পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা ষষ্ঠ অধ্যায় - ঈশ্বর ও নবীগণ বিষয়ক অশোভনীয়তা ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
৬. ১. ৫. বিনা অপরাধে বা সামান্য অপরাধে কঠিন শাস্তি

বাইবেলের বর্ণনায় ঈশ্বর সামান্য অপরাধে ভয়ঙ্কর শাস্তি দেন আবার কঠিন অপরাধেও কোনো শাস্তি দেন না। বৈৎ-শেমস গ্রামের মধ্য দিয়ে ইহুদিদের পবিত্র সিন্দুকটা নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী সিন্দুকটার মধ্যে দৃষ্টিপাত করে। এ অপরাধে ঈশ্বর সেই গ্রামের ৫০ হাজার ৭০ জনকে হত্যা করেন! (১ শমূয়েল ৬/১৯-২০) এরা মূলত কোনো পাপই করেননি। শুধু নিজেদের কৌতূহল সংবরণ করতে না পেরে কৌতূহলী হয়ে ঈশ্বরের সিন্দুক বা শরীয়ত-সিন্দুক (ark of the covenant)-এর প্রতি দৃষ্টিপাত করেছিলেন। তিনি মানুষের পাপের অপরাধে নিরপরাধ পশু-পাখীকে ধ্বংস করেন (আদিপুস্তক ৬/৬-৭)। একটা হুকুম অমান্য করায় তিনি ইহুদি জাতির সকল নেতা ও গোত্রপতিকে শুলে চড়িয়ে হত্যা করেন এবং ২৪ হাজার মানুষকে মহামারি দ্বারা ধ্বংস করেন। (গণনা পুস্তক ২৫/৪-৯)।

ঈশ্বর একজন নবীকে পাপাচারী ইহুদি রাজা যারবিয়ামকে সতর্ক করতে বৈথলে পাঠান এবং তাঁকে নির্দেশ দেন বৈথলে পানাহার না করতে। তিনি যখন দায়িত্ব পালন করে ফিরে যাচ্ছিলেন তখন বৈথলের একজন নবী প্রতারণাপূর্বক তাকে বলেন যে, ঈশ্বর তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁর বাড়িতে পানাহার করতে। এ কথায় প্রথম নবী প্রতারিত হয়ে প্রতারক নবীর বাড়িতে পানাহার করেন। এতে ঈশ্বর প্রতারিত নবীকে ভয়ঙ্কর শাস্তি দেন। একটা সিংহ তাকে হত্যা করে। তবে প্রতারক নবীকে ঈশ্বর কোনো শাস্তি দেননি, এমনকি তিরস্কারও করেননি। (১ রাজাবলির ১৩/১-৩২)