ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
রমযান মাসের ৩০ আসর ত্রিংশ আসর শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
রমযান মাসের সমাপ্তি

সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি প্রশস্ত, মহান, বদান্য, দানশীল, দয়ালু। তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তা নিপুণভাবে নিরূপণ করেছেন। তিনি শরীয়ত নাযিল করেছেন আর তা সহজ করেছেন। তিনি মহাপ্রজ্ঞাবান ও সর্বজ্ঞাতা। তিনি সৃষ্টির সূচনা করেছেন অতঃপর তা সম্পন্ন করেছেন। [আর সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট পথে, এটা মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ (আল্লাহ)-র নির্ধারণ। আর চাঁদের জন্য আমি নির্ধারণ করেছি মানযিলসমূহ, অবশেষে সেটি খেজুরের শুষ্ক পুরাতন শাখার মত হয়ে যায়। সূর্যের জন্য সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া, আর রাতের জন্য সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা, আর প্রত্যেকেই কক্ষ পথে ভেসে বেড়ায়।] (সূরা ইয়াছীন, আয়াত : ৩৮-৪০)

প্রশংসা করছি তিনি যা প্রদান করেছেন এবং হেদায়াত দিয়েছেন তার। কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি তাঁর অনুগ্রহ ও দানের। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। তিনিই মুনিব, উচ্চ ও সর্বোচ্চ। তিনি প্রথম তাঁর আগে কিছু নেই। তিনি শেষ তাঁর পরে কিছু নেই। তিনি বিজয়ী তাঁর ওপর কেউ নেই। তিনি নিকটে তাঁর চেয়ে কাছে কিছু নেই। তিনি সবকিছুই জানেন। আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, যাকে তিনি সকল সৃষ্টিকুল থেকে নির্বাচিত করেছেন।

আল্লাহ সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন তাঁর ওপর; তাঁর সাথী শ্রেষ্ঠতম সত্যবাদী আবূ বকরের ওপর; ধর্মকর্মে বীরত্বে খ্যাতিমান উমরের ওপর; দুষ্কৃতিকারীদের হাতে অন্যায়ভাবে নিহত উসমানের ওপর; সুনিশ্চিতভাবে সবচে নিকটাত্মীয় আলীর ওপর এবং তাঁর সকল পরিবার-পরিজন, সাহাবী ও কিয়ামত পর্যন্ত আগত সুচারুরূপে তাঁদের অনুসরণকারীদের ওপর।


ভ্রাতৃবৃন্দ! অতি শীঘ্রই রমযান মাস আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছে এবং নতুন একটি মাস আগমন করছে। কিন্তু রমযান মাস আমাদের আমল অনুযায়ী আমাদের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে সাক্ষী হয়ে থাকবে। এ মাসে যে ব্যক্তি ভালো আমল করতে পেরেছে, সে যেন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। ও শুভ পরিণামের অপেক্ষায় থাকে। নিশ্চয় আল্লাহ ভালো আমলকারীর আমল নষ্ট করেন না। আর যে ব্যক্তি এ মাসে অন্যায় কাজ করেছে, সে যেন তা প্রভুর কাছে খালেস তাওবা করে। যেহেতু আল্লাহ তা‘আলা তাওবাকারীর তাওবা কবুল করেন।

আল্ল‘হ তা‘আলা আমাদের জন্য এ রমযানের শেষে কিছু ইবাদত নির্ধারণ করেছেন, যা আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্য বাড়িয়ে দিবে, ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং আমলনামায় অধিক সাওয়াব লেখা হবে।

আল্লাহ আমাদের জন্য প্রবর্তন করেছেন যাকাতুল ফিতর: যার বিস্তারিত আলোচনা পূর্বে করা হয়েছে।
তিনি আমাদের জন্য প্রবর্তন করেছিন ‘তাকবীর’: রমযানের সময় পূর্ণ হওয়ার পর সূর্য ডোবার পর ঈদের চাঁদ উঠা থেকে শুরু করে ঈদের সালাত আদায় পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করা।

* আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ١٨٥ ﴾ [البقرة: ١٨٥]

‘যাতে তোমরা গণনা পূরণ করো এবং তোমাদের হেদায়াত দান করার দরুন আল্লাহ তা‘আলার মহত্ব বর্ণনা করো (তাকবীর বলো) আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারো।’ (সূরা আল-বাকারাহ্‌, আয়াত: ১৮৫)

