ব্যাংকের সুদ কি হালাল সূচি ও বিবরন শাইখ মুশ্তাক আহমাদ কারীমী
২- প্রয়োজনের সীমা নির্ধারণ

সূদী ঋণ নেওয়ার জন্য প্রত্যেক ‘প্রয়োজন নিরুপায়’ অবস্থার সংজ্ঞায় পড়ে না। সুতরাং বিবাহ-শাদীতে ধুমধাম করার লক্ষ্যে অপব্যয় করা, আরাম-আয়েশ ও বিলাস-সামগ্রী ক্রয় করা অথবা কোন ব্যবসা বা কারবারকে অপেক্ষাকৃত উন্নততর করার মানসে অর্থ সংগ্রহ করা এবং এই ধরনের আরো অন্যান্য (অজরুরী) বিষয় যাকে ‘প্রয়োজনীয় ও নিরুপায় অবস্থা’ বলে আখ্যা দেওয়া হয় এবং যার জন্য হাজার হাজার টাকা মহাজন (বা ব্যাংকের) নিকট ঋণ নেওয়া হয়, তা প্রকৃতপক্ষে কোন প্রয়োজনীয় ও গত্যন্তরহীন কর্ম ও বিষয় নয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে ঐ শ্রেণীর ওজরের কোন গুরুত্বই নেই। তাই এ সকল কাজের জন্য যারা ঋণ নিয়ে সূদ দিয়ে থাকেন, তারা বিরাট গোনাহগার হবেন। শরীয়ত যদি কোন উপায়হীন অবস্থায় সূদ ভিত্তিক ঋণ নেওয়াতে অনুমতি দেয়, তাহলে তা কেবল সেই নিরুপায় অবস্থায়, যখন হারাম ভক্ষণ করা হালাল হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন:

﴿ِلاَّ مَا اضْطُرِرْتُمْ إِلَيْهِ﴾

অর্থাৎ, যে ব্যাপারে তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও তার কথা স্বতন্ত্র। (তখন হারাম হারাম নয়।)[1]

এখানে সেই সকল সামর্থ্যবান মুসলমানরাও গোনাহগার হবেন, যাঁরা বিপদকালে নিজেদের একজন ভাইকে (বিনা সূদে ঋণ দিয়ে) সাহায্য না করে তাকে (সূদী ঋণ নিয়ে) হারাম কাজ করতে বাধ্য করে থাকেন। বরং আমার মতে এই গোনাহর বোঝা সমগ্র মুসলিম জাতির ঘাড়েই চেপে বসবে; কারণ তারা যাকাত, সদকাহ, ওয়াক্ফ প্রভৃতি জনকল্যাণমূলক ফান্ডের ব্যাপারে বড় উদাসীন। যার তিক্ত ফলস্বরূপ সেই জাতিরই সদস্যরা অসহায় অবলম্বনহীন হয়ে নিজেদের অভাবের তাড়নায় সর্বগ্রাসী মহাজনদের সম্মুখে হাত পাতা ছাড়া আর কোন পথ দেখতে পায় না।

[1] (সূরা আল-আনআম ১১৯ আয়াত)