَّدُ لِمِثْلِهَا، حَتَّى جَاءَهُ الْحَقُّ وَهُوَ فِي غَارِ حِرَاءٍ، فَجَاءَهُ الْمَلَكُ فَقَالَ اقْرَأْ. قَالَ " مَا أَنَا بِقَارِئٍ ". قَالَ " فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدَ، ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ اقْرَأْ. قُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ. فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدَ، ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ اقْرَأْ. فَقُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ. فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّالِثَةَ، ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ (اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ * خَلَقَ الإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ * اقْرَأْ وَرَبُّكَ الأَكْرَمُ) ". فَرَجَعَ بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَرْجُفُ فُؤَادُهُ، فَدَخَلَ عَلَى خَدِيجَةَ بِنْتِ خُوَيْلِدٍ رضى الله عنها فَقَالَ " زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي ". فَزَمَّلُوهُ حَتَّى ذَهَبَ عَنْهُ الرَّوْعُ، فَقَالَ لِخَدِيجَةَ وَأَخْبَرَهَا الْخَبَرَ " لَقَدْ خَشِيتُ عَلَى نَفْسِي ". فَقَالَتْ خَدِيجَةُ كَلاَّ وَاللَّهِ مَا يُخْزِيكَ اللَّهُ أَبَدًا، إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ، وَتَحْمِلُ الْكَلَّ، وَتَكْسِبُ الْمَعْدُومَ، وَتَقْرِي الضَّيْفَ، وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ. فَانْطَلَقَتْ بِهِ خَدِيجَةُ حَتَّى أَتَتْ بِهِ وَرَقَةَ بْنَ نَوْفَلِ بْنِ أَسَدِ بْنِ عَبْدِ الْعُزَّى ابْنَ عَمِّ خَدِيجَةَ ـ وَكَانَ امْرَأً تَنَصَّرَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ، وَكَانَ يَكْتُبُ الْكِتَابَ الْعِبْرَانِيَّ، فَيَكْتُبُ مِنَ الإِنْجِيلِ بِالْعِبْرَانِيَّةِ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَكْتُبَ، وَكَانَ شَيْخًا كَبِيرًا قَدْ عَمِيَ ـ فَقَالَتْ لَهُ خَدِيجَةُ يَا ابْنَ عَمِّ اسْمَعْ مِنَ ابْنِ أَخِيكَ. فَقَالَ لَهُ وَرَقَةُ يَا ابْنَ أَخِي مَاذَا تَرَى فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَبَرَ مَا رَأَى. فَقَالَ لَهُ وَرَقَةُ هَذَا النَّامُوسُ الَّذِي نَزَّلَ اللَّهُ عَلَى مُوسَى صلى الله عليه وسلم يَا لَيْتَنِي فِيهَا جَذَعًا، لَيْتَنِي أَكُونُ حَيًّا إِذْ يُخْرِجُكَ قَوْمُكَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَوَمُخْرِجِيَّ هُمْ ". قَالَ نَعَمْ، لَمْ يَأْتِ رَجُلٌ قَطُّ بِمِثْلِ مَا جِئْتَ بِهِ إِلاَّ عُودِيَ، وَإِنْ يُدْرِكْنِي يَوْمُكَ أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا. ثُمَّ لَمْ يَنْشَبْ وَرَقَةُ أَنْ تُوُفِّيَ وَفَتَرَ الْوَحْىُ.
Narrated 'Aisha:
(the mother of the faithful believers) The commencement of the Divine Inspiration to Allah's Messenger (ﷺ) was in the form of good dreams which came true like bright daylight, and then the love of seclusion was bestowed upon him. He used to go in seclusion in the cave of Hira where he used to worship (Allah alone) continuously for many days before his desire to see his family. He used to take with him the journey food for the stay and then come back to (his wife) Khadija to take his food likewise again till suddenly the Truth descended upon him while he was in the cave of Hira. The angel came to him and asked him to read. The Prophet (ﷺ) replied, "I do not know how to read." The Prophet (ﷺ) added, "The angel caught me (forcefully) and pressed me so hard that I could not bear it any more. He then released me and again asked me to read and I replied, 'I do not know how to read.' Thereupon he caught me again and pressed me a second time till I could not bear it any more. He then released me and again asked me to read but again I replied, 'I do not know how to read (or what shall I read)?' Thereupon he caught me for the third time and pressed me, and then released me and said, 'Read in the name of your Lord, who has created (all that exists), created man from a clot. Read! And your Lord is the Most Generous." (96.1, 96.2, 96.3) Then Allah's Messenger (ﷺ) returned with the Inspiration and with his heart beating severely. Then he went to Khadija bint Khuwailid and said, "Cover me! Cover me!" They covered him till his fear was over and after that he told her everything that had happened and said, "I fear that something may happen to me." Khadija replied, "Never! By Allah, Allah will never disgrace you. You keep good relations with your kith and kin, help the poor and the destitute, serve your guests generously and assist the deserving calamity-afflicted ones." Khadija then accompanied him to her cousin Waraqa bin Naufal bin Asad bin 'Abdul 'Uzza, who, during the pre-Islamic Period became a Christian and used to write the writing with Hebrew letters. He would write from the Gospel in Hebrew as much as Allah wished him to write. He was an old man and had lost his eyesight. Khadija said to Waraqa, "Listen to the story of your nephew, O my cousin!" Waraqa asked, "O my nephew! What have you seen?" Allah's Messenger (ﷺ) described whatever he had seen. Waraqa said, "This is the same one who keeps the secrets (angel Gabriel) whom Allah had sent to Moses. I wish I were young and could live up to the time when your people would turn you out." Allah's Messenger (ﷺ) asked, "Will they drive me out?" Waraqa replied in the affirmative and said, "Anyone (man) who came with something similar to what you have brought was treated with hostility; and if I should remain alive till the day when you will be turned out then I would support you strongly." But after a few days Waraqa died and the Divine Inspiration was also paused for a while.
