রমযান মাসের ৩০ আসর পঞ্চবিংশ আসর শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ) ১ টি
জাহান্নামের বর্ণনা [আল্লাহ আমাদেরকে তা থেকে আশ্রয় দিন]

সকল প্রশংসা চিরঞ্জীব সর্বসত্ত্বার ধারক আল্লাহর জন্য, তিনি শ্বাশত আর কেউ নয়। তিনি আসমান উপরে স্থাপন করেছেন এবং তারকারাজি দিয়ে সুসজ্জিত করেছেন। পাহাড়রাজি দিয়ে ভূপৃষ্ঠকে মহাশূন্যে স্থির করেছেন। আপন কুদরতে এসব দেহধারীকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তাকে মৃত্যু দিয়েছেন এবং চিহ্নটুকুও মিটিয়ে দিয়েছেন। আবার তিনি ছবিগুলোয় প্রাণ ফুঁকিয়ে দেবেন আর সহসা মৃতরা দাঁড়িয়ে যাবে। তাদের একদল নেয়ামতস্থান তথা জান্নাতে যাবে। আরেকদল শাস্তিস্থান তথা জাহান্নামে যাবে, তাদের সামনে এর দরজা উন্মুক্ত করা হবে, প্রতিটি দরজার জন্য রয়েছে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণী। তাদেরকে প্রলম্বিত স্তম্ভসমূহে আবদ্ধ করে রাখা হবে চিন্তা ও কষ্টের মধ্যে। সেদিন তাদেরকে তাদের ওপর ও নিচ থেকে শাস্তি গ্রাস করবে, তাদের কেউ করুণাপ্রাপ্ত হবে না।

আমি সাক্ষ্য দেই যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই; তাঁর কোনো শরীক নেই। এমন ব্যক্তির সাক্ষ্য যে মুক্তির প্রত্যাশা করে। আমি আরও সাক্ষ্য দেই যে মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। যার আনীত দীনকে আল্লাহ পারস্য ও রোম সাম্রাজ্যের ওপর বিজয় দান করেছেন।

আল্লাহ সালাত ও সালাম বর্ষিত করুন তাঁর ওপর, তাঁর পরিবার, সাহাবী এবং যতদিন মেঘমালা মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করে ততদিন পর্যন্ত আগত তাঁর সকল অনিন্দ্য অনুসারীর ওপর।

হে মুসলিম ভাইগণ! আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে ভয় দেখিয়েছেন এবং আমাদের বিভিন্ন প্রকার আযাবের খবর দিয়েছেন। যা শুনলে অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে। জান ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়। তিনি আমাদের ওপর করুণাময় বলেই আমাদের বিভিন্ন ধরণের ভয় দেখিয়ে সতর্ক করেছেন; যাতে আমরা ভালোভাবে সাবধান ও ভীত হতে পারি।
সুতরাং আল্লাহর কিতাব কুরআনে মাজীদে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাতে জাহান্নামের আযাব সম্পর্কে যা এসেছে তা শুনুন; যাতে আপনারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারেন।

﴿وَأَنِيبُوٓاْ إِلَىٰ رَبِّكُمۡ وَأَسۡلِمُواْ لَهُۥ مِن قَبۡلِ أَن يَأۡتِيَكُمُ ٱلۡعَذَابُ ثُمَّ لَا تُنصَرُونَ ٥٤ ﴾ [الزمر: ٥٤]

‘তোমরা স্বীয় রবের অভিমুখী হও এবং তার আজ্ঞাবহ ও অনুগত হও তোমাদের কাছে আযাব আসার পূর্বে। এরপর তোমাদের সাহায্য করা হবে না।’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৫৪)

* আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَٱتَّقُواْ ٱلنَّارَ ٱلَّتِيٓ أُعِدَّتۡ لِلۡكَٰفِرِينَ ١٣١ ﴾ [ال عمران: ١٣١]

