নাস্তিক্যবাদী অপতৎপরতা মোকাবেলায় করণীয়

উদ্বেগের বিষয় হলো এমন ধর্মহীনের সংখ্যা কেবল বেড়েই চলেছে। এক রাজিব লোকান্তরে কিন্তু বহু রাজিব অনলাইনে। নাস্তিকদের ওপর হামলা এর কোনো সুষ্ঠু সমাধান নয়। প্রয়োজন তাদের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই করা। মিডিয়াযুদ্ধে নেমে তাদের পরাস্ত করা। এত দিন যারা ফেসবুক ব্লগকে অবহেলা করেছেন, সময় হয়েছে তাঁদের নড়েচড়ে বসার। সময় হয়েছে জাতির কাণ্ডারিদের মিডিয়ার গুরুত্ব অনুধাবন করে মিডিয়া প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসার।

অবশ্য শুধু বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে হবে না। এদের ভাষা ও বক্তব্য এতটাই নোংরা যে এসবের জবাব দেয়াটাও কোন ভদ্র মানুষের রুচিতে আসে না। সুতরাং রাজনৈতিকভাবেও এদের মোকাবেলা করতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকারকে বাধ্য করতে হবে এদের আইনের আওতায় আনতে। ব্লগগুলোয় আমি কিছুদিন এদের সঙ্গে কথা বলেছি। এদের নোংরামি এতটাই জঘন্য যে আপনি এদের সঙ্গে কথা বলার রুচি হারিয়ে ফেলবেন। আমাদের জোটবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এদের মোকাবেলা করতে হবে। আর এদের অনলাইনের কুকীর্তি অফলাইনে জনসাধারণের সামনে আনতে হবে। তখনই এদেরকে যথাযথভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। মোদ্দাকথা কুকুরের মাথায় হাত বুলালে কোনোই লাভ হবে না। কখনো ‘যেমন কুকুর তেমন মুগুরে’র ব্যবস্থাও করতে হবে।

আমার ফেসবুক বন্ধু মাওলানা আবদুল হক ঠিকই বলেছেন, আবহমান বাংলা আন্তধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। ৯০ শতাংশ মুসলিম-অধ্যুষিত হলেও এ দেশে অন্য সব সংখ্যালঘু ধর্মগোষ্ঠী সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বসবাস করে। ধর্মের দিক থেকে এখানে কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয়। সকল ধর্মেরই দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে, কমবেশি নিজস্ব সংস্কৃতিও আছে। কেবল একটি ধর্ম- হ্যাঁ, ধর্মই -এর বাইরে। এ ধর্মের নাম নাস্তিক্য। বাংলাদেশে নাস্তিক্যের কোনো ভিত্তি নেই, ঐতিহ্য নেই, সংস্কৃতি নেই। ভুঁইফোঁড়ও নয়, বরং এটা একটা আমদানিকৃত উপদ্রব।

নাস্তিকতা সেই একমাত্র অধর্মের ধর্ম, যা কোনো নীতিবোধে বিশ্বাস করে না। ফলে, আইনের চোখ ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হলে একজন নাস্তিকের খুন বা ধর্ষণ না-করবার কোনো কারণ নেই। অতএব নাস্তিক আর অমানুষ সমার্থক শব্দ। কিন্তু মানুষের মুখোশ পরে থাকে বলে এ অমানুষদের আমরা প্রায়ই চিনতে ভুল করি। মানুষের সমাজে মানুষের সঙ্গে মিশে থাকার প্রয়োজনেই অমানুষ নাস্তিকদেরকে ছদ্মবেশ ধারণ করতে হয়। ছদ্মবেশ অপরিহার্য। এরা বাস করে গা ঢেকে, আত্মপরিচয় লুকিয়ে। কাপুরুষের মতো মাঝেমধ্যে লোকদেখানো সালাত আদায় করে। মরলে জানাযায়ও অংশ নেয়। তাই নাস্তিক মানেই ভণ্ড। কারণ সে খোলাখুলি কখনোই বলতে পারে না যে, সে নাস্তিক।

তবে আশার কথা, ষোল কোটি মানুষের মধ্যে নাস্তিকের সংখ্যা আঙুলে গোনা যাবে, এত কম। অন্যদিকে শঙ্কার কথা হল, কম হলেও এরা কখনোই বসে নেই। মানুষের বিশ্বস্ত সমাজে সারাক্ষণই এরা সিঁদ কাটছে ইঁদুরের মতো। এদের নির্বিরাম তৎপরতায় বাংলাদেশে এখন অনেক ইঁদুরের গর্ত। দেশের স্বাধীনতার ভিত্তিভূমির সুরক্ষার প্রয়োজনে এই ইঁদুরগুলিকে তাড়িয়ে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কাজেই বাংলাদেশের বিশ্বাসী জনগণের সর্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয় আন্দোলন হলো ‘নাস্তিক খেদাও আন্দোলন’, সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ শ্লোগান হলো : ‘নাস্তিকমুক্ত বাংলাদেশ চাই!