ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
কুরআনে কারীম ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে গুনাহ্ মাফের আমল ২. চরিত্রের অধ্যায় ইসলামহাউজ.কম
২. ২. উদারতা প্রদর্শন

ইসলামের প্রত্যেকটি আদেশ ও নিষেধের মধ্যে সূক্ষ্ম ও স্থূলভাবে উদারতার বিষয়টি সুস্পষ্ট; সুতরাং বাস্তবেই নতুনভাবে সেটার পুনরুত্থান ঘটেছে ইসলামের মূলবস্তুতে এবং তার প্রত্যেকটি কর্মপদ্ধতি, নিয়মনীতি ও শাসনব্যবস্থার মধ্যে।

ইসলামের মধ্যে উদারতার বিষয়টি স্বর্ণের এমন প্রলেপের মত নয় যে, মানুষ কোনো মরুভূমির মরীচিকায় ঝাঁপিয়ে পড়বে, পিপাসা কাতর ব্যক্তি তাকে পানি মনে করবে, কিন্তু যখন সে সেটার কাছে আসে, তখন দেখে সেটা আসলে কিছুই নয়।

উদারতা মানে বদান্যতা ও দানশীলতার মাধ্যমে মনের তৃপ্তি,

স্বচ্ছতা ও দীনদারীর দ্বারা হৃদয়ে আনন্দ উপভোগ করা,

সহজ ও সরল করার মাধ্যমে নম্রতা প্রদর্শন করা,

আনন্দময় ও সুসংবাদ নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল চেহারা প্রদর্শন,

কোনো প্রকার অপদস্থতা ছাড়াই মুমিনগণের প্রতি বিনয় প্রদর্শন,

কোনো প্রকার ধোকা ও প্রতারণা ছাড়াই লেনদেনে ছাড় প্রদান,

কোনো প্রকার খাতির ও তোষামোদ ছাড়াই আল্লাহর দিকে আহ্বান করার ক্ষেত্রে সহজ পন্থা অবলম্বন,

কোনো প্রকার দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও গড়িমসি ছাড়াই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার দীনের আনুগত্য করা।

বস্তুত উদারতা হচ্ছে ইসলামের দরজা,

নৈতিক চরিত্রের উচ্চ সোপান

এবং ঈমানের সর্বোত্তম বস্তু।

এটাই হলো সে উদারতা, যা পাপরাশিকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দেয়; আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ وَلَا يَأۡتَلِ أُوْلُواْ ٱلۡفَضۡلِ مِنكُمۡ وَٱلسَّعَةِ أَن يُؤۡتُوٓاْ أُوْلِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡمَسَٰكِينَ وَٱلۡمُهَٰجِرِينَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِۖ وَلۡيَعۡفُواْ وَلۡيَصۡفَحُوٓاْۗ أَلَا تُحِبُّونَ أَن يَغۡفِرَ ٱللَّهُ لَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٌ ٢٢ ﴾ [النور: ٢٢]

“আর তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন, অভাবগ্রস্তকে ও আল্লাহর রাস্তায় হিজরতকারীদেরকে কিছুই দেবে না; তারা যেন ওদেরকে ক্ষমা করে এবং ওদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন? আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[1]

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« تَلَقَّتِ الْمَلائِكَةُ رُوْحَ رَجُلٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ ، قَالُوا لَهُ : عَمِلْتَ مِنَ الْخَيْرِ شَيْئًا ؟ قَالَ : لا ، قَالُوا : تَذَكَّرْ ، قَالَ : كُنْتُ أُدَايِنُ النَّاسَ ، فَآمُرُ فِتْيَانِي أَنْ يُنْظِرُوا الْمُوسِرَ ، وَيَتَجَاوَزُوا عَنِ الْمُعْسِرِ ، قَالَ قَالَ اللَّهُ : تَجَاوَزُوا عَنْهُ » . ( رواه البخاري و مسلم ) .

“তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের এক ব্যক্তির রূহের সাথে ফিরিশ্তাগণ সাক্ষাৎ করে (অর্থাৎ তার মৃত্যুকালে) জিজ্ঞাসা করলেন: তুমি (বিশেষ) কোনো সৎকাজ করেছ কি? সে বলল: না, তারা বললেন: স্মরণ করে দেখ; সে বলল: আমি মানুষের সাথে লেনদেন করতাম; তারপর অসচ্ছল ব্যক্তিদের অবকাশ দিতে ও সচ্ছল ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে আমি আমার লোকদেরকে নির্দেশ দিতাম। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: এরপর মহান আল্লাহ তা‘আলা বললেন: “তাকে দায়মুক্ত করে দাও।”[2]

[1] সূরা আন-নূর, আয়াত: ২২

[2] বুখারী, হাদিস নং- ১৯৭১; মুসলিম, হাদিস নং- ৪০৭৬

আমি বলি: হাদিসটি হাসান পর্যায়ের।