পরিচ্ছেদঃ ১/৩. পরিচ্ছেদ নাই।
৪. জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ্ আনসারী (রাঃ) ওয়াহী স্থগিত হওয়া প্রসঙ্গে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা আমি হাঁটছি, হঠাৎ আসমান হতে একটি শব্দ শুনতে পেয়ে আমার দৃষ্টিকে উপরে তুললাম। দেখলাম, সেই ফেরেশতা, যিনি হেরা গুহায় আমার নিকট এসেছিলেন, আসমান ও যমীনের মাঝে একটি আসনে উপবিষ্ট। এতে আমি শংকিত হলাম। অবিলম্বে আমি ফিরে এসে বললাম, ‘আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর, আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর।’ অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, ‘‘হে বস্ত্রাবৃত রাসূল! (১) উঠুন, সতর্ক করুন; আর আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন; এবং স্বীয় পরিধেয় বস্ত্র পবিত্র রাখুন; (৫) এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন।’’ (সূরাহ্ঃ মুদ্দাস্সির ৭৪/১-৫) অতঃপর ওয়াহী পুরোদমে ধারাবাহিক অবতীর্ণ হতে লাগল। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহ.) ও আবূ সালেহ্ (রহ.) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হিলাল ইবনু রাদ্দাদ (রহ.) যুহরী (রহ.) থেকেও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইউনুস ও মা’মার فواده -এর স্থলে بَوَادِرُهُ শব্দ উল্লেখ করেছেন।
(৩২৩৮, ৪৯২২, ৪৯২৩, ৪৯২৪, ৪৯২৫, ৪৯২৬, ৪৯৫৪, ৬২১৪; মুসলিম ১/৩৮ হাঃ ১৬১, আহমাদ ১৫০৩৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩ শেষাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩ শেষাংশ)
باب
قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيَّ، قَالَ ـ وَهُوَ يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْىِ، فَقَالَ ـ فِي حَدِيثِهِ " بَيْنَا أَنَا أَمْشِي، إِذْ سَمِعْتُ صَوْتًا، مِنَ السَّمَاءِ، فَرَفَعْتُ بَصَرِي فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِي جَاءَنِي بِحِرَاءٍ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، فَرُعِبْتُ مِنْهُ، فَرَجَعْتُ فَقُلْتُ زَمِّلُونِي. فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى (يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ * قُمْ فَأَنْذِرْ) إِلَى قَوْلِهِ (وَالرُّجْزَ فَاهْجُرْ) فَحَمِيَ الْوَحْىُ وَتَتَابَعَ ". تَابَعَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ وَأَبُو صَالِحٍ. وَتَابَعَهُ هِلاَلُ بْنُ رَدَّادٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ. وَقَالَ يُونُسُ وَمَعْمَرٌ " بَوَادِرُهُ ".
Narrated Jabir bin 'Abdullah Al-Ansari (while talking about the period of pause in revelation) reporting the speech of the Prophet:
"While I was walking, all of a sudden I heard a voice from the sky. I looked up and saw the same angel who had visited me at the cave of Hira' sitting on a chair between the sky and the earth. I got afraid of him and came back home and said, 'Wrap me (in blankets).' And then Allah revealed the following Holy Verses (of Quran): 'O you (i.e. Muhammad)! wrapped up in garments!' Arise and warn (the people against Allah's Punishment),... up to 'and desert the idols.' (74.1-5) After this the revelation started coming strongly, frequently and regularly."
পরিচ্ছেদঃ ১/৪. পরিচ্ছেদ নেই
৫. ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘ওয়াহী দ্রুত আয়ত্ত করার জন্য আপনি ওয়াহী নাযিল হওয়ার সময় আপনার জিহবা নাড়বেন না।’’ (সূরাহ্ কিয়ামাহ ৭৫/১৬)-এর ব্যাখ্যায় ইবনু ‘আব্বাস বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াহী অবতরণের সময় তা আয়ত্ত করতে বেশ কষ্ট করতেন এবং প্রায়ই তিনি তাঁর উভয় ঠোঁট নড়াতেন।’ ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) বলেন, ‘আমি তোমাকে দেখানোর জন্য ঠোঁট দুটি নাড়ছি যেভাবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নড়াতেন।’ সা‘ঈদ (রহ.) (তাঁর শিষ্যদের) বলেন, ‘আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.)-কে যেরূপে তাঁর ঠোঁট দুটি নড়াতে দেখেছি, সেভাবেই আমার ঠোঁট দুটি নড়াচ্ছি।’ এই বলে তিনি তাঁর ঠোঁট দুটি নড়ালেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেনঃ ‘‘ওয়াহী দ্রুত আয়ত্ত করার জন্য আপনি ওয়াহী নাযিল হবার সময় আপনার জিহবা নড়াবেন না, এর সংরক্ষণ ও পাঠ করানোর দায়িত্ব আমার’’- (সূরাহ্ ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৬)।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘‘এর অর্থ হলোঃ তোমার অন্তরে তা হেফাযত করা এবং তোমার দ্বারা তা পাঠ করানো। ‘‘সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন’’- (সূরাহ্ কিয়ামাহ ৭৫/১৮)। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, অর্থাৎ মনোযোগ সহকারে শুন এবং চুপ থাক। ‘‘তারপর এর বিশদ বর্ণনার দায়িত্ব তো আমারই’’- (সূরাহ্ কিয়ামাহ ৭৫/১৯)। অর্থাৎ তুমি তা পাঠ করবে, এটাও আমার দায়িত্ব। তারপর যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট জিবরীল (‘আ.) আসতেন, তখন তিনি মনোযোগ দিয়ে কেবল শুনতেন। জিবরীল চলে যাবার পর তিনি যেমন পাঠ করেছিলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -ও তদ্রূপ পাঠ করতেন।
(৪৯২৭, ৪৯২৮, ৪৯২৯, ৫০৪৪, ৭৫২৪; মুসলিম ৪/৩২ হাঃ ৪৪৮, আহমাদ ৩১৯১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪-এর শেষাংশ)
باب
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ أَبِي عَائِشَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِهِ تَعَالَى (لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ) قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُعَالِجُ مِنَ التَّنْزِيلِ شِدَّةً، وَكَانَ مِمَّا يُحَرِّكُ شَفَتَيْهِ ـ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَأَنَا أُحَرِّكُهُمَا لَكُمْ كَمَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُحَرِّكُهُمَا. وَقَالَ سَعِيدٌ أَنَا أُحَرِّكُهُمَا كَمَا رَأَيْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يُحَرِّكُهُمَا. فَحَرَّكَ شَفَتَيْهِ ـ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى (لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ* إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَهُ وَقُرْآنَهُ) قَالَ جَمْعُهُ لَهُ فِي صَدْرِكَ، وَتَقْرَأَهُ (فَإِذَا قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ) قَالَ فَاسْتَمِعْ لَهُ وَأَنْصِتْ (ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ) ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا أَنْ تَقْرَأَهُ. فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ ذَلِكَ إِذَا أَتَاهُ جِبْرِيلُ اسْتَمَعَ، فَإِذَا انْطَلَقَ جِبْرِيلُ قَرَأَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَمَا قَرَأَهُ.
(4) Chapter
Narrated Said bin Jubair:
Ibn 'Abbas in the explanation of the statement of Allah "Move not your tongue concerning (the Quran) to make haste therewith." (75.16) said "Allah's Messenger (ﷺ) used to bear the revelation with great trouble and used to move his lips (quickly) with the Inspiration." Ibn 'Abbas moved his lips saying, "I am moving my lips in front of you as Allah's Messenger (ﷺ) used to move his." Said moved his lips saying: "I am moving my lips, as I saw Ibn 'Abbas moving his." Ibn 'Abbas added, "So Allah revealed 'Move not your tongue concerning (the Qur'an) to make haste therewith. It is for Us to collect it and to give you (O Muhammad) the ability to recite it (the Quran)' (75.16-17) which means that Allah will make him (the Prophet) remember the portion of the Qur'an which was revealed at that time by heart and recite it. The statement of Allah: 'And when we have recited it to you (O Muhammad through Gabriel) then you follow its (Quran) recital' (75.18) means 'listen to it and be silent.' Then it is for Us (Allah) to make it clear to you' (75.19) means 'Then it is (for Allah) to make you recite it (and its meaning will be clear by itself through your tongue). Afterwards, Allah's Messenger (ﷺ) used to listen to Gabriel whenever he came and after his departure he used to recite it as Gabriel had recited it."
