লগইন করুন
১. দাওয়াতের পূর্বে সঠিক জ্ঞানার্জন:
অজ্ঞ-মূর্খ ব্যক্তি দাওয়াতের জন্য উপযুক্ত নয়। আল্লাহ তা'য়ালা তাঁর নবী সম্পর্কে বলেন:
قُلْ هَذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ
“বলুন! ইহাই আমার পথ। আমি এবং আমার অনুসারীগণ সজ্ঞানে আল্লাহর দিকে দা'ওয়াত করি।” [সূরা ইউসুফ: ১০৮]
দ্বীনের দা'য়ী-আহ্বানকারী যদি কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসের সঠিক জ্ঞান না রাখেন তবে বিভিন্ন সংশয় ও বাতিলের মোকাবেলা কি দ্বারা করবেন?
আর প্রতিপক্ষের সঙ্গে কিভাবে উত্তম পন্থায় বিতর্ক করবেন? জ্ঞান না থাকলে প্রথম অবস্থাতেই হেরে যাবেন। এবং রাস্তার শুরুতেই দাঁড়িয়ে পড়বেন।
যা জানা অতি প্রয়োজন:
(ক) যার প্রতি দা'ওয়াত করবেন সে বিষয়ে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর সঠিক জ্ঞানার্জন।
(খ) যাদেরকে দা'ওয়াত করবেন তাদের অবস্থা, প্রকারভেদ, ধর্ম- কর্ম, মানসিকতা, চিন্তা-ভাবনা ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন।
(গ) নতুন ও পুরাতন বিভিন্ন ধরনের দা'ওয়াতের মাধ্যম ও পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন।
(ঘ) যে সমাজে দাওয়াত করবেন সে সমাজ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন।
২. নিজে আমল করার পর অন্যদেরকে দা'ওয়াত করা:
এর দ্বারা আহ্বানকারী মানুষের জন্য উত্তম নমুনা ও মডেল হতে পারবেন। আর তাঁর কাজ কথার সত্যায়ন করবে এবং বাতিলরা তাঁর উপর কোন প্রকার প্রতিবাদ করতে পরবে না। আল্লাহ তা'য়ালার বাণী:
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ ٣٣
"যে আল্লাহর দিকে আহ্বান করে ও সৎ আমল করে এবং বলে আমি একজন মুসলিম তার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে।" [সূরা হামীম সেজদাহ : ৩৩]
৩. এখলাস:
দাওয়াত শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হওয়া। এ দ্বারা মানুষ দেখানো বা শুনানো কিংবা পদোন্নতি অথবা সম্মান বা নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব বা মন্ত্রীত্ব-রাজত্ব বা আমিরী কিংবা পার্লামেন্ট সদস্য হওয়া এবং দুনিয়ার কোন লোভ-লালসা ইত্যাদির লক্ষ্য-উদ্দেশ না থাকা: কারণ ঐ সকল লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের কোন একটি যখন থাকবে তখন আল্লাহর জন্য দা'ওয়াত হবে না। বরং নিজের প্রবৃত্তির কিংবা দুনিয়ার লোভ-লালসা ইত্যাদির জন্য হবে।
১. আল্লাহ তা'য়ালার বাণী:
فَمَا سَأَلْتُكُم مِّنْ أَجْرٍ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى اللَّهِ
“আমি তোমাদের নিকট এর কোন প্রতিদান চাচ্ছি না। বরং আমার প্রতিদান একমাত্র আল্লাহর নিকট।" [সুরা ইউনুস:৭২]
২. আল্লাহ তা'য়ালার বাণী:
لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مَالًا إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى اللَّهِ
"এর প্রতিদান হিসাবে তোমাদের নিকট কোন মাল-সম্পদ চাইনা। আমার প্রতিদান একমাত্র আল্লাহর নিকট।" [সূরা হুদ : ২৯]
৪. অধিক গুরুত্বতার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে দা'ওয়াত করা:
