ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত ছালাতুল জানাযা মুযাফফর বিন মুহসিন
(১৬) জানাযার ছালাত পর কিংবা দাফনের পর মুনাজাত করা

মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর এবং বর্তমানে নতুন করে চালু হওয়া জানাযার সালাম ফিরানোর পর পরই সম্মিলিত যে মুনাজাত চলছে, শরী‘আতে তার কোন ভিত্তি নেই। মূলত জানাযাই মৃত ব্যক্তির জন্য বিশেষ দু‘আ। প্রচলিত পদ্ধতিকে জায়েয করার জন্য যে বর্ণনা পেশ করা হয় তা জাল। যেমন-

(أ) عَنْ حُسَيْن بْن وَحْوَحٍ الْأَنْصَارِيّ وَهُوَ بِمُهْمَلَتَيْنِ بِوَزْنِ جَعْفَر أَنَّ طَلْحَة بْن الْبَرَاء مَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ يَعُوْدُهُ فَقَالَ إِنِّي لَا أُرَى طَلْحَة إِلَّا قَدْ حَدَثَ فِيهِ الْمَوْت فَآذِنُوْنِىْ بِهِ وَعَجِّلُوْا فَلَمْ يَبْلُغ النَّبِيّ بَنِي سَالِم بْنِ عَوْفٍ حَتَّى تُوُفِّيَ وَكَانَ قَالَ لِأَهْلِهِ لَمَّا دَخَلَ اللَّيْلَ إِذَا مُتُّ فَادْفِنُوْنِىْ وَلَا تَدْعُوْا رَسُوْلَ اللهِ فَإِنِّىْ أَخَافُ عَلَيْهِ يَهُوْدَ أَنْ يُصَابَ بِسَبَبِىْ فَأُخْبِرَ النَّبِيّ حِيْنَ أَصْبَحَ فَجَاءَ حَتَّى وَقَفَ عَلَى قَبْرِهِ فَصَفَّ النَّاسُ مَعَهُ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ اللهُمَّ اِلْقَ طَلْحَةَ يَضْحَكْ إِلَيْكَ وَتَضْحَكْ إِلَيْهِ.

(ক) হুসাইন বিন ওয়াহওয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, ত্বালহা ইবনু বারা একদা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে রাসূল (ছাঃ) তাকে দেখতে এসে বললেন, ত্বালহা মৃত্যুর রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সুতরাং তোমরা আমাকে তার মৃত্যুর খবর জানাবে। কিন্তু তারা তাড়াহুড়া করল। রাসূল (ছাঃ) বণী সালেম বিন আওফের নিকট না পৌঁছতেই সে মারা গেল। সে তার পরিবারকে আগেই বলেছিল আমি রাত্রে মৃত্যুবরণ করলে তোমরা আমাকে দাফন করবে। রাসূল (ছাঃ)-কে ডেকো না। কারণ আমি আশংকা করছি আমার কারণে তিনি ইহুদী কর্তৃক আক্রান্ত হতে পারেন। অতঃপর সকাল হলে রাসূল (ছাঃ)-কে সংবাদ দেওয়া হল। ফলে তিনি এসে তার কবরের পাশে দাঁড়ান এবং লোকেরাও তাঁর সাথে কাতারবন্দি হয়ে দাঁড়ায়। তারপর তিনি তাঁর দু’হাত তুললেন এবং দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ! ত্বালহার জন্য বংশধর অবশিষ্ট রাখুন, যার জন্য সে আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবে আর আপনিও তার প্রতি সন্তষ্ট হবেন।[1]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। উক্ত হাদীছের শেষাংশ অর্থাৎ ‘অতঃপর তিনি দু‘হাত তুললেন এবং দু‘আ করলেন....এই কথাটুকু ত্বাবারাণী ব্যতীত অন্য কোন হাদীছ গ্রন্থে নেই। এটি ছহীহ হাদীছের সরাসরি বিরোধী। কারণ উক্ত হাদীছ অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থেও বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু কোথাও ঐ অংশ নেই। বিশেষ করে হাদীছটি ছহীহ বুখারীতে প্রায় ৮ জায়গায় এসেছে কিন্তু কোন স্থানে ঐ অতিরিক্ত অংশ নেই।[2]