পরিচ্ছেদঃ ১/৫. পরিচ্ছেদ নেই
৬. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল রমাযানে তিনি আরো অধিক দানশীল হতেন, যখন জিবরীল (আঃ) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর রমাযানের প্রতি রাতেই জিবরীল (আঃ) তাঁর সাথে দেখা করতেন এবং তাঁরা একে অপরকে কুরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রহমতের বায়ু অপেক্ষাও অধিক দানশীল ছিলেন।
(১৯০২, ৩২২০, ৩৫৫৪, ৪৯৯৭; মুসলিম ৪৩/১২ হাঃ ৩২০৮, আহমাদ ৩৬১৬, ৩৪২৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৫)
باب
عَبْدَانُ قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ قَالَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ ح و حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ قَالَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ وَمَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ نَحْوَهُ قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ وَكَانَ يَلْقَاهُ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ فَيُدَارِسُهُ الْقُرْآنَ فَلَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدُ بِالْخَيْرِ مِنْ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ.
(5) Chapter
Narrated Ibn 'Abbas:
Allah's Messenger (ﷺ) was the most generous of all the people, and he used to reach the peak in generosity in the month of Ramadan when Gabriel met him. Gabriel used to meet him every night of Ramadan to teach him the Qur'an. Allah's Messenger (ﷺ) was the most generous person, even more generous than the strong uncontrollable wind (in readiness and haste to do charitable deeds).
পরিচ্ছেদঃ ১/৬. পরিচ্ছেদ নেই
৭. ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আবূ সুফইয়ান ইবনু হরব তাকে বলেছেন, রাজা হিরাক্লিয়াস একদা তাঁর নিকট লোক প্রেরণ করলেন। তিনি তখন ব্যবসা উপলক্ষে কুরাইশদের কাফেলায় সিরিয়ায় ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সময় আবূ সুফইয়ান ও কুরাইশদের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্ধিতে আবদ্ধ ছিলেন। আবূ সুফইয়ান তার সাথী সহ হিরাক্লিয়াসের নিকট আসলেন এবং তখন হিরাক্লিয়াস জেরুযালেমে ছিলেন। হিরাক্লিয়াস তাদেরকে তাঁর নিকটে ডেকে পাঠালেন। তাঁর নিকটে তখন রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিল। অতঃপর তাদের নিকটে ডাকলেন এবং দোভাষীকে ডাকলেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই যে ব্যক্তি নিজেকে নবী বলে দাবী করে-তোমাদের মাঝে বংশের দিক হতে তাঁর সবচেয়ে নিকটাত্মীয় কে’? আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘আমি বললাম, বংশের দিক দিয়ে আমিই তাঁর নিকটাত্মীয়।’ তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার অতি নিকটে আন এবং তাঁর সাথীদেরকেও তার পেছনে বসিয়ে দাও।’
অতঃপর তাঁর দোভাষীকে বললেন, ‘তাদের বলে দাও, আমি এর নিকট সে ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করব, যদি সে আমার নিকট মিথ্যা বলে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তোমরা তাকে মিথ্যুক বলবে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আমার যদি এ লজ্জা না থাকত যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রচার করবে, তবে আমি অবশ্যই তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা বলতাম।’
অতঃপর তিনি তাঁর সম্পর্কে আমাকে সর্বপ্রথম যে প্রশ্ন করেন তা হলো, ‘বংশমর্যাদার দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে সে কিরূপ?’ আমি বললাম, ‘তিনি আমাদের মধ্যে খুব সম্ভ্রান্ত বংশের।’ তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে এর পূর্বে আর কখনো কি কেউ এরূপ কথা বলেছে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কেউ কি বাদশাহ ছিলেন?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘সম্ভ্রান্ত মর্যাদাবান শ্রেণীর লোকেরা তাঁর অনুসরণ করে, নাকি দুর্বল লোকেরা?’ আমি বললাম, ‘দুর্বল লোকেরা।’ তিনি বললেন, ‘তাদের সংখ্যা কি বাড়ছে, না কমছে?’ আমি বললাম, ‘তারা বেড়েই চলেছে।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর ধর্মে ঢুকে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তার দাবীর পূর্বে তোমরা কি কখনো তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তিনি কি সন্ধি ভঙ্গ করেন?’ আমি বললাম, ‘না। তবে আমরা তাঁর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের সন্ধিতে আবদ্ধ আছি। জানি না, এর মধ্যে তিনি কী করবেন।’ আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘এ কথাটি ব্যতীত নিজের পক্ষ হতে আর কোন কথা যোগ করার সুযোগই আমি পাইনি।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা তাঁর সঙ্গে কখনো যুদ্ধ করেছ কি?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর সঙ্গে তোমাদের যুদ্ধের পরিণাম কি হয়েছে?’ আমি বললাম, ‘তাঁর ও আমাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল কুপের বালতির ন্যায়।’ কখনো তাঁর পক্ষে যায়, আবার কখনো আমাদের পক্ষে আসে।’ তিনি বললেন, ‘তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন?’ আমি বললাম, ‘তিনি বলেনঃ তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুর অংশীদার সাব্যস্ত করো না এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা বলে তা ত্যাগ কর। আর তিনি আমাদের সালাত আদায়ের, সত্য বলার, চারিত্রিক নিষ্কলুষতার এবং আত্মীয়দের সঙ্গে সদাচরণ করার নির্দেশ দেন।’
অতঃপর তিনি দোভাষীকে বললেন, ‘তুমি তাকে বল, আমি তোমার নিকট তাঁর বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছি। তুমি তার জবাবে উল্লেখ করেছ যে, তিনি তোমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত বংশের। প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণকে তাঁদের কওমের উচ্চ বংশেই পাঠানো হয়ে থাকে। তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, এ কথা তোমাদের মধ্যে ইতিপূর্বে আর কেউ বলেছে কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি, পূর্বে যদি কেউ এরূপ বলত, তবে আমি অবশ্যই বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি, যিনি তাঁর পূর্বসূরীর কথারই অনুসরণ করছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কোন বাদশাহ ছিলেন কি না? তুমি তার জবাবে বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি যে, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে যদি কোন বাদশাহ থাকতেন, তবে আমি বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি যিনি তাঁর বাপ-দাদার বাদশাহী ফিরে পেতে চান। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি-এর পূর্বে কখনো তোমরা তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ এতে আমি বুঝলাম, এমনটি হতে পারে না যে, কেউ মানুষের ব্যাপারে মিথ্যা পরিত্যাগ করবে আর আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা বলবে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, সম্ভ্রান্ত লোক তাঁর অনুসরণ করে, না সাধারণ লোক? তুমি বলেছ, সাধারণ লোকই তাঁর অনুসরণ করে। আর বাস্তবেও এই শ্রেণীর লোকেরাই হন রাসূলগণের অনুসারী। