“আর যাদেরকে ইলম ও ঈমান দান করা হয়েছে তারা বলবেঃ “সত্যিই তোমরা কেয়ামতের দিন পর্যন্ত আল্লাহর বিধান তকদীর অনুসারেই অবস্থান করেছিলে (কিন্তু তোমরা তা জানতে না)”। (৩০-সূরা আর রূমঃ আয়াত-৫৬)

কিছু জ্ঞান আছে উপকারী ও কিছু জ্ঞান আছে অপকারী। উপকারী জ্ঞানের ফলে ঈমানদারের ঈমান বৃদ্ধি পায়, পক্ষান্তরে কাফেররা এ ধরনের জ্ঞান অর্জন করে কোনরূপ উপকার লাভ করতে পারে না। যদিও অর্জিত তথ্য একই তবুও ফলাফল ভিন্ন। আল্লাহ তার শক্রদের সম্বন্ধে বলেনঃ “তারা শুধু পার্থিব জীবনের বাইরের দৃশ্যটাই জানে বা চিনে। অথচ তারা পরকাল সম্বন্ধে গাফেল।” (৩০-সূরা আর রূমঃ আয়াত-৭)

“বরং আখেরাত সম্বন্ধে তাদের কোন জ্ঞান নেই, বরং তারা এ বিষয়ে সন্দেহে পড়ে আছে, বরং তারা এ বিষয়ে অন্ধ।” (২৭-সূরা আন নামলঃ আয়াত-৩০)

ذَٰلِكَ مَبْلَغُهُم مِّنَ الْعِلْمِ

“ওটাই তাদের বিদ্যার দৌড়।” (৫৩-সূরা আন নাজমঃ আয়াত-৩০)

“(হে মুহাম্মাদ!), আপনি তাদেরকে সে ব্যক্তির ঘটনা পড়ে শুনান, যাকে আমি আমার নিদর্শনাবলি দান করেছিলাম, পরে সে সেসব নিদর্শনাবলিকে এড়িয়ে গেল। ফলে শয়তান তার পিছু নিল, আর তাই সে পথভ্রষ্ট হয়ে গেল।”

আর আমি যদি চাইতাম তবে তাকে আমি সেসব নিদর্শনাবলি দ্বারা উচ্চ মর্যাদা দান করতাম। কিন্তু সে পৃথিবীর প্রতি ঝুঁকে পড়ল ও তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করল। অতএব, তার উদাহরণ হলো কুকুরের মতো, যদি আপনি তার উপর বোঝা চাপান তবে সে হাঁপাতে থাকে অথবা যদি আপনি (তার উপর বোঝা না চাপিয়ে) তাকে এমনিই ছেড়ে দেন তবুও সে হাঁপাতে থাকে।

যে সম্প্রদায় আমার নিদর্শনাবলিকে অস্বীকার করেছে, তাদের উপমাও এরূপ। অতএব আপনি ঘটনা বর্ণনা করুন যাতে করে তারা ভেবে দেখে।” (৭-সূরা আল আ’রাফঃ আয়াত-১৭৫-১৭৬)

আল্লাহ ইহুদীদের সম্বন্ধে ও তাদের সত্য বিষয়ে জ্ঞান সম্বন্ধে বলেছেনঃ

“যাদের উপর তাওরাতের দায়ভার অর্পণ করা হয়েছিল অতঃপর তারা তা বহন করেনি, তাদের উপমা হলো পুস্তকের বিশাল বোঝা বহনকারী গাধার মতো। যে সম্প্রদায় আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহকে অস্বীকার করল তাদের উপমা কতইনা নিকৃষ্ট!” (সূরা ৬২ আল জুম’আঃ আয়াত-৫)

তারা তাওরাতের সত্য বিষয় জানত। তবুও তারা তা মানত না। তারা তাওরাতের কথাকে বিকৃত করত, এতেও যদি কাজ না হতো তবে তারা তাওরাতের কথার অর্থকে বিকৃত করত। যারা জ্ঞানকে এরূপ জঘন্যভাবে ব্যবহার করত তারা কিভাবে সুখ পেতে পারত? এটা (সুখ) অবশ্যই তাদের জন্য সম্ভবপর হলো না, কেননা তারা তাদের সাধ্যমত সর্বদাই সত্যকে নির্মুল করে দিতে চেষ্টা করত। (অর্থাৎ তারা সর্বদা সত্যকে নির্মুল করতে চাইতো বিধায় তাদের জন্য সুখ অসম্ভব ছিল। -অনুবাদক)

فَاسْتَحَبُّوا الْعَمَىٰ عَلَى الْهُدَىٰ

“কিন্তু তারা হেদায়েতকে পছন্দ না করে বরং অন্ধত্বকে পছন্দ করল।”

“এবং তাদের কথা, ‘আমাদের অন্তরসমূহ আচ্ছাদিত’ (একথা ঠিক নয়।), বরং তাদের কুফরির কারণে আল্লাহ তাদের অন্তরসমূহের উপরে মোহর এঁটে দিয়েছেন। সুতরাং অল্প সংখ্যক লোক ছাড়া তারা কেউই ঈমান আনবে না।” (৪-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-১৫৫)

ওয়াশিংটনের কংগ্রেসের লাইব্রেরিতে হাজার হাজার সম্ভবত মিলিয়ন মিলিয়ন পুস্তক আছে। সেখানে প্রত্যেক শতাব্দী, প্রত্যেক জাতি, প্রত্যেক সম্প্রদায় এবং প্রত্যেক কৃষ্টি ও সভ্যতা সম্বন্ধে পুস্তক আছে, অথচ এ মহামূল্যবান লাইব্রেরীর মালিক এমন এক জাতি, যারা তাদের প্রভুকে অবিশ্বাস করে (আরবী পুস্তকে আছে ‘অস্বীকার’ করে। -অনুবাদক) তারা এমন এক জাতি যাদের জ্ঞান এ পার্থিব বা বস্তু জগতের সীমাকে অতিক্রম করে না। যা এ পার্থিব জগতের বাইরে তারা তা শোনে না, দেখে না, অনুভব করে না এবং তারা তা বোঝে না। “এবং আমি তাদেরকে শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তকরণ সৃষ্টি করে দিয়েছিলাম, কিন্তু তাদের শ্রুতিশক্তি, দর্শনশক্তি ও তাদের হৃদয় তাদের কোন কাজে লাগেনি।” (৪৬-সূরা আল আহ্‌কাফঃ আয়াত-২৬)

সত্য ও কাফেরদের সত্যের প্রতি বিরাগের উপমা হলো, যদিও পানি বিশুদ্ধ ও মিষ্ট তবুও যে পানি পান করছে তার কাছে তা তিক্ত লাগছে (অর্থাৎ রোগের কারণে তার মুখের বা জিহ্বার স্বাদ বিকৃত বা নষ্ট হয়ে গেছে। -বঙ্গানুবাদক)

“আমি তাদেরকে কতইনা স্পষ্ট নিদর্শনাবলি দিয়েছিলাম!” (২-সূরা বাকারাঃ আয়াত-২১১)

“আর তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী হতে কোন নিদর্শন তাদের নিকট আসলেই তারা তা হতে মুখ ফিরিয়ে নিত।" (৬-সূরা আন’আমঃ আয়াত-৪)