২৩৯. দুঃখ করে শক্রদের আনন্দ দিবেন না

হতাশ ও দুঃখিত হয়ে আপনি আপনার প্রতিপক্ষকে আনন্দ দিবেন; এ কারণেই আমাদের ধর্ম শক্রদের অন্তরে ভীতি-সঞ্চার করার আদেশ দিয়েছে।

“এর দ্বারা তোমরা আল্লাহর শক্রকে এবং তোমাদের শক্রকে ভীত-সন্ত্রস্ত করবে।” (৮-সূরা আনফালঃ আয়াত-৬০)

উহুদের যুদ্ধের দিন আবু দুজানাহ যখন মুসলমানদের সারির মাঝ দিয়ে (বীরের মতো) নেচে নেচে বা লাফিয়ে লাফিয়ে বা হেলে দুলে চলতে লাগল তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

إنها لمشية يبغضها الله إلاّ في مثل هذا الموطن

“নিশ্চয় আল্লাহ এ ধরনের হাঁটাকে এমন অবস্থায় ছাড়া (অন্য সাধারণ সময়ের জন্য) পছন্দ করেন না।”

কাফেররা যখন মুসলমানদেরকে পাহাড়ের উপর থেকে পর্যবেক্ষণ করছিল, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের কাবার চারিধারে রমল করার (বীরের মতো হাটার) আদেশ দিলেন, যাতে মুশরিকরা মুসলমানদের শক্তি, সহ্য ও মনোবল দেখে ভড়কে যায়।

“সেদিন মু’মিনগণ আনন্দিত হবে।” (৩০-সূরা আর রূমঃ আয়াত-৪) (অর্থাৎ পারস্যের বিরুদ্ধে রোমানরা যেদিন বিজয়ী হবে সেদিন মুসলমানরা খুশি হবে।) (কারণ, পারসিকরা একদিকে যেমন অগ্নিউপাসক ছিল, অন্যদিকে তেমনই মুসলিম হিতৈষী ছিল না বরং মুসলিম বিদ্বেষী ছিল। আর রোমানরা খ্রিস্টান ছিল (অগ্নি-উপাসক তথা মুশরিক ছিল না) এবং মুসলমানদের হিতৈষী ছিল। -অনুবাদক)

সত্যের শক্ররা যখন দেখতে পায় যে, আমরা সুখী বা আনন্দিত আছি তখন তারা বেদনা বোধ করে।

قُلْ مُوتُوا بِغَيْظِكُمْ

“(হে মুহাম্মদ!) আপনি বলে দিন, “তোমাদের রাগে তোমরাই মর।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১১৯)

“আপনার কোন কল্যাণ হলে তাদের খারাপ লাগে।” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-৫০)

“তারা তোমাদের সাংঘাতিক ক্ষতি কামনা করে।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১১৮)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

اللَّهُمَّ لاَ تُشْمِت بِي عَدُوًّا وَلاَ حَاسِداً

ভাবাৰ্থঃ “হে আল্লাহ! আমার দুর্ভাগ্যে কোন শক্রকে বা কোন হিংসুককে হাসার সুযোগ দেবেন না।”

একজন আরব দেশীয় কবি বলেছেন-

كل المصائب قد تمر علي الفتي ٭ وتهون غير شماتة الأعداء

ভাবাৰ্থঃ “যুবক সব ধরনের বিপদাপদ সহ্য করতে পারে, তবে তার বিপদে শক্রর আনন্দ সে সহ্য করতে পারে না।” হিংসুক ও যারা অন্যের দুঃখে আনন্দ করে তাদের আনন্দকে নস্যাৎ করে দেয়ার জন্য আমাদের পূর্বসূরী মুসলমানরা সংকটের মুখে থাকতেন এবং সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করতেন।

“আল্লাহর পথে তাদের যে বিপদাপদ হয়েছিল, তাতে তারা মনোবল হারায়নি, দুর্বল হয়নি এবং নত হয়নি।” (৩-সুরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১৪৬)