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তারা সংখ্যায় বাড়ছে না কমছে? তুমি বলেছ, বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে ঈমানে পূর্ণতা লাভ করা পর্যন্ত এ রকমই হয়ে থাকে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর দ্বীনে প্রবেশ করে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে? তুমি বলেছ, ‘না।’ ঈমানের স্নিগ্ধতা অন্তরের সঙ্গে মিশে গেলে ঈমান এরূপই হয়। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি সন্ধি ভঙ্গ করেন কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণ এরূপই, সন্ধি ভঙ্গ করেন না। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন? তুমি বলেছ, তিনি তোমাদের এক আল্লাহর বন্দেগী করা ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুর অংশীদার স্থাপন না করার নির্দেশ দেন। তিনি তোমাদের নিষেধ করেন মূর্তিপূজা করতে আর তোমাদের আদেশ করেন সালাত আদায় করতে, সত্য বলতে ও সচ্চরিত্র থাকতে। তুমি যা বলেছ তা যদি সত্য হয়, তবে শীঘ্রই তিনি আমার এ দু’পায়ের নীচের জায়গার অধিকারী হবেন। আমি নিশ্চিত জানতাম, তাঁর আবির্ভাব হবে; কিন্তু তিনি যে তোমাদের মধ্য হতে হবেন, এ কথা ভাবতে পারিনি। যদি জানতাম, আমি তাঁর নিকট পৌঁছতে পারব, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আমি যে কোন কষ্ট সহ্য করে নিতাম। আর আমি যদি তাঁর নিকট থাকতাম তবে অবশ্যই তাঁর দু’খানা পা ধৌত করে দিতাম। অতঃপর তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সেই পত্রখানি আনার নির্দেশ দিলেন, যা তিনি দিহ্ইয়াতুল কালবী (রাঃ)-কে দিয়ে বসরার শাসকের মাধ্যমে হিরাক্লিয়াসের নিকট প্রেরণ করেছিলেন। তিনি তা পড়লেন। তাতে (লেখা) ছিলঃ
বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম (পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহর নামে)। আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পক্ষ হতে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতি। - শান্তি (বর্ষিত হোক) তার প্রতি, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে। তারপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন। আল্লাহ্ আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সকল প্রজার পাপই আপনার উপর বর্তাবে।
‘‘হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন। তা হল, আমরা যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত না করি , কোন কিছুকেই যেন তাঁর শরীক সাব্যস্ত না করি এবং আমাদের কেউ যেন কাউকে পালনকর্তারূপে গ্রহণ না করে আল্লাহকে ত্যাগ করে। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বল, ‘‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা তো মুসলিম।’’ (সূরাহ্ আলে-‘ইমরান ৩/৬৪)
আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন এবং পত্র পাঠও শেষ করলেন, তখন সেখানে হট্টগোল শুরু হয়ে গেল, চীৎকার ও হৈ-হল্লা চরমে পৌঁছল এবং আমাদেরকে বের করে দেয়া হলো। আমাদেরকে বের করে দিলে আমি আমার সাথীদের বললাম, আবূ কাবশার* ছেলের বিষয় তো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, বনূ আসফার (রোম)-এর বাদশাহও তাকে ভয় পাচ্ছে! তখন থেকে আমি বিশ্বাস রাখতাম, তিনি শীঘ্রই জয়ী হবেন। অবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান করলেন।
ইবনু নাতূর ছিলেন জেরুযালেমের শাসনকর্তা এবং হিরাক্লিয়াসের বন্ধু ও সিরিয়ার খৃস্টানদের পাদ্রী। তিনি বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন জেরুযালেম আসেন, তখন একদা তাঁকে অত্যন্ত মলিন দেখাচ্ছিল। তাঁর একজন বিশিষ্ট সহচর বলল, ‘আমরা আপনার চেহারা আজ এত মলিন দেখছি, ইবনু নাতূর বলেন, হিরাক্লিয়াস ছিলেন জ্যোতির্বিদ, জ্যোতির্বিদ্যায় তাঁর দক্ষতা ছিল। তারা জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদের বললেন, ‘আজ রাতে আমি তারকারাজির দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম, খতনাকারীদের বাদশাহ আবির্ভূত হয়েছেন। বর্তমান যুগে কোন্ জাতি খাতনা করে’? তারা বলল, ‘ইয়াহূদ জাতি ব্যতীত কেউ খাতনা করে না। কিন্তু তাদের ব্যাপারে আপনি মোটেও চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। আপনার রাজ্যের শহরগুলোতে লিখে পাঠান, তারা যেন সেখানকার সকল ইয়াহূদীকে কতল করে ফেলে।’ তারা যখন এ ব্যাপারে ব্যতিব্যস্ত ছিল, তখন হিরাক্লিয়াসের নিকট জনৈক ব্যক্তিকে হাযির করা হলো, যাকে গাস্সানের শাসনকর্তা পাঠিয়েছিল। সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে খবর দিচ্ছিল। হিরাক্লিয়াস তার কাছ থেকে খবর জেনে নিয়ে বললেন, ‘তোমরা একে নিয়ে গিয়ে দেখ, তার খাতনা হয়েছে কি-না।’ তারা তাকে নিয়ে গিয়ে দেখে এসে সংবাদ দিল, তার খাতনা হয়েছে। হিরাক্লিয়াস তাকে আরবদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে জওয়াব দিল, ‘তারা খাতনা করে।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস তাদের বললেন, ‘ইনি [আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] এ উম্মতের বাদশাহ। তিনি আবির্ভূত হয়েছেন।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস রোমে তাঁর বন্ধুর নিকট লিখলেন। তিনি জ্ঞানে তাঁর সমকক্ষ ছিলেন। পরে হিরাক্লিয়াস হিমস চলে গেলেন। হিমসে থাকতেই তাঁর নিকট তাঁর বন্ধুর চিঠি এলো, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আবির্ভাব এবং তিনিই যে প্রকৃত নবী, এ ব্যাপারে হিরাক্লিয়াসের মতকে সমর্থন করছিল। তারপর হিরাক্লিয়াস তাঁর হিমসের প্রাসাদে রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকলেন এবং প্রাসাদের সকল দরজা বন্ধ করার আদেশ দিলে দরজা বন্ধ করা হলো। অতঃপর তিনি সম্মুখে এসে বললেন, হে রোমের অধিবাসী! তোমরা কি মঙ্গল, হিদায়াত এবং তোমাদের রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব চাও? তাহলে এই নবীর বায়’আত গ্রহণ কর।’ এ কথা শুনে তারা বন্য গাধার ন্যায় দ্রুত নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে দরজার দিকে ছুটল, কিন্তু তারা তা বন্ধ দেখতে পেল। হিরাক্লিয়াস যখন তাদের অনীহা লক্ষ্য করলেন এবং তাদের ঈমান থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন, তখন বললেন, ‘ওদের আমার নিকট ফিরিয়ে আন।’ তিনি বললেন, ‘আমি একটু পূর্বে যে কথা বলেছি, তা দিয়ে তোমরা তোমাদের দ্বীনের উপর কতটুকু অটল, কেবল তার পরীক্ষা করছিলাম। এখন তা দেখে নিলাম।’ একথা শুনে তারা তাঁকে সিজদা করল এবং তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হলো। এটাই ছিল হিরাক্লিয়াসের সর্বশেষ অবস্থা।
আবূ ‘আবদুল্লাহ [বুখারী (রহ.)] বলেন, সালিহ ইবনু কায়সান (রহ.), ইউনুস (রহ.) ও মা’মার (রহ.) এ হাদীস যুহরী (রহ.) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। (৫১, ২৬৮১, ২৮০৪, ২৯৪১, ২৯৭৮, ৩১৭৪, ৪৫৫৩, ৫৯৮০, ৬২৬০, ৭১৯৬, ৭৫৪১ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬)
باب