তাকবীরের পদ্ধতি হলো: অধিকহারে নিম্নের এ তাকবীর পড়া:

«الله أكبر الله أكبر لا إِله إِلاَّ الله والله أكبر الله أكبر ولله الحمد»

আর সুন্নাত হচ্ছে, পুরুষগণ মসজিদে, বাজারে এবং ঘরে সকল জায়গায় উচ্চস্বরে তাকবীর দিবে, আল্লাহর মহত্বের ঘোষণা দেওয়া, তাঁর ইবাদত ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য।

আর মহিলারা তাদের স্বর নিচু করে তাকবীর দিবে। যেহেতু তার নিজেদেরকে ও নিজেদের কণ্ঠস্বরকে গোপন করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে।

কতইনা সুন্দর ঈদের দিনে মানুষের অবস্থা। তাদের সিয়াম সাধনার মাস শেষে তারা সর্বত্র তাকবীর ধ্বনী দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব প্রকাশ করে এবং তারা আল্লাহর তাকবীর, প্রশংসা ও একত্ববাদের ঘোষণা দিয়ে আকাশ-বাতাশ মুখরিত করে তোলে। তারা আল্লাহর রহমতের আশাবাদী এবং তাঁর আযাবের ভয়ে শংকিত !!

অনুরূপভাবে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তা‘আলা ঈদের দিন তাঁর বান্দাদের জন্য ঈদের সালাত প্রবর্তন করেছেন; যা মহান আল্লাহর যিকির বা স্মরণকে পূর্ণতা প্রদান করে। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাঁর উম্মতের নারী-পুরুষ সবাইকে এ আদেশ দিয়েছেন। আর নির্দেশ শিরোধার্য। কারণ,

* আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواْ ٱلرَّسُولَ وَلَا تُبۡطِلُوٓاْ أَعۡمَٰلَكُمۡ ٣٣﴾ [محمد: ٣٣]

‘হে ঈমানদারগণ! তেমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। তোমাদের আমলসমূহকে নষ্ট করো না।’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ৩৩)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের ঈদের সালাত আদায়ের জন্য ঈদগাহে যেতে বলেছেন। যদিও তাদের জন্য ঈদের সালাত ছাড়া অন্যান্য সালাত ঘরে পড়াই উত্তম। যা প্রমাণ করে যে ঈদগাহে নারীদের উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য।

* উম্মে আতিয়্যাহ্‌ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বর্ণনা করেন:

«أَمَرَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنْ نُخْرِجَهُنَّ فِي الْفِطْرِ وَالْأَضْحَى، الْعَوَاتِقَ، وَالْحُيَّضَ، وَذَوَاتِ الْخُدُورِ، فَأَمَّا الْحُيَّضُ فَيَعْتَزِلْنَ الصَّلَاةَ، وَيَشْهَدْنَ الْخَيْرَ، وَدَعْوَةَ الْمُسْلِمِينَ، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِحْدَانَا لَا يَكُونُ لَهَا جِلْبَابٌ، قَالَ: «لِتُلْبِسْهَا أُخْتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا»

‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে আমরা যুবতী, ঋতুবর্তী এবং পর্দানশীনা নারীদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহাতে সালাতের উদ্দেশ্যে বের করি। তবে ঋতুবতী নারীগণ সালাতে অংশ গ্রহণ করবে না। ঈদগাহে এক পাশে থাকবে, কল্যাণ প্রত্যক্ষ করবে এবং দো‘আয় শরীক হবে। তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের প্রত্যেকের জিলবাব বা বোরকা নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, সে তার বোনের বোরকা নিয়ে হলেও ঈদের সালাতে শরীক হবে।’[1]

সুন্নাত হচ্ছে, ঈদুল ফিতরের সালাতে যাওয়ার পূর্বে খেজুর খাওয়া। তিন, পাঁচ বা ততোধিক বেজোড় সংখ্যায়। কারণ,

* আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,

«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَغْدُو يَوْمَ الفِطْرِ حَتَّى يَأْكُلَ تَمَرَاتٍ وَيَأْكُلُهُنَّ وِتْرًا»

‘রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের সালাতে খেজুর না খেয়ে বের হতেন না এবং তিনি বেজোড় সংখ্যায় হিসাব করে খেতেন।’[2]

অনুরূপ আরও সুন্নাত হচ্ছে, ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া। কেননা,

