শারহু মাসাইলিল জাহিলিয়্যাহ ২৫. কোন বিষয়ে দুর্বলদের অগ্রগামিতার কারণে সেটাকে বাতিল বলে প্রমাণ করা শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
কোন বিষয়ে দুর্বলদের অগ্রগামিতার কারণে সেটাকে বাতিল বলে প্রমাণ করা

হক্ব গ্রহণে দুর্বলদের অগ্রগামীতার কারণে হক্বকে বাতিল বলে প্রমাণ করা। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(لَوْ كَانَ خَيْراً مَا سَبَقُونَا إِلَيْهِ) [الأحقاف: 11]

যদি এটা ভাল হত তবে তারা আমাদের থেকে অগ্রণী হতে পারত না (সূরা আল আহক্বাফ ৪৬ : ১১)।

............................................

ব্যাখ্যা: জাহিলদের অভ্যাস: হক্বের ক্ষেত্রে দুর্বলদের অগ্রগামীতার কারণে হক্ব বিষয়কে বাতিল বলে প্রমাণ করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের ব্যাপারে বর্ণনা করেন, তারা বলে,

(لَوْ كَانَ خَيْراً مَا سَبَقُونَا إِلَيْهِ) [الأحقاف: 11]

‘যদি এটা ভাল হত তবে তারা আমাদের থেকে অগ্রণী হতে পারত না (সূরা আহক্বাফ ৪৬:১১)।

তারা বলে, আমরা বুদ্ধিমান, দক্ষ ও চিন্তাশীল তাই আমরা সব বুঝি। কোন বিষয় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে এসেছে জানতে পারলে আমরা তা সঠিক বলে মনে করি না, তাই প্রত্যাখ্যান করি। যদি তা হক্ব হতো তাহলে আমরাই তার চেয়ে অগ্রগামী হতাম। আর তা হক্ব নয় মনে করে তাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করি। এটাই জাহিলদের জঘন্য বাতিল পন্থা।

কেননা, মানুষের মর্যাদার উপর ভিত্তি করে হক্বের অনুসরণ নির্ধারিত নয়। বরং আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দার মধ্যে থেকে যাকে হক্ব দান করে অনুগ্রহ করেন, সেটাই নির্ধারিত অনুসরণীয়। আর নাবী-রসূলগণের অনুসারীরা অধিকাংশই দুর্বল। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

أَنُؤْمِنُ لَكَ وَاتَّبَعَكَ الْأَرْذَلُونَ

তারা বলল, ‘আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব, অথচ নিম্নশ্রেণীর লোকেরা তোমাকে অনুসরণ করছে? (সূরা শু‘আরা ২৬:১১১)।

তিনি আরোও বলেন,

وَمَا نَرَاكَ اتَّبَعَكَ إِلَّا الَّذِينَ هُمْ أَرَاذِلُنَا بَادِيَ الرَّأْيِ

আমরা দেখছি যে, কেবল আমাদের নীচু শ্রেণীর লোকেরাই বিবেচনাহীনভাবে তোমার অনুসরণ করেছে (সূরা হুদ ১১:২৬)

অর্থাৎ তাদের কোন চিন্তা-ভাবনা নেই। জাহিলরা মনে করে, তারা বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীল। আর নূহ আলাইহিস সালাম যা নিয়ে এসেছেন তা যদি হক্ব হতো, তাহলে আহলে রায় ও অধিকাংশ মানুষ তার অনুসরণ করতো। তাই নূহ আলাইহিস সালাম হক্ব পথে ছিলেন না বলে প্রমাণ করে তারা তাকে বর্জন করে।

জাহিলদের এ পদ্ধতি বাতিল। কেননা, মানুষের মধ্যে অধিকাংশ হক্ব অস্বীকারকারীরা প্রাচুর্যের অধিকারী হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(وَمَا أَرْسَلْنَا فِي قَرْيَةٍ مِنْ نَذِيرٍ إِلَّا قَالَ مُتْرَفُوهَا إِنَّا بِمَا أُرْسِلْتُمْ بِهِ كَافِرُونَ) [سبأ: 34]

অপরপক্ষে অধিকাংশ দুর্বল ও অভাবীরা হক্বের অনুসরণ করে। কেননা তারা অহংকারী নন। তাই কোন বিষয়ে প্রাচুর্যের অধিকারী ও মর্যাদাবানরা অনুসরণ করলে তা হক্ব হিসাবে প্রমাণ করা এবং দুর্বল ও অভাবীরা অনুসরণ করলে তা বাতিল প্রমাণ করা জাহিলদের মাপকাঠি। এভাবে বাতিল থেকে হক্ব বুঝার মাপকাঠি গ্রহণ করা বৈধ নয়। একারণে আলেমগণ বলেন, ব্যক্তির দ্বারা হক্ব চেনা য়ায় না বরং হক্বের মাধ্যমে ব্যক্তিকে চেনা যায়।