প্রশ্নোত্তরে ফিকহুল ইবাদাত তৃতীয় অধ্যায় সিয়াম (রোযা) অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম
১৩১. তারাবীহর সালাত কত রাকআত?

এটি একটি ইখতিলাফী অর্থাৎ মতবিরোধ পূর্ণ মাসআলা। কেউ কেউ বলেছেন, বিতরসহ তারাবীহ ৪১ রাকআত। অর্থাৎ বিতর ৩ রাআত হলে তারাবীহ হবে ৩৮ রাকআত। অথবা বিতর ১ রাকআত ও তারাবীহ ৪০ রাকআত। এভাবে তারাবীহ ও বিতর মিলে: কেউ বলেছেন ৩৯ রাকআত (তারাবীহ ৩৬ + বিতর ৩) কেউ বলেছেন ২৯ রাকআত (তারাবীহ ২৬ + বিতর ৩) কেউ বলেছেন ২৩ রাকআত (তারাবীহ ২০ + বিতর ৩) কেউ বলেছেন ১৯ রাকআত (তারাবীহ ১৬ + বিতর ৩) কেউ বলেছেন ১৩ রাকআত (তারাবীহ ১১ + বিতর ৩)। কেউ বলেছেন ১১ রাকআত (তারাবীহ ৮ + বিতর ৩) ২০ রাকআত তারাবীহ’র পক্ষে দলীল। বিতর ছাড়া ২০ রাকআত তারাবীহ সালাতের পক্ষে দলীল হলো মুসান্নাতে আঃ রাযযাক হতে বর্ণিত ৭৭৩০ নং হাদীস, যেখানে বর্ণিত হয়েছে,

“ওমর (রা.) রমযানে উবাই ইবনে কাব ও তামীম আদদারীকে ইমামতিতে লোকদেরকে একুশ রাকআত সালাতের প্রতি জামা'আতবদ্ধ করেছিলেন।” (অর্থাৎ তারাবীহ ২০ ও বিতর ১ রাকআত) ১০ রাকআত তারাবীহ’র পক্ষের দলীল: আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন যে,

“নবী করীম (সা.)-এর রাতের সালাত ছিল ১৩ রাকাআত। অর্থাৎ, তারাবী ১০ এবং বিতর ৩ রাআত।” (বুখারী: ১১৩৮, মুসলিম: ৭৬৪)। ৮ রাকআত তারাবীর পক্ষের দলীল: মা আয়েশা (রা.) বলেন,

“নবী করীম (সা.) রমযান ও অন্য সময়ে (রাতে) ১১ রাকাআতের অধিক সালাত আদায় করতেন না।” (বুখারী: ২০১৩, মুসলিম: ৭৩৮)। অর্থাৎ তারাবী ৮ এবং বিতর ৩ রাকআত।

৮ রাকআত তারাবীর আরেকটি দলীল: ইবনে ইয়াযিদ (রা.) বলেন,

“ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) (তাঁর দুই সঙ্গী সাহাবী) উবাই ইবনে কাব তামীম আদদারীকে এ মর্মে নির্দেশ দিলেন যে, তারা যেন লোকদেরকে নিয়ে (রমযানের রাতে) ১১ রাকআত কিয়ামুল্লাইল (অর্থাৎ তারাবীহর সালাত) আদায় করে। (মুয়াত্তা- ১/১১৫ মালেক) অর্থাৎ তারাবী ৮ এবং বিতর ৩ রাআত। উল্লেখ্য যে, সৌদি আরবের মসজিদগুলোতে তারাবীহ ও বিতর মিলে ১১ বা ১৩ রাআত পড়লেও মক্কার হারামে ও মাদীনার মসজিদে নববীতে তারাবীহ ২০ এবং বিতর মিলিয়ে মোট ২৩ রাকআত পড়ে থাকে।