বড় শির্ক ও ছোট শির্ক বড় শির্কের প্রকারভেদ মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী
২২. একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়াও অন্য কোন ব্যক্তি বা দল কোন জাতি বা সম্প্রদায়ের জন্য জীবন বিধান রচনা করতে পারে এমন মনে করার শির্ক

একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলাই মানব জাতির সার্বিক জীবন ব্যবস্থা রচনা করার অধিকার রাখেন। এ কাজের যোগ্য তিনি ভিন্ন অন্য কেউ নয়।

আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) ও সম্পূর্ণ নিজ ইচ্ছায় কারোর জন্য কোন জীবন বিধান রচনা করে যাননি। বরং তিনি তাঁর জীবদ্দশায় যাই বলেছেন তা ওহীর মাধ্যমেই বলেছেন। স্বাধীনভাবে তিনি কিছুই বলে যাননি।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:

«وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْـهَوَى، إِنْ هُوَ إِلاَّ وَحْيٌ يُّوْحَى»

‘‘তিনি (রাসূল (সা.)) মনগড়া কোন কথা বলেননা। বরং তিনি যাই বলেন তা ওহীর মাধ্যমেই বলেন। যা তাঁর নিকট প্রেরিত হয়’’। (নাজম : ৩-৪)

আল্লাহ্ তা’আলা বিধান রচনার কর্তৃত্ব কার সে সম্পর্কে বলেন:

«إِنِ الْـحُكْمُ إِلاَّ لِلهِ، أَمَرَ أَلاَّ تَعْبُدُوْا إِلاَّ إِيَّاهُ، ذَلِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّمُ، وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُوْنَ»

‘‘বিধান দেয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলারই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাত করবে। আর কারোর নয়। এটিই হলো সরল ও সঠিক ধর্মমত। এরপরও অধিকাংশ মানুষ এ ব্যাপারে কিছুই অবগত নয়’’। (ইউসুফ : ৪০)

আল্লাহ্ তা’আলা কোর’আন মাজীদের মধ্যে তাঁরই প্রেরিত রাসূল (সা.) কে উদ্দেশ্য করে বলেন:

«يَآ أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَآ أَحَلَّ اللهُ لَكَ، تَبْتَغِيْ مَرْضَاتَ أَزْوَاجِكَ، وَاللهُ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ»

‘‘হে নবী! আল্লাহ্ তা’আলা আপনার জন্য যা হালাল করেছেন আপনি কেন তা নিজের জন্য হারাম করতে যাচ্ছেন। আপনি নিজ স্ত্রীদের সন্তুষ্টি কামনা করছেন। তবে আল্লাহ্ তা’আলা পরম ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু’’। (তাহরীম : ১)

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমাদের প্রিয় নবী (সা.) জিব্রীল (আ.) কে একদা বললেন:

يَا جِبْرِيْلُ! مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تَزُوْرَنَا أَكْثَرَ مِمَّا تَزُوْرُنَا؟ فَنَزَلَتْ:

«وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلاَّ بِأَمْرِ رَبِّكَ، لَهُ مَـا بَيْنَ أَيْدِيْنَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَلِكَ، وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا»

قَالَ: كَانَ هَذَا الْـجَوَابُ لِـمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم

‘‘হে জিবরীল! তোমার অসুবিধে কোথায়? তুমি কেন বেশি বেশি আমার সাথে সাক্ষাৎ করছো না? তখনই উক্ত আয়াত নাযিল হয় যার অর্থ: আমি আপনার প্রভুর আদেশ ছাড়া আপনার নিকট কোনভাবেই আসতে পারিনা। আমাদের সম্মুখ, পশ্চাৎ এবং এ দু’ এর অন্তর্বর্তী যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহ্’র। আপনার প্রভু কখনো ভুলবার নন। বর্ণনাকারী বলেন: এ হচ্ছে জিব্রীল (আ.) এর পক্ষ থেকে মুহাম্মাদ (সা.) কে দেয়া উত্তর’’।

[মারইয়াম : ৬৪ (বুখারী, হাদীস ৩২১৮, ৪৭৩১, ৭৪৫৫]

যখন জিবরীল (আ.) অথবা মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ্ তা’আলার অনুমতি ছাড়া বিধান রচনা করার কোন অধিকার রাখেন না তখন অন্য কেউ বিধান রচনা করার ধৃষ্টতা দেখানো ভ্রষ্টতা বৈ কি?