নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি সালাত বিষয়ে বিস্তারিত মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (রহ.) ১ টি
صلاة المريض جالسا পীড়িত ব্যক্তির বসে ছলাত আদায়

'ইমরান বিন হুছাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ আমি অর্শ[1] রোগে আক্রান্ত ছিলাম, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ

صَلِّ قَائِمًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ

দাঁড়িয়ে ছলাত পড়, যদি তা না পার তবে বসে পড়বে। যদি তাও না পার তবে কাত হয়ে দেহের পার্শ্বদেশের ভরে শুয়ে পড়বে।[2] তিনি আরো বলেনঃ আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বসে ছলাত আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেনঃ

مَنْ صَلَّى قَائِمًا فَهْوَ أَفْضَلُ وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ الْقَائِمِ وَمَنْ صَلَّى نَائِمًا (وفى رواية: مضطجعا) فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ الْقَاعِدِ

যে কোন ব্যক্তির দাঁড়িয়ে ছলাত পড়াই উত্তম। যে ব্যক্তি বসে ছলাত পড়বে সে দাঁড়িয়ে সালাত আদায়কারীর অর্ধেক ছওয়াব পাবে, আর যে শুয়ে (অপর বর্ণনায় পার্শ্ব দেশের উপর) ছলাত পড়বে সে বসে ছলাত আদায়কারীর অর্ধেক ছওয়াব পাবে।[3]

এ হাদীছে পীড়িত ব্যক্তির কথাই বুঝানো হয়েছে। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ

خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم على ناس وهم يصلون قعودا من مرض، فقال: إن صلاة القاعد على النصف من صلاة القائم

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদল লোকের নিকট গমন করে দেখলেন তারা অসুস্থতার দরুণ বসে ছলাত পড়ছে। এদেখে তিনি বললেন- বসে ছলাত আদায়কারীর ছওয়াব দাঁড়িয়ে ছলাত আদায়কারীর অর্ধেক।[4]

নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক পীড়িত ব্যক্তিকে পরিদর্শন করতে গিয়ে তাকে বালিশের উপর ছলাত আদায় করতে দেখে তিনি তা টেনে নিয়ে দূরে নিক্ষেপ করেন। অতঃপর সে ব্যক্তি একখণ্ড কাঠ[5] নিলেন এর উপর ছলাত পড়ার জন্য। তিনি তাও টেনে নিয়ে ফেলে দেন এবং বলেনঃ যদি সম্ভব হয় তবে মাটির উপর ছলাত পড়বে তা না হলে ইশারা করে পড়বে এবং সাজদাকে রুকু অপেক্ষা বেশী নিচু করবে।[6]

[1] যে শব্দ দ্বারা অৰ্শরোগ বুঝানো হয়েছে তাকে একবচনে باسور -ও বলা হয়। শেষের অক্ষর তখন হবে (ر) রা। এর অর্থ নিতম্বের অভ্যন্তরীণ ফোঁড়া বিশেষ। আবার একে باسون-ও বলা হয়, শেষের অক্ষর (ن) নুন সহকারে যার অর্থ এমন ফোড়া বিশেষ যাতে রক্ত থাকা পর্যন্ত আরোগ্য লাভ হয় না। (ফতহুল বারী)

[2] বুখারী, আবু দাউদ ও আহমাদ।

[3] বুখারী, আবু দাউদ ও আহমাদ। ইমাম খাত্ত্বাবী বলেনঃ ইমরান (রাযিআল্লাহু আনহু)-এর হাদীছ দ্বারা ঐ পীড়িত ফরয আদায়কারী ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যে কষ্ট করে হলেও দাঁড়াতে পারে। এমতাবস্থায় বসা ব্যক্তির ছওয়াব দাঁড়ানো ব্যক্তির ছওয়াব অপেক্ষা অর্ধেক করা হয়েছে তাকে দাঁড়ানোর প্রতি প্রেরণা দান করার উদ্দেশ্যে যদিও (এ অবস্থায়) বসা জাইয রয়েছে। হাফিয ইবনু হাজার ফাতহুল বারীতে বলেছেন (২/৪৬৮) এটি যুক্তি সঙ্গত ব্যাখ্যা।

[4] আহমাদ ও ইবনু মাজাহ, সনদ ছহীহ।

[5] “লিসানুন আরব” অভিধানে রয়েছে, (উদ) কাঠ বলতে চিকন কাঠ বুঝায়। আবার এও বলা হয়েছে যে, যে কোন বৃক্ষের কাঠ চাই তা চিকন হোক বা মোটা হোক । আমি বলবোঃ হাদীছ দ্বিতীয় অর্থকেই সমর্থন করে। কেননা প্রথম অর্থ দ্বারা ব্যাখ্যা করা দুর্বোধ্য হবে।

[6] ত্বাবরানী, বাযযার, ইবনুস সাম্মাক স্বীয় হাদীছ গ্রন্থে (২/৬৭) বাইহাকী, এর সনদ ছহীহ যেমনটি আমি বর্ণনা করেছি “ছহীহা” (৬২৩ হাঃ)।