আল-ফিকহুল আকবর আল-ফিকহুল আকবারের বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
১. ৪. ১. ইবাদাতের পরিচয়

আমরা দেখলাম যে, উলূহিয়্যাত অর্থ ইবাদাত। ইবাদাত শব্দটি ‘আবদ’ বা ‘দাস’ শব্দ থেকে গৃহীত। দাসত্ব বলতে ‘উবূদিয়্যাত’ ও ‘ইবাদত’ দুটি শব্দ ব্যবহৃত হয়। উবূদিয়্যাত অর্থ লৌকিক বা জাগতিক দাসত্ব এবং ‘ইবাদত’ অর্থ অলৌকিক বা অপার্থিব দাসত্ব। প্রসিদ্ধ ভাষাবিদ রাগিব ইস্পাহানী (৫০২ হি) বলেন:


اَلْعُبُوْدِيَّةُ إِظْهَارُ التَّذَلُّلِ وَالْعِبَادَةُ أَبْلَغُ مِنْهَا لأَنَّهَا غَايَةُ التَّذَلُّلِ وَلاَ يَسْتَحِقُّهَا إِلاَّ مَنْ لَهُ غَايَةُ الأَفْعَالِ (الإِفْضَالِ)


‘‘‘উবূদিয়াত’ (slavery, serfdom, bondage) হলো বিনয়-ভক্তি-অসহায়ত্ব প্রকাশ করা। আর ‘ইবাদত’ (worship, veneration) এর চেয়েও অধিক গভীর অর্থজ্ঞাপক। কারণ ইবাদত হলো চূড়ান্ত বিনয়-ভক্তি-অসহায়ত্ব প্রকাশ, যিনি চূড়ান্ত কর্ম-ক্ষমতা বা দয়ার মালিক তিনি ছাড়া কেউ এরূপ চূড়ান্ত বিনয়-ভক্তি পাওয়ার যোগ্যতা রাখে না।’’[1]

অন্যান্য আলিমও অনুরূপ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তাদের ভাষায়:


اَلْعِبَادَةُ عَلَى الْمَعْنَى اللُّغَوِيِّ غَايَةُ التَّذَلُّلِ وَالاِفْتِقَارِ وَالاِسْتِكَانَةِ


‘‘ইবাদাতের আভিধানিক অর্থ চূড়ান্ত বিনয়-ভক্তি, অসহায়ত্ব ও মুখাপেক্ষিতা।’’[2]

[1] রাগিব ইসপাহানী, আল-মুফরাদাত, পৃ. ৩১৯।

[2] আযীম আবাদী, আউনুল মা’বূদ ৪/২৪৭; মুবারকপূরী, তুহফাতুল আহওয়াযী ৯/২২০; মুনাবী, আব্দুর রাউফ, ফাইদুল কাদীর ৩/৫৪০।