দ্বিতীয়ত : উক্ত বর্ণনার সনদে অনেক ত্রুটি রয়েছে। ইবনুল কালবী (রহঃ) বলেন, বর্ণনাটি মুরসাল হিসাবে যঈফ। কারণ হাদীছটি সাঈদ বিন উরওয়াহ থেকে হুছাইন বিন ওয়াহওয়াহ বর্ণনা করেছে। অথচ উভয়ের সাথে কোনদিন সাক্ষাৎ হয়নি।[3]

(ب) عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ وَاللهِ لَكَأَنِّيْ أَرَى رَسُوْلَ اللهِ فِيْ غَزْوَةِ تَبُوْكَ وَهُوَ فِيْ قَبْرِ عَبْدِ اللهِ ذِي الْبِجَادَيْنِ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ يَقُولُ أَدْنِيَا مِنِّيْ أَخَاكُمَا فَأَخَذَهُ مِنْ قِبَلِ الْقِبْلَةِ حَتَّى أَسْنَدَهُ فِيْ لَحْدِهِ ، ثُمَّ خَرَجَ النَّبِيُّ وَوَلَّاهُمَا الْعَمَلَ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ دَفْنِهِ اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ رَافِعًا يَدَيْهِ يَقُولُ اللهُمَّ إِنِّيْ أَمْسَيْتُ عَنْهُ رَاضِيًا فَارْضَ عَنْهُ وَكَانَ ذَلِكَ لَيْلًا فَوَاللهِ لَقَدْ رَأَيْتُنِي وَلَوَدِدْتُ أَنِّي مَكَانَهُ.

(খ) আবী ওয়ায়েল (রাঃ) আব্দুল্লাহ (ইবনু মাসঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি যেন এখনো তাবূক যুদ্ধে রাসূল (ছাঃ)-কে আব্দুল্লাহ যিল বিজাদাইন (যিন নাজাদাইন)-এর কবরের মধ্যে দেখছি। আবুবকর ও ওমর (রাঃ)ও সেখানে আছেন। রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে বলছেন, তোমাদের ভাইকে আমার নিকটে নিয়ে আস। অতঃপর তিনি তাকে ধরে কবরের লাহদে রাখলেন। তারপর তিনি বের হলেন এবং বাকী কাজ সমাপ্তির জন্য তাঁদের দুইজনকে বললেন। যখন তিনি দাফন সমাপ্ত করলেন, তখন ক্বিবলামুখী হয়ে দুই হাত তুলে বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমি তার উপর সন্তুষ্ট হয়েই সকাল করেছি, সুতরাং আপনিও তার প্রতি সন্তুষ্ট হউন’। রাবী বলেন, এটা ছিল রাত্রের ঘটনা। আল্লাহর কসম! আমি নিজে নিজে ভাবছিলাম, যদি তার স্থানে আজ আমি হতাম!। [4]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটির বেশ কিছু সূত্র থাকলেও সূত্রগুলো যঈফ।[5] এর সনদে আব্বাদ ইবনু আহমাদ আল-আরযামী নামে একজন মাতরূক বা পরিত্যক্ত রাবী আছে।[6] এছাড়া হাদীছটিতে দলবদ্ধ মুনাজাত করার প্রমাণ নেই। কারণ আবুবকর ও ওমর (রাঃ) সেখানে উপস্থিত থাকলেও তাঁদের হাত তোলার কথা উল্লেখ নেই।

মৃতকে দাফন করার পর করণীয় :