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ بْنَ حَرْبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ هِرَقْلَ أَرْسَلَ إِلَيْهِ فِي رَكْبٍ مِنْ قُرَيْشٍ ـ وَكَانُوا تُجَّارًا بِالشَّأْمِ ـ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَادَّ فِيهَا أَبَا سُفْيَانَ وَكُفَّارَ قُرَيْشٍ، فَأَتَوْهُ وَهُمْ بِإِيلِيَاءَ فَدَعَاهُمْ فِي مَجْلِسِهِ، وَحَوْلَهُ عُظَمَاءُ الرُّومِ ثُمَّ دَعَاهُمْ وَدَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا بِهَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا أَقْرَبُهُمْ نَسَبًا. فَقَالَ أَدْنُوهُ مِنِّي، وَقَرِّبُوا أَصْحَابَهُ، فَاجْعَلُوهُمْ عِنْدَ ظَهْرِهِ. ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُمْ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا عَنْ هَذَا الرَّجُلِ، فَإِنْ كَذَبَنِي فَكَذِّبُوهُ. فَوَاللَّهِ لَوْلاَ الْحَيَاءُ مِنْ أَنْ يَأْثِرُوا عَلَىَّ كَذِبًا لَكَذَبْتُ عَنْهُ، ثُمَّ كَانَ أَوَّلَ مَا سَأَلَنِي عَنْهُ أَنْ قَالَ كَيْفَ نَسَبُهُ فِيكُمْ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو نَسَبٍ. قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ مِنْكُمْ أَحَدٌ قَطُّ قَبْلَهُ قُلْتُ لاَ. قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ لاَ. قَالَ فَأَشْرَافُ النَّاسِ يَتَّبِعُونَهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَقُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ. قَالَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ قُلْتُ بَلْ يَزِيدُونَ. قَالَ فَهَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ قُلْتُ لاَ. قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ. قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قُلْتُ لاَ، وَنَحْنُ مِنْهُ فِي مُدَّةٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ فَاعِلٌ فِيهَا. قَالَ وَلَمْ تُمْكِنِّي كَلِمَةٌ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرُ هَذِهِ الْكَلِمَةِ. قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قُلْتُ نَعَمْ. قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قُلْتُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالٌ، يَنَالُ مِنَّا وَنَنَالُ مِنْهُ. قَالَ مَاذَا يَأْمُرُكُمْ قُلْتُ يَقُولُ اعْبُدُوا اللَّهَ وَحْدَهُ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَاتْرُكُوا مَا يَقُولُ آبَاؤُكُمْ، وَيَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ وَالصِّلَةِ. فَقَالَ لِلتَّرْجُمَانِ قُلْ لَهُ سَأَلْتُكَ عَنْ نَسَبِهِ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو نَسَبٍ، فَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي نَسَبِ قَوْمِهَا، وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ مِنْكُمْ هَذَا الْقَوْلَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقُلْتُ لَوْ كَانَ أَحَدٌ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ لَقُلْتُ رَجُلٌ يَأْتَسِي بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، قُلْتُ فَلَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ أَبِيهِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقَدْ أَعْرِفُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَذَرَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ وَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ، وَسَأَلْتُكَ أَشْرَافُ النَّاسِ اتَّبَعُوهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَذَكَرْتَ أَنَّ ضُعَفَاءَهُمُ اتَّبَعُوهُ، وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ، وَسَأَلْتُكَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ فَذَكَرْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ، وَكَذَلِكَ أَمْرُ الإِيمَانِ حَتَّى يَتِمَّ، وَسَأَلْتُكَ أَيَرْتَدُّ أَحَدٌ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حِينَ تُخَالِطُ بَشَاشَتُهُ الْقُلُوبَ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ، وَسَأَلْتُكَ بِمَا يَأْمُرُكُمْ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَعْبُدُوا اللَّهَ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَيَنْهَاكُمْ عَنْ عِبَادَةِ الأَوْثَانِ، وَيَأْمُرُكُمْ بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ. فَإِنْ كَانَ مَا تَقُولُ حَقًّا فَسَيَمْلِكُ مَوْضِعَ قَدَمَىَّ هَاتَيْنِ، وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ، لَمْ أَكُنْ أَظُنُّ أَنَّهُ مِنْكُمْ، فَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لَتَجَشَّمْتُ لِقَاءَهُ، وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمِهِ. ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي بَعَثَ بِهِ دِحْيَةُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى، فَدَفَعَهُ إِلَى هِرَقْلَ فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيهِ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ. مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ. سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ(يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ) قَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَلَمَّا قَالَ مَا قَالَ، وَفَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ كَثُرَ عِنْدَهُ الصَّخَبُ، وَارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ وَأُخْرِجْنَا، فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ أُخْرِجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ، إِنَّهُ يَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ. فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ. وَكَانَ ابْنُ النَّاظُورِ صَاحِبُ إِيلِيَاءَ وَهِرَقْلَ سُقُفًّا عَلَى نَصَارَى الشَّأْمِ، يُحَدِّثُ أَنَّ هِرَقْلَ حِينَ قَدِمَ إِيلِيَاءَ أَصْبَحَ يَوْمًا خَبِيثَ النَّفْسِ، فَقَالَ بَعْضُ بَطَارِقَتِهِ قَدِ اسْتَنْكَرْنَا هَيْئَتَكَ. قَالَ ابْنُ النَّاظُورِ وَكَانَ هِرَقْلُ حَزَّاءً يَنْظُرُ فِي النُّجُومِ، فَقَالَ لَهُمْ حِينَ سَأَلُوهُ إِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ حِينَ نَظَرْتُ فِي النُّجُومِ مَلِكَ الْخِتَانِ قَدْ ظَهَرَ، فَمَنْ يَخْتَتِنُ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ قَالُوا لَيْسَ يَخْتَتِنُ إِلاَّ الْيَهُودُ فَلاَ يُهِمَّنَّكَ شَأْنُهُمْ وَاكْتُبْ إِلَى مَدَايِنِ مُلْكِكَ، فَيَقْتُلُوا مَنْ فِيهِمْ مِنَ الْيَهُودِ. فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى أَمْرِهِمْ أُتِيَ هِرَقْلُ بِرَجُلٍ أَرْسَلَ بِهِ مَلِكُ غَسَّانَ، يُخْبِرُ عَنْ خَبَرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا اسْتَخْبَرَهُ هِرَقْلُ قَالَ اذْهَبُوا فَانْظُرُوا أَمُخْتَتِنٌ هُوَ أَمْ لاَ. فَنَظَرُوا إِلَيْهِ، فَحَدَّثُوهُ أَنَّهُ مُخْتَتِنٌ، وَسَأَلَهُ عَنِ الْعَرَبِ فَقَالَ هُمْ يَخْتَتِنُونَ. فَقَالَ هِرَقْلُ هَذَا مَلِكُ هَذِهِ الأُمَّةِ قَدْ ظَهَرَ. ثُمَّ كَتَبَ هِرَقْلُ إِلَى صَاحِبٍ لَهُ بِرُومِيَةَ، وَكَانَ نَظِيرَهُ فِي الْعِلْمِ، وَسَارَ هِرَقْلُ إِلَى حِمْصَ، فَلَمْ يَرِمْ حِمْصَ حَتَّى أَتَاهُ كِتَابٌ مِنْ صَاحِبِهِ يُوَافِقُ رَأْىَ هِرَقْلَ عَلَى خُرُوجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَأَنَّهُ نَبِيٌّ، فَأَذِنَ هِرَقْلُ لِعُظَمَاءِ الرُّومِ فِي دَسْكَرَةٍ لَهُ بِحِمْصَ ثُمَّ أَمَرَ بِأَبْوَابِهَا فَغُلِّقَتْ، ثُمَّ اطَّلَعَ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّومِ، هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلاَحِ وَالرُّشْدِ وَأَنْ يَثْبُتَ مُلْكُكُمْ فَتُبَايِعُوا هَذَا النَّبِيَّ، فَحَاصُوا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الأَبْوَابِ، فَوَجَدُوهَا قَدْ غُلِّقَتْ، فَلَمَّا رَأَى هِرَقْلُ نَفْرَتَهُمْ، وَأَيِسَ مِنَ الإِيمَانِ قَالَ رُدُّوهُمْ عَلَىَّ. وَقَالَ إِنِّي قُلْتُ مَقَالَتِي آنِفًا أَخْتَبِرُ بِهَا شِدَّتَكُمْ عَلَى دِينِكُمْ، فَقَدْ رَأَيْتُ. فَسَجَدُوا لَهُ وَرَضُوا عَنْهُ، فَكَانَ ذَلِكَ آخِرَ شَأْنِ هِرَقْلَ. رَوَاهُ صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ وَيُونُسُ وَمَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ.
