ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল একাদশ অধ্যায় - ফিত্বরার বিবরণ আবদুল হামীদ ফাইযী
সাদাকাতুল ফিতরার হিকমত

সাদাকাতুল ফিতর সন দুই হিজরীর শা’বান মাসে বিধিবদ্ধ হয়। এ সদকাহ ফরয করা হয় রোযাদারকে সেই অবাঞ্ছনীয় অসারতা ও যৌনাচারের মলিনতা থেকে পবিত্র করার জন্য, যা সে রোযা অবস্থায় করে ফেলেছে। এই সদকাহ হবে তার রোযার মধ্যে ঘটিত ত্রুটির সংশোধনী। যেহেতু নেকীর কাজ পাপকে ধ্বংস করে দেয়।

এ সদকাহ ফরয করা হয়েছে, যাতে সেই ঈদের খুশী ও আনন্দের দিনে গরীব-মিসকীনদের সহজলব্ধ আহার হয়। যাতে তারাও ধনীদের সাথে ঈদের আনন্দে শরীক হতে পারে। যারা আজ আনে কাল খায়, যাদের ভিক্ষা করে দিনপাত হয়, এক মুঠো খাবারের জন্য যাদেরকে লোকের দ্বারস্থ হতে হয়, তাদেরকে অন্ততঃপক্ষে ঈদের দিনটাতেও যেন লাঞ্ছিত হতে না হয় এবং ঘরে খাবার দেখে যাতে মনের ভিতর খুশীর ঢেউ আসে, তার জন্যই সমাজ-বিজ্ঞানী দ্বীন-দরদী দ্বীনের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) এই সুব্যবস্থা করে গেছেন।

এই শেষোক্ত হিকমতের জন্য নিফাসবতী ও ছোট শিশু অরোযাদারের উপরেও উক্ত সদকাহ ফরয করা হয়েছে। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) রোযাদারের অসারতা ও যৌনাচারের পঙ্কিলতা থেকে পবিত্রতা এবং মিসকীনদের আহার স্বরূপ ফরয করেছেন ---।’[1]

যেমন এই সদকাহ আদায় করতে হয় মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ; যেহেতু তিনি রোযাদারকে পূর্ণ এক মাস রোযা রাখার তওফীক দান করেছেন।[2]

ফিতরার সদকাহ হল দেহের যাকাত। যেহেতু মহান আল্লাহ এই দেহকে একটি বছর অবশিষ্ট রেখেছেন এবং নিরাপত্তা ও সুসবাস্থ্য হেন নেয়ামত বান্দাকে দিয়ে রেখেছেন।[3]

ফিতরার যাকাত ফরয করা হয়েছে আনুগত্যের মাসের শেষে; যাতে আত্মশুদ্ধির প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ হয়। যেহেতু আল্লাহর আনুগত্যের কাজ করে এবং নিষিদ্ধ জিনিস বর্জন করে আত্মা বিশুদ্ধ ও পবিত্র হয়। তদনুরূপ মাল খরচ করলেও পবিত্রতা লাভ হয়। আর এ জন্যই মাল দানকে ‘যাকাত’ (পবিত্রতা) বলা হয়।[4]

[1] (সহীহ আবূ দাঊদ, আলবানী ১৪২০, ইবনে মাজাহ ১৮২৭, দারাকুত্বনী, সুনান, হাকেম, মুস্তাদ্রাক ১/৪০৯, বাইহাকী ৪/১৬৩)

[2] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/১৫১)

[3] (ইতহাফঃ ৮২পৃঃ)

[4] (সুআলান ফিস্-সিয়াম, ইবনে উষাইমীন ১৩)