মূলত জানাযাই দু‘আ। সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা ও গ্রাম্য মৌলভীদের দু‘আর অর্থ না জানার কারণে দাফনের পর প্রচলিত এই বিদ‘আত চালু আছে। তারা যে দু‘আগুলো পড়ে থাকেন সেগুলো সবই নিজেদের উদ্দেশ্যে পড়েন। তাতে মৃত ব্যক্তির কোন লাভ হয় না। অবুঝ লোকেরা কেবল ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলে তাড়াহুড়া করে চলে আসে। অথচ এ সময় প্রত্যেককেই দীর্ঘক্ষণ ধরে মাইয়েতের জন্য ইস্তিগফার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন হাদীছে এসেছে-

عَنْ عُثْمَانَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قاَلَ كَانَ النَّبِىُّ إِذَا فَرَغَ مِنْ دَفْنِ الْمَيِّتِ وَقَفَ عَلَيْهِ فَقَالَ اِسْتَغْفِرُوْا لِأَخِيْكُمْ ثُمَّ سَلُوْا لَهُ بِالتَّثْبِيْتِ فَإنَّهُ الآنَ يُسْأَلُ.

ওছমান (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখন মোর্দাকে দাফন করে অবসর গ্রহণ করতেন, তখন তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে বলতেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, তাঁর জন্য কবরে স্থায়ীত্ব চাও (অর্থাৎ সে যেন ফেরেশতাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে)। এখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে’।[7] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ছাহাবী আমর ইবনুল ‘আছ মুমূর্ষু অবস্থায় তার সন্তানদেরকে বলেছিলেন,

فَإِذَا دَفَنْتُمُوْنِىْ فَشَنُّوْا عَلَىَّ التُّرَابَ شَنًّا ثُمَّ أَقِيْمُوْا حَوْلَ قَبْرِىْ قَدْرَ مَا يُنْحَرُ جَزُوْرٌ وَيُقَسَّمُ لَحْمُهَا حَتّى أَسْتَأنِسَ بِكُمْ وَأَعْلَمَ مَاذَا أَُرَاجِعُ بِهِ رُسُلَ رَبِّىْ.

‘যখন তোমরা আমাকে দাফন করবে, তখন আমার উপর ধীরে ধীরে মাটি দিবে। অতঃপর আমার কবরের পার্শ্বে অবস্থান করবে, যতক্ষণ একটি উট যবহে করে তার মাংস বন্টন করতে সময় লাগে। যাতে আমি তোমাদের কারণে স্বস্তি লাভ করি এবং আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত ফেরেশতাগণের কী উত্তর দিব তা যেন জানতে পারি’।[8]

অতএব সুন্নাত হল দাফনের পর উপস্থিত প্রত্যেকেই মাইয়েতের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। এ সময় মাইয়েতের জন্য নিম্নের দু‘আগুলো বার বার পড়বে : (ক)

اللهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَثَبِّتْهُ

‘আল্ল-হুম্মাগ্ফির লাহূ ওয়া ছাবিবতহু। অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন এবং তাকে (প্রশ্নোত্তরে ও ঈমানের উপর) অটল রাখুন’।[9] (খ) اللهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ আল্ল-হুম্মাগফিরলাহু ওয়ারহামহু ইন্নাকা আংতাল গফূরুর রহীম। অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন এবং তার প্রতি রহম করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু’।[10]

اللهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْفَعْ دَرَجَتَهُ فِي الْمَهْدِيِّيْنَ وَاخْلُفْهُ فِىْ عَقِبِهِ فِى الْغَابِرِيْنَ وَاغْفِرْ لَنَا وَلَهُ يَا رَبَّ الْعَالَمِيْنَ وَافْسَحْ لَهُ فِىْ قَبْرِهِ وَنَوِّرْ لَهُ فِيْهِ.

