وَهُوَ الْحَكِيمُ الخَبِيْرُ আল্লাহ তাআলা প্রজ্ঞাবান ও সর্বজ্ঞ

وَهُوَ الْحَكِيمُ الخَبِيْرُ আল্লাহ তাআলা প্রজ্ঞাবান ও সর্বজ্ঞঃ আল্লাহ তাআলার অন্যতম নাম الحكيم এর দু’টি অর্থ রয়েছে। হাকীমের এক অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ তাআলা তাঁর মাখলুকের মধ্যে সৃষ্টিগত ও শরীয়তগত উভয় প্রকার আদেশের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতে ফয়সালাকারী।

আর হাকীমের দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে محكِم অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা পূর্ণ প্রজ্ঞাবান এবং সকল বস্ত্তকে যথাযথ স্থানে মজবুতভাবে স্থাপনকারী। সে হিসাবে এটি الحكمة থেকে গৃহীত। প্রত্যেক বিষয়কে তার নিজ নিজ স্থানে স্থাপন করাকে হিকমত বলা হয়। সুতরাং আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তাআলাই তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালাকারী। তিনি যা সৃষ্টি করেন এবং তাঁর সৃষ্টিকে তিনি যেই আদেশ করেন, তাতে রয়েছে আল্লাহ তাআলার বিশেষ একটি হিকমত (রহস্য ও উদ্দেশ্য)। আল্লাহ তাআলা কোন সৃষ্টিকেই অযথা সৃষ্টি করেন নি। মানুষের জন্য যা কিছু কল্যাণকর, তিনি কেবল তাই ইসলামী শরীয়তের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।

আল্লাহ তাআলার الخبير নামটি الخبرة থেকে গৃহীত। الخبرة অর্থ হলো বস্ত্তসমূহের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল অবস্থা জ্ঞানের মাধ্যমে পরিবেষ্টন করে থাকা। বলা হয় خبرت الشيئ إذا عرفته على حقيقته আমি জিনিষটি সম্পর্কে অবগত আছি। ইহা আপনি ঠিক ঐ সময় বলে থাকেন, যখন আপনি উহাকে তার আসল অবস্থাসহ জানতে পারেন। সুতরাং আল্লাহ তাআলা হচ্ছেন الخبير অর্থাৎ তিনি এমন সত্তা, যিনি স্বীয় ইলম ও ক্ষমতার মাধ্যমে সকল বস্ত্তর অপ্রকাশ্য ও গোপন অবস্থা ঠিক সেভাবেই অবগত আছেন, যেভাবে তিনি সেগুলোর প্রকাশ্য অবস্থা সম্পর্কে অবহিত।[1] উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তাআলার সম্মানিত নামসমূহ থেকে দু’টি নাম সাব্যস্ত করা হয়েছে। একটি হচ্ছে الحكيم (প্রজ্ঞাবান) অপরটি হচ্ছে الخبير (সর্বজ্ঞ)। একই সাথে এই নাম দু’টি আল্লাহর সিফাতসমূহ থেকে দু’টি সিফাতও সাব্যস্ত করছে। তা হচ্ছে হিকমত ও খিবরাত তথা আল্লাহ তাআলার প্রজ্ঞা ও চাক্ষুস জ্ঞান।

[1] - অর্থাৎ তার সমস্ত কাজই হয় পূর্ণ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা ভিত্তিক। তিনি যা করেন একদম ঠিকই করেন। নিজের প্রত্যেকটি সৃষ্টি কোথায় আছে, কী অবস্থায় আছে, তার প্রয়োজন কী, তার প্রয়োজনের জন্য কী উপযোগী, এ পর্যন্ত সে কী করেছে এবং সামনের দিকে আরো কী করবে এ সব সম্পর্কে তিনি পূর্ণজ্ঞান রাখেন। নিজের তৈরি দুনিয়া সম্পর্কে তিনি বেখবর নন এবং প্রতিটি অণু-পরমাণুর অবস্থাও তিনি পুরোপুরি জানেন।