ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
ইসলামী জ্ঞান: নিত্যদিনের প্রয়োজনে ইতিহাস ও পরিচিতি ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ত্বা-হা হুসাইনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আরবী সাহিত্যের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে
ত্বা-হা হুসাইনকে “আরবি সাহিত্যের প্রধান” হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও, প্রকৃতপক্ষে সে ইসলামী বিশ্বাস, কুরআন ও সাহাবীগণ সম্পর্কে অনেক আপত্তিকর কথা বলেছেন। নিচে তার সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো—


ঐতিহাসিক_বাস্তবতা :
ত্বা-হা-হুসাইন — যাকে আমাদেরকে “আরবি সাহিত্যের প্রধান” হিসেবে পরিচয় করানো হয়েছে — বাস্তবে সে ছিল ইসলামের প্রতি বিদ্বেষী ও বিকৃত চিন্তার বাহক।
তাকে “আরবি সাহিত্যের প্রধান” বলা হয়েছিল অথচ সে না সাহিত্য জানত, না প্রকৃত আরবি ভাষা।
আমাদের পাঠ্যপুস্তকে তার জীবনী শেখানো হয়েছে, কিন্তু তার বড় বড় বিভ্রান্তিগুলো গোপন রাখা হয়েছে।
পাশ্চাত্য মাসোনীয় দুনিয়া যেমন কাউকে উদ্দেশ্যহীনভাবে পুরস্কার দেয় না, তেমনি তারা নাজিব মাহফূয-কেও নির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্যে বেছে নিয়েছিল।
আর আমার প্রভু সত্য বলেছেন: “ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা কখনোই তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর।” (সূরা আল-বাকারা ২:১২০)

১- ত্বা-হা হুসাইনের মতে কুরআন:
কুরআন তার দৃষ্টিতে আর দশটা বইয়ের মতোই — সমালোচনার যোগ্য, এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে পবিত্র মনে করা ঠিক নয়, বরং একে সাধারণ বইয়ের মতোই ধরে নিয়ে “আমাদের মত” প্রকাশ করতে হবে!
সে ওহী অস্বীকার করে বলেছে যে কুরআন নাকি বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাবের অধীন ছিল। তার মতে—

• মাক্কী সূরাগুলো “নিম্নমানের সমাজের প্রতিফলন”, যেখানে আছে রাগ, হুমকি, কঠোরতা, ছোট আয়াত, আইনশূন্যতা, এবং শপথসমূহ সূর্য, চাঁদ, তারকা, ভোর, রাত, তীন-জয়তুন ইত্যাদির নামে — যা নাকি “মূর্খ ও পশ্চাদপদ মক্কার পরিবেশের সাথে মানানসই”!

• আর মাদানী সূরাগুলো শান্ত, যুক্তিনির্ভর, আইন ও লেনদেনভিত্তিক, যা নাকি তাওরাত ও ইহুদি পরিবেশের প্রভাব বহন করে!
অর্থাৎ, ত্বা-হা হুসাইন স্পষ্টভাবে বলেছে — কুরআন মানুষের রচনা, যা ইসলামী আকীদা অনুযায়ী স্পষ্ট কুফর।


২- ত্বা-হা হুসাইন ও “ফিরাউনীয়তা”:
সে বলেছে —
“ফিরাউনীয়তা মিশরীয়দের মনে প্রোথিত, তাই তা শক্ত রাখতে হবে;
মিশরীয় মানুষ আরবের আগে ফিরাউনী;
এবং মিশর যদি নিজের ফিরাউনীয়তা ছেড়ে দেয়, তবে যেন বলে — ‘ধ্বংস হয়ে যাও, হে মিশর! স্ফিংস ভেঙে ফেল!’”
সে মিশরকে ইসলামী ও আরব পরিচয় থেকে বিচ্ছিন্ন করে “আঞ্চলিক মিশরীয় জাতীয়তা” প্রচার করেছে, এবং বলেছে মিশরের চিন্তাধারা পশ্চিমা— পুরাতনে গ্রিক দর্শন থেকে, এবং আধুনিক যুগে ইউরোপ থেকে আগত।


৩- সাহাবীদের বিরুদ্ধে তার বিদ্বেষ:
ত্বা-হা হুসাইন আবু বকর, উমর, উসমান (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) প্রমুখ সাহাবীদের সম্পর্কে সন্দেহ ও অপবাদ ছড়িয়েছে।
উদাহরণ:
• সাকীফার ঘটনা নিয়ে বলেছে: “আবু বকর ও আনসারদের মধ্যে যা সংলাপ ঘটেছিল—তার অধিকাংশ বর্ণনায় আমার আস্থা নেই।”
• নবী ﷺ-র মৃত্যুর সময় আব্বাস ও আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর হাদীসকেও সে সন্দেহ করেছে, যদিও তা বুখারী ও আহমাদে বর্ণিত।
• উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর ব্যাপারে বলেছে — “তিনি ছিলেন কঠোর ও নির্মম, এমনকি কুরাইশ তাঁর থেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।”
• উসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে বলেছে — “তিনি নাকি নিজের অঙ্গীকার ভেঙেছিলেন এবং বনি উমাইয়া যুগে শাসন নাকি জাহেলিয়াতের মতো হয়ে গিয়েছিল।”


৪- তার চিন্তার বিকৃতি:
ত্বা-হা হুসাইনের সমসাময়িক সাহিত্যিক “আল-মাযেনি” বলেছেন—
“ত্বা-হা হুসাইন ছিল নারী-পুরুষ সম্পর্ক ও যৌন বিষয় নিয়ে মুগ্ধ; তার লেখায় পতিতাদের গল্পের প্রতি প্রবল আকর্ষণ দেখা যায়।”
আর শাইখ আলী তন্তাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন—
“আমি বিস্মিত হতাম গণমাধ্যমের প্রচেষ্টায়, যেভাবে তারা ত্বা-হা হুসাইনকে ‘অধ্যাপক, সাহিত্যিক, আলেম’ হিসেবে উপস্থাপন করত; অথচ তার আরবি জ্ঞানের কোনো গভীরতা ছিল না।
দর্শনের নামেও সে কেবল ওরিয়েন্টালিস্টদের কাছ থেকে সন্দেহ ও নাস্তিকতার চিন্তাধারা নিয়েছিল।
ইসলামী ইতিহাস সম্পর্কেও সে শিখেছিল ঔপনিবেশিক পশ্চিমাদের বিকৃত ধারণা থেকে।”



উল্লেখিত সূত্রসমূহ:
‎• كتاب الشعر الجاهلي — ত্বা-হা হুসাইন
‎• تحت راية القرآن — মুস্তাফা রাফেয়ী
‎• رسالة في الطريق إلى ثقافتنا — মাহমুদ শাকির

শেষ আহ্বান:
দয়া করে সত্যটা ছড়িয়ে দিন, যারা এখনো এই “বুদ্ধিজীবী”দের দ্বারা প্রতারিত, তাদের যেন বাস্তবতা জানা যায়।

https://www.facebook.com/abubakar.m.zakaria/posts/pfbid0384y2jRYZpeneZ8DSku54MhDbGAbvurTeEuEH9DEqBgXJcFonVh2EvCdJTbHkYRPhl