(6) Chapter
Narrated 'Abdullah bin 'Abbas:
Abu Sufyan bin Harb informed me that Heraclius had sent a messenger to him while he had been accompanying a caravan from Quraish. They were merchants doing business in Sham (Syria, Palestine, Lebanon and Jordan), at the time when Allah's Messenger (ﷺ) had truce with Abu Sufyan and Quraish infidels. So Abu Sufyan and his companions went to Heraclius at Ilya (Jerusalem). Heraclius called them in the court and he had all the senior Roman dignitaries around him. He called for his translator who, translating Heraclius's question said to them, "Who amongst you is closely related to that man who claims to be a Prophet?" Abu Sufyan replied, "I am the nearest relative to him (amongst the group)."
Heraclius said, "Bring him (Abu Sufyan) close to me and make his companions stand behind him." Abu Sufyan added, Heraclius told his translator to tell my companions that he wanted to put some questions to me regarding that man (The Prophet) and that if I told a lie they (my companions) should contradict me." Abu Sufyan added, "By Allah! Had I not been afraid of my companions labeling me a liar, I would not have spoken the truth about the Prophet. The first question he asked me about him was:
'What is his family status amongst you?'
I replied, 'He belongs to a good (noble) family amongst us.'
Heraclius further asked, 'Has anybody amongst you ever claimed the same (i.e. to be a Prophet) before him?'
I replied, 'No.'
He said, 'Was anybody amongst his ancestors a king?'
I replied, 'No.'
Heraclius asked, 'Do the nobles or the poor follow him?'
I replied, 'It is the poor who follow him.'
He said, 'Are his followers increasing decreasing (day by day)?'
I replied, 'They are increasing.'
He then asked, 'Does anybody amongst those who embrace his religion become displeased and renounce the religion afterwards?'
I replied, 'No.'
Heraclius said, 'Have you ever accused him of telling lies before his claim (to be a Prophet)?'
I replied, 'No. '
Heraclius said, 'Does he break his promises?'
I replied, 'No. We are at truce with him but we do not know what he will do in it.' I could not find opportunity to say anything against him except that.
Heraclius asked, 'Have you ever had a war with him?'
I replied, 'Yes.'
Then he said, 'What was the outcome of the battles?'
I replied, 'Sometimes he was victorious and sometimes we.'
Heraclius said, 'What does he order you to do?'
I said, 'He tells us to worship Allah and Allah alone and not to worship anything along with Him, and to renounce all that our ancestors had said. He orders us to pray, to speak the truth, to be chaste and to keep good relations with our Kith and kin.'
Heraclius asked the translator to convey to me the following, I asked you about his family and your reply was that he belonged to a very noble family. In fact all the Apostles come from noble families amongst their respective peoples. I questioned you whether anybody else amongst you claimed such a thing, your reply was in the negative. If the answer had been in the affirmative, I would have thought that this man was following the previous man's statement. Then I asked you whether anyone of his ancestors was a king. Your reply was in the negative, and if it had been in the affirmative, I would have thought that this man wanted to take back his ancestral kingdom.
I further asked whether he was ever accused of telling lies before he said what he said, and your reply was in the negative. So I wondered how a person who does not tell a lie about others could ever tell a lie about Allah. I, then asked you whether the rich people followed him or the poor. You replied that it was the poor who followed him. And in fact all the Apostle have been followed by this very class of people. Then I asked you whether his followers were increasing or decreasing. You replied that they were increasing, and in fact this is the way of true faith, till it is complete in all respects. I further asked you whether there was anybody, who, after embracing his religion, became displeased and discarded his religion. Your reply was in the negative, and in fact this is (the sign of) true faith, when its delight enters the hearts and mixes with them completely. I asked you whether he had ever betrayed. You replied in the negative and likewise the Apostles never betray. Then I asked you what he ordered you to do. You replied that he ordered you to worship Allah and Allah alone and not to worship any thing along with Him and forbade you to worship idols and ordered you to pray, to speak the truth and to be chaste. If what you have said is true, he will very soon occupy this place underneath my feet and I knew it (from the scriptures) that he was going to appear but I did not know that he would be from you, and if I could reach him definitely, I would go immediately to meet him and if I were with him, I would certainly wash his feet.' Heraclius then asked for the letter addressed by Allah's Apostle
which was delivered by Dihya to the Governor of Busra, who forwarded it to Heraclius to read. The contents of the letter were as follows: "In the name of Allah the Beneficent, the Merciful (This letter is) from Muhammad the slave of Allah and His Apostle to Heraclius the ruler of Byzantine. Peace be upon him, who follows the right path. Furthermore I invite you to Islam, and if you become a Muslim you will be safe, and Allah will double your reward, and if you reject this invitation of Islam you will be committing a sin by misguiding your Arisiyin (peasants). (And I recite to you Allah's Statement:)
'O people of the scripture! Come to a word common to you and us that we worship none but Allah and that we associate nothing in worship with Him, and that none of us shall take others as Lords beside Allah. Then, if they turn away, say: Bear witness that we are Muslims (those who have surrendered to Allah).' (3:64).
