মহিলাদের স্রাব ও প্রসূতি অবস্থার বিধিবিধান সংক্রান্ত ৬০টি প্রশ্ন নামায ও রোযার ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের বিধিবিধান শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন রহ.
প্রশ্ন ৫: সদ্য প্রসবকারিণী নারী কি ছালাত-ছিয়াম (নামায-রোযা) পরিত্যাগ করে চল্লিশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে নাকি রক্ত বন্ধ হওয়া না হওয়াই হলো মূল বিষয়? অর্থাৎ যখনই রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে, তখনই কি পবিত্র হয়ে যাবে এবং নামায শুরু করবে? আর পবিত্র হওয়ার সর্বনিম্ন কোন সময়সীমা আছে কি?

উত্তরঃ প্রসূতি মহিলার নির্দিষ্ট কোন সময়সীমা নেই; বরং যতদিন রক্ত থাকবে, ততদিন অপেক্ষা করবে। এমতাবস্থায় নামায পড়বে না, রোযা রাখবে না এবং তার স্বামী তার সাথে সহবাসও করবে না। পক্ষান্তরে যখনই সে পবিত্র হয়ে যাবে-যদিও তা চল্লিশ দিনের আগে হয়; এমনকি দশ বা পাঁচ দিনেও যদি সে পবিত্র হয়- তাহলে সে নামায পড়বে, রোযা রাখবে এবং তার স্বামী তার সাথে সহবাসও করবে। এতে কোন সমস্যা নেই। মূলকথাঃ প্রসূতি অবস্থা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য একটা বিষয়- যা থাকা আর না থাকার সাথে এ সম্পর্কীয় বিধিবিধান সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং যখনই সেটা বিদ্যমান থাকবে, তখনই তার বিধিবিধান বলবৎ থাকবে। আর যখনই কোন মহিলা তা থেকে মুক্ত থাকবে, তখনই সে উহার বিধিবিধান থেকে মুক্ত থাকবে। কিন্তু যদি তার রক্ত ষাট দিনের বেশী সময় ধরে চলে, তাহলে বুঝতে হবে সে ইস্তেহাযাগ্রস্ত মহিলা[1]। এক্ষেত্রে সে শুধুমাত্র অন্যান্য মাসের ঋতুস্রাবের দিনগুলো সমপরিমাণ অপেক্ষা করবে এবং এরপরে বাকী দিনগুলোতে গোসল করে নামায পড়বে।

[1] ইস্তেহাযা এমন রক্ত-যা ঋতুস্রাব ও প্রসূতির সময় ছাড়া অন্য সময়ে বের হয় অথবা এতদুভয়ের পরপরই বের হয়। সে কারণে কোন মহিলার হায়েয ও নিফাসের নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকলে যদি ঐ সময়সীমা অতিক্রম করে তার রক্ত চলে, তাহলে তাকে ইস্তেহাযা বলে। এটি মূলতঃ এক ধরনের রোগ। হায়েয ও ইস্তেহাযার মধ্যে পার্থক্যঃ

১. ইস্তেহাযা লাল রঙের হয়। পক্ষান্তরে হায়েয হয় কালো রঙের অথবা গাঢ় লাল (প্রায় কালো) রঙের।

২. ইস্তেহাযার দুর্গন্ধ থাকে না। পক্ষান্তরে হায়যের দুর্গন্ধ থাকে।

৩. ইস্তেহাযার রক্ত বের হওয়ার পর জমাটবদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু হায়েয কখনও জমাটবদ্ধ হয় না।

৪. বেশীরভাগ ক্ষেত্রে হায়েয প্রচুর পরিমাণে বের হয়। কিন্তু ইস্তেহাযা কম পরিমাণ বের হয়।

৫. বেশীরভাগ ক্ষেত্রে হায়েয বেদনা সৃষ্টি করে। কিন্তু ইস্তেহাযা তা করে না।

৬. হায়েয খুব গাঢ় হয়। কিন্তু ইস্তেহাযা পাতলা হয় ইত্যাদি। (আল-আহকাম আল-ফিক্বহিইয়াহ আল-মুখতাছারাহ ফী আহকামি আহলিল আ‘যার)।–অনুবাদক।