উপদেশ ১৭. সত্য-মিথ্যা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ১ টি

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَامِرٍ قَالَ دَعَتْنِي أُمِّي يَوْمًا وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَاعِدٌ فِي بَيْتِنَا فَقَالَتْ: هَا تَعَالَ أُعْطِيكَ. فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أَرَدْتِ أَنْ تُعْطِيهِ؟» قَالَتْ: أَرَدْتُ أَنْ أُعْطِيَهُ تَمْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَا إِنَّكِ لَوْ لَمْ تُعْطِيهِ شَيْئًا كُتِبَتْ عَلَيْكِ كَذِبَةٌ.

আব্দুল্লাহ ইবনু আমের (রাঃ) বলেন, একদা আমার মা আমাকে ডাকলেন, তখন রাসূল (ছাঃ) আমাদের বাড়িতে বসেছিলেন, সে বলল, আস তোমাকে কিছু দিব। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, তুমি তাকে কি দিবে? সে বলল, আমি তাকে খেজুর দিব। তিনি বললেন, মনে রেখ, তুমি যদি তাকে কিছু না দাও, তাহলে তুমি একজন মিথ্যুক মহিলা বলে লেখা হবে’ (বায়হাক্বী, আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪২০৮; মিশকাত হা/৪৮৮২)।

عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَيْلٌ لِمَنْ يُحَدِّثُ فَيَكْذِبُ لِيُضْحِكَ بِهِ الْقَوْمَ وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَهُ.

বাহয ইবনু হাকীম তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তার দাদা বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, সেই ব্যক্তির জন্য ধ্বংস নিশ্চিত যে মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে। তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস’ (তিরমিযী হা/২৩১৫; আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪২০৯; মিশকাত হা/৪৮৩৪)।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ. وَفِي رِوَايَةٍ: وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ: شَيْخٌ زَانٍ وَمَلِكٌ كَذَّابٌ وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ.

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর মানুষের সাথে কথা বলবেন না। তাদের পবিত্র করবেন না। তাদের দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকাবেন না। তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি। (১) বৃদ্ধ ব্যভিচারকারী (২) মিথ্যুক শাসক (৩) অহংকারী গরীব’ (মুসলিম হা/১০৭; আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪২১০; মিশকাত হা/৫১০৯)।

عَنْ عَمَّارٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَ لَهُ وَجْهَانِ فِى الدُّنْيَا كَانَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لِسَانَانِ مِنْ نَارٍ.

আম্মার ইবনু ইয়াসার (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যার দুনিয়াতে দু’টি মুখ হবে ক্বিয়ামতের মাঠে তার মুখে আগুনের দু’টি জিহবা হবে (আবুদাঊদ হা/৪৮৭৩; আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪২১৫)। যারা মানুষের সাথে মিথ্যা কথা বলে, চোগলখুরী করে ও পরনিন্দা করে।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: الْكَبَائِرُ الْإِشْرَاكُ بِاللهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ وَقَتْلُ النَّفْسِ وَالْيَمِينُ الْغمُوسُ. رَوَاهُ البُخَارِيّ وَفِي رِوَايَةِ أَنَسٍ: وَشَهَادَةُ الزُّورِ بَدَلُ: الْيَمِينُ الْغُمُوْسُ-

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, বড় বড় কবীরা গোনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা, পিতামাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা’ (বুখারী)। কিন্তু আনাসের বর্ণনায় ‘মিথ্যা কসমে’র পরিবর্তে ‘মিথ্যা সাক্ষ্য শব্দ’ রয়েছে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ. زَادَ مُسْلِمٌ: وَإِنْ صَامَ وَصَلَّى وَزَعَمَ أَنَّهُ مُسْلِمٌ. ثُمَّ اتَّفَقَا: إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا اُؤْتُمِنَ خَانَ-

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘মুনাফিকের আলামত হচ্ছে তিনটা- যখন সে কথা বলে, মিথ্যা বলে, যখন ওয়াদা করে ভঙ্গ করে এবং যখন তার নিকট কোন কিছু (জিনিস বা কথা) আমানত রাখা হয়, তাতে সে খিয়ানত করে’। মুসলিমের বর্ণনায় এটাও রয়েছে যে, ‘যদিও সে ছালাত আদায় করে, ছিয়াম পালন করে এবং মনে করে যে, সে মুসলমান’ (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৪৯)

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ مُنَافِقًا خَالِصًا وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنَ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ وَإِذا خَاصَمَ فَجَرَ-

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকবে, সে পাক্কা মুনাফিক এবং যার মধ্যে এর একটা থাকবে, তার মধ্যে মুনাফিকীর একটা স্বভাব থাকবে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিত্যাগ করবে। (১) যখন তার নিকট কিছু আমানত রাখা হয় তাতে সে খিয়ানত করে, (২) সে যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে, (৩) যখন ওয়াদা করে, ভঙ্গ করে এবং (৪) যখন কারো সাথে ঝগড়া করে, তখন সে অশ্লীল ব্যবহার করে’ (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৫০)

عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عَبْدِ اللهِ الثَّقَفِيِّ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ مَا أَخْوَفُ مَا تَخَافُ عَلَيَّ؟ قَالَ: فَأَخَذَ بِلِسَانِ نَفْسِهِ وَقَالَ هَذَا.

সুফিয়ান ইবনু আব্দুল্লাহ ছাকাফী (রাঃ) বলেন, একদা আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) আমার জন্য যে জিনিসগুলি ভয়ের কারণ বলে আপনি মনে করেন তন্মধ্যে সর্বাধিক ভয়ংকর কোনটি? বর্ণনাকারী বলেন, তখন তিনি নিজের জিহবা ধরলেন এবং বললেন, ‘এটা’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৮৪৩)

عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اضْمَنُوْا لِيْ سِتًّا مِنْ أَنْفُسِكُمْ، أَضْمَنْ لَكُمُ الْجَنَّةَ اُصْدُقُوْا إِذَا حَدَّثْتُمْ، وَأَوْفُوْا إِذَا وَعَدْتُمْ، وَأَدُّوْا إِذَا ائْتُمِنْتُمْ، وَاحْفَظُوْا فُرُوْجَكُمْ، وَغُضُّوْا أَبْصَارَكُمْ، وَكُفُّوْا أَيْدِيَكُمْ.

উবাদাহ বিন ছামেত (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের পক্ষ হতে আমাকে ছয়টি বিষয়ের জামানত দাও, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের যামিন হব। (১) তোমরা যখন কথাবার্তা বল, তখন সত্য বলবে। (২) যখন ওয়াদা কর তা পূর্ণ করবে। (৩) যখন তোমাদের কাছে আমানত রাখা হয় তা আদায় করবে। (৪) নিজেদের লজ্জাস্থানকে হেফাযত করবে। (৫) স্বীয় দৃষ্টিকে অবনমিত রাখবে এবং (৬) স্বীয় হস্তকে (অন্যায় কাজ হতে) বিরত রাখবে’ (আহমাদ, বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৪৮৭০)