(গ) আল্ল-হুম্মাগ্ফির্ লাহু ওয়ার্ফা‘ দারাজাতহূ ফিল মাহ্দিইয়ীনা। ওয়াখ্লুফহূ ফী ‘আক্বিবিহি ফিল গ-বিরীন, ওয়াগ্ফির্ লানা ওয়া লাহূ ইয়া রববাল ‘আ-লামীন। ওয়াফসাহ লাহূ ফী ক্বব্রিহী ওয়া নাবিবর লাহূ ফীহি। অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে মাফ করে দিন। হেদায়াত প্রাপ্তদের মধ্যে তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করুন এবং তার পিছনে যারা রয়ে গেল তাদের জন্য আপনি প্রতিনিধি হন। হে জগৎ সমূহের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে ও তাকে ক্ষমা করুন। তার কবর প্রশস্ত করে দিন এবং তার জন্য কবরকে আলোকিত করুন’।[11] উক্ত মর্মে বিস্তারিত আলোচনা দেখুনঃ ‘শারঈ মানদন্ডে মুনাজাত’ বই।

[1]. ত্বাবারাণী, মু‘জামুল কবীর হা/৩৪৭৩; ফাযযুল বি‘আ হা/২৮; ফাৎহুল বারী ৩/১৫২, হা/১২৪৭-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫।

[2]. ছহীহ বুখারী হা/৮৫৭, ১২৪৭, ১৩১৯, ১৩২১, ১৩২২, ১৩২৬, ১৩৩৬ ও ১৩৪০, ১/১৬৭ ও ১৭৮-৭৯ পৃঃ।

[3]. لَاتَثْبُتُ لَهُمَا صَحْبَةٌ -ইবনু হাজার আসক্বালানী, আল-ইছাবাহ ফী তাময়ীযিছ ছাহাবাহ, ২/২৬১-২৬২ পৃঃ ও ৯/১০৩ পৃঃ, রাবী নং- ৭৭৪৫; যঈফ আবুদাঊদ হা/৩১৫৯; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৩২৩২; আলবানী, তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/১৬২৫ পৃঃ ।

[4]. মুসনাদে বাযযার হা/১৭০৬; আবু নুআইম, হিলইয়াতুল আওলিয়া ১/১২২ পৃঃ; মা‘রেফাতুছ ছাহাবা হা/৪১০৫; ছাফওয়াতুছ ছাফওয়া ১/৬৭৯; ফাৎহুল বারী ১১/১৭৩ পৃঃ, হা/৬৩৪৩-এর আলোচনা।

[5]. মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী, মিরক্বাতুল মাফাতীহ ৪/৭৫ পৃঃ, হা/১৭০৬-এর আলোচনা দ্রঃ-ذكر فيه ما اتفقوا على ضعفه।

[6]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১৫৯৮৩।

[7]. ছহীহ আবুদাঊদ হা/৩২২১, ২/৪৫৯ পৃঃ, ‘কবর স্থান থেকে ফিরার সময় মাইয়েতের জন্য ইস্তিগফার করা’ অনুচ্ছেদ, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/১৩৩, পৃঃ ২৬।

[8]. ছহীহ মুসলিম হা/৩৩৬, ১/৭৬, ‘ঈমান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৬, (ইফাবা হা/২২১), মিশকাত হা/১৭১৬, পৃঃ ১৪৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৬২৪, ৪/৭৯ পৃঃ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, ‘মৃতকে দাফন করা’ অনুচ্ছেদ।

[9]. আবুদাঊদ হা/৩২২১, ২/৪৫৯ পৃঃ; সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/১৩৩, পৃঃ ২৬; সাঈদ ইবনু আলী আল-কাহতানী, হিছনুল মুসলিম, অনুবাদ : মোহাঃ এনামুল হক (ঢাকা : ৭৮, উত্তর যাত্রাবাড়ী, মে ২০০১), পৃঃ ২১৫, দু‘আ নং ১৬২।

[10]. আবুদাঊদ হা/৩২০২, ২/৪৫৭ পৃঃ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৬০।

[11]. ছহীহ মুসলিম হা/২১৬৯ (৯২০), ১/৩০১ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৯৯৯), ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪; মিশকাত হা/১৬১৯, পৃঃ ১৪১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৫৩১, ৪/৩৫ পৃঃ, ‘জানাযা’ অধ্যায়।