হজ্জ, উমরা ও যিয়ারত গাইড ৯ জিলহজ্জ : উকুফে আরাফা ইসলামহাউজ.কম
সংক্ষেপে উকুফে আরাফার নিয়ম
  1. সম্ভব হলে আরাফার ময়দানে প্রবেশের পূর্বে বা পরে গোসল করে নেয়া।
  2. যোহরের সময়ে জোহর-আসর একসাথে, এক আজান ও দুই একামতে কাসর করে আদায় করা। আসর ও যোহরের আগে পরে কোনো সুন্নত নফল সালাত আদায় না করা। সালাতের সময় নারীরা পুরুষের পেছনে একই জমাতে শরিক হতে পারবেন।
  3. সালাত শেষে দোয়া-মুনাজাতে ব্যস্ত হওয়া। দাঁড়িয়ে-বসে-চলমান অবস্থায় তথা সকল পরিস্থিতিতে দোয়া ও জিকির চালু রাখা। কুরআন তিলাওয়াত, ওয়াজ নসিহতের বৈঠকে শরিক হওয়া ইত্যাদিও উকুফে আরাফার আমলের মধ্যে শামিল হবে। তবে নারীদের ক্ষেত্রে কেবল চুপি স্বরে বসে বসে দোয়া-জিকির ও কুরআন তিলাওয়াতের নির্দেশ রয়েছে।
  4. ক্লান্তি চলে এলে সহযাত্রী হাজিদের সাথে কল্যাণকর আলাপচারিতার মাধ্যমে ক্লান্তি দুর করা যেতে পারে। অথবা ভালো কোনো ধর্মীয় বই পড়েও কিছু সময় কাটানো যেতে পারে।
  5. যারা দিনের বেলায় উকুফে আরাফা করবে তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া-জিকির তথা উকুফ চালিয়ে যাবে। আর যারা ৯ তারিখ দিবাগত রাতে আরাফার ময়দানে আসবে, সুবহে সাদেকের পূর্ব পর্যন্ত সামান্য সময় অবস্থান করলেই উকুফ হয়ে যাবে।
  6. নারীদের পর্দা-পুশিদার ব্যাপারে সজাগ থাকা। কাপড় দিয়ে পর্দা টানিয়ে তার মধ্যে অবস্থান করা। বেগানা পুরুষের সামনে ওড়না বা চাদর ঝুলিয়ে চেহারা ঢেকে দেয়া। হাতও চাদরের ভেতরে ঢুকিয়ে রাখা। কেননা নারীর জন্য নেকাব ব্যবহার করে চেহারা ঢাকা ও হাত মোজা ব্যবহার করে হাত ঢাকা এহরাম অবস্থায় নিষেধ। তবে অন্য কিছু ব্যবহার করে ঢাকা নিষেধ নয়।
  7. আরাফার ময়দানের ভেতরে উকুফ হচ্ছে কি-না সে ব্যাপারে সজাগ থাকা। কেননা আরাফার বাইরে উকুফ করলে হজ্জ হবে না।
  8. জাবালে আরাফায় উঠার কোনো বিধান নেই। তাই এ পাহাড়ে উঠার চেষ্টা করা উচিৎ নয়। জাবালে আরাফার দিকে মুখ করে দোয়া করাও খেলাফে সুন্নত।
  9. উকুফে আরাফা হজ্জের শ্রেষ্ঠতম আমল। হাদিসে এসেছে الحج عرفة -হজ্জ হল আরাফা।[1] তাই এই পবিত্র দিবসে যেন কোনো প্রকার পাপের সাথে জড়িয়ে না যান সে ব্যাপারে কঠিনভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাই উচিৎ হবে সহযাত্রী হাজিদেরকে নিয়ে খোশগল্পে না বসা। কেননা এ ধরনের আসরে নিজের অজান্তেই গিবত-পরনিন্দার মতো জঘন্য পাপের সাথে নিজেদেরকে জড়িয়ে নেয়া হয়।
  10. এ দিবসে বেশি বেশি দান-খয়রাত করার চেষ্টা করা উচিৎ। তাই সহযাত্রীদের প্রয়োজনে আপনার হাত প্রসারিত করুন। সঙ্গে করে কিছু শুকনো খাবার নিয়ে যাবেন যেগুলো দিয়ে প্রয়োজনের সময় আপ্যায়ন করবেন।
  11. সম্ভব হলে কিছু সময় উন্মুক্ত জায়গায় দাঁড়িয়ে দোয়া করুন।
[1] - الحج عرفة (মুসনাদে আহমদ, ৪/৩৩৫ )