ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
আর-রাহীকুল মাখতূম তৎকালীন আরবের ভৌগলিক, সামাজিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থা (العَرَبُ، الأَرْضُ وَالشَّعْبُ، الحُكْمُ وَالْاِقْتِصَادُ، الدِّيَانَةُ) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ)
শাম রাজ্যের শাসন (المُلْكُ بِالشَّامِ)

যে যুগ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে সেই যুগে এক স্থান থেকে স্থানান্তরের হিজরত করে যাওয়ার এক হিড়িক সৃষ্টি হয়েছিল আরব গোত্র সমূহের মধ্যে। কুযা’আহ গোত্রের কয়েকটি শাখা শাম রাজ্যের সীমানা অতিক্রম করে গিয়ে বসতি স্থাপন করেন সেখানে। বনু সুলাইম বিন হুলওয়ানদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ছিল। বনু যাজ’আম বিন সুলাইম নামক যে গোত্রটি যাজা’য়িমাহ নামে পরবর্তী কালে প্রসিদ্ধ লাভ করেছিল তা ছিল ওদের অন্তর্ভুক্ত। কুযা’আহর সেই শাখাকে রুমীগণ আরব মরুভূমিতে যাযাবরগণ কর্তৃক পরিচালিত লুটতরাজের কবল থেকে নিস্কৃতি লাভ ও লুটতরাজ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে এবং পার্সীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য নিজেদের পৃষ্ঠপোষক বানিয়েছিল। এ উদ্দেশ্যে তাঁদেরই এক ব্যক্তির মাথায় রাজ্য শাসনের মুকুট পরিধান করিয়েছিল।

এরপর থেকে বেশ কিছু কাল যাবৎ তাঁরই পরিচালনাধীন রাজ্যের শাসন সংক্রান্ত কর্মকান্ড পরিচালিত হতে থাকে। এদের মধ্যে সব চাইতে প্রসিদ্ধ শাসক ছিলেন সম্রাট যিয়াদ বিন হাবুলাহ। অনুমান করা হয় যে যাজায়েমাহ গোত্র কর্তৃক পরিচালিত রাজ্য শাসন ব্যবস্থা দ্বিতীয় খ্রীষ্টাব্দের পুরোটা জুড়েই চলছিল। তারপর সেই অঞ্চলে গাসসানী গোত্রের বংশধরগণের আগমনের কথাবার্তা চলতে থাকে। এ প্রসঙ্গে এটা বলাই বাহুল্য যে ইতোমধ্যেই গাসসানীগণ বনু যাজাআমাকে পরাজিত করে তাঁদের ক্ষমতা ও সহায় সম্পদ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। এহেন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে রুমীগণ গাসসানী বংশের শাসককে শাম অঞ্চলের জন্য আরবীয়দের সম্রাট হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। গাসসানীদের রাজধানী ছিল ‘বসরা’। রুমীয় কর্মকান্ডের পরিচালক হিসেবে শাম অঞ্চলে পর্যায় ক্রমে সে পর্যন্ত তাঁদেরই রাজত্ব চলতে থাকে, যে পর্যন্ত ফারুকী প্রতিনিধিত্ব কালের মধ্যে ১৩ হিজরীতে ইয়ারমুক যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং গাসসানী বংশের শেষ শাসক জাবলা বিন আইহাম ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন[1]। (যদিও তার অহংবোধ ইসলামী সাম্যকে বেশী সময় পর্যন্ত সহ্য করতে না পেরে সে স্বধর্ম ত্যাগী হয়ে যায়।)

[1] মুহাযারাতে খুযরী, ১ম খন্ড ৩৪ পৃঃ তারীখে আরযুল কুরআন ২য় খন্ড ৮০-৮২ পৃঃ।