৫. ফাসিক ও বিদ‘আতীর ইমামত (إمامة الفاسق والمبتدع)

ফাসিক ও বিদ‘আতীর পিছনে ছালাত আদায় করা মাকরূহ।[17] তবে বাধ্যগত অবস্থায় জায়েয আছে। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেন, يُصَلُّوْنَ لَكُمْ فَإِنْ أَصَابُوْا فَلَكُمْ وَإِنْ أَخْطَئُوْا فَلَكُمْ وَعَلَيْهِمْ ‘ইমামগণ তোমাদের ছালাতে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। এক্ষণে তারা সঠিকভাবে ছালাত আদায় করালে তোমাদের জন্য নেকী রয়েছে। আর তারা ভুল করলে তোমাদের জন্য রয়েছে নেকী, কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে গোনাহ’। [18] এ বিষয়ে মহান খলীফা ওছমান (রাঃ)-কে বিদ্রোহীদের দ্বারা গৃহে অবরুদ্ধ অবস্থায় জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, الصلاةُ أحسنُ ما يعملُ الناسُ فإذا أحسنَ الناسُ فأَحْسِنْ معهم وإذا أَسَاؤُا فَاجْتَنِبْ إِسَاءَتَهُمْ ‘মানুষের শ্রেষ্ঠ আমল হ’ল ছালাত। অতএব যখন তারা ভাল কাজ করে, তখন তুমি তাদের সাথী হও। আর যখন তারা মন্দ কাজ করে, তখন তুমি তাদের মন্দ কাজ থেকে দূরে থাক’। হাসান বছরীকে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, صَلِّ و عليه بِدْعَتُهُ ‘তুমি তার পিছনে ছালাত আদায় কর। আর বিদ‘আতের গোনাহ বিদ‘আতীর উপরে বর্তাবে’। যুহরী বলেন, বাধ্যগত অবস্থায় ব্যতীত আমরা এটা জায়েয মনে করতাম না’।[19] আল্লাহ বলেন, مَعَ الرَّاكِعِيْنَ وَارْكَعُوْا ‘তোমরা রুকূকারীদের সাথে রুকূ কর’(বাক্বারাহ ২/৪৩)। তবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন যে, তিন ব্যক্তির ছালাত কবুল হয়না। তার মধ্যে একজন হ’ল ঐ ইমাম, যাকে মুছল্লীরা পসন্দ করে না’। [20]

সুন্নাত অমান্যকারী ব্যক্তিকে ইমাম বানানো যাবে না। এমনকি ফাসিক ও বিদ‘আতী কোন লোককে মসজিদ কমিটির সভাপতি বা সদস্য করা যাবে না। কেননা এতে তাকে সম্মান দেখনো হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ ‘মুনকার’ কিছু দেখলে তা যেন হাত দিয়ে প্রতিরোধ করে। নইলে যবান দিয়ে। নইলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে। আর এটা হ’ল দুর্বলতম ঈমান।[21]

[17] . ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৭৭ পৃঃ; আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৭৪৭, ‘মসজিদ ও ছালাতের স্থানসমূহ’ অনুচ্ছেদ-৭।

[18] . বুখারী, মিশকাত হা/১১৩৩, ‘ইমামের কর্তব্য’ অনুচ্ছেদ-২৭।

[19] . বুখারী হা/৬৯৫-৯৬ (ফাৎহুল বারী সহ), ‘আযান’ অধ্যায়-১০, ‘বিদ‘আতী ও ফিৎনা গ্রস্তের ইমামতি’ অনুচ্ছেদ-৫৬, ২/২২০-২৩।

[20] . তিরমিযী, আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১১২২-২৩, ১১২৮, সনদ হাসান, ‘ইমামত’ অনুচ্ছেদ-২৬।

[21] . মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়-২৫, ‘ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ’ অনুচ্ছেদ-২২।