বড় শির্ক ও ছোট শির্ক বড় শির্কের প্রকারভেদ মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী
২০. একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়াও অন্য কোন নবী-ওলী অথবা অন্য কোন পীর-বুযুর্গ সব কিছু শুনতে বা দেখতে পান এমন মনে করার শির্ক

একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলাই সব কিছু দেখতে বা শুনতে পান। তা যতই ক্ষুদ্র বা সূক্ষ্ম হোকনা কেন এবং যতই তা অদৃশ্য বা অস্পষ্ট হোক না কেন।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:

«وَمَا تَكُوْنُ فِيْ شَأْنٍ، وَمَا تَتْلُوْا مِنْهُ مِنْ قُرْآنٍ، وَلاَ تَعْمَلُوْنَ مِنْ عَمَلٍ إِلاَّ كُنَّا عَلَيْكُمْ شُهُوْدًا إِذْ تُفِيْضُوْنَ فِيْهِ، وَمَا يَعْزُبُ عَنْ رَّبِّكَ مِنْ مِّثْقَالِ ذَرَّةٍ فِيْ الْأَرْضِ وَلاَ فِيْ السَّمَآءِ وَلاَ أَصْغَرَ مِنْ ذَلِكَ وَلاَ أَكْبَرَ إِلاَّ فِيْ كِتَابٍ مُّبِيْنٍ»

‘‘হে রাসূল (সা.)! তুমি যে কোন অবস্থায়ই থাকোনা কেন অথবা কোর’আন মাজীদের যে কোন আয়াতই পড়োনা কেন এমনকি তোমরা (নবী ও তাঁর সকল উম্মত) কোন্ কাজ কোন্ সময় করো তা সবই আমি জানি। আকাশ ও পৃথিবীতে একটি ছোট লাল পিপীলিকা (অণু) সমপরিমাণ অথবা তার থেকেও ক্ষুদ্র বা বড় যে পরিমাপেরই হোক না কেন কোন বস্ত্তই তোমার প্রভুর অগোচরে নয়। বরং তা সুস্পষ্ট কিতাব তথা লাওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ রয়েছে’’। (ইউনুস : ৬১)

আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেন:

«وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لاَ تَأْتِيْنَا السَّاعَةُ، قُلْ بَلَى وَرَبِّيْ لَتَأْتِيَنَّكُمْ، عَالِمِ الْغَيْبِ، لاَ يَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ فِيْ السَّمَاوَاتِ وَلاَ فِيْ الْأَرْضِ وَلاَ أَصْغَرُ مِنْ ذَلِكَ وَلاَ أَكْبَرُ إِلاَّ فِيْ كِتَابٍ مُّبِيْنٍ»

‘‘কাফিররা বলে: আমাদের উপর কিয়ামত আসবে না। হে নবী! আপনি ওদেরকে বলে দিন: আমার প্রভুর কসম খেয়ে বলছি: কিয়ামত অবশ্যই আসবে। তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে সম্যক অবগত। আকাশ ও পৃথিবীতে একটি ছোট পিপীলিকা সমপরিমাণ অথবা তার থেকেও ক্ষুদ্র বা বড় যে পরিমাপেরই হোকনা কেন কোন বস্ত্তই তাঁর অগোচরে নয়। বরং তা সুস্পষ্ট কিতাব তথা লাওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ রয়েছে’’। (সাবা : ৩)

তিনি আরো বলেন:

«إِنَّ اللهَ لاَ يَخْفَى عَلَيْهِ شَيْءٌ فِيْ الْأَرْضِ وَلاَ فِيْ السَّمَآءِ»

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আকাশ ও পৃথিবীর কোন বস্ত্তই লুক্কায়িত নয়’’। (আ’লে-ইমরান : ৫)

তিনি আরো বলেন:

«إِنَّهُ يَعْلَمُ الْـجَهْرَ وَمَا يَخْفَى»

’’নিশ্চয়ই তিনি প্রকাশ্য ও গুপ্ত সকল বিষয়ই জানেন’’। (আ’লা : ৭)

আবু মূসা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ، فَجَعَلَ النَّاسُ يَجْهَرُوْنَ بِالتَّكْبِيْرِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: أَيُّهَا النَّاسُ! ارْبَعُوْا عَلَى أَنْفُسِكُمْ، إِنَّكُمْ لَيْسَ تَدْعُوْنَ أَصَمَّ وَلاَ غَائِبًا، إِنَّكُمْ تَدْعُوْنَ سَمِيْعًا قَرِيْبًا، وَهُوَ مَعَكُمْ

‘‘আমরা একদা নবী (সা.) এর সাথে সফরে ছিলাম। পথিমধ্যে কিছু লোক উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর পড়ছিলো। তখন রাসূল (সা.) তাদেরকে বললেন: হে মানুষরা! নিজের উপর দয়া করো। নিম্নস্বরে তাকবীর বলো। কারণ, তোমরা এমন কাউকে ডাকছোনা যে বধির ও অনুপস্থিত তথা তোমাদের থেকে অনেক দূরে। বরং তোমরা ডাকছো এমন এক সত্তাকে যিনি তোমাদের নিকটেই এবং তিনি সব কিছুই শুনতে পাচ্ছেন। তিনি তোমাদের সাথেই রয়েছেন’’। (বুখারী, হাদীস ২৯৯২, ৪২০২ মুসলিম, হাদীস ২৭০৪)

অনেক কোর’আন ও হাদীসে অপরিপক্ক ব্যক্তি উক্ত হাদীস শুনে খুব খুশি হয়ে থাকবেন। কারণ, তাদের ধারণা, আল্লাহ্ তা’আলা নিজ সত্তা সহ সর্বস্থানেই রয়েছেন। মূলতঃ তাদের এতে খুশি হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ, আল্লাহ্ তা’আলা এ সকল মূর্খদের সম্পর্কে সর্বদা অবগত রয়েছেন বলে তিনি বহু পূর্বেই কারোর সাথে তাঁর থাকার সত্যিকারার্থ নিজ কোর’আন মাজীদের মধ্যে সুন্দরভাবে বাতলিয়ে দিয়েছেন।

আল্লাহ্ তা’আলা মূসা ও হারূন (আলাইহিমাস্ সালাম) সম্পর্কে বলেন:

«قَالَ لاَ تَخَافَا، إِنَّنِيْ مَعَكُمَا أَسْمَعُ وَأَرَى»

‘‘তিনি (আল্লাহ্ তা’আলা) বলেন: তোমরা ভয় পেয়োনা। আমিতো তোমাদের সঙ্গেই আছি। আমি তোমাদের সকল কথা শুনছি ও তোমাদের সকল কাজ অবলোকন করছি’’। (ত্বা-হা : ৪৬)