Abu Sufyan then added, "When Heraclius had finished his speech and had read the letter, there was a great hue and cry in the Royal Court. So we were turned out of the court. I told my companions that the question of Ibn-Abi-Kabsha) (the Prophet (ﷺ) Muhammad) has become so prominent that even the King of Bani Al-Asfar (Byzantine) is afraid of him. Then I started to become sure that he (the Prophet) would be the conqueror in the near future till I embraced Islam (i.e. Allah guided me to it)."
The sub narrator adds, "Ibn An-Natur was the Governor of llya' (Jerusalem) and Heraclius was the head of the Christians of Sham. Ibn An-Natur narrates that once while Heraclius was visiting ilya' (Jerusalem), he got up in the morning with a sad mood. Some of his priests asked him why he was in that mood? Heraclius was a foreteller and an astrologer. He replied, 'At night when I looked at the stars, I saw that the leader of those who practice circumcision had appeared (become the conqueror). Who are they who practice circumcision?' The people replied, 'Except the Jews nobody practices circumcision, so you should not be afraid of them (Jews).
'Just Issue orders to kill every Jew present in the country.'
While they were discussing it, a messenger sent by the king of Ghassan to convey the news of Allah's Messenger (ﷺ) to Heraclius was brought in. Having heard the news, he (Heraclius) ordered the people to go and see whether the messenger of Ghassan was circumcised. The people, after seeing him, told Heraclius that he was circumcised. Heraclius then asked him about the Arabs. The messenger replied, 'Arabs also practice circumcision.'
(After hearing that) Heraclius remarked that sovereignty of the 'Arabs had appeared. Heraclius then wrote a letter to his friend in Rome who was as good as Heraclius in knowledge. Heraclius then left for Homs. (a town in Syrian and stayed there till he received the reply of his letter from his friend who agreed with him in his opinion about the emergence of the Prophet (ﷺ) and the fact that he was a Prophet. On that Heraclius invited all the heads of the Byzantines to assemble in his palace at Homs. When they assembled, he ordered that all the doors of his palace be closed. Then he came out and said, 'O Byzantines! If success is your desire and if you seek right guidance and want your empire to remain then give a pledge of allegiance to this Prophet (i.e. embrace Islam).'
(On hearing the views of Heraclius) the people ran towards the gates of the palace like onagers but found the doors closed. Heraclius realized their hatred towards Islam and when he lost the hope of their embracing Islam, he ordered that they should be brought back in audience.
(When they returned) he said, 'What already said was just to test the strength of your conviction and I have seen it.' The people prostrated before him and became pleased with him, and this was the end of Heraclius's story (in connection with his faith).
পরিচ্ছেদঃ ২/২. তোমাদের দু’আ তোমাদের ঈমান।
ঈমান (বিশ্বাস)
২/১. بَاب قَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بُنِيَ الْإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ
২/১. নবী সল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীঃ ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত।
وَهُوَ قَوْلٌ وَفِعْلٌ وَيَزِيدُ وَيَنْقُصُ قَالَ اللهُ تَعَالَى : )لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَعَ إِيمَانِهِمْ وَزِدْنَاهُمْ هُدًى( )وَيَزِيدُ اللهُ الَّذِينَ اهْتَدَوْا هُدًى( )وَالَّذِينَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَآتَاهُمْ تَقْوَاهُمْ( وَقَوْلُهُ )وَيَزْدَادَ الَّذِينَ آمَنُوا إِيمَانًا( وَقَوْلُهُ )أَيُّكُمْ زَادَتْهُ هَذِهِ إِيمَانًا( فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا فَزَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَقَوْلُهُ جَلَّ ذِكْرُهُ )فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا( وَقَوْلُهُ تَعَالَى )وَمَا زَادَهُمْ إِلاَّ إِيمَانًا وَتَسْلِيمًا( وَالْحُبُّ فِي اللهِ وَالْبُغْضُ فِي اللهِ مِنَ الإِيْمَانِ وَكَتَبَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ إِلَى عَدِيِّ بْنِ عَدِيٍّ إِنَّ لِلْإِيمَانِ فَرَائِضَ وَشَرَائِعَ وَحُدُودًا وَسُنَنًا فَمَنْ اسْتَكْمَلَهَا اسْتَكْمَلَ الإِيْمَانَ وَمَنْ لَمْ يَسْتَكْمِلْهَا لَمْ يَسْتَكْمِلْ الإِيْمَانَ فَإِنْ أَعِشْ فَسَأُبَيِّنُهَا لَكُمْ حَتَّى تَعْمَلُوا بِهَا وَإِنْ أَمُتْ فَمَا أَنَا عَلَى صُحْبَتِكُمْ بِحَرِيصٍ وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ صلى الله عليه وسلم )وَلَكِنْ لِيَطْمَئِنَّ قَلْبِي( وَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ اجْلِسْ بِنَا نُؤْمِنْ سَاعَةً وَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ الْيَقِينُ الإِيْمَانُ كُلُّهُ وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ لاَ يَبْلُغُ الْعَبْدُ حَقِيقَةَ التَّقْوَى حَتَّى يَدَعَ مَا حَاكَ فِي الصَّدْرِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ )شَرَعَ لَكُمْ( مِنْ الدِّينِ أَوْصَيْنَاكَ يَا مُحَمَّدُ وَإِيَّاهُ دِينًا وَاحِدًا وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ )شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا( سَبِيلاً وَسُنَّةً
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বাণীঃ ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটিঃ মুখে স্বীকার এবং কাজে পরিণত করাই হচ্ছে ঈমান এবং তা বৃদ্ধি পায় ও হ্রাস পায়।* আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ ’’যাতে তারা তাদের ঈমানের সঙ্গে ঈমান মজবুত করে নেয়- (সূরাহ্ ফাত্হ ৪৮/৪)। আমরা তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছিলাম- (সূরাহ্ কাহাফ ১৮/১৩)। এবং যারা সৎপথে চলে আল্লাহ্ তাদের অধিক হিদায়াত দান করেন- (সূরাহ্ মারইয়াম ১৯/৭৬)। এবং যারা সৎপথ অবলম্বন করে আল্লাহ্ তাদের হিদায়াত বাড়িয়ে দেন এবং তাদের সৎপথে চলার শক্তি বাড়িয়ে দেন- (সূরাহ্ মুহাম্মাদ ৪৭/১৭)। যাতে মু’মিনদের ঈমান বেড়ে যায়- (সূরাহ্ মুদ্দাসসির ৭৪/৩১)। আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেন, এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বাড়িয়ে দিল? যারা মু’মিন এ তো তাদের ঈমান বাড়িয়ে দেয়- (সূরাহ্ আত্-তওবা ৯/১২৪)। এবং তাঁর বাণী, ’’সুতরাং তোমরা তাদের ভয় কর; একথা তাদের ঈমানের দৃঢ়তা বাড়িয়ে দিল’’- (সূরাহ্ আলে-ইমরান ৩/১৭৩)। ’’এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্য আরও বৃদ্ধি পেল’’- (সূরাহ্ আহযাব ৩৩/২২)।