‘তোমরা ওই আগুনকে ভয় কর, যা কাফেরদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّآ أَعۡتَدۡنَا لِلۡكَٰفِرِينَ سَلَٰسِلَاْ وَأَغۡلَٰلٗا وَسَعِيرًا ٤ ﴾ [الانسان: ٤]

‘নিশ্চয় আমরা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি শিকল, বেড়ি ও প্রজ্জ্বলিত অগ্নি।’ (সূরা আল-ইনসান, আয়াত: ৪)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّآ أَعۡتَدۡنَا لِلظَّٰلِمِينَ نَارًا أَحَاطَ بِهِمۡ سُرَادِقُهَاۚ﴾ [الكهف: ٢٩]

‘নিশ্চয় আমরা যালিমদের জন্য আগুন প্রস্তুত করেছি, যার প্রাচীরগুলো তাদেরকে বেষ্টন করে রেখেছে। (সূরা আল-কাহফ, আয়াত: ২৯)

* আল্লাহ তা‘আলা শয়তানকে লক্ষ্য করে বলছেন:

﴿إِنَّ عِبَادِي لَيۡسَ لَكَ عَلَيۡهِمۡ سُلۡطَٰنٌ إِلَّا مَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡغَاوِينَ ٤٢ وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمَوۡعِدُهُمۡ أَجۡمَعِينَ ٤٣ لَهَا سَبۡعَةُ أَبۡوَٰبٖ لِّكُلِّ بَابٖ مِّنۡهُمۡ جُزۡءٞ مَّقۡسُومٌ ٤٤﴾ [الحجر: ٤٢، ٤٤]

‘নিশ্চয় আমার বান্দাদের উপর তোমার কোনো ক্ষমতা নেই, তবে পথভ্রষ্টরা ছাড়া যারা তোমাকে অনুসরণ করেছে। আর নিশ্চয় জাহান্নাম তাদের সকলের প্রতিশ্রুত স্থান। তার সাতটি দরজা রয়েছে। প্রতিটি দরজার জন্য রয়েছে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণী।’ (সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৪২-৪৪)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَسِيقَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِلَىٰ جَهَنَّمَ زُمَرًاۖ حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءُوهَا فُتِحَتۡ أَبۡوَٰبُهَا﴾ [الزمر: ٧١]

‘আর কাফিরদেরকে দলে দলে জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে তারা যখন জাহান্নামের কাছে এসে পৌঁছবে তখন তার দরজাগুলো খুলে দেয়া হবে।’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৭১)

* আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:

﴿ وَلِلَّذِينَ كَفَرُواْ بِرَبِّهِمۡ عَذَابُ جَهَنَّمَۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِيرُ ٦ إِذَآ أُلۡقُواْ فِيهَا سَمِعُواْ لَهَا شَهِيقٗا وَهِيَ تَفُورُ ٧ تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ ٱلۡغَيۡظِۖ﴾ [الملك: ٦، ٨]

‘আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল! যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে। ক্রোধে তা ছিন্নভিন্ন হবার উপক্রম হবে।’ (সূরা আল-মুলক, আয়াত: ৬-৮)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ يَوۡمَ يَغۡشَىٰهُمُ ٱلۡعَذَابُ مِن فَوۡقِهِمۡ وَمِن تَحۡتِ أَرۡجُلِهِمۡ﴾ [العنكبوت: ٥٥]

‘যেদিন আযাব তাদেরকে তাদের উপর থেকে ও তাদের পায়ের নীচে থেকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে’ (সূরা আল-‘আনকাবূত, আয়াত: ৫৫)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ لَهُم مِّن فَوۡقِهِمۡ ظُلَلٞ مِّنَ ٱلنَّارِ وَمِن تَحۡتِهِمۡ ظُلَلٞۚ ذَٰلِكَ يُخَوِّفُ ٱللَّهُ بِهِۦ عِبَادَهُۥۚ يَٰعِبَادِ فَٱتَّقُونِ ١٦ ﴾ [الزمر: ١٦]