* আলী ইবন আবী তালেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন,

«مِنَ السُّنَّةِ أَنْ تَخْرُجَ إِلَى العِيدِ مَاشِيًا »

‘সুন্নাত হলো, ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া।’[3]

আরও সুন্নাত হচ্ছে, পুরুষগণ সৌন্দর্য অবলম্বন করবেন এবং সবচেয়ে সুন্দর পোশাক পরে সজ্জিত হবে। যেমন,

* সহীহ বুখারীতে ‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন,

«أَخَذَ عُمَرُ جُبَّةً مِنْ إِسْتَبْرَقٍ تُبَاعُ فِي السُّوقِ، فَأَخَذَهَا، فَأَتَى بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ابْتَعْ هَذِهِ تَجَمَّلْ بِهَا لِلْعِيدِ وَالوُفُودِ، فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ»

‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একটি রেশমী পোশাক বাজার থেকে এনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এটা ক্রয় করে ঈদের দিন এবং মেহমানের উপস্থিতিতে ব্যবহার করুন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেশমী কাপড়ের দরুণ অসন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন: রেশমী পোশাক ওই সকল ব্যক্তিদের জন্য যারা আখেরাতের কিছুই পাবে না।’[4]

পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক বা স্বর্ণলঙ্কার ব্যবহার বৈধ নয় বিধায রাসূল এ কথা বলেছেন। এর থেকে বুঝা যায় যে, অন্য সুন্দর পোষাক পরা সুন্নাত।

পুরুষদের জন্য কোনো প্রকার রেশমী কাপড় এবং কোনো ধরনের স্বর্ণালঙ্কার পরিধান করা জায়েয নেই। কারণ এগুলো উম্মতে মুহাম্মাদীর পুরুষদের জন্য হারাম।
তবে নারীগণ, ঈদগাহে সাজ-সজ্জাহীন, আতর ব্যবহার ছাড়া, পূর্ণ পর্দাসহ যাবে। কারণ তাদেরকে বাইরে বের হওয়ার সময় উলঙ্গপনা, সৌন্দর্য প্রদর্শন এবং সুঘ্রাণ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং গোপনীয়তা ও পর্দার আদেশ করা হয়েছে।

ঈদের সালাত বিনয়াবনত ও একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ভয়-ভীতি সহকারে আদায় করবে। বেশি বেশি করে আল্লাহর যিকর করবে এবং দো‘আ পড়বে। তাঁর রহমতের আশা ও আযাবের ভয় করবে। ঈদগাহে সবাই একত্রিত হওয়ার বিষয়টিকে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর সামনে হাশরের মাঠে মহা অবস্থানস্থলে একত্রিত হওয়ার সাথে তুলনা করে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে। আর এ ঈদগাহ মাঠে মানুষের মধ্যকার মর্যাদার তারতম্যকে আখেরাতের সেদিন বড় ধরনের তারতম্য হবে সেটাও স্মরণ করবে।

* আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ٱنظُرۡ كَيۡفَ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖۚ وَلَلۡأٓخِرَةُ أَكۡبَرُ دَرَجَٰتٖ وَأَكۡبَرُ تَفۡضِيلٗا ٢١ ﴾ [الاسراء: ٢١]

‘হে নবী! আপনি লক্ষ্য করুন, আমরা কিভাবে তাদের একদলকে অন্যের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি, আখিরাত তো অবশ্যই মর্যাদায় মহত্তর ও শ্রেষ্ঠত্বে বৃহত্তর।’ (সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২১)


আর প্রত্যেকে যেন রমযানের মত আল্লাহর বড় নেয়ামত প্রাপ্তি এবং তিনি যে এতে বান্দাকে সালাত, সিয়াম, কুরআন তিলাওয়াত, সাদকা ইত্যাদি ইবাদত করা সহজ করে দিয়েছেন সে জন্য আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করে। কারণ তা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা আছে তা থেকেও উত্তম।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ قُلۡ بِفَضۡلِ ٱللَّهِ وَبِرَحۡمَتِهِۦ فَبِذَٰلِكَ فَلۡيَفۡرَحُواْ هُوَ خَيۡرٞ مِّمَّا يَجۡمَعُونَ ٥٨ ﴾ [يونس: ٥٨]

