৩০৬. আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করা

সাবিত ইবনে কাইস (রাঃ) একজন বাগ্মী বক্তা ছিলেন। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ও ইসলামের পক্ষে কথা বলতেন। যাহোক, তিনি (রাঃ) খুতবা ভাষণদানকালে প্রায়ই তার স্বর উচু করে ফেলতেন এবং মাঝে মাঝে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটত।

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা নবীর আওয়াজের চেয়ে তোমাদের আওয়াজ উচ্চ করিও না এবং তোমরা পরস্পর যেভাবে কথাবার্তা বল সেভাবে তার সাথে কথাবার্তা বলো না, (এ কাজ করে) পাছে আবার তোমাদের আমল এমনভাবে বাতিল হয়ে যেতে পারে যে তোমরা তা টেরও পাবে না (এ বিষয়ে লক্ষ্য রেখো)।" (৪৯-সূরা আল হুজরাতঃ আয়াত-২)

এ আয়াত যখন নাযিল হয় সাবিত (রাঃ) ভাবলেন যে, (এ আয়াতে) তার কথা বলা হচ্ছে, তাই তিনি তার ঘরে একাকী থেকে সর্বদা কান্নাকাটি করছিলেন। একটি মজলিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবিত (রাঃ)-এর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করলেন এবং তার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাইলেন। সাহাবীরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যা ঘটেছে তা জানালেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন “কখনো না বরং সে জান্নাতবাসী (হবে)।”

এভাবে সাবিত (রাঃ)-এর ব্যাপারে কল্পিত সতর্কতা শুভ সংবাদে পরিণত হয়ে গেল ।

আয়েশা (রাঃ) একমাস দিনরাত কেঁদেছিলেন। কেননা, তাকে নিকৃষ্টকাজের অন্যায় অপবাদ (তোহমত) দেয়া হয়েছিল। অভিযোগের সাংঘাতিক প্রকৃতির কারণে জীর্ণ-শীর্ণ ও বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিলেন। তখন হঠাৎ করে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য আসল এবং কুরআন তাকে নিরাপরাধ পুতপবিত্র বলে ঘোষণা করল।

“সতী-সাধ্বী সরলমতি যারা তাদের সতীত্বে কোনরূপ কলঙ্ক স্পর্শের কল্পনাও করেনি এমন ঈমানদার নারীদের প্রতি যারা অপবাদ দেয় তারা দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত।” (২৪-সূরা আন নূরঃ আয়াত-২৩)

তার মর্যাদা বাড়ানো হয়েছিল তাই তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন আর ঈমানদারগণও তার সাথে আনন্দ বোধ করেছিল।

যখন তাবুকের যুদ্ধের ডাক পড়েছিল তখন তিনজন মু’মিন লোক (যুদ্ধে না গিয়ে) পিছনে রয়ে গিয়েছিল। যারা পিছনে রয়ে গিয়েছিল তাদেরকে আসন্ন শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌ কুরআনের আয়াত নাযিল করলেন।

এতে উপরোল্লিখিত তিনজন ঈমানদার ব্যক্তি যারপরণাই দুঃখী হলেন এবং খাঁটি তওবা করলেন। তারা বিশ্বাস করতেন যে আল্লাহ ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল নেই এবং অল্পকাল পরেই (কিন্তু অল্প সময় তাদের সীমাহীন মনে হয়েছিল) তাদের ক্ষমার সুসংবাদ নিয়ে আয়াত নাযিল হলো।