‘তাদের জন্য তাদের উপরের দিকে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন আর তাদের নিচের দিকেও থাকবে (আগুনের) আচ্ছাদন; এদ্বারা আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে ভয় দেখান। ‘হে আমার বান্দারা, তোমরা আমার তাকওয়া অবলম্বন কর’।’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত: ১৬)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَأَصۡحَٰبُ ٱلشِّمَالِ مَآ أَصۡحَٰبُ ٱلشِّمَالِ ٤١ فِي سَمُومٖ وَحَمِيمٖ ٤٢ وَظِلّٖ مِّن يَحۡمُومٖ ٤٣ لَّا بَارِدٖ وَلَا كَرِيمٍ ٤٤ ﴾ [الواقعة: ٤١، ٤٤]

‘আর বাম দিকের দল, কত হতভাগ্য বাম দিকের দল! তারা থাকবে তীব্র গরম হাওয়া এবং প্রচণ্ড উত্তপ্ত পানিতে, আর প্রচণ্ড কালো ধোঁয়ার ছায়ায়, যা শীতলও নয়, সুখকরও নয়।’ (সূরা আল-ওয়াকিয়া, আয়াত: ৪১-৪৪)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿وَقَالُواْ لَا تَنفِرُواْ فِي ٱلۡحَرِّۗ قُلۡ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرّٗاۚ ﴾ [التوبة: ٨١]

‘তারা (মুনাফিকরা) বলে, এ গরমে অভিযানে বের হয়ো না। বলে দাও, জাহান্নামের আগুন এর চেয়েও প্রচণ্ড উত্তপ্ত।’ (সূরা আত-তওবা, আয়াত: ৮১)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَمَآ أَدۡرَىٰكَ مَا هِيَهۡ ١٠ نَارٌ حَامِيَةُۢ ١١ ﴾ [القارعة: ١٠، ١١]

‘আপনি কি জানেন তা কী? তা হলো: প্রজ্জ্বলিত অগ্নি।’ (সূরা আল-কারি‘আহ, আয়াত: ১০-১১)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّ ٱلۡمُجۡرِمِينَ فِي ضَلَٰلٖ وَسُعُرٖ ٤٧ يَوۡمَ يُسۡحَبُونَ فِي ٱلنَّارِ عَلَىٰ وُجُوهِهِمۡ ذُوقُواْ مَسَّ سَقَرَ ٤٨ ﴾ [القمر: ٤٧، ٤٨]

‘নিশ্চয় অপরাধীরা রয়েছে পথভ্রষ্টতা ও (পরকালে) প্রজ্জ্বলিত আগুনে। সেদিন তাদেরকে উপুড় করে টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামে নেয়া হবে। (বলা হবে) জাহান্নামের ছোঁয়া আস্বাদন কর।’ (সূরা আল-কামার, আয়াত: ৪৭-৪৮)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَمَآ أَدۡرَىٰكَ مَا سَقَرُ ٢٧ لَا تُبۡقِي وَلَا تَذَرُ ٢٨ لَوَّاحَةٞ لِّلۡبَشَرِ ٢٩ ﴾ [المدثر: ٢٧، ٢٩]

‘কিসে আপনাকে জানাবে জাহান্নামের আগুন কী? এটা অবশিষ্টও রাখবে না এবং ছেড়েও দেবে না। চামড়াকে দগ্ধ করে কালো করে দেবে।’ (সূরা আল-মুদ্দাসসির, আয়াত: ২৭-২৯)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُ عَلَيۡهَا مَلَٰٓئِكَةٌ غِلَاظٞ شِدَادٞ لَّا يَعۡصُونَ ٱللَّهَ مَآ أَمَرَهُمۡ وَيَفۡعَلُونَ مَا يُؤۡمَرُونَ ٦ ﴾ [التحريم: ٦]

‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের এবং পরিবার-পরিজনদের সে অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর। যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয় ও কঠিন স্বভাবের ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা‘আলা যা আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয় তাই করে।’ (সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৬)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّهَا تَرۡمِي بِشَرَرٖ كَٱلۡقَصۡرِ ٣٢ كَأَنَّهُۥ جِمَٰلَتٞ صُفۡرٞ ٣٣ ﴾ [المرسلات: ٣٢، ٣٣]

