একদিন আমি মক্কার হারাম শরীফে বসা ছিলাম। দিনটি ছিল গুমোট। জোহরের ওয়াক্ত হয়ে আসছিল। এমন সময় আমি একজন বৃদ্ধ মানুষকে জমজমের পানি বিতরণ করতে দেখলাম। তিনি কয়েকটি পেয়ালা ভরে (বাইরে) নিয়ে মানুষদের দিতেন ও তারপর ফিরে এসে একই (ভাবে পেয়ালাগুলো ভরে মানুষের মাঝে পানি বিতরণের) কাজ করতেন। বেশ কিছু সময় যাবৎ তিনি এ কাজ করতে করতে ঘামে ভিজে গেলেন। এ বৃদ্ধ লোকটির বীরত্বব্যঞ্জক ধৈর্য দেখে এবং তার সদয় কাজের প্রতি ভালোবাসা দেখে আমি বিস্মিত হয়ে গেলাম। যত লোককে তার সাধ্যে কুলিয়েছিল তিনি তত লোককেই একটি (মিষ্টি) হাসি ও এক পেয়ালা পানি দিয়েছিলেন। এতে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, যদি আল্লাহ কাউকে আমলে সালেহ করার তওফীক দেন, তবে সে তা হাসি মুখেই করে, যদিও তা কষ্টকর কাজ হয়। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রক্ষা করার জন্য আবু বকর (রাঃ) মদীনার রাস্তায় নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন।

মেহমানকে খাওয়ানোর জন্য হাতেম তাই ক্ষুধা পেটে ঘুমাতেন। মুসলিমদেরকে বিশ্রাম দেয়ার জন্য আবু উবাইদাহ (রাঃ) রাত জেগে পাহারা দিতেন। রাত্রে যখন লোকজন ঘুমিয়ে থাকত তখন তাদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য উমর (রাঃ) রাস্তায় রাস্তায় হাটতেন। মহা আকালের বছর জনগণকে খাওয়ানোর জন্য তিনি নিজে না খেয়ে থাকতেন। উহুদের যুদ্ধের সময় আবু তালহা (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তীর থেকে রক্ষা করার জন্য নিজের দেহকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। ইবনে মোবারক (রহঃ) নিজে রোযা রেখে জনগণের মাঝে খাবার বিতরণ করতেন।

وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا

“তারা তার (আল্লাহর) ভালোবাসায় মিসকীন ইয়াতীম ও বন্দীকে খানা খাওয়ায়।” (৭৬-সূরা আদ দাহর বা ইনসানঃ আয়াত-৮)