নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি সালাত বিষয়ে বিস্তারিত মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (রহ.) ১ টি
وجوب القراءة في السرية নীরব কিরাআত সম্পন্ন ছালাতে (মুক্তদীর) কিরাআত পড়া ফরয

নীরব কিরা’আত সম্পন্ন ছালাতে (মুক্তাদীর) কিরা’আত পড়াকে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বহাল রেখেছেন। জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন-

كُنَّا نَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ خَلْفَ الْإِمَامِ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الْأُولَيَيْنِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُورَةٍ ، وَفِي الْأُخْرَيَيْنِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ

আমরা যুহর এবং আছরের ছালাতে প্রথম দুরাকাআতে ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা ও অপর একটি সূরা পাঠ করতাম এবং পরবর্তী দুই রাকাআতে শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ করতাম।[1]

তিনি (যুহর ও আছরের ছালাতে) কেবল সরবে কিরা’আত পড়ে তাকে বিব্রত করতে নিষেধ করেছেন যেমন একদা তিনি যুহরের ছালাত ছাহাবাদেরকে নিয়ে আদায় করে বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কে سبح اسم ربك الأعلى পাঠ করেছে? এক ব্যক্তি বলল (হে আল্লাহ রাসূল) আমি, তবে আমি এর মাধ্যমে শুধু ভাল ছাড়া আর কিছুই ইচ্ছা করিনি। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি টের পেয়েছি যে এক ব্যক্তি কিরাআত নিয়ে আমার সাথে টানাহেঁচড়া করছে।[2]

অপর হাদীছে এসেছেঃ তাঁরা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পিছনে সরবে কিরা’আত পড়তেন, তাই তিনি বললেন, তোমরা আমার সাথে কুরআনকে সংমিশ্রন করে ফেলছ।[3] তিনি আরো বলেন, ছালাত আদায়কারী স্বীয় প্রতিপালকের সাথে কানাকানি করে। তাই সে যেন চিন্তা করে কিসের দ্বারা তার সাথে কানাকানি করবে। তোমরা কুরআন পাঠকালে একে অপরের উপর শব্দ উঁচু করবে না।[4]

তিনি বলতেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি অক্ষর পাঠ করে তার জন্য একটি ছওয়াব, আর প্রতিটি ছওয়াবের বিনিময় দশগুণ পাবে। আমি বলি না যে, الم একটি অক্ষর, বরং الف একটি অক্ষর, لام একটি অক্ষর এবং ميم একটি অক্ষর।[5]

[1] ছহীহ সনদে ইবনু মাজাহ। এটি ইরওয়াতেও উদ্ধৃত হয়েছে (৫০৬)।

[2] মুসলিম, আবু আওয়ানা ও আসসারাজ। الخلج শব্দের অর্থ টানা হেঁচড়া করা।

[3] বুখারী স্বীয় “জুযুল কিরাত” গ্রন্থে, আহমাদ ও আস্‌সারাজ, হাসান সনদে।

[4] মালিক, বুখারী “আফআলুল ইবাদ” গ্রন্থে ছহীহ সনদে। ফায়েদাহঃ স্বরব কিরাআত বিশিষ্ট ছালাতে নয় বরং শুধু নীরব কিরআত বিশিষ্ট ছালাতে ইমামের পিছনে কিরা’আত পড়ার পক্ষে রয়েছে ইমাম শাফেঈ পুরানো বক্তব্যে, ইমাম আবু হানীফার শিষ্য মুহাম্মদ তার থেকে বর্ণিত একটি রেওয়ায়াত অনুসারে আরো একে গ্রহণ করেছেন মোল্লা আলী কারী হানাফী এবং হানাফী মাযহাবের কিছু সংখ্যক মাশাইখ। এটিই হল ইমাম যুহরী, ইমাম মালেক, ইমাম ইবনুল মুবারাক, ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল সহ মুহাদ্দিছগনের এক দল ও অন্যান্যদের মত- এবং ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ এ মতই গ্রহণ করেছেন।

[5] তিরমিযী, হাকিম ছহীহ সনদে আ-জুররী একে আদাবু হামাতিল কুরআন গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এটা “ছহীহাহ” তে উদ্ধৃত হয়েছে (৬৬০) পক্ষান্তরে যে হাদীছে من قرأ خلف الإمام ملئ فوه نارا অর্থঃ যে ব্যাক্তি ইমামের পিছনে কিরা’আত পাঠ করে তার মুখ আগুন দ্বারা ভরপুর করা হবে। এই হাদীছটি বানোয়াট জাল। এর বর্ণনা “সিলসিলাতুল আহাদীস আয-যঈফাহ” তে রয়েছে (৫৬৯)।