সর্বপ্রথম দায়ী-আহ্বানকারী আকীদাহ সংশোধন ও একমাত্র আল্লাহর এবাদতের জন্য দা'ওয়াত করবেন আর শিরক থেকে নিষেধ করবেন। এরপর নামাজ কায়েম ও জাকাত আদায়ের জন্য নির্দেশ করবেন। অতঃপর ফরজ-ওয়াজিবসমূহ আদায় করতে এবং হারাম কার্যাদি ছাড়তে আদেশ করবেন। আর ইহাই ছিল। সমস্ত নবী-রসূলগণের দা'ওয়াতী পদ্ধতি ও পন্থা।
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ ٢٥
(১) "আমি আপনার পূর্বের প্রেরিত প্রতিটি রসূলকে শুধু এই অহি করেছি যে, আমি ব্যতীত সত্য কোন ইলাহ নেই। সুতরাং তোমরা একমাত্র আমারই এবাদত কর।” [সূরা আম্বিয়া: ২৫]
لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ ٥٩
(২) "আমি নূহকে তার জাতির নিকট প্রেরণ করেছিলাম। সে বলেছিল: হে আমার জাতি তোমরা একমাত্র আল্লাহর এবাদত কর। তোমাদের জন্য তিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ্-উপাস্য নেই। আমি তোমাদের প্রতি সেই কঠিন দিনের শাস্তির ভয় করছি।" [সূরা আ'রাফ: ৫৯]
অনুরূপভাবে হুদ [আঃ] সালেহ [আঃ] শু'আইব [আঃ] এবং মূসা ও ঈসা [আঃ] সকলেই সর্বপ্রথম তাওহীদের প্রতি দাওয়াত করেছেন।
আল্লাহর দা'ওয়াতের কাজে আমাদের জন্য উত্তম নমুনা হচ্ছে প্রিয় নবী ﷺ তিনি তাঁর সাহাবাগণকে উত্তম নমুনা দান করেছিলেন। তিনি মক্কায় দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মানুষকে একমাত্র তাওহীদের প্রতিই আহ্বান করেছিলেন। ইহা ছিল নামাজ কায়েম, জাকাত প্রদান, রমজানের রোজা পালন ও হজ্ব আদায়ের পূর্বের দাওয়াত। আর শিরক থেকে বারণ করেছিলেন, যা ছিল সুদ, জেনা-ব্যভিচার, চুরি ও মানুষ হত্যা থেকে নিষেধের পূর্বের দা'ওয়াত।
আকীদাহ সংশোধন ছিল সকল নবী-রসূলদের সর্বপ্রথম দাওয়াত। আকীদা বিশুদ্ধকরণ প্রতিটি জিনিসের মূল ভিত্তি ও বুনিয়াদ। আর আকীদা সংশোধন অর্থ তাওহিদী কালেমার উচ্চারণ, তার মর্মার্থ বুঝা এবং তার চাওয়া-পাওয়া ও দাবী মোতাবেক আমল করা। তাওহীদ দ্বারা একজন কাফের ইসলামে দীক্ষিত হয় এবং মৃত্যুর পূর্বে ইহা দ্বারা তালকীন দিয়ে সর্বশেষ দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়। ইহাই সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ এবং সবচেয়ে বড় ফরজ। এ জন্যেই নবী ﷺ মু'আয ইবনে জাবাল [রাঃ]কে যখন ইয়ামেনে দায়ী হিসাবে প্রেরণ করেন তখন বলেন:
إِنَّكَ تَقْدَمُ عَلَى قَوْمٍ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ فَلْيَكُنْ أَوَّلَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَى أَنْ يُوَحِّدُوا اللَّهَ تَعَالَى فَإِذَا عَرَفُوا ذَلِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي يَوْمِهِمْ وَلَيْلَتِهِمْ فَإِذَا صَلَّوْا فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ زَكَاةً فِي أَمْوَالِهِمْ تُؤْخَذُ مِنْ غَنِيِّهِمْ فَتُرَدُّ عَلَى فَقِيرِهِمْ فَإِذَا أَقَرُّوا بِذَلِكَ فَخُذْ مِنْهُمْ وَتَوَقَّ كَرَائِمَ أَمْوَالِ النَّاسِ. متفق عليه
