মাদ'উ কে: দায়ীর এ কথা জানা আবশ্যকীয় যে, ইসলামের দাওয়াত সকল মানুষ ও জিনের জন্য। দা'ওয়াত কিয়ামত পর্যন্ত সকল স্থান ও সময়ের জন্য। দা'ওয়াত কোন জাতি বা গ্রুপ কিংবা কোন দল অথবা কোন বিশেষ সময় স্থানের জন্য নির্দিষ্ট নয়। বরং মাদ'উ হলো প্রতিটি মানুষ যাকে কল্যাণের দিকে আহব্বান করা কিংবা অনিষ্ট থেকে সতর্ক করা হয়। রসূলুল্লাহ ﷺ এর রেসালাতের দা'ওয়াত সবার জন্য। এমনকি জিন জাতির জন্যও। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন:
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّيْ رَسُوْلُ اللهِ إِلَيْكُمْ جَمِيْعًا
“বলুন! হে মানুষ সমাজ! নিশ্চয় আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রসূল।" [সূরা আ'রাফ: ১৫৮]
দা'য়ী বাড়ীতে বসে অপেক্ষা করবেন না যে, মাদউ তার নিকটে আসবে বরং দায়ীকে মাদউর নিকটে যেতে হবে। যেমন ভাবে রাসূলুল্লাহ ﷺ সবার নিকটে যেতেন এবং দা'ওয়াত করতেন।
দায়ী যেন কোন মাদ'উকে ছোট করে না দেখেন; কারণ প্রত্যেকের হক রয়েছে দা'য়ীর উপর। আর মাদ'উর উচিত দায়ীর আহ্বানে সাড়া দেওয়া। একজন দায়ীর উচিত মাদ'উর প্রকারসমূহ জেনে নেওয়া।
মাদ'উ বিভিন্ন প্রকার হতে পারে যেমন:
মূলত মাদ'উকে দু'ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন:
(এক) মুমিন। (দুই) কাফের। কাফের আবার দুই প্রকার।
(ক) যারা প্রকাশ্যে তাদের কুফুরি ঘোষণা করে। এদেরকে কাফের বলা হয়। (খ) যারা কুফুরকে অন্তরে রেখে ইসলাম প্রকাশ করে। এদেরকেই বলা হয় মুনাফেক। এ ছাড়া বিস্তারিতভাবে প্রকার নিম্নরূপ:
১. নাস্তিক।
২. মূর্তি পূজক মুশরেক।
৩. কাফের।
৪. ইহুদি।
৫. খ্রীষ্টান।
৬. মুনাফেক।
৭. মুমিন।
৮. মুসলিম।
৯. পাপী মুসলিম।
১০. ফের্কাবন্দী বাতিল আকীদা অবলম্বী মুসলিম।
১১. বিবিধ।
এদের আবার বিবেক-বুদ্ধি, শিক্ষা-দীক্ষা, শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, কৃষ্টি-কালচার, তাহযীব-তামাদ্দুন এবং পোশাক- পরিচ্ছেদ ও সংস্কৃতির দিক থেকে বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। কেউ নারী আর কেউ পুরুষ, কেউ শিক্ষিত কেউ অশিক্ষিত। আবার কেউ সাধারণ আর কেউ নেতাজী। কেউ গরিব আবার কেউ ধনী, কেউ সুস্থ আর কেউ অসুস্থ। এ ছাড়া কেউ আরব আর কেউ অনারব ইত্যাদি।
মাদউর পর্যায়সমূহঃ
১. সর্বপ্রথম মাদউ দায়ী নিজেই। দায়ী নিজেকে সর্বপ্রথম দা'ওয়াত করবেন যাতে করে অন্যদের জন্য উত্তম নমুনা ও মডেল হতে পারেন।
২. অতঃপর মাদ'উ হলো দা'য়ীর নিজ বাড়ি ও পরিবার। নিজের পরিবারকে দাওয়াত করবেন যাতে করে অন্যান্যদের জন্য একটি মুসলিম পরিবারের নমুনা-মডেল হতে পারে।
৩. এরপর নিজের আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত করবেন।
৪. এরপর অন্য সকল মুসলিম। দায়ী মুসলিম সমাজের প্রতি দৃষ্টি দিবেন এবং সেখানে সর্বপ্রকার কল্যাণের প্রচার-প্রসার করবেন। আর সেখান থেকে সর্বপ্রকার অশ্লীল ও বেহায়াপনা এবং অন্যায় হেকমতের সাথে দূর করার চেষ্টা করবেন। এ ছাড়া মানুষকে উত্তম চরিত্রের প্রতি আহবান করবেন।
৫. এরপর অমুসলিমদেরকে দাওয়াত করবেন।