ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন, ঈদ, কুরবানি ও আইয়ামে তাশরীকের দিনসমূহ করনীয়, বর্জনীয় ও সুন্নাহ সমূহ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
যিলহজ মাসের ১ম দশ দিনের ফযিলত:

১. যিলহজ মাসের ১ম মাসের প্রথম দশদিন আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পরকালের পুঁজি সঞ্চয় করা যেতে পারে। এ দিনগুলো গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَٱلۡفَجۡرِ ١ وَلَيَالٍ عَشۡرٖ ٢ ﴾ [الفجر: ١، ٢]

“কসম ভোরবেলার। কসম দশ রাতের”।[1] ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন: এর দ্বারা উদ্দেশ্য যিলহজ মাসের দশ দিন।

২. আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ لِّيَشۡهَدُواْ مَنَٰفِعَ لَهُمۡ وَيَذۡكُرُواْ ٱسۡمَ ٱللَّهِ فِيٓ أَيَّامٖ مَّعۡلُومَٰتٍ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّنۢ بَهِيمَةِ ٱلۡأَنۡعَٰمِۖ ٢٨ ﴾ [الحج : ٢٨]

‘যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।[2]‌’

এ আয়াতে নির্দিষ্ট দিনসমূহ বলতে কোনো দিনগুলোকে বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে ইমাম বুখারি রহ. বলেন,

قال ابن عباس: أيام العشر

“ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন: ‘নির্দিষ্ট দিনসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন”। বিশিষ্ট সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«ما من أيام العمل الصالح فيهن أحب إلى الله من هذه الأيام العشر، فقالوا يا رسول الله، ولا الجهاد في سبيل الله ؟ فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم-: ولا الجهاد في سبيل الله، إلا رجل خرج بنفسه وماله فلم يرجع من ذلك بشيء. [رواه البخاري، والترمذي واللفظ له]

যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে নেক আমল করার মত অধিক প্রিয় আল্লাহর নিকট আর কোনো আমল নেই। তারা প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদ করাও কি তার চেয়ে প্রিয় নয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: না, আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে ঐ ব্যক্তির কথা আলাদা যে তার জান-মাল নিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদে বের হয়ে গেল অতঃপর তার প্রাণ ও সম্পদের কিছুই ফিরে এলো না।[3]

৪. ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট কোনো দিন অধিক প্রিয় নয়, আর না তাতে আমল করা, এ দিনের তুলনায়। সুতরাং, তাতে তোমরা বেশি করে তাহলীল, তাকবীর ও তাহমীদ পাঠ কর।[4]

৫. সাঈদ ইবনে জুবায়ের রাহিমাহুল্লাহর অভ্যাস ছিল, যিনি পূর্বে বর্ণিত ইবনে আব্বাসরে হাদিস বর্ণনা করেছেন: যখন যিলহজ মাসরে ১ম দশ দিন প্রবেশ করত, তখন তিনি খুব মুজাহাদা করতেন, যেন তার উপর তিনি শক্তি হারিয়ে ফেলবেন।[5]

৬. ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: যিলহজ মাসের দশ দিনের ফযিলতের তাৎপর্যের ক্ষেত্রে যা স্পষ্ট, তা হচ্ছে এখানে মূল ইবাদতগুলোর সমন্বয় ঘটছে। অর্থাৎ সালাত, সিয়াম, সদকা ও হজ, যা অন্যান্য সময় আদায় করা হয় না।[6]

৭. উলামায়ে কেরাম বলেছেন: যিলহজ মাসরে ১ম দশদিন সর্বোত্তম দিন, আর রমযান মাসের শেষ দশ রাত, সব চেয়ে উত্তম রাত।

[1] সূরা ফাজর, আয়াত: ১-২

[2] সূরা হজ, আয়াত: ২৮

[3] বুখারি: ৯৬৯, তিরমিযি: ৭৫৭

[4] তাবরানী ফীল মুজামিল কাবীর

[5] দারামী: ২৫৬৪ হাসান সনদে

[6] ফাতহুল বারী ১/২৬৩