(ক) “তুমি আহলে কিতাবের নিকট যাচ্ছ। তুমি তাদেরকে সর্বপ্রথম এক আল্লাহর এবাদতের দিকে দাওয়াত করবে।” অতঃপর তারা যখন ইহা অবগত হবে তখন তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তা'য়ালা রাতে ও দিনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দিয়েছেন। তারা তাদের প্রতি দিনে যখন সালাত আদায় করবে তখন তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তাদের সম্পদে জাকাত ফরজ করে দিয়েছেন। জাকাত ধনী লোকদের থেকে নিয়ে তাদের অভাবী লোকদের মাঝে বিতরণ করতে হবে। তারা যদি ইহা মেনে নেয় তবে জাকাত গ্রহণের সময় তাদের উত্তম সম্পদ নেওয়া থেকে বিরত থাকবে। আর মাজলুমের দোয়াকে ভয় করবে; কারণ তার এবং আল্লাহর দোয়ার মাঝে কোন পর্দা নেই।” [বুখারী ও মুসলিম]
(খ) অন্য বর্ণনায় আছে:
إِنَّكَ تَأْتِي قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ فِي فُقَرَائِهِمْ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللَّهِ حِجَابٌ. رواه مسلم
"তুমি আহলে কিতাবের নিকট যাচ্ছ। তুমি তাদেরকে (তাওহীদ) আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং (রেসালাত) আমি আল্লাহর রসূল এর দা'ওয়াত করবে।" অতঃপর যদি তারা ইহা মেনে নেয় তাহলে রাতে -তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তা'য়ালা তাদের প্রতি দিনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দিয়েছেন। তারা যদি ইহা মেনে নেই তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তাদের সম্পদে জাকাত ফরজ করে দিয়েছেন। জাকাত ধনী লোকদের থেকে নিয়ে তাদের অভাবী লোকদের মাঝে বিতরণ করতে হবে। তারা যদি ইহা মেনে নেয় তবে জাকাত গ্রহণের সময় তাদের উত্তম সম্পদ নেওয়া থেকে বিরত থাকবে। আর মাজলুমের দোয়াকে ভয় করবে; কারণ তার দোয়া এবং আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই।" [মুসলিম]
(গ) অন্য আর এক বর্ণনায় আছে।
فَلْيَكُنْ أَوَّلَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَى أَنْ يُوَحِّدُوا اللَّهَ تَعَالَى. رواه البخاري
"তাদেরকে সর্বপ্রথম এক আল্লাহর তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য দা'ওয়াত করবে।" [বুখারী]
(ঘ) রসূলুল্লাহ ﷺ আরো বলেছেন:
أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ فَمَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ فَقَدْ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلَّا بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللَّهِ. متفق عليه
"যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ" এর সাক্ষ্য প্রদান এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা ও জাকাত প্রদান না করবে ততক্ষণ তাদেরকে হত্যা করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। যখন তারা এসব করে তখন তাদের খুন-রক্ত ও সম্পদ আমার থেকে নিরাপদ লাভ করে। তবে ইসলামের হক হলে তার ব্যাপার স্বতন্ত্র এবং তাদের হিসাব আল্লাহর প্রতি।” [বুখারী ও মুসলিম]
নবী-রসূলগণের দাওয়াতী সিলেবাসের নিদর্শন হচ্ছে সর্বপ্রথম তাওহীদের দাওয়াত দ্বারা আরম্ভ করা। এ দা'ওয়াত সর্বপ্রথম রসূল নূহ [আঃ] থেকে শুরু করে সর্বশেষ রসূল মুহাম্মদ ﷺ পর্যন্ত শেষ হয়েছে। তাঁরা মূল ভিত্তি ও আসল থেকে দা'ওয়াত আরম্ভ করেছেন। তাঁরা কেউ গাছ লাগানোর পূর্বে ফল পাড়ার চেষ্টা করেননি। তাঁরা কেউ ভিত্তি স্থাপনের আগে ছাদ ঢালাই দেওয়ার বৃথা প্রচেষ্টা চালাননি। আর ইহাই হলো নবী-রসূলগণের দাওয়াতের নীতিমালা ও পদ্ধতি। সকলেই তাওহীদ দ্বারা আরম্ভ করেছেন।
