ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ পরিচিতি মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী
৬৬. জুমু‘আহ্ ও জামাতে নামায না পড়া

জুমু‘আহ্ ও জামাতে নামায না পড়া আরেকটি কবীরা গুনাহ্।

কেউ লাগাতার কয়েকটি জুমু‘আহ্ ছেড়ে দিলে আল্লাহ্ তা‘আলা তার
অন্তরে মোহর মেরে দেন। তখন সে গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর ও আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ وَدْعِهِمُ الْـجُمُعَاتِ، أَوْ لَيَخْتِمَنَّ اللهُ عَلَى قُلُوْبِهِمْ، ثُمَّ لَيَكُوْنُنَّ مِنَ الْغَافِلِيْنَ.

‘‘কিছু সংখ্যক লোক জুমু‘আহ্ পরিত্যাগ করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকুক নয়তো আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের অন্তরে অবশ্যই মোহর মেরে দিবেন। তখন তারা নিশ্চয়ই গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে’’। (মুসলিম ৮৬৫)

এমনকি যে ব্যক্তি অলসতা বশত তিন ওয়াক্ত জুমু‘আহ্’র নামায ছেড়ে দিয়েছে তার অন্তরেও আল্লাহ্ তা‘আলা মোহর মেরে দিবেন।

আবুল্ জা’দ্ যাম্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ تَرَكَ ثَلَاثَ جُمَعٍ تَهَاوُنًا بِهَا طَبَعَ اللهُ عَلَى قَلْبِهِ.

‘‘যে ব্যক্তি তিন ওয়াক্ত জুমু‘আহ্’র নামায অলসতা বশত ছেড়ে দিলো আল্লাহ্ তা‘আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন’’। (আবূ দাউদ ১০৫২)

যারা জামাতে উপস্থিত হয়ে ফরয নামাযগুলো আদায় করছে না রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ঘর-বাড়ী জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِالصّلَاةِ فَتُقَامَ، ثُمَّ آمُرَرَجُلًا فَيُصَلِّيَ بِالنَّاسِ ثُمَّ أَنْطَلِقَ مَعِيْ بِرِجَالٍ مَعَهُمْ حُزَمٌ مِنْ حَطَبٍ إِلَىْ قَوْمٍ لَايَشْهَدُوْنَ الصَّلَاةَ فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوْتَهُمْ بِالنَّارِ.

‘‘আমার ইচ্ছে হয় কাউকে নামায পড়ানোর দায়িত্ব দিয়ে লাকড়ির বোঝাসহ কিছু সংখ্যক লোক নিয়ে তাদের পিছু নেই যারা জামাতে উপস্থিত হয় না এবং তাদের ঘর-বাড়ী জ্বালিয়ে দেই’’। (বুখারী ৬৪৪, ৬৫৭, ২৪২০; মুসলিম ৬৫১; আবূ দাউদ ৫৪৮; আহমাদ ৩৮১৬)

যে ব্যক্তি শরয়ী অজুহাত ছাড়াই ঘরে নামায পড়লো তার নামায আদায় হবে না।

আব্দুল্লাহ্ বিন আববাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ سَمِعَ الـمُنَادِىَ بِالصَّلَاةِ فَلَمْ يَمْنَعْهُ مِنِ اتِّبَاعِهِ عُذْرٌ لَمْ تُقْبَلْ مِنْهُ الصَّلَاةُ الَّتِيْ صَلَّى، قِيْلَ: وَمَا الْعُذْرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ قَالَ: خَوْفٌ أَوْ مَرَضٌ.

‘‘যে ব্যক্তি মুয়ায্যিনের আযান শুনেও মসজিদে না গিয়ে ঘরে নামায পড়লো অথচ তার নিকট মসজিদে উপস্থিত না হওয়ার শরয়ী কোন ওযর নেই তা হলে তার আদায়কৃত নামায আল্লাহ্ তা‘আলার দরবারে কবুল হবে না। সাহাবারা বললেন: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আপনি ওযর বলতে কি ধরনের ওযর বুঝাতে চাচ্ছেন? তিনি বললেন: ভয় অথবা রোগ’’। (আবূ দাউদ ৫৫১ বায়হাকী, হাদীস ৫৪৩১)

আব্দুল্লাহ্ বিন আববাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ ثُمَّ لَمْ يُجِبْ مِنْ غَيْرِ عُذْرٍ فَلَا صَلَاةَ لَهُ

‘‘যে ব্যক্তি আযান শুনেও মসজিদে উপস্থিত হয়নি অথচ তার কোন ওযর নেই। তা হলে তার নামায হবে না’’। (বায়হাকী, হাদীস ৪৭১৯, ৫৩৭৫)

‘আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

مَنْ سَمِعَ الُمنَادِىَ فَلَمْ يُجِبْ مِنْ غَيْرِ عُذْرٍ، لَمْ يَجِدْ خَيْرًا وَلَمْ يُرَدْ بِهِ

‘‘যে ব্যক্তি আযান শুনেও মসজিদে উপস্থিত হয়নি অথচ তার কোন ওযরই ছিলো না সে কল্যাণপ্রাপ্ত নয় অথবা তার সাথে কোন কল্যাণ করার ইচ্ছেই করা হয়নি’’। (ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীস ৩৪৬৬)