ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
আর-রাহীকুল মাখতূম খায়বার ও ওয়াদিল কুরা যুদ্ধ (মুহাররম, ৭ম হিজরী) غَزْوَةُ خَيْبَرَ وَوَادِيْ الْقُرٰي (‏في المحرم سنة ٧ هـ)) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ)
বিষাক্ত বকরির ঘটনা (أَمْرُ الشَّاةِ الْمَسْمُوْمَةِ):

খায়বার বিজয়ের পর যখন রাসূলে কারীম (ﷺ) নিরাপদ হলেন এবং তৃপ্তিবোধ করলেন তখন সালাম বিন মুশরিকের স্ত্রী যায়নাব বিনতে হারিস উপঢৌকন হিসেবে বকরির ভূনা মাংস তাঁর নিকট প্রেরণ করে। সে বিভিন্ন সূত্র থেকে জিজ্ঞাসার মাধ্যমে জেনে নিয়েছিল যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বকরির মাংসের কোন কোন অংশ অধিক পছন্দ করেন। তাকে বলা হয়েছিল যে, তিনি রানের মাংস অধিক পছন্দ করেন। এ জন্য সে রানের মাংসগুলো ভাল ভাবে বিষ মিশ্রিত করেছিল এবং অবশিষ্ট অন্যগুলোতেও বিষ প্রয়োগ করেছিল। অতঃপর সে মাংসগুলো নাবী কারীম (ﷺ)-এর সামনে এনে রাখা হলে নাবী কারীম (ﷺ) রানের মাংসের টুকরোটি উঠিয়ে তার কিছু অংশ চিবুনোর পর মুখ থেকে বের করে তা ফেলে দিলেন এবং বললেন,‏ (‏إِنَّ هٰذَا الْعَظْمُ لَيُخْبِرُنِيْ أَنَّهُ مَسْمُوْمٍ‏)‏‘এ হাড্ডি আমাকে বলছে যে এর সঙ্গে বিষ মিশ্রিত করা হয়েছে।’

এরপর নাবী কারীম (ﷺ) যায়নাবকে ডাকিয়ে নিয়ে তাকে যখন বিষয়টি জিজ্ঞেস করলেন তখন সে বিষ প্রয়োগের কথা স্বীকার করল। তিনি তাকে পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি এমন কাজ করলে কেন? সে উত্তরে বলল, ‘আমি চিন্তা করলাম যে, এ ব্যক্তি যদি বাদশাহ হন তাহলে আমরা তাঁর থেকে নিস্কৃতি লাভ করব, আর যদি তিনি নাবী হন তাহলে তাঁকে এ সংবাদ জানিয়ে দেয়া হবে এবং তিনি বেঁচে যাবেন। তার এ কথা শুনে নাবী কারীম (ﷺ) তাকে ক্ষমা করলেন। এ সময় নাবী (ﷺ)-এর সঙ্গে ছিলেন বিশর বিন বারা’ বিন মারুর (রাঃ)। তিনি এক গ্রাস গিলে ফেললেন। ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।

এ মহিলাকে নাবী (ﷺ) ক্ষমা করেছিলেন কিংবা হত্যা করেছিলেন সে ব্যাপারে বর্ণনাকারীগণের মধ্যে মত পার্থক্য রয়েছে। মত পার্থক্যের সামঞ্জস্য বিধান করতে গিয়ে বলা হয়েছে যে, নাবী (ﷺ) প্রথমে মহিলাকে ক্ষমা করেছিলেন, কিন্তু যখন বিশর (রাঃ)-এর মৃত্যু সংঘটিত হয়ে গেল তখন তাকে হত্যার বিনিময়ে হত্যা করা হল।[1]

[1] যাদুল মা‘আদ ২য় খন্ড ১৩৯-১৪০ পঃ, ফাতহুল বারী ৭ম খন্ড ৪৯৭ পৃঃ, মূল ঘটনা সহীহুল বুখারীতে বিস্তারিত এবং সংক্ষিপ্ত দুভাবে বর্ণিত হয়েছে ১ম খন্ড ৪৪৯ পৃঃ, ২য় ৬১০ ও ৮৬০ পৃ: ইবনু হিশাম ২য় খন্ড ৩৩৭ ও ৩৩৮ পৃঃ।