উসূলে ফিক্বহ (ফিক্বহের মূলনীতি) ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ (العام) শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
ব্যাপক অর্থবোধক শব্দানুসারে আমল করা

(العمل بالعام) অর্থাৎ ব্যাপক অর্থবোধক শব্দানুসারে আমল করা।

عام শব্দের ব্যাপক অর্থ অনুযায়ী আমল করা আবশ্যক যতক্ষণ না তার নির্দিষ্টতা প্রমাণ হয়। আল-কুরআন ও হাদীছের নছ-মূল রচনার মর্মার্থের দাবী অনুসারে আমল করা ওয়াজীব। যতক্ষণ না তার বিপরীতে কোন দলীল পাওয়া যায়।

عام নির্দিষ্ট কারণের প্রেক্ষিতে ব্যবহৃত হলে তার ব্যাপকতা অনুসারে আমল করা ওয়াজীব। কেননা, শব্দের ব্যাপকতাই ধর্তব্য, নির্দিষ্ট কারণ ধর্তব্য নয়। তবে কোন দলীলের মাধ্যমে যদি عام নির্দিষ্টতার অর্থ দেয়, যা ঐ কারণের অবস্থার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, যে কারণের প্রেক্ষিতে আম বর্ণিত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে عام তার সাদৃশ্য পূর্ণ বিষয়ের সাথে খাছ-নির্দিষ্ট হবে।

عام কে খাছ-নির্দিষ্টকারী দলীল নেই এমন উদাহরণ হলো: যিহারের আয়াত সমূহ। কেননা, আউস বিন ছামিত (রা.) এর যিহার করার কারণে আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। অতএব, যিহারের হুকুম আউস বিন ছামিতসহ সকলের ক্ষেত্রে ব্যাপক অর্থ প্রযোজ্য হবে। عام কে খাছ-নির্দিষ্ট করার উদাহরণ: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী:

ليس من البر الصيام في السفر

সফরে ছিয়াম পালন করা পূণ্যের কাজ নয়।[1]

এ হাদীছটি বর্ণিত হওয়ার কারণ হলো, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক সফরে ছিলেন। অতঃপর তিনি মানুষের সমাবেশ লক্ষ্য করলেন, সেখানে এক ব্যক্তিকে ছায়া দেয়া হচ্ছিল, তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এখানে কি হচ্ছে? ছাহাবীরা বললেন, তিনি ছিয়াম রেখেছেন। এমতবস্থায় তিনি বললেন, সফরে ছিয়াম পালন করা পূণ্যের কাজ নয়।

عام ঐ ব্যক্তির জন্য নির্দিষ্ট, যার অবস্থা এ ব্যক্তির অবস্থার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আর তা হলো সফরে ছিয়াম পালন করা কষ্টকর। উক্ত عام কে এভাবে খাছ করার দলীল হলো সফর কষ্টকর না হলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে ছিয়াম রাখতেন। আর পূণ্যহীন কাজ তিনি কখনোই পালন করতেন না।

[1]. ছহীহ বুখারী ১৯৪৬।