ফিরিশতাগণ মদ্যপায়ীর নিকটবর্তী হয় না

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«ثَلاَثَةٌ لاَ تَقْرَبُهُمُ الْـمَلاَئِكَةُ: الْـجُنُبُ وَالسَّكْرَانُ وَالْـمُتَضَمِّخُ بِالْـخَلُوْقِ»

“ফিরিশতারা তিন ধরনের মানুষের নিকটবর্তী হয় না। তারা হচ্ছে, জুনুবী ব্যক্তি (যার গোসল ফরয হয়েছে) মদ্যপায়ী এবং খালূক্ব (যাতে জাফ্রানের মিশ্রণ খুবই বেশি) সুগন্ধি মাখা ব্যক্তি”।[1]

ঈমানদার ব্যক্তি যেমন মদ পান করতে পারে না তেমনিভাবে সে মদ পানের মজলিসেও উপস্থিত হতে পারে না। জাবির ও আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম থেকে বর্ণিত, তারা বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلاَ يَشْرَبِ الْـخَمْرَ، مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلاَ يَجْلِسْ عَلَى مَائِدَةٍ يُشْرَبُ عَلَيْهَا الْـخَمْرُ»

“যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালে বিশ্বাসী সে যেন মদ পান না করে এবং যে মজলিসে মদ পান করা হয় সেখানেও যেন সে না বসে”।[2]

যে ব্যক্তি জান্নাতে মদ পান করতে ইচ্ছুক সে যেন দুনিয়াতে মদ পান না করে এবং যে ব্যক্তি দুনিয়াতে মদ পান করতে সক্ষম হয়েও তা পান করে নি আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তাকে জান্নাতে মদ পান করাবেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَّسْقِيَهُ اللهُ الْـخَمْرَ فِيْ الْآخِرَةِ فَلْيَتْرُكْهَا فِيْ الدُّنْيَا، وَمَنْ سَرَّهُ أَنْ يَّكْسُوَهُ اللهُ الْـحَرِيْرَ فِيْ الْآخِرَةِ فَلْيَتْرُكْهُ فِيْ الدُّنْيَا»

“যার মন আনন্দিত হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে আখিরাতে মদ পান করাবেন সে যেন দুনিয়াতে মদ পান করা ছেড়ে দেয় এবং যার মনে আনন্দ অনুভূত হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে আখিরাতে সিল্কের কাপড় পরাবেন সে যেন দুনিয়াতে সিল্কের কাপড় পরা ছেড়ে দেয়”।[3]

আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: مَنْ تَرَكَ الْـخَمْرَ وَهُوَ يَقْدِرُ عَلَيْهِ لَأَسْقِيَنَّهُ مِنْهُ فِيْ حَظِيْرَةِ الْقُدُسِ»

“আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যে ব্যক্তি মদ পান করতে সক্ষম হয়েও তা পান করেনি আমি তাকে অবশ্যই পবিত্র বিশেষ স্থান জান্নাতে মদ পান করাবো”।[4]

যে ব্যক্তি প্রথম বারের মতো নেশাগ্রস্ত হয়ে সালাত পড়তে পারলো না সে যেন দুনিয়া ও দুনিয়ার উপরিভাগের সব কিছুর মালিক ছিলো এবং তা তার থেকে একেবারেই ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ سُكْرًا مَرَّةً وَاحِدَةً؛ فَكَأَنَّمَا كَانَتْ لَهُ الدُّنْيَا وَمَا عَلَيْهَا فَسُلِبَهَا، وَمَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ أَرْبَعَ مَرَّاتٍ سُكْرًا كَانَ حَقًّا عَلَى اللهِ أَنْ يَّسْقِيَهُ مِنْ طِيْنَةِ الْـخَبَالِ، قِيْلَ: وَمَا طِيْنَةُ الْـخَبَالِ؟ قَالَ: عُصَارَةُ أَهْلِ جَهَنَّمَ»

“যে ব্যক্তি প্রথমবারের মতো নেশাগ্রস্ত হয়ে সালাত ছেড়ে দিলো সে যেন দুনিয়া ও দুনিয়ার উপরিভাগের সব কিছুর মালিক ছিলো এবং তা তার থেকে একেবারেই ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর যে ব্যক্তি চতুর্থ বারের মতো নেশাগ্রস্ত হয়ে সালাত ছেড়ে দিলো আল্লাহ তা‘আলার দায়িত্ব হবে তাকে ‘ত্বীনাতুল খাবাল’ পান করানো। জিজ্ঞাসা করা হলো: ‘ত্বীনাতুল খাবাল’ কী? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তা হচ্ছে জাহান্নামীদের পুঁজরক্ত”।[5]

[1] সাহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব, হাদীস নং ২৩৭৪

[2] আহমদ, হাদীস নং ১৪৬৯২; ত্বাবারানী/কাবীর খণ্ড ১১, হাদীস ১১৪৬২; আওসাত্ব, হাদীস নং ২৫১০; দারেমী, হাদীস নং ২০৯২

[3] ত্বাবারানী/আওসাত্ব খণ্ড ৮, হাদীস নং ৮৮৭৯

[4] সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব, হাদীস নং ২৩৭৫

[5] হাকিম, হাদীস নং ৭২৩৩; বাইহাক্বী, হাদীস নং ১৬৯৯, ১৭১১৫; ত্বাবারানী/আওসাত্ব, হাদীস নং ৬৩৭১; আহমদ, হাদীস নং ৬৬৫৯