আর আল্লাহর জন্য ভালবাসা ও আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা ঈমানের অংশ। ’উমার ইবনু ’আবদুল ’আযীয (রহ.) ’আদী ইবনু ’আদী (রহ.)-এর নিকট এক পত্রে লিখেছিলেন, ’ঈমানের কতকগুলো ফার্য (ফরয), কতকগুলো হুকুম-আহকাম, বিধি-নিষেধ এবং সুন্নাত রয়েছে। যে এগুলো পরিপূর্ণরূপে আদায় করে তার ঈমান পূর্ণ হয়। আর যে এগুলো পূর্ণভাবে আদায় করে না, তার ঈমান পূর্ণ হয় না। আমি যদি বেঁচে থাকি তবে অচিরেই এগুলো তোমাদের নিকট ব্যক্ত করব, যাতে তোমরা তার উপর ’আমল করতে পার। আর যদি আমার মৃত্যু হয় তাহলে জেনে রাখ, তোমাদের সাহচর্যে থাকার জন্য আমি আকাঙ্ক্ষিত নই।’
ইবরাহীম (’আ.) বলেন, ’তবে এ তো কেবল চিত্ত প্রশান্তির জন্য’- (সূরাহ্ আল-বাক্বারাহ ২/২৬)। মু’আয (রাঃ) বলেন, ’’এসো আমাদের সঙ্গে বস, কিছুক্ষণ ঈমানের আলোচনা করি।’’ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, ’ইয়াকীন হল পূর্ণ ঈমান।’ ইবনু ’উমার (রাঃ) বলেন, ’বান্দা প্রকৃত তাকওয়ায় পৌঁছতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে, মনে যে বিষয় সন্দেহের সৃষ্টি করে, তা পরিত্যাগ না করে।’ মুজাহিদ (রাঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ’’অর্থাৎ হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি আপনাকে এবং নূহকে একই ধর্মের আদেশ করেছি’’- (সূরাহ্ শূরা ৪২/১৩)। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, ’’অর্থাৎ পথ ও পন্থা’’- (সূরাহ্ আল-মায়িদাহ ৫/৪৮)।
قُلْ مَا يَعْبَأُ بِكُمْ رَبِّي لَوْلاَ دُعَاؤُكُمْ( وَمَعْنَى الدُّعَاءِ فِي اللُّغَةِ الإِيْمَانُ.)
এ মর্মে আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ ’’বলে দিন, আমার প্রতিপালক তোমাদের একটুও পরোয়া করবেন না যদি তোমরা ’ইবাদাত না কর’’- (সূরাহ্ আল-ফুরক্বান ২৫/৭৭)। অভিধানে দু’আর অর্থ করা হয়েছেঃ ’’ঈমান’’।
৮. ইবন ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটি। ১. আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল-এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা। ২. সালাত কায়িম করা। ৩. যাকাত আদায় করা। ৪. হাজ্জ সম্পাদন করা এবং ৫. রমাযানের সিয়ামব্রত পালন করা। (৪৫১৪; মুসলিম ১/৫ হাঃ ১৬, আহমাদ ৬০২২, ৬৩০৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭)
باب دُعَاؤُكُمْ إِيمَانُكُمْ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، قَالَ أَخْبَرَنَا حَنْظَلَةُ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالْحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ ".
(2) Chapter: Your invocation means your faith
Narrated Ibn 'Umar:
Allah's Messenger (ﷺ) said: Islam is based on (the following) five (principles):
1. To testify that none has the right to be worshipped but Allah and Muhammad is Allah's Messenger (ﷺ).
2. To offer the (compulsory congregational) prayers dutifully and perfectly.
3. To pay Zakat (i.e. obligatory charity) .
4. To perform Hajj. (i.e. Pilgrimage to Mecca)
5. To observe fast during the month of Ramadan.
পরিচ্ছেদঃ ২/৩. ঈমানের বিষয়সমূহ
وَقَوْلِ اللهِ تَعَالَى: )لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَى حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلاَةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِينَ الْبَأْسِ أُولَئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَأُولَئِكَ هُمْ الْمُتَّقُونَ( وَقَوْلِهِ )قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ( الآيَةَ.
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ ’’কোন পুণ্য নেই পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোতে; কিন্তু পুণ্য আছে কেউ ঈমান আনলে আল্লাহর উপর, আখিরাতের উপর, ফেরেশতাদের উপর, সকল কিতাবের উপর, আর সকল নবী-রাসূলদের উপর, এবং অর্থ দান করলে আল্লাহ প্রেমে আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম, মিসকীন, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী এবং দাস মুক্তির জন্য, সালাত কায়িম করলে, যাকাত দিলে, কৃত প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করলে আর অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধ বিভ্রাটে ধৈর্যধারণ করলে। এরাই হল প্রকৃত সত্যপরায়ণ, আর এরাই মুত্তাকী’’- (আল-বাক্বারাহ ২/১৭৭)। ’’অবশ্যই সফলতা লাভ করেছে মুমিনগণ’’- (সূরাহ্ মুমিনূন ২৩/১)।
৯. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈমানের ষাটেরও অধিক শাখা আছে। আর লজ্জা হচ্ছে ঈমানের একটি শাখা। (মুসলিম ১/১২ হাঃ ৩৫, আহমাদ ৯৩৭২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৮)
باب أُمُورِ الإِيمَانِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ " الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسِتُّونَ شُعْبَةً، وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ ".
(3) Chapter: (What is said) regarding the deeds of faith
The Prophet (ﷺ) said, "Faith (Belief) consists of more than sixty branches (i.e. parts). And Haya (This term "Haya" covers a large number of concepts which are to be taken together; amongst them are self respect, modesty, bashfulness, and scruple, etc.) is a part of faith."
পরিচ্ছেদঃ ২/৪. সে-ই মুসলিম, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।
১০. ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সে-ই মুসলিম, যার জিহবা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ এবং সে-ই প্রকৃত মুহাজির, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা যে ত্যাগ করে। (৬৪৮৪; মুসলিম ১/১৪ হাঃ ৪০, আহমাদ ৬৭৬৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৯)
باب الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ
آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي السَّفَرِ وَإِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللهُ عَنْهُ
قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ وَقَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا دَاوُدُ هُوَ ابْنُ أَبِي هِنْدٍ عَنْ عَامِرٍ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ يَعْنِي ابْنَ عَمْرٍو عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ عَبْدُ الأَعْلَى عَنْ دَاوُدَ عَنْ عَامِرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
(4) Chapter: A Muslim is the one who avoids harming Muslims with his tongue and hands
Narrated 'Abdullah bin 'Amr:
The Prophet (ﷺ) said, "A Muslim is the one who avoids harming Muslims with his tongue and hands. And a Muhajir (emigrant) is the one who gives up (abandons) all what Allah has forbidden."