আল্লাহ তা'য়ালার বাণী:
قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ
"হে আমার জাতি একমাত্র আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত আর কেউ তোমাদের সত্য মাবুদ নেই।" [সূরা আ'রাফ: ৬৫]
অতএব, তাওহীদ থেকেই একজন দ্বীনের দায়ী তার দাওয়াতের কার্যক্রম শুরু করবেন। এমন কিছু দায়ী আছেন যারা তাদের দাওয়াতে তাড়াহুড়া করেন এবং প্রকৃত পক্ষে তাঁরা সঠিক ইসলামী দাওয়াতের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়ান। আর সংশোধনের চেয়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করেন বেশি। তাঁরা তাঁদের দাওয়াতের ফল খেতে পারেন না। বরং তাঁদের ঘরের ছাদ তৈরী হতে বহু দেরী হয়; কারণ ইহা নবী-রসূলদের সিলেবাসের পরিপন্থী নিয়ম। আমরা জানি যে নুহ [আঃ] ৯৫০ বছর ধরে তার জাতিকে একমাত্র তাওহীদের দিকে আহ্বান করতে থাকেন। আর আমাদের নবী মুহাম্মদ ﷺ তাঁর নবুয়াতের বেশির ভাগ সময় মক্কাতে একমাত্র তাওহীদের প্রতি দাওয়াত করতে থাকেন। তিনি বলতে থাকেন, তোমরা বল:"লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" কল্যাণকামী হবে। [আহমাদ]
এরপর তাওহীদের বুনিয়াদ ও ঈমান মানুষের অন্তরে দৃঢ়মূল হয়। একিন ও আল্লাহর ভয়-ভীতির উপর তাদের তারবিয়ত হয়। এরপর নবী তাদেরকে নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন এ সময় শরীয়তের বিভিন্ন বিধিবিধান নাজিল হয়।
মদিনায় জিহাদের আয়াত নাজিল হয়। যদি বিধান দ্বারা আরম্ভ করাই নবী-রসূলগণের দাওয়াতের পদ্ধতি হত তাহলে নবী ﷺ তাই করতেন। নবী ﷺ এর প্রতি রাজত্ব পেশ করা হয়েছিল। কুরাইশরা বলেছিল: মুহাম্মাদ ﷺ যদি তুমি রাজা হতে চাও তাহলে তোমাকে আমাদের রাজা বানিয়ে দেব। কিন্তু নবী ﷺ বুনিয়াদ ও ভিত্তি দ্বারা শুরু করেন আর তা হচ্ছে তাওহীদ। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, দা'ওয়াত তাওহীদ দ্বারাই আরম্ভ করতে হবে রাষ্ট্র দিয়ে নয়। আর এ জন্যেই সালাফী দা'ওয়াত তাওহীদের ভিত্তি দ্বারা শুরু করা হয়। কারণ এর মধ্যে রয়েছে নবী-রসূলদের পদাঙ্কানুসরণ। দ্বীনের সঠিক আহ্বানকারীরা যা দ্বারা আরম্ভ করেছেন তা দ্বারাই তাঁরা আরম্ভ করেন।
আমরা দেখতে পাই অনেক দলীয় ও সাংগঠনিক দা'ওয়াতগুলো তাওহীদের ব্যাপারে কোন প্রকার গুরুত্ব দেয় না। বরং তাদের কোন কোন নেতারা ঘোষণা করেন যে, তাওহীদ দ্বারা দা'ওয়াত মানুষের মাঝে বিভেদ ও দলাদলি সৃষ্টি করে। তারা এক গলদ শ্লোগান দেয় যা হচ্ছে: “যে ব্যাপারে একমত তার উপরে আমরা জমায়েত হই। আর যে ব্যাপারে দ্বিমত সে ক্ষেত্রে একে অপরকে ওজর পেশ করি।" তারা নিজেরা ভিতরের আকীদার গণ্ডগোল মেনে নিয়ে দলাদলিকে সমর্থন করেন। যদিও তা শরীয়ত ও দ্বীনের বিপরীত হোক না কেন; কারণ এ শ্লোগান তাদের দলের মূল নীতির একটি। আর সালাফী দাওয়াতের নিদর্শন হলোঃ আল্লাহ তা'য়ালা যা শরীয়তের বিধিবিধান করেছেন এবং নির্দেশ করেছেন সে ব্যাপারে আপোসে সাহায্য-সহযোগিতা করা। আর যে ব্যাপারে দ্বিমত হবে সে বিষয়ে একে অপরকে বুঝানো ও নসিহত করা।