‘নিশ্চয় তা (জাহান্নাম) ছড়াবে প্রাসাদসম স্ফুলিঙ্গ। তা যেন হলুদ উষ্ট্রী।’ (সূরা আল-মুরসালাত, আয়াত: ৩২-৩৩)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَتَرَى ٱلۡمُجۡرِمِينَ يَوۡمَئِذٖ مُّقَرَّنِينَ فِي ٱلۡأَصۡفَادِ ٤٩ سَرَابِيلُهُم مِّن قَطِرَانٖ وَتَغۡشَىٰ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ ٥٠ ﴾ [ابراهيم: ٤٩، ٥٠]

‘আর সে দিন তুমি অপরাধীদের দেখবে তারা শিকলে বাঁধা। তাদের পোশাক হবে আলকাতরার এবং আগুন তাদের চেহারাসমূহকে ঢেকে ফেলবে।’ (সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ৪৯-৫০)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِذِ ٱلۡأَغۡلَٰلُ فِيٓ أَعۡنَٰقِهِمۡ وَٱلسَّلَٰسِلُ يُسۡحَبُونَ ٧١ ﴾ [غافر: ٧١، ٧٢]

‘যখন তাদের গলদেশে বেড়ী ও শিকল থাকবে, তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে- ফুটন্ত পানিতে, অতঃপর তাদেরকে আগুনে পোড়ানো হবে।’ (সূরা গাফির/আল-মুমিন, আয়াত: ৭১-৭২)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ فَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ قُطِّعَتۡ لَهُمۡ ثِيَابٞ مِّن نَّارٖ يُصَبُّ مِن فَوۡقِ رُءُوسِهِمُ ٱلۡحَمِيمُ ١٩ يُصۡهَرُ بِهِۦ مَا فِي بُطُونِهِمۡ وَٱلۡجُلُودُ ٢٠ وَلَهُم مَّقَٰمِعُ مِنۡ حَدِيدٖ ٢١ كُلَّمَآ أَرَادُوٓاْ أَن يَخۡرُجُواْ مِنۡهَا مِنۡ غَمٍّ أُعِيدُواْ فِيهَا وَذُوقُواْ عَذَابَ ٱلۡحَرِيقِ ٢٢ ﴾ [الحج: ١٩، ٢٢]

‘তবে যারা কুফরী করে তাদের জন্য আগুনের পোশাক প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদের মাথার উপর থেকে ঢেলে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি। যার দ্বারা তাদের পেটের অভ্যন্তরে যা কিছু রয়েছে তা ও তাদের চামড়াসমূহ বিগলিত করা হবে। আর তাদের জন্য থাকবে লোহার হাতুড়ি। যখনই তারা যন্ত্রণাকাতর হয়ে তা থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে, তখনই তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে দেয়া হবে এবং বলা হবে, দহন-যন্ত্রণা আস্বাদন কর।’ (সূরা আল-হজ, আয়াত: ১৯-২২)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ بِ‍َٔايَٰتِنَا سَوۡفَ نُصۡلِيهِمۡ نَارٗا كُلَّمَا نَضِجَتۡ جُلُودُهُم بَدَّلۡنَٰهُمۡ جُلُودًا غَيۡرَهَا لِيَذُوقُواْ ٱلۡعَذَابَۗ﴾ [النساء: ٥٦]

‘নিশ্চয় যারা আমার নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করবে, আমি তাদের আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে পুড়ে যাবে তখন আবার আমি অন্য চামড়া দিয়ে তা পাল্টে দেব। যাতে তারা আযাব ভোগ করবে পারে।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৫৬)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّ شَجَرَتَ ٱلزَّقُّومِ ٤٣ طَعَامُ ٱلۡأَثِيمِ ٤٤ كَٱلۡمُهۡلِ يَغۡلِي فِي ٱلۡبُطُونِ ٤٥ كَغَلۡيِ ٱلۡحَمِيمِ ٤٦ ﴾ [الدخان: ٤٣، ٤٦]

