ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
মানহাজ (আল-আজবিবাতুল মুফীদাহ) নিত্য নতুন মানহাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উপকারী জবাব শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
প্রশ্ন-৫ : কে তুলনামূলক বেশি কষ্টদায়ক আযাবপ্রাপ্ত হবে: সাধারণ পাপী নাকি বিদাতী?

উত্তর : বিদাতীরা বেশি কষ্টদায়ক আযাবের শিকার হবে। কেননা বিদআত অবাধ্যতা থেকেও মারাত্মক। শয়তানের নিকট অন্যান্য পাপের চেয়ে বিদআত বেশি প্রিয়। কেননা অবাধ্যচারী ব্যক্তি তাওবাহ করে পক্ষান্তরে বিদাতীরা খুবই কম তাওবাহ করে।[1]

তার কারণ হলো বিদাতী মনে করে, সে হকের উপর প্রতিষ্ঠিত। পক্ষান্তরে পাপাচারী জানে যে, সে একজন পাপাচারী, গুনাহগার। আর বিদাতী মনে করে সে একজন আনুগত্যকারী বান্দা, ইবাদতেই রত। আর এভাবেই বিদআত পাপাচার/অবাধ্যতা থেকে অধিকতর ক্ষতিকর হয়ে যায়। বিদআত অন্যান্য পাপাচার থেকে মারাত্মক হওয়ার কারণে সালাফগণ বিদাতীদের সাথে উঠাবসা করা থেকে বারণ করেন।[2]

তাদের অনিষ্ট বড়ই মারাত্মক, যারাই তাদের সাথে চলাফেরা করে তারা তাদের প্রত্যেককেই প্রভাবিত করে। নিঃসন্দেহে অন্যান্য পাপাচার থেকে বিদআত বেশি খারাপ। বিদাতীর অনিষ্ট পাপাচারীর অনিষ্ট থেকে বেশি মারাত্মক।[3]

এ জন্য সালাফগণ বলেন, সুন্নাহর ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা বিদআতের আলোকে ইজতিহাদ (গবেষণা) করা থেকে উত্তম।[4]


[1]. ইমাম সুফইয়ান আছ্ ছাওরী (রহ.) বলেন, শয়তানের নিকট অবাধ্যতা বা পাপাচার থেকে বিদআত বেশি প্রিয়। কেননা পাপকাজ থেকে তাওবাহ করা হয়ে থাকে পক্ষান্তরে বিদআত থেকে তাওবাহ করা হয় না। মুসনাদে ইব্ন আল-জা‘দ ১৮৮৫, মাজমু‘ ফাতওয়া ১১/৪৭২ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إن الله احتجز التوبة عن صاحب كل بدعة ‘‘আল্লাহ তা‘আলা তাওবাহকে বিদাতীদের থেকে দূরে রাখেন।’’ আছ সহীহাহ হা/১৬২০

[2]. আবুল হাসান আল বাসরী (রহ.) বলেন, তুমি কোন বিদাতীর সাথে বসো না। তার সাথে বসলে সে তোমার অন্তরকে অসুস্থ বানিয়ে দেবে। (আল-ই‘তিসাম ০১ /১৭২, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া  পৃ. ৫৪।

আল্লামা শাতিবী (রহ.) বলেন, ‘‘একমাত্র নাজাতপ্রাপ্ত দল হলো আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত বিদাতীদের সাথে বৈরি আচরণ করতে, তাদেরকে তাড়িয়ে দিতে এবং কেউ তাদের চলে গেলে তাকে হত্যা করা বা অন্য কোনো শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে আদিষ্ট। আলিমগণ তাদের সাথে চলাফেরা ও ওঠাবসা করতে নিষেধ করেছেন।’’

আল্লাহ তা‘আলা সালাফদের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন তারা প্রত্যেক বিদাতীকেই প্রতিহত করেছেন এবং তার থেকে উম্মাহকে সতর্ক করেছেন।

[3]. শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমীয়া (রহ.) বিদাতীদের অনিষ্ট বিষয়ে বলেন, যদি কেউ তাদের মুক্বাবিলা না করত তাহলে দীন ধ্বংস হয়ে যেত। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুদলের আক্রমণ থেকে তাদের আক্রমণ মারাত্মক। কেননা তারা বিজয়ী হলে শুধু আনুগত্যই করে নিতে পারে; মন-মানসিকতা এবং দীন ধ্বংস করতে পারে না। পক্ষান্তরে বিদাতীরা প্রথমেই মন-মানসিকতা নষ্ট করে দেয়। মাজমূ‘ ফাতওয়া ২৮/২৩২।

তিনি আরো বলেন, সুন্নাহ ও ইজমা‘ দ্বারা প্রমাণিত যে প্রবৃত্তিপূজারী পাপী থেকে বিদাতী বেশি মারাত্মক। মাজমু‘ ফাতওয়া ২০/১০৩।

[4]. ইবনে মাসউদ রযিআল্লাহু আনহুর কওল, দেখুন আল-লালকাঈ পৃ.১১৪, আল-ইবানাহ পৃ. ১৬১ আস-সুন্নাহ লি ইবনি নাছর পৃ. ৩০।