কুসূফ তথা সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের সালাত

ক- সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের সালাতের পরিচিতি, হুকুম ও শরী‘আতসম্মত হওয়ার হিকমত:

কুসূফ অর্থ সূর্য বা চন্দ্রের আলো চলে যাওয়া, নিভে যাওয়া। এটা মহান আল্লাহ তা‘আলার একটি মহা নিদর্শন। এ সালাত মানুষকে এ জীবনের পরিবর্তনের তথা কিয়ামতের ভয়াবহ দিবসের জন্য প্রস্তুতি, আল্লাহর কাছে বিনীত হওয়া ও মহাবিশ্বের মহাপরিচালনা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে আহ্বান করে। মহান আল্লাহই যে একমাত্র ইবাদতের হকদার এ সালাত তাঁরই অন্যতম আহ্বান। সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হলে জামা‘আতের সাথে এ সালাত পড়া সুন্নাত। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿وَمِنۡ ءَايَٰتِهِ ٱلَّيۡلُ وَٱلنَّهَارُ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُۚ لَا تَسۡجُدُواْ لِلشَّمۡسِ وَلَا لِلۡقَمَرِ وَٱسۡجُدُواْۤ لِلَّهِۤ ٱلَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمۡ إِيَّاهُ تَعۡبُدُونَ٣٧﴾ [فصلت: ٣٧]

“আর তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে রাত ও দিন, সূর্য ও চাঁদ। তোমরা না সূর্যকে সাজদাহ করবে, না চাঁদকে। আর তোমরা আল্লাহকে সাজদাহ কর যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা কেবল তাঁরই ইবাদাত কর”। [সূরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৩৭]

খ- সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের সালাতের ওয়াক্ত:

সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের শুরু থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত এর সময় অবশিষ্ট থাকে। সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ শেষ হয়ে গেলে এ সালাতের কাযা নেই এবং আলোকিত হয়ে গেলেও এ সালাত পড়ার নির্দেশ নেই, কেননা তখন এ সালাতের ওয়াক্ত চলে যায়।

গ- সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের সালাতের বর্ণনা:

দু’রাকাত সালাত পড়তে হয়। প্রথম রাকাতে উচ্চস্বরে সূরা আল-ফাতিহা ও দীর্ঘ সূরা পড়তে হয়, অতঃপর দীর্ঘ রুকু করে মাথা উঠিয়ে সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদা ও রাব্বানা লাকাল হামদ পড়বে। অতঃপর সূরা ফাতিহা পড়ে দীর্ঘ সূরা পড়বে। অতঃপর রুকু করবে, অতঃপর রুকু থেকে মাথা উঠাবে। অতঃপর দু’টি দীর্ঘ সাজদাহ দিবে। অতঃপর প্রথম রাকাতের মতো দ্বিতীয় রাকাত পড়বে, তবে কিরাত, রুকু, সাজদাহ ইত্যাদি প্রথম রাকাতের চেয়ে তুলনামূলক কম দীর্ঘ করবে। এ সালাতের অন্য পদ্ধতিও আছে। তবে এটি সর্বাধিক বিশুদ্ধ ও পরিপূর্ণ পদ্ধতি। যদি তিন বা চার বা পাঁচ বার রুকু করা হয় তবে প্রয়োজন হলে তাতে কোনো অসুবিধে নেই।