‘বলুন, ‘এটা আল্লাহর অনুগ্রহে ও তাঁর দয়ায়; কাজেই এতে তারা যেন আনন্দিত হয়।’ তারা যা পুঞ্জীভূত করে তার চেয়ে এটা উত্তম।’ (সূরা ইউনুস, আয়াত: ৫৮)

কারণ, ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমযানের সিয়াম ও কিয়াম গুনাহ মাফের ও পাপ থেকে মুক্তির অন্যতম উপায়। সুতরাং মুমিনগণ রমযান মাস পেলে খুশি হয়। আর দুর্বল ঈমানদার রমযান মাস পূর্ণ হলে খুশি হয়; কারণ সে সাওম থেকে মুক্তি পেয়েছে যা তার উপর ভারী ছিল এবং যা নিয়ে তার অন্তর সংকীর্ণ ছিল। আর এ দু’দলের মধ্যে পার্থক্য যে বিরাট তা স্পষ্ট।

হে আমার ভাই সকল! রমযান মাস শেষ হয়ে গেল। কিন্তু মুমিনের আমল তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শেষ হবে না।

* আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَٱعۡبُدۡ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأۡتِيَكَ ٱلۡيَقِينُ ٩٩ ﴾ [الحجر: ٩٩]

‘আপনি আপনার প্রভুর ইবাদত করুন, আপনার মৃত্যু আসা পর্যন্ত।’ (সূরা হিজর, আয়াত: ৯৯)

* তিনি আরো বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ ١٠٢ ﴾ [ال عمران: ١٠٢]

‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর যথাযথ তাকওয়া অবলম্বন কর। আর তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ (সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ১০২)

* আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ ... »

‘মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়।’[5]

এখানে একমাত্র মৃত্যুকেই মানুষের আমলের পরিসমাপ্তি ধরা হয়েছে। সুতরাং রমযান মাসের সাওম শেষ হলেও ঈমানদারের আমল সিয়াম পালনের দ্বারাই বন্ধ হয়ে যাবে না; কারণ সিয়াম তো তারপরও প্রতি বছর থাকবে। আর আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। যেমন,

* সহীহ মুসলিমে আবূ আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ، كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ»

‘যে ব্যক্তি রমযানে সিয়াম পালন করবে, অতঃপর শাওয়ালের আরো ছয়টি সিয়াম পালন করবে, সে সারা বছর সিয়াম রাখার সমতুল্য সাওয়াব প্রাপ্ত হবে।’[6]

এ ছাড়া প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন করা: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে বলেন,

«ثَلَاثٌ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ، وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ، فَهَذَا صِيَامُ الدَّهْرِ كُلِّهِ»

‘প্রতি মাসে তিনটি এবং এক রমযানের পর অন্য রমযান সিয়াম পালন করা সারা বছর সিয়াম পালনের সমান।’[7]

* অনুরূপ আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,

«أَوْصَانِي خَلِيلِي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثَلاَثٍ... «صِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ»

‘আমাকে আমার বন্ধু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন।... এর মাঝে উল্লেখ করলেন: প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন।[8]

তবে উত্তম হচ্ছে, এ তিন দিনের সাওম أيام الْبِيض অর্থাৎ চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে হওয়া। কারণ,

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ যর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললেন:

«يَا أَبَا ذَرٍّ، إِذَا صُمْتَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فَصُمْ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ»

‘হে আবূ যর! তুমি যখন প্রতি মাসে তিনদিন সিয়াম পালন করবে তখন তা ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করবে।’[9]

* অনুরূপভাবে সহীহ মুসলিমে এসেছে, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আরাফার দিনের সিয়ামের ফযীলত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি উত্তর দিলেন, ‘তা এক বছরের আগের গুনাহ ও এক বছরের পরের গুনাহের কাফ্ফারাস্বরূপ।’ আর তাঁকে আশুরার সিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, ‘তা পূর্বের এক বছরের গুনাহ মাফ করে।’ আর প্রতি সোমাবারের সিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি বললেন, ‘সোমবার আমি জন্মগ্রহণ করেছি ও সোমবার নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি এবং সোমবার আমার ওপর কুরআন নাযেল হয়েছে।’[10]

* তাছাড়া সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞেস করা হলো,

«َأَيُّ الصِّيَامِ أَفْضَلُ بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ؟ فَقَالَ: صِيَامُ شَهْرِ اللهِ الْمُحَرَّمِ»