‘নিশ্চয় যাক্কূম বৃক্ষ। পাপীর খাদ্য; গলিত তামার মত, উদরসমূহে ফুটতে থাকবে। ফুটন্ত পানির মত।’ (সূরা আদ-দুখান, আয়াত: ৪৩-৪৬)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿إِنَّهَا شَجَرَةٞ تَخۡرُجُ فِيٓ أَصۡلِ ٱلۡجَحِيمِ ٦٤ طَلۡعُهَا كَأَنَّهُۥ رُءُوسُ ٱلشَّيَٰطِينِ ٦٥﴾ [الصافات: ٦٤، ٦٥]

‘এটি একটি বৃক্ষ যা উদগত হয় জাহান্নামের মূল থেকে। এর গুচ্ছ শয়তানের মস্তকের ন্যায়।’ (সূরা আস-সাফফাত: ৬৪-৬৫)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ ثُمَّ إِنَّكُمۡ أَيُّهَا ٱلضَّآلُّونَ ٱلۡمُكَذِّبُونَ ٥١ لَأٓكِلُونَ مِن شَجَرٖ مِّن زَقُّومٖ ٥٢ فَمَالِ‍ُٔونَ مِنۡهَا ٱلۡبُطُونَ ٥٣ فَشَٰرِبُونَ عَلَيۡهِ مِنَ ٱلۡحَمِيمِ ٥٤ فَشَٰرِبُونَ شُرۡبَ ٱلۡهِيمِ ٥٥ ﴾ [الواقعة: ٥١، ٥٥]

‘অতঃপর হে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীরা! তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষের ফল, তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে। অতঃপর পান করাবে উত্তপ্ত পানি, পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়।’ (সূরা আল-ওয়াকি‘আ, আয়াত: ৫১-৫৫)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿وَإِن يَسۡتَغِيثُواْ يُغَاثُواْ بِمَآءٖ كَٱلۡمُهۡلِ يَشۡوِي ٱلۡوُجُوهَۚ بِئۡسَ ٱلشَّرَابُ وَسَآءَتۡ مُرۡتَفَقًا ٢٩ ﴾ [الكهف: ٢٩]

‘যদি তারা পান করার জন্য প্রার্থনা করে তখন তাদের পুঁজের ন্যায় পানীয় দ্রব্য দেয়া হবে। যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে। তা কতই না নিকৃষ্ট পানি এবং খুবই মন্দ আশ্রয়স্থল।’ (সূরা আল-কাহফ, আয়াত: ২৯)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَسُقُواْ مَآءً حَمِيمٗا فَقَطَّعَ أَمۡعَآءَهُمۡ ١٥ ﴾ [محمد: ١٥]

‘এবং তাদের ফুটন্ত পানি পান করানো হবে। যা তাদের নাড়ী-ভুড়ি ছিন্ন-ভিন্ন করে ফেলবে।’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ১৫)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَيُسۡقَىٰ مِن مَّآءٖ صَدِيدٖ ١٦ يَتَجَرَّعُهُۥ وَلَا يَكَادُ يُسِيغُهُۥ وَيَأۡتِيهِ ٱلۡمَوۡتُ مِن كُلِّ مَكَانٖ وَمَا هُوَ بِمَيِّتٖۖ وَمِن وَرَآئِهِۦ عَذَابٌ غَلِيظٞ ١٧ ﴾ [ابراهيم: ١٦، ١٧]

‘তাদের পুঁজ মেশানো পানি পান করানো হবে। ঢোক গিলে তা পান করবে। তা গলার ভেতর প্রবেশ করলে মনে হবে চতুর্দিক থেকে তার কাছে মৃত্যু আগমন করছে। এরপরও সে মরবে না। তার পিছনে অপেক্ষা করছে কঠোর আযাব।’ (সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ১৬-১৭)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّ ٱلۡمُجۡرِمِينَ فِي عَذَابِ جَهَنَّمَ خَٰلِدُونَ ٧٤ لَا يُفَتَّرُ عَنۡهُمۡ وَهُمۡ فِيهِ مُبۡلِسُونَ ٧٥ وَمَا ظَلَمۡنَٰهُمۡ وَلَٰكِن كَانُواْ هُمُ ٱلظَّٰلِمِينَ ٧٦ وَنَادَوۡاْ يَٰمَٰلِكُ لِيَقۡضِ عَلَيۡنَا رَبُّكَۖ قَالَ إِنَّكُم مَّٰكِثُونَ ٧٧ ﴾ [الزخرف: ٧٤، ٧٧]

‘নিশ্চয়ই অপরাধীরা জাহান্নামে চিরকাল থাকবে। তাদের আজাব লাঘব করা হবে না। তারা তথায় হতাশ হয়ে থাকবে। আমরা তাদের প্রতি জুলুম করিনি বরং তারাই ছিল জালেম। তারা ডেকে বলবে হে মালিক! (ফেরেশতার নাম) তোমার রবকে বল, যেন আমাদের ব্যাপারে ফয়সালা করে দেন (আমাদের মৃত্যু দেন)। সে বলবে নিশ্চয়ই তোমরা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।’ (সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৭৪-৭৭)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ مَّأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ كُلَّمَا خَبَتۡ زِدۡنَٰهُمۡ سَعِيرٗا ٩٧ ﴾ [الاسراء: ٩٧]

‘তাদের ঠিকানা হলো জাহান্নাম। যখনই নির্বাপিত হওয়ার উপক্রম হবে আমি তখন অগ্নি আরও বৃদ্ধি করে দেব।’ (সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ৯৭)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ وَظَلَمُواْ لَمۡ يَكُنِ ٱللَّهُ لِيَغۡفِرَ لَهُمۡ وَلَا لِيَهۡدِيَهُمۡ طَرِيقًا ١٦٨ إِلَّا طَرِيقَ جَهَنَّمَ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۚ وَكَانَ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٗا ١٦٩ ﴾ [النساء: ١٦٨، ١٦٩]

‘নিশ্চয়ই যারা কুফুরী করে এবং যুলম করে, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন না। তিনি তাদের জাহান্নামের পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ দেখাবেন না। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আর এটা আল্লাহর জন্য সহজ।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৬৮-১৬৯)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ لَعَنَ ٱلۡكَٰفِرِينَ وَأَعَدَّ لَهُمۡ سَعِيرًا ٦٤ ﴾ [الاحزاب: ٦٤]

‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা কাফেরদের লা‘নত করেছেন। তাদের জন্য অগ্নি প্রস্তত করে রেখেছেন।’ (সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৬৪)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَمَن يَعۡصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَإِنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًا ٢٣ ﴾ [الجن: ٢٣]

‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন তারা তথায় চিরকাল থাকবে।’ (সূরা আল-জিন, আয়াত: ২৩)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَمَآ أَدۡرَىٰكَ مَا ٱلۡحُطَمَةُ ٥ نَارُ ٱللَّهِ ٱلۡمُوقَدَةُ ٦ ٱلَّتِي تَطَّلِعُ عَلَى ٱلۡأَفۡ‍ِٔدَةِ ٧ إِنَّهَا عَلَيۡهِم مُّؤۡصَدَةٞ ٨ فِي عَمَدٖ مُّمَدَّدَةِۢ ٩ ﴾ [الهمزة: ٥، ٩]

‘আর কিসে আপনাকে জানাবে হুতামা কী? আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত আগুন। যা হৃৎপিণ্ড পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। নিশ্চয় তা তাদেরকে আবদ্ধ করে রাখবে প্রলম্বিত স্তম্ভসমূহে।’ (সূরা আল-হুমাযা, আয়াত: ৫-৯)

এছাড়াও জাহান্নামের আগুনের বর্ণনা ও বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রণাদায়ক স্থায়ী শাস্তি সম্পর্কে বহু আয়াত রয়েছে।