বড় শির্ক ও ছোট শির্ক বড় শির্কের প্রকারভেদ মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী
২১. একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়াও অন্য কোন গাওস, ক্বুতুব, ওয়াতাদ, আব্দালের এ বিশ্ব পরিচালনায় অথবা উহার কোন কর্মকান্ডে হাত আছে এমন মনে করার শির্ক

যেমন: বৃষ্টি দেয়া, তুফান বন্ধ করা ইত্যাদি ইত্যাদি।

বস্ত্ততঃ দুনিয়ার সকল বিষয়ের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলার হাতেই ন্যস্ত। অন্য কারোর হাতে নয়। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:

«اللهُ الَّذِيْ رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا، ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ، كُلٌّ يَجْرِيْ لِأَجَلٍ مُّسَمًّى، يُدَبِّرُ الْأَمْـرَ، يُفَصِّلُ الْآيَاتِ، لَعَلَّكُمْ بِلِقَآءِ رَبِّكُمْ تُوْقِنُوْنَ»

‘‘তিনিই আল্লাহ্ যিনি আকাশমন্ডলীকে স্থাপন করেছেন স্তম্ভ বিহীন। যা তোমরা দেখতে পাচ্ছো। অতঃপর তিনি নিজ ’আরশে ’আজীমের উপর সমাসীন হন এবং তিনিই চন্দ্র ও সূর্যকে নিয়মানুবর্তী করেন। ওদের প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত (নিজ কক্ষপথে) আবর্তন করবে। তিনিই দুনিয়ার সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন। যাতে তোমরা পরকালে নিজ প্রভুর সাথে সাক্ষাতে নিশ্চিত হতে পারো’’। (রা’দ : ২)

আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:

«إِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِيْ سِتَّةِ أَيَّامٍ، ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ»

‘‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু আল্লাহ্ তা’আলা। যিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। অতঃপর তিনি নিজ ’আরশে ’আজীমের উপর সমাসীন হন এবং তিনিই দুনিয়ার সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন’’। (ইউনুস : ৩)

তিনি আরো বলেন:

«قُلْ مَنْ يَرْزُقُكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ وَالْأَرْضِ، أَمَّنْ يَّمْلِكُ السَّمْـعَ وَالْأَبْصَارَ، وَمَنْ يُّخْرِجُ الْـحَيَّ مِنَ الْـمَيِّتِ، وَيُخْرُجُ الْـمَيِّتَ مِنَ الْـحَيِّ، وَمَنْ يُّدَبِّرُ الْأَمْرَ، فَسَيَقُوْلُوْنَ اللهُ، فَقُلْ أَفَلاَ تَتَّقُوْنَ»

‘‘হে নবী! আপনি মক্কার কাফিরদেরকে বলুন: তিনি কে? যিনি আকাশ ও জমিন হতে তোমাদেরকে রিযিক দিয়ে থাকেন। তিনি কে? যিনি কর্ণ ও চক্ষুসমূহের মালিক। তিনি কে? যিনি প্রাণীকে প্রাণহীন থেকে এবং প্রাণহীনকে প্রাণী থেকে বের করেন। আর তিনি কে? যিনি দুনিয়ার সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন। তখন তারা অবশ্যই বলবে: তিনি হচ্ছেন আল্লাহ্ তা’আলা। সুতরাং আপনি তাদেরকে বলুন: তারপরও তোমরা কেন তাঁকে ভয় পাচ্ছোনা এবং শির্ক থেকে নিবৃত্ত হচ্ছোনা?’’ (ইউনুস : ৩১)

তিনি আরো বলেন:

«يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَآءِ إِلَى الْأَرْضِ ثُمَّ يَعْرُجُ إِلَيْهِ فِيْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ أَلْفَ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّوْنَ»

‘‘তিনিই (আল্লাহ্ তা’আলা) আকাশ হতে পৃথিবী পর্যন্ত সকল বিষয় পরিচালনা করেন। অতঃপর একদিন সব কিছুই তাঁর সমীপে সমুত্থিত হবে। যে দিন হবে তোমাদের দুনিয়ার হিসেবে হাজার বছরের সমান’’। (সাজদাহ্ : ৫)

আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

قَالَ اللهُ عَزَّ وَ جَلَّ: يُؤْذِيْنِيْ ابْنُ آدَمَ، يَسُبُّ الدَّهْرَ وَأَنَا الدَّهْرُ، بِيَدِيْ الْأَمْرُ، أُقَلِّبُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ

‘‘আল্লাহ্ তা’আলা বলেন’’ মানুষ আমাকে কষ্ট দেয়। তারা যুগকে গালি দেয়। অথচ আমিই যুগ নিয়ন্ত্রক। সকল বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ আমার হাতেই। আমার আদেশেই রাত-দিন সংঘটিত হয়’’।

(বুখারী, হাদীস ৪৮২৬, ৬১৮১, ৭৪৯১ মুসলিম, হাদীস ২২৪৬ আবু দাউদ, হাদীস ৫২৭৪ আহমাদ : ২/২৩৮ ’হুমাইদী, হাদীস ১০৯৬ বায়হাক্বী : ৩/৩৬৫ ইবনু হিব্বান/ইহসান, হাদীস ৫৬৮৫ হা’কিম : ২/৪৫৩)