‘রমযানের পরে কোন মাসে সিয়াম পালন উত্তম? তিনি উত্তর দিলেন, আল্লাহর মাস মুহাররমের সিয়াম।’[11]

* বুখারী ও মুসলিমে ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ قَطُّ إِلَّا رَمَضَانَ، وَمَا رَأَيْتُهُ فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ»

‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ছাড়া অন্য কোনো সময় পূর্ণ এক মাস সিয়াম পালন করতে দেখি নি। তেমনি শাবান মাস ছাড়া অন্য মাসে অধিক নফল সিয়াম পালন করতে দেখে নি।’[12]

* অন্য শব্দে এসেছে, ‘তিনি শা‘বানের অল্পকিছু ছাড়া পুরোটারই সাওম পালন করতেন।’[13]

* ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে অপর বর্ণনায় আছে,

«إنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَتَحَرَّى صِيَامَ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ»

‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার সিয়াম পালন করার ব্যাপারে যত্নবান ছিলেন।’[14] এ হাদীসটি আবু দাউদ ব্যতীত ছয় গ্রন্থকারের বাকী সবাই সংকলন করেছেন। আবু দাউদে তা উসামা ইবন যায়েদ থেকে বর্ণিত।

* আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«تُعْرَضُ الأَعْمَالُ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ وَالخَمِيسِ، فَأُحِبُّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ»

‘বনী আদমের আমল সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। আমার আমল সিয়াম অবস্থায় পেশ হওয়া আমি পছন্দ করি।’[15]


রমযান মাস শেষ হওয়ার দ্বারা রাত জাগরণ কিন্তু শেষ হয়ে যায় না; বরং বছরে প্রত্যেক রাতে নফল সালাত ও তাহাজ্জুদ পড়ার মাধ্যমে রাতের কিয়াম শরীয়তে অনুমোদিত। আর আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে কথা ও কাজ দ্বারা সারা বছর তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের বিষয়টি প্রমাণিত।

* সহীহ বুখারীতে মুগীরাহ ইবন শু‘বা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيَقُومُ لِيُصَلِّيَ حَتَّى تَرِمَ قَدَمَاهُ، فَيُقَالُ لَهُ، فَيَقُولُ: «أَفَلاَ أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا»

‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে এত অধিক নফল সালাত আদায় করতেন যে, তাঁর পা মুবারক ফুলে যেত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, আমি কি শুকরগুজার বান্দা হব না?’[16]

* অনুরূপ আব্দুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«أَيُّهَا النَّاسُ، أَفْشُوا السَّلَامَ، وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ، وَصَلُّوا بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُونَ الجَنَّةَ بِسَلَامٍ»

‘হে লোকসকল! তোমরা সালামের প্রসার কর, খাদ্য খাওয়াও, আর যখন মানুষ ঘুমে থাকে তখন রাতে নফল সালাত আদায় কর, তাহলে তোমরা শান্তির সাথে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।’[17]

* অনুরূপ আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«َأَفْضَلُ الصَّلَاةِ، بَعْدَ الْفَرِيضَةِ، صَلَاةُ اللَّيْلِ»

‘ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের (তাহাজ্জুদ) সালাত।’[18]


আর রাতের সালাতে সব ধরনের নফল এবং বিতর অন্তর্ভুক্ত। রাতের সালাত দু’ দু’ রাকাত করে আদায় করতে থাকবে। সময় শেষ হওয়ার ভয় হলে এক রাকাত মিলিয়ে বিতর পড়ে নেবে। অথবা চতুর্থ আসরে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে সেভাবেও পড়া যেতে পারে।

* বুখারী ও মুসলিমে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا، حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ فَيَقُولُ: مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَه»

‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রতি রাতে এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে (শেষ রাতে) প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, আমাকে কে ডাকবে যে আমি তার ডাকে সাড়া দেব? আমার কাছে চাওয়ার মত কে আছে যে আমি তাকে দান করবো? কে আছে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে যে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।’[19]


তাছাড়া রয়েছে, দৈনিক ১২ রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। চার রাকাত জোহরের পূর্বে ও দু’রাকাত পরে। দু’রাকাত মাগরিবের পর। দু’রাকাত ইশার পর ও দু’রাকাত ফজরের সালাতের পূর্বে।

* উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে শুনেছি,

«مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يُصَلِّي لِلَّهِ كُلَّ يَوْمٍ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً تَطَوُّعًا، غَيْرَ الفَرِيضَةِ، إِلَّا بَنَى اللهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ»

‘যদি কোনো মুসলিম বান্দা ফরয ছাড়া বার রাকাত সুন্নাত সালাত প্রতিদিন আদায় করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করেন।’[20]


আরও রয়েছে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাত আদায়ের পর কিছু যিকর। এ যিকর করতে আল্লাহ তাঁর কিতাবে নির্দেশ দিয়েছেন, অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

* আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ فَإِذَا قَضَيۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ قِيَٰمٗا وَقُعُودٗا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمۡۚ ﴾ [النساء: ١٠٣]

‘অতঃপর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর, তখন দণ্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০৩)

* অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ফরয সালাত থেকে সালাম ফিরাতেন, তখন তিনবার ইস্তেগফার করতেন। অতঃপর এ দো‘আ পড়তেন:

«اللهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ، تَبَارَكْتَ ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ»

‘হে আল্লাহ! আপনিই শান্তি আর আপনার কাছ থেকেই আসে শান্তি; আপনি বড়ই বরকতময় হে সম্মান ও প্রতিপত্তির অধিকারী’।[21]

* রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,

«مَنْ سَبَّحَ اللهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَحَمِدَ اللهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَكَبَّرَ اللهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، فَتْلِكَ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ، وَقَالَ: تَمَامَ الْمِائَةِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ»

‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার ৩৩ বার মোট ৯৯ বার। সর্বশেষে ১০০ পূর্ণ করতে বলবে:

لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

তাহলে তার গুনাহ সমুদ্র ফেনা পরিমাণ হলেও আল্লাহ তা মাফ করে দেবেন।’[22]

সুতরাং হে আমার ভাইগণ! আপনারা পূণ্যের কাজে বেশি করে আত্মনিয়োগ করুন। পাপ ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকুন। যাতে আপনাদের পার্থিব জীবন সুখময় হয় আর মৃত্যুর পর চিরস্থায়ী শান্তির অধিকারী হতে পারেন।

* আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿مَنۡ عَمِلَ صَٰلِحٗا مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنٞ فَلَنُحۡيِيَنَّهُۥ حَيَوٰةٗ طَيِّبَةٗۖ وَلَنَجۡزِيَنَّهُمۡ أَجۡرَهُم بِأَحۡسَنِ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ٩٧ ﴾ [النحل: ٩٧]

‘পুরুষ ও নারীদের মধ্য থেকে যে ঈমানসহ সৎকর্ম করে, আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কার্যের উত্তম পুরস্কার দেব।’ (সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৯৭)

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের ঈমানের ওপর মজবুত রাখুন এবং আমলে সালেহ করার তাওফীক দিন। হায়াতে তায়্যিবাহ দান করুন। আমাদেরকে পুণ্যবান ব্যক্তিদের সঙ্গী বানান।আর সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব। আল্লাহ সালাত ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের ওপর।

[1] বুখারী: ৩৫১; মুসলিম: ৮৯০।

[2] বুখারী: ৯৫৩।

[3] তিরমিযী: ১২৯৬।

[4] বুখারী: ৯৪৮।

[5] তিরমিযী: ১৩৭৬।

[6] মুসলিম: ১১৬৪।

[7] মুসলিম: ১১৬২।

[8] বুখারী: ১১৭৮; মুসলিম: ৭২১।

[9] আহমদ ৫/১৫০; তিরমিযী: ৭৬১।

[10] মুসলিম: ১১৬২।

[11] মুসলিম: ১১৬৩।

[12] বুখারী: ১৯৬৯; মুসলিম: ১১৫৬।

[13] মুসলিম: ১১৫৬।

[14] আহমাদ: ৬/৮০, ৮৯, ১০৬; তিরমিযী: ৭৪৫; নাসাঈ: ৪/২০২, ২০৩; ইবন মাজাহ: ১৭৩৯।

[15] তিরমিযী: ৭৪৭।

[16] বুখারী: ৪৮৬৩।

[17] তিরমিযী: ২৪৮৫; ইবন মাজাহ: ১৩৩৪।

[18] মুসলিম: ১১৬৩।

[19] বুখারী: ১১৪৫; মুসলিম: ৭৫৮।

[20] মুসলিম: ৭২৮।

[21] মুসলিম: ৫৯১।

[22] মুসলিম: ৫৯৭।