আল-ফিকহুল আকবর ইমাম আবূ হানীফা ও আল-ফিকহুল আকবার ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
১১. ৫. ইমাম নাসায়ী আহমদ ইবন শুআইব (২১৫-৩০৩ হি)

সময়ের আবর্তনে আবূ হানীফা বিরোধী প্রচারণা বাড়তে থাকে। ফলে পরবর্তী যুগের মুহাদ্দিসগণের মধ্যে ইমাম আবূ হানীফার বিষয়ে বিরূপ ধারণা প্রসার পেতে থাকে এবং অনেকেই তাঁর বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এখানে প্রসিদ্ধ কয়েকজনের বক্তব্য উদ্ধৃত করছি। ইমাম নাসায়ী (রাহ) ইমাম আবূ হানীফা (রাহ)-এর বিষয়ে বলেন:


نعمان بن ثابت أبو حنيفة ليس بالقوي في الحديث


‘‘নুমান ইবন সাবিত আবূ হানীফা হাদীসে শক্তিশালী নন।’’[1]

তৃতীয় শতকে মুহাদ্দিসগণের মধ্যে বিদ্যমান ‘আবূ হানীফা বিরোধী প্রচারণা’ পরিপ্রেক্ষিতে ইমাম নাসায়ীর এ বক্তব্য ইমাম আবূ হানীফার গ্রহণযোগ্যতার পক্ষে তাঁর সিদ্ধান্ত। ইমাম নাসায়ীর পরিভাষার সাথে পরিচিতরা জানেন যে, (শক্তিশালী নন) বলতে তিনি বুঝান যে, সর্বোচ্চ পর্যায়ের হাফিযে হাদীস নন, কিছু ভুল হয়। আর দুর্বল বুঝাতে তিনি ‘যয়ীফ’ বা ‘দুর্বল’ পরিভাষা ব্যবহার করেছেন। এজন্য রিজাল গ্রন্থসমূহে আমরা দেখি যে, শত শত রাবীকে ইমাম নাসায়ী (শক্তিশালী নন) বলে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম নাসায়ী নিজে ও অন্যান্য সকল মুহাদ্দিস তাঁদের হাদীস সহীহ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। উলেস্নখ্য যে, ইমাম নাসায়ী ইমাম আবূ হানীফার হাদীস তাঁর সুনান গ্রন্থে গ্রহণ করেছেন। আর তিনি তাঁর সুনান গ্রন্থে রাবীগণের বিষয়ে বুখারী-মুসলিম সমপর্যায়ের বা কাছাকাছি কড়াকড়ি করতেন বলে প্রসিদ্ধ।[2]

[1] নাসায়ী, আদ-দুআফা ওয়াল মাতরূকীন, পৃ. ২৪০।

[2] ইবন হাজার আসকালানী, তাহযীবুত তাহযীব ১০/৪০৩; আব্দুল্লাহ ইবন ইউসুফ জুদাই, তাহরীর উলুমিল হাদীস ৩/১৪৩; আমীর সানআনী, তাওযীহুল আফকার ১/১৯৭।