২. ৬. জীব-জন্তুর প্রতি দয়া ও কোমল আচরণ করা

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِي بِطَرِيقٍ ، إِذْ اشْتَدَّ عَلَيْهِ الْعَطَشُ ، فَوَجَدَ بِئْرًا ، فَنَزَلَ فِيهَا فَشَرِبَ ، ثُمَّ خَرَجَ ، فَإِذَا كَلْبٌ يَلْهَثُ يَأْكُلُ الثَّرَى مِنَ الْعَطَشِ ، فَقَالَ الرَّجُلُ : لَقَدْ بَلَغَ هَذَا الْكَلْبَ مِنَ الْعَطَشِ مِثْلُ الَّذِي بَلَغَ مِنِّيْ ، فَنَزَلَ الْبِئْرَ ، فَمَلأَ خُفَّهُ ، ثُمَّ أَمْسَكَهُ بِفِيهِ حَتَّى رَقِيَ ، فَسَقَى الْكَلْبَ ، فَشَكَرَ اللَّهُ لَهُ ، فَغَفَرَ لَهُ ، فَقَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنَّ لَنَا مِنَ الْبَهَائِمِ لأَجْرًا ؟ فَقَالَ : « فِي كُلِّ ذَاتِ كَبِدٍ رَطْبَةٍ أَجْرٌ» . ( رواه البخاري و مسلم و أبو داود و أحمد ) .

“একদা এক ব্যক্তি পথে হেঁটে যাচ্ছিল, এক পর্যায়ে তার তীব্র পিপাসা লাগে; তারপর সে একটি কূপ পেয়ে গেল, তারপর সে তাতে অবতরণ করল এবং পানি পান করল; অতঃপর সে উঠে এলো; হঠাৎ করে দেখল, একটি কুকুর হাপাচ্ছে, পিপাসায় কাতর হয়ে কাদ চাটছে; অতঃপর লোকটি বলল: এ কুকুরটি পিপাসায় সেরূপ কষ্ট পাচ্ছে, যেরূপ কষ্ট আমার হয়েছিল। অতঃপর সে কূপে অবতরণ করল এবং তার মোজার মধ্যে পানি ভরল, তারপর তা মুখ দিয়ে তা (কামড়িয়ে) ধরে উপরে উঠে এলো। তারপর সে কুকুরটিকে পানি পান করাল। তারপর আল্লাহ তাকে তার প্রতিদান দিলেন এবং তাকে ক্ষমা করে দিলেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন: হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! জীব-জন্তুর জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে? জবাবে তিনি বললেন: হ্যাঁ, প্রত্যেক সতেজ হৃদয়ের (সাথে ভালো ব্যবহারের) জন্যে পুরস্কারের ব্যবস্থা রয়েছে।”[1]

এই হলো জীবজন্তুর প্রতি দয়া ও কোমল ব্যবহারের ব্যাপারে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের কতিপয় দৃষ্টিভঙ্গি।

আর এই বর্ণনার মধ্যে কতিপয় ইউরোপীয় কাফিরদের দ্বারা প্রভাবিত জ্ঞানপাপীদের জন্য সত্য সুন্দর ও সুস্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে যে, ইসলাম এসব ইউরোপীয় কাফিরদের অনেক আগেই জীবজন্তুর প্রতি দয়া ও কোমল আচরণের নিয়মকানুন প্রণয়ন করেছে, যা তারা মুসলিমগণের কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেছে, তাতে ব্যাপক প্রসার করেছে এবং তাকে বিধিবদ্ধ করেছে, এমনকি ঐসব জ্ঞানপাপীরা ধারণা করে নিয়েছে যে, তা ইউরোপীয়দের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

এই ইসলামী মূলনীতির মূলবস্তু হলো দয়া, সহানুভূতি, সেগুলোর উপর সাধ্যের বাইরে বোঝা চাপিয়ে না দেওয়া এবং সেগুলোকে খেল ও তামাশার উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ না করা।

কিন্তু যেসব কাফির জীবজন্তুর প্রতি দয়া করার নীতিতে বিশ্বাসী এবং এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা গড়ে তুলেছে, তাদের নিকট জীবজন্তুর প্রতি দয়া করার বিষয়টি এমন নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, তারা তাকে মানুষের উপর মর্যাদা দিয়ে ফেলেছে।আর তাদের কোনো কোন দেশে তারা বিষয়টিকে খেল-তামাশার বস্তু হিসেবে গ্রহণ করেছে; উদাহরণস্বরূপ সাবেক মুসলিম স্পেন বর্তমান খ্রিষ্টান স্পেন রাজ্যে বিস্তৃত বলদ বা ষাড়ের মধ্যকার লড়াইয়ের কথা বলা যায় (!)।

>
[1] বুখারী, হাদিস নং- ৫৬৬৩; মুসলিম, হাদিস নং- ৫৯৯৬; আবূ দাউদ, হাদিস নং- ২৫৫০; আহমদ, হাদিস নং- ২/৩৭৫ ও ৫১৭ এবং তাঁরা ভিন্ন আরও অনেকে হাদিসটি আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন।