রাহে বেলায়াত প্রথম অধ্যায় - বেলায়াত ও যিকর ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
জ. মাসনূন যিকরের শ্রেণীবিভাগ - ৮. রাসূল (সা.)-এর উপর সালাত-সালাম জ্ঞাপক বাক্যাদি - তৃতীয় ভাগ

(৬) আল্লাহ সকল সমস্যা ও দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন

উবাই বিন কাব (রাঃ) বলেছেন, রাতের তিনভাগের দুইভাগ অতিক্রান্ত হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে বলতেনঃ হে মানুষেরা, তোমরা আল্লাহর যিকর কর, আল্লাহকে স্মরণ কর, কিয়ামত এসে গেছে! কিয়ামত এসে গেছে! মৃত্যু তার আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নিয়ে এসে উপস্থিত! মৃত্যু তার আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নিয়ে এসে উপস্থিত! আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনার উপর অনেক সালাত (দরুদ) পাঠ করি, আমি (আমার সকল দু‘আ প্রার্থনার) কী পরিমাণ অংশ আপনার সালাত (দরুদ) হিসাবে নির্ধারিত করব? তিনি বললেনঃ তোমার যা ইচ্ছা হয়। আমি বললামঃ এক চতুর্থাংশ? তিনি বললেনঃ তোমার যা ইচ্ছা, তবে যদি আরো বেশি কর তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললামঃ অর্ধেক? তিনি বললেনঃ তোমার যা ইচ্ছা, তবে যদি আরো বেশি কর তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললামঃ দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেনঃ তোমার যা ইচ্ছা, তবে যদি আরো বেশি কর তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললামঃ আমার সকল প্রার্থনা ও দু‘আ আপনার (সালাত পাঠের) জন্যই নির্ধারিত করব। তখন তিনি বললেনঃ

إذاً تُكفَى همك، ويُغفَرَ لك ذنبك


“তাহলে তোমার সকল চিন্তা ও উৎকণ্ঠা দূর করা হবে এবং তোমার পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে।” হাদীসটি সহীহ।[1]

হাব্বান বিন মুনকিয (রাঃ) বলেছেন, এক ব্যক্তি বলে, হে আল্লাহর রাসূল, আমি আমার সালাতের (দু‘আর) এক তৃতীয়াংশ আপনার (সালাত পাঠের) জন্য নির্ধারণ করব কি? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেনঃ হাঁ, যদি চাও। লোকটি বললঃ দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেনঃ হাঁ, যদি চাও। লোকটি বললঃ আমার সকল সালাত (দু‘আ) আপনার জন্য নির্ধারিত করি? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেনঃ

إذن يكيفيك الله ما أهمك من أمر دينك وآخرك


“তাহলে আল্লাহ তোমার দুনিয়া ও আখেরাতের সকল উদ্বেগ উৎকণ্ঠার অবসান ঘটাবেন (সকল প্রয়োজন মিটিয়ে দিবেন)।” হাদীসটির সনদ হাসান।[2]

একজন মুসলিম যত পাপীই হোন না কেন, তার পার্থিব বা পারলৌকিত যে কোনো সমস্যা, যে কোনো বিপদ-আপদ, যে কোনো বেদনা ব্যথায় তিনি আল্লাহর দরবারে আকুতি জানান, প্রার্থনা করেন। আল্লাহর রহমতই আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। শত পাপের বোঝা মাথায় নিয়েও আমরা আশা করি মহান প্রভু আল্লাহ দয়া করে আমাদের প্রার্থনা কবুল করবেন এবং আমাদের সকল সমস্যা মিটিয়ে দিবেন, আমাদের বেদনা দূর করবেন এবং আমাদের আনন্দ স্থায়ী করবেন।


রাসূলুল্লাহ (সা.) উপর সালাত পাঠ আমাদের প্রার্থনা কবুল হওয়ার অন্যতম ওসীলা। আব্দুল্লাহ বিন মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, আমি সালাত আদায় করছিলাম, আর নবীয়ে আকরাম (সা.), আবু বকর ও উমার তাঁর সাথে ছিলেন। আমি যখন (সালাতের তাশাহহুদের বৈঠকে) বসলাম তখন প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর গুণ বর্ণনা করলাম, এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপর সালাত পাঠ করলাম এবং এরপর আমার নিজের জন্য প্রার্থনা করলাম। তখন নবীয়ে রাহমাত (সা.) বললেনঃ


سَلْ تُعْطَهْ سَلْ تُعْطَهْ


“এখন প্রর্থনা কর, তোমার প্রার্থনা মঞ্জুর করা হবে, তুমি প্রার্থনা কর, তোমার প্রার্থিত বস্তু দেওয়া হবে।” ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।[3]

দু‘আর আগে দুরুদ শরীফ পাঠে উৎসাহ প্রদান করে এবং সালাত পাঠকে দু‘আ কবুলের অন্যতম ওসীলা হিসাবে বর্ণনা করে আরো অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। দু‘আর শেষে সালাত পাঠের বিষয়ে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়ছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

كل دعاء محجتوب حتى يصلى على النبى صلى الله عليه وسلم


“সকল দু‘আ পর্দার আড়ালে থাকবে (আল্লাহর দরবারে গৃহীত হবে না) যতক্ষণ না নবীর উপর (সা.) সালাত পাঠ না করবে।” হাদীসটি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে। সম্মিলিতভাবে হাদীসটি হাসান।[4] উমার (রাঃ) থেকেও অনুরূপ কথা বর্ণিত হয়েছে।[5]

দ্বিতীয় শতাব্দীর তাবে-তাবেয়ী মুহাদ্দিস আবু সুলাইমান আব্দুর রাহমান বিন সুলাইমান আদ দারানী (মৃত্যু ১৯৭ হি) বলেনঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তার কোনো হাজত পেশ করতে চায়, বা কোনো প্রার্থনা করতে চায় তার উচিৎ, সে যেন দু‘আর শুরুতে নবীয়ে রাহমাতের (সা.) উপর সালাত পাঠ করে দু‘আ শুরু করে, এরপর তাঁর প্রার্থনা আল্লাহর দরবারে পেশ করে এবং শেষে পুনরায় সালাত পাঠের মাধ্যমে তার দু‘আ শেষ করে। কারণ নবীজীর (সা.) উপর সালাত আল্লাহ কবুল করবেন, আর আশা করা যায়, আল্লাহ সালাতের মধ্যবর্তী প্রার্থনাও দয়া করে কবুল করে নেবেন।”[6]

দ্বিতীয়ত, সালাম পাঠের গুরুত্ব ও ফযীলত

সালাত বা ‘দুরুদ’ ছাড়াও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি আমাদের আরেকটি কর্তব্য তাঁর প্রতি সালাম জানান। আল্লাহ কুরআন করীমে সালাত ও সালাম একসাথে উল্লেখ করেছেন। আমরাও সাধারণত সালাত ও সালাম একত্রে পড়ে থাকি। উপরে আলোচিত একাধিক হাদীসে সালাতের সাথে সালামের উল্লেখ করা হয়েছে। একটি হাদীসে দেখেছি যে আল্লাহ তা’আলা তাঁর হাবীবের সম্মানে বলেছেন যে, “যদি কেউ আপনার উপর ১ বার সালাত পাঠ করে তবে আমি তাঁর উপর ১০ বার সালাত (রহমত ও দয়া) দান করব। আর যদি কেউ ১ বার আপনার উপর সালাম জানায় আমি তাঁর উপর ১০ বার সালাম জানাই।” অন্য হাদীসে আব্দুল্লাহ বিন মাস’ঊদ (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

إن لله ملائكة سياحين في الأرض يبلغوني من أمتي السلام


“আল্লাহর কিছু ফিরিশতা আছেন যারা বিশ্বে ঘুরে বেড়ান, আমার উম্মতের সালাম তাঁরা আমার কাছে পৌঁছে দেন।” হাদীসটির সনদ সহীহ।[7]

আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেছেন , রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

ما من أحد يسلم عليَّ إلا رد الله عليَّ روحي حتى أرد عليه السلام


“যখনই কেউ আমাকে সালাম করে তখনই আল্লাহ আমার রূহকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন, যেন আমি তার সালামের প্রতিউত্তর দিতে পারি।”[8]


তৃতীয়ত, সালাত না পড়ার পরিণতি

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর উপর সালাত পাঠ করা আমাদের কর্তব্য। এই কর্তব্য পালনকারীর জন্য রয়েছে অপরিমেয় পুরস্কার যা আমরা এতক্ষণ আলোচনা করেছি। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি সালাত প্রেরণে অবহেলাকারী নিঃসনেদহে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অকৃতজ্ঞ মানুষ। বিশেষ করে তার কাছে যখন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কথা স্মরণ করা হয়, কেউ তার কাছে তাঁর নাম উচ্চারণ করে, বা কোনোভাবে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নামটি তার কানে প্রবেশ করে, তা সত্ত্বেও সে তাঁর জন্য সালাত পড়ে না তার চেয়ে অকৃতজ্ঞ আর কে হতে পারে। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি সালাত আমাদের সর্বদা পাঠ করা উচিৎ। হয়তবা কেউ পার্থিব ব্যস্ততায় তা ভুলে যেতে পারে। কিন্তু যদি কোনো প্রকারে তাঁর নামটি কানে আসে, বা তাঁর কথা মনে আসে তাহলে একজন মুসলমানের হৃদয়ে তাঁর প্রতি যে ভালবাসা থাকা অত্যাবশ্যক সেই ভালবাসার নূন্যতম দাবি যে, সে সঙ্গে সঙ্গে হৃদয়ের সকল ভালবাসা দিয়ে তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য আল্লাহ কাছে দু‘আ করবে, তাঁর জন্য সালাত প্রেরণ করবে। যার হৃদয়ে এতটুকু ভালবাসাও নেই তাকে অকৃতজ্ঞ অপূর্ণ মুমিন বলা ছাড়া উপায় নেই। হাদীস শরীফে তাকে ‘কৃপণ’ বলা হয়েছে। আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

الْبَخِيلُ مَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيّ


“কৃপণ ঐ ব্যক্তি যার নিকট আমার উল্লেখ করা হলেও সে আমার উপর সালাত পাঠ করল না।” তিরমিযী ও হাকিম হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।[9]

এ ধরনের মানুষ শুধু কৃপণই নয়, সে আল্লাহর রহমত থেকেও বঞ্চিত। আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

رَغِم أنْفُ رجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ علَيَّ


“পোড়া কপাল হতভাগা ঐ ব্যক্তির, যার কাছে আমার কথা স্মরণ করা হলো অথচ আমার উপর সালাত (দরুদ) পড়ল না।”[10]


অন্য হাদীসে কা’ব বিন আজুরাহ (রাঃ) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) মিম্বারে উঠার সময় ৩ বার ‘আমীন’ বলেন। পরে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কারণ উল্লেখ করেন। একটি কারণ তিনি বলেন, “জিবরাঈল (আ.) আমার নিকট আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন - যার নিকট আপনার নাম নেওয়া হলো অথচ আপনার উপর সালাত পড়ল না সে (আল্লাহর রহমত থেকে) দূরে হয়ে যাক! আমি (তাঁর এই বদ্দু‘আয় শরীক হয়ে) বললামঃ আমীন।” হাদীসটি সহীহ।[11]

আরেকটি হাদীসে আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন,

إن جبريل أتانى فقال ... ومن ذكرت عنده فلم يصل عليك فمات فدخل النار فأبعده الله، قل: آمين، فقلت: آمين


জিবরীল (আ.) আমার নিকট এসে বললেন, ... এবং যার কাছে আপনার নাম উল্লেখ করা হলো অথচ সে আপনার উপর সালাত পাঠ করল না, ফলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করল তাকে যেন আল্লাহ (তাঁর রহমত থেকে) দূর করে দেন”, আপনি ‘আমীন’ বলুন, তখন আমি ‘আমীন’ বললামঃ।” হাদীসটির সনদ হাসান।[12]

অন্য হাদীসে ইমাম হুসাইন (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

من ذكرت عنده فخطئ الصلاة على خطئ طريق الجنة


“যার কাছে আমার নাম উল্লেখ করা হলো অথচ সে আমার উপর সালাত (দরুদ) পড়তে ভুলে গেল, সে জান্নাতের পথ ভুলে গেল।”[13] হাদীসটি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে এবং হাসান বা গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের।[14]


একজন মুসলিমের ঈমানের দাবি যে, তার শত ব্যস্ততার মধ্যেও সে আল্লাহকে এবং তাঁর হাবীব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে ভুলে যাবে না। আমাদের সকল কথাবার্তা, আলাপ আলোচনা দেন দরবারের ফাঁকে ফাঁকে আমাদের উচিৎ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথা স্মরণ করা। এমন কখনো হওয়া উচিৎ নয় যে, আমরা অনেক সময় ধরে কথাবার্তা বলছি, গল্প করছি অথচ মাঝে মাঝে দু’একবার আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথা আমাদের মনে আসছে না। এটি হৃদয়ের খুবই দুঃখজনক অবস্থা। যদি কিছু মানুষ একত্রে বসে যে কোনো বিষয়ে কথাবার্তা বলেন কিন্তু পুরা মজলিসে একবারও আল্লাহর স্মরণ না করেন তাহলে তাদের এই মাজলিসটি কিয়ামতের দিন তাদের জন্য দুঃখ ও বেদনার কারণ হবে। এ বিষয়ে কয়েকটি হাদীস রয়েছে। আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا اللَّهَ فِيهِ وَلَمْ يُصَلُّوا عَلَى نَبِيِّهِمْ إِلا كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ


“যখন কিছু মানুষ একটি মাজলিসে বসে, কিন্তু সেই মাজলিসে তারা আল্লাহর স্মরণ করে না এবং তাদের নবীর (সা.) উপর সালাত (দরুদ) পাঠ করে না তাহলে এই মজলিসটি তাদের জন্য আফসোস ও ক্ষতির কারণ হবে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের শাস্তি দিবেন, আর ইচ্ছা করলে তাদের ক্ষমা করবেন।”

অন্য বর্ণনায়ঃ

إِلاَّ كَانَ عَلَيْهِمْ حَسْرَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ ، وَإِنْ دَخَلُوا الْجَنَّةَ لِلثَّوَابِ


“তারা জান্নাতে গেলেও উক্ত মাজলিস তাদের দুঃখ ও আফসোসের কারণ হবে, কারণ যে সাওয়াব থেকে তারা বঞ্চিত হবেন তার জন্য তারা দুঃখ ও আফসোস করবেন।”[15]

যিকর বিহীন, সালাত বিহীন মজলিস দুর্গন্ধময় মজলিস। যে কোনো সময়ে যে কোনো কাজে যে কোনো কথায় একাধিক মুসলমান একত্রিত হলে তাদের দায়িত্ব যে কয় মিনিটের মাজলিসই হোক না কেন, মাজলিসে অন্তত ২/১ বার রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কথা মনে করে তাঁর উপর সালাত (দরুদ) পাঠ করা। তা না হলে তাদের মজলিসটা হবে দুনিয়ার জঘন্যতম দুর্গন্ধময় মজলিস, যে দুর্গন্ধ যার হৃদয় আছে সেই অনুভব করবে। জাবির বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

مَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ ثُمَّ تَفَرَّقُوا مِنْ غَيْرِ ذِكْرِ اللَّهِ وَصَلاةٍ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلا قَامُوا عَنْ أَنْتَنِ جِيفَةٍ


যদি কিছু মানুষ একত্রিত হন, এরপর তারা আল্লাহর যিকর ও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপর সালাত পাঠ না করেই মাজলিস ভেঙ্গে চলে যান, তারা যেন পঁচা, দুর্গন্ধময় নিকৃষ্টতম মৃতলাশ ভক্ষণ করে উঠে গেলেন।” অন্য বর্ণনায়, “যদি কিছু মানুষ একটি মজলিসে বসে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপর সালাত পাঠ না করেই মাজলিস ভেঙ্গে চলে যায় তাহলে তারা যেন জঘন্যতম দুর্গন্ধময় পঁচা মৃতদেহ থেকে উঠে গেল।” হাদীসটির সনদ গ্রহণযোগ্য।[16]

[1] সুনানুত তিরমিযী ৪/৪৩৬, নং ২৪৫৭, মুসনাদ আহমাদ ৫/১৩৬, মুসতাদরাক হাকিম ২/৪৫৭, আত-তারগীব ২/৪৯৮।

[2] তাবারানী, আল-মু’জামুল কাবীর ৪/৩৫, মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৪৯৯, হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৬০।

[3] সুনানুত তিরমিযী ৪/৪৮৮, নং ৫৯৩।

[4] আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ ৫/৫৪-৫৮, নং ২০৩৫।

[5] সুনানুত তিরমিযী ২/৩৫৬, নং ৪৮৬, ইবনুল কাইয়েম, জালাউল আউহাম, পৃ. ২০৩৫।

[6] ইবনুল কাইয়েম, জালাউল আউহাম, ১৯৮ পৃ.।

[7] সুনানুন নাসাঈ, কিতাবুস সাহউ, নং ১২৮২, ইবনুল কাইয়েম, জালাউল আওহাম, পৃ. ২৭।

[8] সুনানু আবী দাউদ, কিতাবুল মানাসিক ২০৪১। হাদিসটির সনদ গ্রহনযোগ্য।

[9] তিরমিযী, আস-সুনান ৫/৫৫১, হাকিম, আল-মুসতাদরাক ১/৭৩৪।

[10] তিরমিযী, কিতাবুত দাওয়াত, নং ৩৫৪৫। হাদিসটি হাসান।

[11] মুসতাদরাক হাকিম ৪/১৭০, মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৫০৪-৫০৫।

[12] সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/১৮৮, মাওয়ারিদুয যামআন ৬/৩৪৮-৩৪৯।

[13] তাবারানী, মু’জামুল কাবীর ৩/১২৮ পৃ., নং ২৮৮৭।

[14] দেখুনঃ আল-মু’জামুল কাবীর ৩/১২৮ (টীকা), আত-তারগীব ওয়াত তারহীব ২/৫০৭, জালাউল আউহাম ৪৫ পৃ., মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৬৪।

[15] তিরমিযী, কিতাবুত দাওয়াত ৫/৪৬১, নং ৩৩৮০। ইমাম তিরমিযী বলেছেনঃ হাদিসটি হাসান সহীহ। মুসনাদ আহমাদ ২/৪৫৩, নং ৯৫৩৩, ৯৮৮৪।

[16] নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/২০, নং ৯৮৮৬/১, বুসিরী, মুখতাসারু ইতহাফিস সাদাত ৪/৪৯৭।